৩০ ডিসেম্বর ২০২৩, শনিবার, ১:০৩

সরকার বিরোধীদের দ্রুত বিচারে রেকর্ড

 

২০২৩ সালে দেশের আদালত অঙ্গন ছিল আলোচনার কেন্দ্রে। বছরের শেষ দিকে প্রায় পাঁচ মাসে দ্রুত বিচার সম্পন্ন করে ৯৫ মামলায় বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ বিরোধী দলের ১৪৯৬ জন নেতাকর্মীকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে। বিদায়ী বছরের একেবারে শেষ দিকে এসে গত ২৪ ডিসেম্বর শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের শুনানি রাত সোয়া ৮টা পর্যন্ত গ্রহণ করে ১ জানুয়ারি রায়ের জন্য রাখা হয়। এ মামলার শেষ দিনের যুক্তি উপস্থাপনে বেলা ১১টা ৩০ থেকে রাত ৮টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত প্রায় ৯ ঘণ্টা আদালতে বসে ছিলে ড. ইউনূসসহ অন্য আসামিরা।

৯৫ মামলায় বিএনপিসহ বিরোধী দলের ১৪৯৬ নেতাকর্মীর কারাদণ্ড : বিদায়ী বছরের শেষ দিকে ঢাকার আদালতগুলোতে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে নাশকতার অভিযোগে মামলাগুলোর দ্রুত বিচার সম্পন্ন হয়েছে। বছরের শেষ দিকের প্রায় পাঁচ মাসে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা ৯৫টি মামলার দ্রুত বিচার সম্পন্ন করে ১৪৯৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। বিএনপির আইন সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল জানিয়েছেন, সরকার ২৮ অক্টোবরের পর থেকে বিএনপির ২১,৮৩৫ জন নেতাকর্মীকে অন্যায়ভাবে কারাগারে অন্তরীণ করেছে। গত ১৪ সপ্তাহে মোট ৯৫টি মামলায় সর্বমোট ১৪৯৬ জন বিএনপি নেতাকর্মীকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দিয়েছে।

অপর দিকে বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে আরো প্রায় ১০০ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে এবং এসব মামলা কয়েক হাজার নেতাকর্মী আসামি বলে বিএনপির আইন সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল জানিয়েছেন। তিনি জানান, বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে আরো শতাধিক মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ চলমান রয়েছে। তবে এসব মামলায় বিএনপির নেতাকর্মীদের পক্ষে ডিফেন্স আইনজীবীরা প্রয়োজনীয় আইনি সহায়তা দিতে পারছেন না, তাড়াহুড়া করা হচ্ছে। তিনি আরো জানান, ২০০৯ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত এক লাখ ৫০ হাজারেরও বেশি মামলায় বিএনপি ও বিএনপির সহযোগী গণসংগঠনগুলোর ৫০ লাখের বেশি নেতাকর্মী-সমর্থকদের আসামি করা হয়েছে।

সাজাপ্রাপ্তদের মধ্যে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবীবুর রহমান, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন- নবী খান, তথ্যবিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী, স্বেচ্ছাসেবকবিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল আলম, যুবদলের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম, বর্তমান সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনামুল হক, বর্তমান সাংগঠনিক সম্পাদক ইসহাক সরকার ও ঢাকা মহানগর উত্তর যুবদলের সাবেক সভাপতি এস এম জাহাঙ্গীর। এ ছাড়া ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি আবদুল কাদের ভূঁইয়া, রাজীব আহসান ও হাবিবুর রশীদ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান প্রমুখ রয়েছেন দণ্ডপ্রাপ্তদের তালিকায় রয়েছেন।

সম্প্রতিক সময়ে যেসব মামলায় সাজা হয়েছে, সেসব রাজনৈতিক মামলা মামলা বলে দাবি করেছে বিএনপি। দলটির আইনজীবী নেতারা বিভিন্ন সময় বলেছেন, মাঠের রাজনীতিতে যারা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভূমিকা রাখতে পারেন, এমন নেতাকর্মীদের সাজা হচ্ছে। বিএনপির নেতাকর্মীদের রাজনীতি থেকে বিতাড়ন করাই সরকারের উদ্দেশ্য।

তবে বিএনপি নেতাদের এমন দাবি সত্য নয় বলে দাবি রাষ্ট্রপক্ষের। এ বিষয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সাংবাদিকদের বলেছেন, মামলাজট কমাতে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে পুরনো মামলা নিষ্পত্তির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এখানে বিএনপি কোনো লক্ষ্যবস্তু নয়।
এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সিনিয়র অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন বলেন, এখন একটি বিশেষ সময় চলছে। সেই বিশেষ সময় ভৌতিক এবং অহেতুক মামলায় সব সাক্ষ্যপ্রমাণ না আসা সত্ত্বেও রাতে পর্যন্ত আদালত বসিয়ে এভাবে জেল জরিমানা করা হয়। এটা আমি মনেকরি বিচার বিভাগের ওপর নির্বাহী বিভাগের একটি নগ্ন হস্তক্ষেপ। এই বিশেষ সময়ে এ ধরনের জেল জরিমানা মানুষের মনে একটি সন্দেহের সৃষ্টি করে। আদালতকে সেই সন্দেহের ঊর্ধ্বে থেকে তাদের দায়িত্ব পালন করতে হবে। আমি অনুরোধ জানাচ্ছি আদালতকেও এ ধরনের কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকতে।

জয়নুল আবেদীন বলেন, আমরা নেতাকর্মীদের আমরা কিভাবে আইনি সহায়তা দেবো। তার কারণ সেখানে অনেকে মৃত্যুবরণ করেছেন। অনেকে জেলে আছেন। তারা তো ওকালতনামাও দিতে পারেননি। যারা মরে গেছেন তারা কি কবর থেকে ওকালতনামা দেবেন?
সংবিধান বিশেষজ্ঞ ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ড. শাহদীন মালিক সাংবাদিকদের বলেছেন, এটা সত্যি যে, বেশ কিছু মামলা দ্রুতগতিতে নিষ্পত্তি করে সাজা দেয়া হচ্ছে। অল্পসময়ে দ্রুতগতিতে অনেকগুলো মামলার নিষ্পত্তি করতে গিয়ে বিচার ব্যবস্থার দুর্বলতা ফুটে উঠছে। হঠাৎ করে এই মামলাগুলো বিচার করে দ্রুত সাজা দেয়ায় জনমনে বিচার বিভাগের নিরপেক্ষতার বিষয়ে সন্দেহের উদ্রেক হয়েছে। বিচার বিভাগের উপর মানুষের যে আস্থা, এটা তার সহায়ক না। এটা সত্যি যে, এতগুলো মামলা দ্রুত বিচার করার ফলে জনমনে কিছুটা সন্দেহ বা আশঙ্কার তৈরি হয়েছে এটা স্বীকার করতে হবে।

মৃত বিএনপি নেতার কারাদণ্ড : গত ২২ নভেম্বর নাশকতার অভিযোগে রাজধানীর নিউমার্কেট থানার একটি মামলায় মৃত বিএনপি নেতা মো: আবু তাহের দাইয়াকে সাজা দিয়েছেন আদালত। তিনি চার বছর আগে নিউমার্কেট থানার ১৮ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক থাকাকালীন মারা গেছেন। ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে বিএনপির হরতাল-অবরোধ চলাকালে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করার ঘটনার মামলায় নিউমার্কেট থানায় মামলা হয়। সেই মামলায় এজাহারনামীয় সাত নম্বর আসামি ছিলেন আবু তাহের। মামলার তদন্ত শেষে ওই বছরের ২১ জুলাই আদালতে চার্জশিট দেয় পুলিশ। এ মামলার বিচার শেষে আবু তাহের, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব- উন-নবী খান সোহেল, তথ্যবিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলালসহ ১৪ জনকে দেড় বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আতাউল্লাহ এ রায় ঘোষণা করেন।

রাত সোয়া ৮টা পর্যন্ত নোবেলজয়ী ড. ইউনূসের মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন : শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে মামলায় রোববার ২৪ ডিসেম্বর ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতের বিচারক শেখ মেরিনা সুলতানার আদালতে রাত ৮টা ১৫ মিনিটে উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রায়ের দিন ধার্য করা হয়েছে। শেষ দিনের যুক্তি উপস্থাপনে বেলা ১১টা ৩০ থেকে রাত ৮টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত আদালতে প্রায় ৯ ঘণ্টা বসে ছিলে ড. ইউনূসসহ অপর আসামিরা।
রাত ৮টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত শুনানির বিষয়ে ড. ইউনূসের আইনজীবী ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, আমি আদালতকে ধন্যবাদ জানাই। ড. ইউনূসের মামলায় মাসে ৮ থেকে ১০ বার পর্যন্ত ডেট দিয়েছেন। গত রোববার এই আদালতে রাত সোয়া ৮টা পর্যন্ত শুনানি হয়। এত তাড়াহুড়া করার জন্য ধন্যবাদ জানাই।

সরকার বিরোধীদের মামলায় সুপারসনিক গতির অভিযোগ : তথ্যপ্রযুক্তি আইনে মামলায় মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের সম্পাদক আদিলুর রহমান খান ও সংগঠনটির পরিচালক এ এস এম নাসির উদ্দিন এলানকে দুই বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বিরুদ্ধে নাইকো দুর্নীতি মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়েছে। রাজধানীর পল্টনে সিটি করপোরেশনের বয়লার গাড়ি ভাঙচুরের মামলায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিএনপি জামায়াতের আট নেতার বিচার শুরু হয়েছে। জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ারের বিরুদ্ধে মতিঝিল থানার ১২(১১)১২ নং মামলায় চার্জ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরু হয়েছে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে সরকার বিরোধী গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি এবং বিরোধী দলের রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক মামলার দ্রুত শুনানি, সাক্ষ্যগ্রহণ করে রায় প্রদান নিয়ে আদালত অঙ্গন আলোচনার কেন্দ্র বিন্দুতে চলে আসছে।

সম্প্রতি বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, মির্জা আব্বাসসহ আরো কয়েকজনের বিরুদ্ধে একাধিক মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে। এ ছাড়া জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খানসহ বেশ কয়েকজন নেতার বিরুদ্ধে একাধিক মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়েছে। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে নাশকতার অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তি করে সাজা দেয়া হতে পারে বলে বিএনপি ও জামায়াতে নেতাদের আইনজীবীরা আশঙ্কা করছেন।
বিএনপির আইন সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামালের দাবি বিভিন্ন সরকার বিরোধী রাজনৈতিক নেতাকর্মী ও সরকার বিরোধী মত ও পথের অনুসারীদের বিরুদ্ধে করা মামলাগুলো সম্প্রতি সময় সুপার সনিক গতিতে এগোচ্ছে। অর্থাৎ দিনের সাক্ষী রাতেও নেয়া হচ্ছে। রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী হাজির করতে পুলিশ বিভাগ থেকে দেশব্যাপী স্পেশাল টিম করা হয়েছে। তিনি বলেন, সরকার বিরোধী দল ও মতের বিরুদ্ধে যারা আছেন তাদেরকে সাজা দেয়া এবং বিচারিক হয়রানি করা যেন পুলিশ বিভাগ ও নিম্ন আদালতের কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

তবে বিরোধী দলের রাজনৈতিক নেতাদের মামলার দ্রুত বিচার করা হচ্ছে এটা মোটেই ঠিক নয়। এটা একটা রাজনৈতিক কথা এবং ভুল কথা বলছেন তারা। রাজনৈতিক কারণে এসব অভিযোগ আনছেন তারা বলে দাবি করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন।
নিশীরাতেও সাক্ষ্য গ্রহণ : উত্তরা পূর্ব থানার মামলা ২৬(১১)১৩। গত ২৬ জুলাই এ মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয় রাত ৯টা পর্যন্ত বলে আইনজীবীরা জানান। ওই দিন পাঁচজনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন আদালত। এ মামলার পরবর্তী তারিখ দেয়া হয় ২৩ আগস্ট, ৭ সেপ্টেম্বর ও ৪ অক্টোবর। এ মামলার আইনজীবী অ্যাডভোকেট আবদুর রাজ্জাক অভিযোগ করেন বর্তমানে এ মামলায় ১৫ পর পর তারিখ পড়ছে। অথচ আগে দু-তিন মাস পরপর মামলার তারিখ দেয়া হতো। এ মামলার ৭৭ জন আসামিকেই হাজির হতে হচ্ছে প্রত্যেক তারিখে।
দক্ষিণখান থানায় দায়েরকৃত মামলা নং-২৯(১১)১৩। গত ১৪ আগস্ট এ মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয় রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত। সাক্ষ্য নেয়া হয় মাত্র দু’জনের। এরপর ২০ আগস্ট, ৪ সেপ্টেম্বর এবং ১৭ সেপ্টেম্বর এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ হয় বলে আইনজীবীরা জানান। এ মামলায় হাজির থাকতে হয় ৮২ আসামিকেই। ধার্য তারিখে কারাগার থেকে আসামি হাজির না করায়, সাক্ষীদের বসিয়ে রেখে বিশেষ ব্যবস্থাপনায় কারাগার থেকে আসামিকে হাজির করা হচ্ছে।

বিশেষ ট্রাইব্যুনালের মামলা নং-৬৭৯/২০১৫ (পল্টন থানা : ৪২(১০)১৩) মামলায় গত ২৪ জুলাই বিশেষ ট্রাইব্যুনাল আদালত-১৩ তে অফিস টাইমের পর সন্ধ্যা পর্যন্ত সাক্ষ্য নেয়া হয় বলে ওই মামলার আসামিপক্ষের আইনজীবীরা জানিয়েছেন।
আদালতেই কাটছে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের সময় : গায়েবি মামলা। জামিন। নিয়মিত হাজিরা। একেকজনের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ ৪০০ পর্যন্ত মামলা। কারো বিরুদ্ধে ৫০, কারো বিরুদ্ধে ১০০ মামলা। ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতাদের বিরুদ্ধে ও অর্ধশতাধিক মামলা। রাজপথের বিরোধী দল বিএনপির দাবি, গত দেড় দশকে বিএনপির ৪০ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হয়েছে। এসব মামলায় অনেক নেতাকর্মীকে মাসের কর্মদিবসের প্রায় সবদিনই থাকতে হচ্ছে আদালতের বারান্দায়। কারাগার এবং কোর্ট-কাচারি যেন তাদের বাড়িঘর। কোনো না কোনো মামলায় প্রায় প্রতিদিনই হাজির থাকতে হচ্ছে আদালতে। হাজিরা দিয়ে গভীর রাতে বাসায় ফিরছেন। কেউ কেউ আদালত থেকে কারাগারে যাচ্ছেন। পুরনো মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হচ্ছে। পরের দিন সকালেই অন্য মামলায় হাজিরার জন্য তাকে তোলা হচ্ছে আদালতে। প্রতিদিন ঢাকাসহ সারা দেশের বিভিন্ন আদালতে এখন বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের ভিড়। এদের মধ্যে কেউ কেউ দিনে একটি-দু’টি নয়, ৮ থেকে ১০ মামলার হাজিরা দিচ্ছেন।

https://www.dailynayadiganta.com/first-page/802435