হাওরের বাঁধ ভেঙে তলিয়ে গেছে ফসল
৯ মে ২০১৭, মঙ্গলবার, ৯:১২

সহজিয়া কড়চা

হাওর-বাঁওড়ের পাঁচালি

|| সৈয়দ আবুল মকসুদ ||
আমরা জেনে এসেছি, পানিতে সবকিছু ভেজে, কিন্তু এখন দেখছি পানিতে পোড়েও। দেখছি পানির দাহ্যক্ষমতা প্রচুর। পানিতে পোড়ে বাংলার কৃষকের কপাল। কখনো পানিতে পোড়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলীদের কপালও।
সুনামগঞ্জের অকালবন্যা নিয়ে বিস্তর বাগ্বিস্তার হচ্ছে। টক শো থেকে কেউ দোষ দিচ্ছেন উজানের ঢলের, কেউ আসামির কাঠগড়ায় খাড়া করছেন বেচারা বাঁধকে। হতভাগ্য কৃষকেরা দোষ দিচ্ছেন বিধাতার এবং তাঁদের নিজেদের কপালের। প্রথম কয়েক দিন আমিও সংবাদ সম্মেলন করে এবং বিভিন্ন মিডিয়ার সঙ্গে আলোচনায় দোষারোপ করে তির ছুড়েছি এদিক-ওদিকে। কিন্তু পরে ভেবে দেখলাম, আমরা কেউই আসল কাজটি করিনি। আমাদের প্রথমেই ত্রাণ তৎপরতা প্রভৃতি নিয়ে হাহাকার না করে বসে পর্যালোচনা করা উচিত ছিল, নির্মম বানের পানিতে যদি এবার হাওরের ধানখেত ভেসে না যেত, তাহলে কী হতো। আমাদের ভাবা উচিত ছিল, ঘটনাটি নয়—ঘটনাটি না ঘটলে কী হতো।
বেরসিক বানের পানি নিয়ে যখন সংবাদমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে, তখন বন্যাকে নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা রাখেন এমন মাননীয় মন্ত্রী বললেন, এই বন্যা থেকে ‘শিক্ষা’ নেওয়ার আছে। অতি উত্তম কথা। আমাদের সরকারের কর্তাদের শিক্ষার জন্য এত বড় একটা সর্বনাশের প্রয়োজন হলো! মাননীয়দের শিক্ষা গ্রহণ করতে একটা সর্বনাশা বন্যার প্রয়োজন? আজ সুনামগঞ্জের শাহ আবদুল করিম বেঁচে থাকলে গান বাঁধতেন: ‘ইশকুল খুইলাছে রে বন্যা ইশকুল খুইলাছে,/ উজান হইতে ঢল আসিয়া ইশকুল খুইলাছে।’
বন্যার ইশকুলের যে পাঠ্যবই, তা আমাদের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পাঠ্যবইগুলোর মতো দুর্বল রচনাসমৃদ্ধ ও ভুলভালে ভর্তি নয়। মাস্টার হিসেবে বন্যাও ফাঁকিবাজ নয়। বন্যার পাঠ্যসূচি নিখুঁত। তবে তা ঠিকমতো মুখস্থ করার মতো শিক্ষার্থী বন্যা ২০২১ বা ২০৪১ সালের মধ্যে পাবে কি না, তাতে অনেকের সন্দেহ আছে।
বন্যা মাস্টার সাহেবের টেক্সট বইতে কী কী বিষয়ে রচনা রয়েছে? একটি রচনা রয়েছে সুনামগঞ্জের হাওর এলাকার ভৌগোলিক অবস্থান নিয়ে। হাজার হাজার বছর ধরে ওই এলাকার ভূপ্রকৃতি একই রকম, এ বছর সে ভূগোলে কোনো নতুন পরিবর্তন আসেনি। এরপর আরেকটি রচনার বিষয়বস্তু, তাহলে এ বছর এ রকম হলো কেন? একটি রচনা রয়েছে হাওর এলাকার বাঁধ নিয়ে। ওই এলাকায় বাঁধ তো এখনকার মতো চিরকাল ছিল না, তবু কৃষক ফসল ফলিয়ে এবং জেলে মাছ ধরে সুন্দরভাবে বেঁচেবর্তে ছিলেন। পাহাড়ি ঢলও চিরকাল ছিল। আজ কেন এ অবস্থা? বন্যার ইশকুলে কৃষি বিষয়ে এমন রচনা রয়েছে, যা আমাদের কোনো কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যসূচিতে নেই। প্রচুর ফলনশীল বিআর-২৯ প্রজাতির ধানের কথা ওই অঞ্চলের কৃষকদের পূর্বপুরুষেরা জানতেন না। প্রকৃতির মেজাজ বুঝে ফসলের চাষ করতে হয়। আগে কৃষকেরা তা-ই করতেন। কৃষি কর্মকর্তাদের দায়িত্ব পালনে অবহেলা এবং বেশি ফলনের প্রলোভন দেখিয়ে একশ্রেণির এনজিওর লোকের বিশেষ জাতের ধানের চারা রোপণের পরামর্শ ফসল বিপর্যয়ের অন্যতম কারণ—সে কথা বানের পানি জানে, অন্য কেউ না জানলেও।
গত ১০-১৫ বছরে বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে হাওর অঞ্চলের সমস্যা নিয়ে আমরা শীতাতপনিয়ন্ত্রিত কক্ষে এবং প্রেসক্লাবের সামনে কাঠফাটা রোদে আলোচনা ও মানববন্ধন-সমাবেশ করেছি। আমরা হাওরবিশেষজ্ঞ নই। চোখ দিয়ে কোনো সমস্যা দেখলে তা সমাধানের জন্য সরকারকে বলি। অনভিজ্ঞ লোকদের কথা সরকার শুনবে কি শুনবে না, তা সম্পূর্ণ সরকারের এখতিয়ার।
কয়েক দিন আগে বৃহত্তর সিলেট অঞ্চলের বিভিন্ন জেলা ঘুরেছি। খালি চোখেই দেখা যায় হাওরের অবস্থা। নদ-নদী, হাওর-বাঁওড়, খাল-বিল আমাদের সম্পদ, সমস্যা নয়। কিন্তু সেই সম্পদকে সমস্যা বানায় আমাদের রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা। কর্মকর্তাদের চেয়ে স্থানীয় কৃষক ও মৎস্যজীবীদের সঙ্গে কথা বলে প্রকৃত পরিস্থিতি জানা যায়। আমার প্রশ্ন, অসময়ে বানের পানিতে পাকা ধান তলায়নি, ডুবেছে কাঁচা ধান? তা হলো কেন? কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের কর্মকর্তারা ছাড় পাবেন কেন? তাঁরা এনজিওর পরামর্শমতো বিআর-২৯ রোপণে কৃষকদের বারণ করেননি কেন? যে ধান পাকতে ১৬০-৬৫ দিন লাগে, তার বীজতলা সেই রকম সময়, অর্থাৎ কার্তিক মাসের দিকে করা উচিত ছিল।
খাদ্য বলতে আমাদের সরকার বোঝে শুধু চাল। তাদের কাছে খাদ্যের সংজ্ঞা হলো ভাত। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ খাদ্য বলতে বোঝে ভাত, রুটি, ডাল, শাক, মাছ-মাংসের তরকারি। বাংলাদেশের মানুষের মাছের একটি বড় উৎস হাওর। কিন্তু হাওরের মৎস্যসম্পদ উন্নয়নের জন্য কর্তৃপক্ষের প্রচেষ্টা একেবারে নেই তা নয়, কিন্তু হাওর এলাকার জনপ্রতিনিধিদের অর্থনৈতিক উন্নয়নের দিকেই সরকারের ঝোঁক।
হাওর-বাঁওড় জনগণের সম্পত্তি, কিন্তু বেওয়ারিশ সম্পত্তি নয়। মোগল আমলে লাখেরাজ সম্পত্তি তার মোতোয়ালিরা ভোগদখল করতেন জনগণের সেবা করার নামে। লাখেরাজ প্রথা এখন আর নেই, কিন্তু একধরনের মোতোয়ালি রয়ে গেছেন। কথিত জনপ্রতিনিধিরা একালের জনগণের মোতোয়ালি। দেশে একটি হাওর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ রয়েছে। হাওর উন্নয়ন খাতে বরাদ্দ ক্রমাগত বাড়ছে, কিন্তু সেই টাকা দিয়ে হাওর এলাকার মানুষের কী উন্নয়নটা হচ্ছে, তা তারা জানে না।
বর্তমান অর্থবছরে হাওর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ২ হাজার ৫৩৩ কোটি টাকা। কম টাকা নয়। এই অর্থ থেকে একটি অংশ হাওর এলাকায় বাঁধ নির্মাণে ব্যয় করবে কর্তৃপক্ষ। সেই কাজের পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নের দায়িত্ব সরকারের ‘প্রকল্প বাস্তবায়ন সংস্থা’র, যার ইংরেজি নাম প্রজেক্ট ইমপ্লিমেন্টেশন কমিটি, সংক্ষেপে পিআইসি। প্রতিটি এলাকায় পিআইসি গঠনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে স্থানীয় সাংসদদের। বঙ্গীয় জনপ্রতিনিধিদের যোগ্যতা, সততা, বিশেষ করে সততা ও চারিত্রিক সংহতি নিয়ে প্রশ্ন তোলে, এমন স্পর্ধা কোন নাগরিকের আছে? তাঁদের দেশপ্রেম ও জনগণের জন্য অপার ভালোবাসা সম্পর্কে সন্দেহ পোষণ করে, এমন নির্বোধ কেউ নেই। ভোটাররা দেখছেন তাঁদের আপদে-বিপদে তাঁরা সব সময় তাঁদের ‘পাশে’ আছেন। যেমন এবার সুনামগঞ্জের হাওরের বিপর্যয়ের সময় সেখানকার সব জনপ্রতিনিধি হাওর অঞ্চলের মানুষ এবং তাদের মরা মাছ, হাঁস ও মোষের পাশেই ছিলেন!
বর্তমান অর্থবছর শেষ হয়ে এল। হাওর উন্নয়নে জেলা প্রশাসনের কাছে যে অর্থ আছে, তা কী কী কাজে ব্যয় হয়েছে বা হতে যাচ্ছে বা হতে পারে, তার একটা হিসাব-নিকাশ এই বিপর্যয়ের পর হতে পারত। কিন্তু হয়েছে—সে রকম সংবাদ কাগজে দেখিনি। বাঁধ নির্মাণে ঠিকাদারদের কাজের তদারক করার দায়িত্ব শুধু পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলীদের নয়, নৈতিক দায়িত্ব সবচেয়ে বেশি জনপ্রতিনিধিদের। ঠিকাদারদের সঙ্গে লেনদেন ও ভাগ-বাঁটোয়ারা শুধু সরকারি কর্মকর্তারা করেন না, জনপ্রতিনিধিদের সন্তুষ্টি বিধান না করে কোনো কিছুই কারও পক্ষে করা সম্ভব নয়। ঠিকাদারেরা খাম সবাইকেই দেন এবং দিতে বাধ্য। ছাত্র-যুবনেতাদের যে কী পরিমাণ দিতে হয়, তা ঠিকাদারেরাই ভালো জানেন।
ঠিকাদারদের ওপর খবরদারি করা এবং তাঁদের নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা মাননীয়দেরই সবচেয়ে বেশি। শুধু পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের বলির পাঁঠা বানালেই চলবে না, তাঁরা বলির পাঁঠা হলে জনপ্রতিনিধিদের বলির বৃষ করা উচিত। হাওরে বাঁধ নির্মাণের কাজ ঠিকঠাকমতো হচ্ছে কি হচ্ছে না, তা মিতসুবিশি-পাজেরোটা সড়কে দাঁড় করিয়ে আধা ঘণ্টার মতো চোখ দিয়ে দেখলেই বোঝা যায়। সেই কাজ যাঁরা করেন না, রাষ্ট্রের বেতন-ভাতা খেয়ে যাঁরা কর্তব্য পালন করেন না, তাঁরা শুধু নিন্দার পাত্র নন, শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেন।
হাওর লিজ দেন জেলা প্রশাসক, কিন্তু তাঁর মাথার ওপর থাকেন প্রভুর মতো এমপিরা। সুতরাং যেকোনো অন্যায় ও অপকর্মের দায় শুধু কর্মকর্তাদের ওপর চাপিয়ে রেহাই পাওয়া যাবে না। আমরা জানতাম, হাটবাজার ইজারা দেওয়া যায়। সরকারি খাসজমি পুষ্করিণী প্রভৃতি প্রজাতন্ত্রের জনগণের সম্পত্তি লিজ দেওয়ার বিধান আছে। জেলা প্রশাসকই তা দেন। জলমহাল ইজারা দেওয়ার যে নীতিমালা আছে, তাতে উন্মুক্ত হাওর লিজ দেওয়ার বিধান নেই, সে কথা ২৯ ধারায় বলা আছে। বঙ্গীয় ক্ষমতাবানেরা আইনের বিধান মানতে বাধ্য নন। তাঁরা রাস্তার উল্টো দিক দিয়ে গাড়ি হাঁকিয়ে গেলেও বেচারা ট্রাফিক পুলিশ তা আটকান, সে ক্ষমতা তঁার নেই। সুতরাং জলমহাল ইজারার বিধানগুলো তাঁদের মানতেই হবে, তার কোনো কথা নেই। তবে ক্ষমতাবানদের বুদ্ধির ঘাটতি আছে, সে কথা কোনো বেকুব ভোটারও মনে করেন না।
বলা আছে, উন্মুক্ত জলাধার ইজারা দেওয়া যাবে না, কিন্তু যদি কোনো উন্মুক্ত জলাধারকে চার দিকে একটা বাঁধের মতো দিয়ে বদ্ধ জলাশয় বানানো যায়, তাহলে আইনও মানা হলো, ইজারাও নেওয়া গেল। এইভাবেই বাংলার নদ-নদীর পাড়, বালুচর, খাল-বিল, বনভূমি সব ক্ষমতাবানদের হাতে চলে যায়। হাওর যদি লিজ দিতেই হয়, যাঁরা জেলে শুধু তাঁরাই পাবেন। মাননীয়দের মাছের কারবারে নামার দরকার কী? এমনিতেই তাঁদের বিপুল রোজগার এবং সুযোগ-সুবিধা সীমাহীন। জেলা প্রশাসক যখন হাওর লিজ দেন, তখন তাঁর তদন্ত করে দেখা উচিত যিনি লিজ চাইছেন, তিনি ও তাঁর পূর্বপুরুষ জেলে ছিলেন কি না? স্বাধীনতার আগে থেকেই রাজনৈতিক দলগুলো স্লোগান দিয়েছে, ‘জাল যার জলা তার’।
হাওর এলাকার কৃষিজীবী ও মৎস্যজীবীদের মধ্যে স্বার্থের সংঘাত রয়েছে। মৎস্যজীবীদের জন্য হাওরে সারা বছর পর্যাপ্ত পানি খুবই কাঙ্ক্ষিত। তাহলে তাঁরা সারা বছর মাছ ধরতে পারেন। ধানচাষিরা চান হাওর থেকে দ্রুত পানি সরে যাক। তাতে তাঁদের ধান বা অন্য কোনো ফসল ফলাতে সুবিধা হয়। শোনা যায়, সে জন্য কখনো কখনো তাঁরা বাঁধ কেটে দেন, যাতে দ্রুত পানি নেমে যেতে পারে। সেই কারণে হাওর অঞ্চলে উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণের সময় চাষিদের স্বার্থ এবং মৎস্যজীবীদের স্বার্থ—দুটোকেই সমন্বয় করে করা দরকার।
‘হাওর পঞ্জিকা’ বলে একটি জিনিস আছে। কৃষি বিভাগ ও মৎস্য বিভাগের কর্তারা তার পাতা ঠিকমতো ওল্টান কি না, আমরা বলতে পারব না। কোন মাসে হাওরে কোন জাতের ধান রোপণ করতে হবে, কোন মাসে মাছ ডিম দেবে, কোন মাসে কী করতে হবে, তা পঞ্জিকায় বলা আছে।
কর্মকর্তাদের দুর্নীতির দায়ে পাকড়াও করা সহজ, জনপ্রতিনিধিদের নয়। দুর্নীতিই মূল কারণ, তবে তা নিয়ে কথা বলার লোক প্রচুর। কিন্তু অদক্ষতা দুর্নীতির চেয়ে কম ক্ষতিকর নয়। দুর্নীতিতে কেউ না কেউ লাভবান হয়, কর্মকর্তাদের কর্তব্যে অবহেলা ও অদক্ষতায় জাতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। হাওরের বিপর্যয়ের জন্য জবাবদিহি করতে শুধু পানি উন্নয়ন বোর্ড, ঠিকাদার নয়, কৈফিয়ত চাইতে হবে কৃষি ও মৎস্য বিভাগের কর্মকর্তাদের কাছেও। কৈফিয়ত চাইতে হবে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কর্তাদের কাছেও।
হাওর ও জলাভূমি উন্নয়ন অধিদপ্তর রয়েছে। কিন্তু হাওর-বাঁওড়ের উন্নয়নের জন্য কোনো আইনি কাঠামো নেই। আমাদের কৃষি অর্থনীতিতে হাওরের ভূমিকা অসামান্য। কিন্তু সেখানকার মানুষই বেশি অবহেলিত।
হাজার বছর ধরে হাওরের পার্শ্ববর্তী মানুষ তাঁদের স্থানীয় জ্ঞান প্রয়োগ করে প্রকৃতির সঙ্গে বোঝাপড়া করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। সেই যে স্থানীয় জ্ঞান, তার মূল্য সামান্য নয়। তাই হাওর উন্নয়নের পরিকল্পনা প্রণয়নে স্থানীয় মানুষকে সম্পৃক্ত করা বিশেষভাবে আবশ্যক। অনেক সময় দেখা যায়, দাতাদের পরামর্শে আধুনিক প্রযুক্তি প্রয়োগে কাঙ্ক্ষিত সুফল আসে না। সে জন্য আধুনিক প্রযুক্তির সঙ্গে প্রথাগত স্থানীয় জ্ঞান যুক্ত না হওয়ায় বিপুল অর্থ অপচয় হয় কিন্তু স্থানীয় মানুষ উপকৃত হয় না। হাওর একটি প্রাকৃতিক জিনিস, তার নিজের স্বার্থে উন্নয়নের কিছু নেই। হাওর উন্নয়নের অর্থ হাওর এলাকার মানুষের উন্নয়ন।
সৈয়দ আবুল মকসুদ: লেখক ও গবেষক।

 

http://www.prothom-alo.com/opinion/article/1173846/