১০ ডিসেম্বর ২০২৩, রবিবার, ৯:৩৯

পেঁয়াজ বিক্রির নামে চলছে হরিলুট

বছরের বিভিন্ন সময়ে নির্বিঘ্নে কারসাজি করছে চিহ্নিত সিন্ডিকেট, কঠোর ব্যবস্থা না নিলে এর পুনরাবৃত্তি হবেই -গোলাম রহমান

 

পেঁয়াজ নিয়ে লাগামহীন মুনাফা করতে এবার শক্তিশালী সিন্ডিকেট সাত দিনের টার্গেট ধরে মাঠে নেমেছে। এ সময়ের মধ্যে চক্রের সদস্যরা ভোক্তার পকেট থেকে পাঁচ শতাধিক কোটি টাকা হরিলুটের পাঁয়তারা করছে। ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের ঘোষণা দেওয়ার পর থেকেই এমন ছক আঁকা হয়েছে। পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের সংবাদ শুক্রবার বাংলাদেশের গণমাধ্যমে প্রচারিত হওয়ার পরই রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের খুচরা বাজারে পেঁয়াজের দাম হুহু করে বাড়তে থাকে। শুক্রবার বিকাল থেকে রাত পর্যন্ত দফায় দফায় প্রতি কেজিতে বেড়েছে প্রায় ৫০ টাকা। শনিবার তা আরও ৫০ টাকা বেড়ে প্রতি কেজিতে গড়ে ১০০ টাকা বেড়ে যায়। আমদানি করা পেঁয়াজ বৃহস্পতিবার ছিল ১১০ টাকা কেজি। শনিবার তা বিক্রি হয়েছে ২১০ টাকা। একই সময়ের ব্যবধানে দেশি পেঁয়াজ ১৩০ থেকে ২৩০ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে। একদিনের ব্যবধানে গড়ে প্রতি কেজিতে দাম বেড়েছে ১০০ টাকা। তবে খুচরা বাজারে দেশি পেঁয়াজ সর্বোচ্চ ২৪০ টাকা এবং আমদানি করা পেঁয়াজ ২২০ টাকা। ভারতের এক ঘোষণায় নিত্যপ্রয়োজনীয় এই পণ্যটির দাম বেপরোয়া গতিতে বেড়ে যাওয়ায় ক্রেতাসাধারণ ফের ভোগান্তিতে পড়েছে। বাজারসংশ্লিষ্টরা বলছেন, ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করলেও এ মুহূর্তে দেশে পেঁয়াজের দাম বাড়ার কোনো কারণ নেই। কারণ, দেশে চলতি বছরে পর্যাপ্ত পেঁয়াজ উৎপাদন হয়েছে। আমদানিও হয়েছে অনেক। বাজারে নতুন মুড়িকাটা পেঁয়াজ উঠতে শুরু করেছে। অন্যান্য পেঁয়াজও বাজারে চলে এসেছে। এক সপ্তাহের মধ্যে বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ আরও বাড়বে। তখন দেশি পেঁয়াজেই চাহিদা মেটানো সম্ভব হবে। এছাড়া আগের পেঁয়াজের সরবরাহও রয়েছে পর্যাপ্ত। ফলে বাজারে এ পণ্যের কোনো সংকট নেই। তাই বেপরোয়া গতিতে এর দাম বাড়া একেবারেই অযৌক্তিক।

এদিকে পেঁয়াজের মূল্য নিয়েন্ত্রণে বাজার তদারকি সংস্থা জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর সারা দেশে অভিযান পরিচালনা করছে। ইতোমধ্যে মূল্য নিয়ে কারসাজি করায় দুই ব্যবসায়ীকে সাত দিন জেল দিয়েছে ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক। সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) পক্ষ থেকেও ভর্তুকি মূল্যে কেজিপ্রতি ৫০ টাকা করে পেঁয়াজ বিক্রি করা হচ্ছে।

জানতে চাইলে কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান যুগান্তরকে বলেন, সুযোগ পেলেই ব্যবসায়ীরা অতি মুনাফা করতে মরিয়া হয়ে ওঠে। এবারও সেই একই চিত্র দেখা যাচ্ছে। পরিস্থিতি এমন-নতুন পেঁয়াজ বাজারে আসা পর্যন্ত সব পর্যায়ের ব্যবসায়ীরা বাড়তি দাম নেওয়ার ছক তৈরি করেছেন। সরকারসংশ্লিষ্টরাও যেন গাছাড়া ভাব নিয়ে ওই সাত দিনের অপেক্ষায় আছে, যা কোনোভাবেই ঠিক না। তাই ভোক্তাদের এই ভোগান্তি থেকে বের করতে এবার অসাধুদের কঠোর হস্তে দমন করতে হবে, তা না হলে মূল্য কারসাজির এই মহোৎসব সব সময় চলতে থাকবে। বছরের বিভিন্ন সময়ে নির্বিঘ্নে কারসাজি করছে চিহ্নিত সিন্ডিকেট, কঠোর ব্যবস্থা না নিলে এর পুনরাবৃত্তি হবেই।

সূত্র জানায়, চলতি বছরে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ভারতে পেঁয়াজের উৎপাদন কম হয়েছে। এ কারণে দেশটিতে এর দাম বাড়ছিল। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত আগস্টে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার পেঁয়াজ রপ্তানির ওপর ৪০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে। কিন্তু এতেও ভারত থেকে পেঁয়াজ রপ্তানি খুব একটা কমছিল না। ফলে তারা রপ্তানি নিরুৎসাহিত করতে ২৯ অক্টোবর পেঁয়াজের প্রতি টনের রপ্তানি মূল্য সর্বনিু ৮০০ ডলার নির্ধারণ করে দেয়। এতেও ভারতের বাজারে পণ্যটির দাম কমছিল না। ফলে বৃহস্পতিবার তারা পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দেয়, যা ৩১ মার্চ পর্যন্ত বহাল থাকবে। ভারতের আদেশে বলা হয়, এ আদেশ জারির আগেই যেসব পেঁয়াজ রপ্তানির এলসি খোলা হয়েছে, যেসব পেঁয়াজ রপ্তানির জন্য জাহাজীকরণ করা হয়েছে, শিপিং বুকিং প্রস্তুত করা হয়েছে-এমনসব পণ্য রপ্তানি করতে কোনো বাধা নেই। এর বাইরে কোনো দেশের জরুরি প্রয়োজনে পেঁয়াজের দরকার হলে সে দেশের সরকারের কাছে আবেদন করলে তারা বিষয়টি বিবেচনা করবেন। এছাড়া কোনো রাজ্যসরকার তার নিজস্ব চাহিদা বিবেচনায় নিয়ে উদ্বৃত্ত থাকলেও রপ্তানি করতে পারবে।

ফলে বাংলাদেশ যেসব পেঁয়াজ রপ্তানির এলসি করেছে; কিন্তু এখনো দেশে আসেনি সেগুলো দেশে আসতে কোনো বাধা নেই। চলতি অর্থবছরের জুলাই-অক্টোবরে ভারত থেকে ৩৫ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানির জন্য এলসি খোলা হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ২০ হাজার টন চলে এসেছে। আরও ১৫ হাজার টন আসার অপেক্ষায় রয়েছে। তবে এসব পেঁয়াজ আমদানিতে উদ্যোক্তারা ধীরগতি অনুসরণ করছেন। কারণ, দেশী পেঁয়াজ ইতোমধ্যে উঠতে শুরু করেছে। এর দামও অচিরেই কমে যাবে। যে কারণে এখন পেঁয়াজ আমদানি করা থেকে বিরত থাকছেন উদ্যোক্তারা।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, দেশে বছরে পেঁয়াজের চাহিদা ২৮ লাখ টন। কৃষি মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, এ বছর দেশে প্রায় ৩৪ লাখ টন পেঁয়াজ উৎপাদন হবে। কিন্তু মজুত অসুবিধার অভাবে দেশে উৎপাদিত পেঁয়াজের প্রায় ২৫ শতাংশ নষ্ট হয়েছে। এ হিসাবে নষ্ট হবে প্রায় সাড়ে ৮ লাখ টন। ফলে নিট উৎপাদন বাবদ থাকছে ২৫ লাখ ৫০ হাজার টন। এর বাইরে প্রায় সাড়ে ৬ লাখ টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। বছরে আমদানি করা হয় আট লাখ টনের বেশি। এসব মিলে চাহিদার চেয়ে বেশি পেঁয়াজ দেশের বাজারে সরবরাহ ও মজুত হিসাবে রয়েছে। এছাড়া অনেক পেঁয়াজ দেশে আসতে পাইপলাইনে আছে। ফলে এ মুহূর্তে দেশে পেঁয়াজের কোনো ধরনের সংকট নেই। তারপরও কথিত সিন্ডিকেট ভারতের পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের দোহাই দিয়ে পরিকল্পতিভাবে এর দাম বাড়াচ্ছে।

জানতে চাইলে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এএইচএম সফিকুজ্জামান যুগান্তরকে বলেন, ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করেছে। এ সংবাদের পর কিছু ব্যবসায়ী কম দামে কেনা পেঁয়াজ দাম বাড়িয়ে বিক্রি করছে। তাই মূল্য নিয়ন্ত্রণে সারা দেশে অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে তদারকি করা হচ্ছে। এ সময় ক্রয় ও বিক্রয় রসিদ মিলিয়ে দেখা হচ্ছে। অনিয়ম পেলে আইনের আওতায় এনে জরিমানা করা হচ্ছে। তিনি জানান, সাত দিন পর দেশে উৎপাদিত পেঁয়াজ পুরোপুরি বাজারে এসে যাবে। তখন দাম এমনিতেই কমে আসবে।

প্রাপ্ত্য তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, প্রতিদিন দেশে পেঁয়াজের চাহিদা ৭ হাজার ৬৭১ টন বা ৭৬ লাখ ৭২ হাজার কেজির চাহিদা রয়েছে। প্রতি কেজিতে গড়ে অতিরিক্ত ১০০ টাকা মুনাফা করলে দিনে মুনাফা হচ্ছে ৭৭ কোটি টাকা। এ হিসাবে ৭ দিনে ভোক্তার পকেট থেকে অতিরিক্ত মুনাফা হিসাবে সিন্ডিকেটের পকেটে যাবে প্রায় ৫৩৭ কোটি টাকা। আগামী কয়েকদিনে দাম বাড়লে আরও বেশি টাকা চলে যাবে সিন্ডিকেটের কবজায়। এছাড়া পেঁয়াজের এ দাম যদি আরও বেশি দিন স্থায়ী হয়, তাহলে কথিত কারসাজির চক্রটি আরও বেশি মুনাফা করবে। এর আগে শুক্রবারও দাম বাড়িয়ে চত্রুটি আরও কিছুটা মুনাফা করেছে।

রাজধানীর শ্যামবাজারের পাইকারি ব্যবসায়ী শংকর চন্দ্র ঘোষ যুগান্তরকে বলেন, আমদানিকারকরা পেঁয়াজের দাম বাড়িয়ে অতি মুনাফা করতে সাত দিনের টার্গেট নিয়েছে। কারণ, সাত দিন পরই দেশের পেঁয়াজ পুরোপুরি বাজারে এসে যাবে। তখন এমনিতেই দাম কমতে থাকবে। তবে ক্রেতাদেরও কিছু দোষ আছে। তারা দাম বাড়ার কথা শুনে বাজারে হুমড়ি খেয়ে পড়েছে। এতে সুযোগ বুঝে সব পর্যায়ের ব্যবসায়ীরা দাম বাড়িয়ে বিক্রি করছেন, যা ঠিক না।

ভোক্তা অধিদপ্তরের অভিযান : পেঁয়াজের মূল্য স্থিতিশীল ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে রাজধানীসহ ৫৪টি জেলায় অভিযান পরিচালনা করেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। বৃহস্পতিবার সারা দেশে ৫৭টি টিম বাজার অভিযানের মাধ্যমে ১৩৩টি প্রতিষ্ঠানকে ৬ লাখ ৬৬ হাজার টাকা জরিমানা করে। এ দিন অধিদপ্তরের পক্ষ থকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ভোক্তার অধিকার রক্ষায় অধিদপ্তরের এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।

খাতুনগঞ্জ থেকে পেঁয়াজ উধাও : চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়, দুদিন আগেও পেঁয়াজে ঠাসা ছিল চট্টগ্রামের প্রধান পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জ-চাক্তাই। এখানকার প্রধান আড়ত হামিদুল্লাহ মিয়া বাজারসহ বাজারের বিভিন্ন দোকানের সামনেই বস্তায় বস্তায় পেঁয়াজ রাখা ছিল। কিন্তু শনিবার সকাল থেকে হঠাৎ পেঁয়াজ উধাও হয়ে গেছে। ভোর থেকে বিক্রেতারা দোকান বা আড়তের সামনে থেকে পেঁয়াজের বস্তা সরিয়ে নিয়েছে। শত শত টন পেঁয়াজ পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে জেলার বাইরে বিভিন্ন মোকামে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের ঘোষণা দেওয়ার পর কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে বাড়তি দামে বিক্রির জন্যই ব্যবসায়ীরা এই কৌশলের আশ্রয় নিয়েছেন। ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে এ বাজারে পেঁয়াজের দাম কেজিতে প্রায় দেড়শ টাকা বাড়তি হাঁকা হচ্ছে। অর্থাৎ যে পেঁয়াজ বৃহস্পতিবার বিকালেও প্রতি কেজি ১০৫-১০৭ টাকা বিক্রি হয়েছে, শনিবার সেই একই পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ২৫০ টাকা।

বগুড়া ব্যুরো জানায়, ভারত ৩১ মার্চ পর্যন্ত পেঁয়াজ রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করায় বগুড়ার বাজার অস্থির হয়ে উঠেছে। পাইকারি ও খুচরা বাজারে হুহু করে দাম বাড়ছে। এক দিনের ব্যবধানে প্রতি কেজিতে ৪০ টাকা বেড়ে খুচরা পর্যায়ে এলাকাভেদে ১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা আশা করছেন, এক সপ্তাহের মধ্যে মূল্য নিয়ন্ত্রণে আসবে। শনিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বগুড়া শহরের রাজাবাজার, ফতেহআলী ও রেললাইন বাজারে গিয়ে দেখা যায়, প্রতি কেজি নতুন পেঁয়াজ পাইকারি ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। শুক্রবার বিক্রি হয়েছে সর্বোচ্চ ১১০ টাকা দরে। দেশি পুরোনো পেঁয়াজ ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। শুক্রবার ছিল ১৪০ টাকা। আর ভারতীয় পেঁয়াজ কম পাওয়া গেলেও বিক্রি হচ্ছে, ১৬০ টাকা কেজি। শুক্রবার প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে, ১০০-১১০ টাকায়।

সিলেট ব্যুরো জানায়, সিলেটে একদিনের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কেজিতে ২০০ টাকা ছাড়িয়েছে। শনিবার খুচরা বাজারে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২১০-২৪০ টাকা। এতে নিু আয়ের মানুষের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় এ পণ্যটি।

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি জানান, ভারতের পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের ঘোষণার পর থেকে ঠাকুরগাঁয়ে এক লাফে দ্বিগুণ বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। এক রাতের ব্যবধানে প্রায় দ্বিগুণ হয়ে কেজিপ্রতি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ২২০-২৩০ টাকায়। আর ভারতীয় পেঁয়াজের দামও ২০০ টাকা ছুঁয়েছে। পেঁয়াজের বাজারের এমন অস্থিতিশীলতায় দিশেহারা অবস্থা ক্রেতাদের। শনিবার সকালে বাজার মনিটরিং করে বেশি দামে পেঁয়াজ বিক্রি করায় দুই ব্যবসায়ীকে ৭ দিনের কারাদণ্ড দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। বিষয়টি নিশ্চিত করে ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক মাহবুবুর রহমান বলেন, সকাল থেকেই বাজার মনিটরিং করা হচ্ছে। দাম বেশি নেওয়ায় দুজনকে জেল দেওয়া হয়েছে।

গাজীপুর প্রতিনিধি জানান, শনিবার গাজীপুরে পেঁয়াজ কেজি ২৬০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। এতে অসহায় হয়ে পড়েন ক্রেতারা। তারা দ্রুত বাজার মনিটরিং জোরদার করার দাবি জানিয়েছেন। শনিবার গাজীপুরের বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমন চিত্র লক্ষ করা গেছে। শুক্রবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ১২০ টাকা দরে এবং ভারতীয় পেঁয়াজ ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। এক দিনের ব্যবধানে কেজিতে ১৫০ টাকার বেশি নেওয়া হচ্ছে।

হাকিমপুর (দিনাজপুর) প্রতিনিধি জানান, দিনাজপুরের হিলিতে অস্থির পেঁয়াজের বাজার। একদিনের ব্যবধানে কেজিপ্রতি ১০০-১২০ টাকা বাড়ানো হয়েছে। বর্তমানে হিলি স্থলবন্দরের পাইকারি বাজারে ভাতীয় পেঁয়াজ ১৮০-২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ভারতীয় পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধির খবরে বেড়েছে দেশি পেঁয়াজের দামও। দেশি পেঁয়াজ কেজিপ্রতি ৭০ টাকা বেড়ে পাইকারি বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকায়। হঠাৎ আমদানি বন্ধ এবং দাম বৃদ্ধির কারণে বিপাকে পড়েছেন সাধারণ ক্রেতারা। হিলি কাস্টমসের তথ্যমতে, বৃহস্পতিবার এবং শনিবার ভারতীয় ২২ ট্রাকে ৬১২ মেট্রিকটন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে।

অভয়নগর (যশোর) প্রতিনিধি জানান, অভয়নগরের নওয়াপাড়া বাজারে পেঁয়াজ কেজিপ্রতি ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। শনিবার সকালে দেশি পেঁয়াজের কেজি ১৫০-১৬০ টাকায় বিক্রি হলেও দুপুরে সেই পেঁয়াজ বিক্রি হয় ১৯০-২০০ টাকায়। ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৫০-১৬০ টাকা।

https://www.jugantor.com/todays-paper/first-page/749542