৩ ডিসেম্বর ২০২৩, রবিবার, ৯:১৮

হাওড়ে সার সংকটের শঙ্কা

গ্যাস সংকটে উৎপাদন বন্ধ

 

আশুগঞ্জ সার কারখানায় ৯ মাস ধরে গ্যাসের অভাবে উৎপাদন বন্ধ। তাই কারখানায় মজুত নেই ইউরিয়া সার। হাওড় এলাকার ডিলাররা বাফার গুদাম থেকে সার উত্তোলনে অনীহা প্রকাশ করছেন। এ অবস্থায় হাওড়ে সার সংকট দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

এতদিন আমদানি করা সার কারখানায় এনে কয়েকটি জেলার ডিলারকে সরবরাহ করা হতো। এর মধ্য হাওড়াঞ্চলের কিশোরগঞ্জ ও নেত্রকোনা জেলা অন্যতম। কিশোরগঞ্জের ভৈরবসহ ইটনা, মিটামইন, অষ্টগ্রাম, নিকলি এবং নেত্রকোনার খালিয়াজুরি ও মদন উপজেলা হাওড়ে অবস্থিত। এসব উপজেলার সার ডিলাররা দীর্ঘদিন ধরে নদীপথে আশুগঞ্জ সার কারখানা থেকে সার ট্রলারে এনে এলাকায় বিক্রি করত। কিন্তু বিসিআইসি হঠাৎ ডিসেম্বরে কিশোরগঞ্জ ও নেত্রকোনা জেলাকে কমান্ড এরিয়া পরিবর্তন করে দুটি জেলার বাফার গুদামে স্থানান্তর করে। বাফারগুলোর স্থান দুটি জেলার সদরে অবস্থিত। এতে ভৈরবসহ হাওড়ের কয়েকটি উপজেলার ডিলাররা বিপাকে পড়েছেন। তাদের অভিযোগ, বাফার গুদাম থেকে সার পরিবহণ কষ্টকর এবং পরিবহণ ব্যয় প্রতি বস্তায় ১০০ টাকা বেড়ে যাবে। তাছাড়া বাফার গুদামের মজুত সার শক্ত ও বস্তা ছেঁড়া-ফাটা থাকে। বাফার থেকে সার নিলে ডিলাররা লোকসানের মুখে পড়বে বলে তারা জানিয়েছেন।

বাংলাদেশ ফার্টিলাইজার অ্যাসোসিয়েশন (বিএফএ), কিশোরগঞ্জ জেলা ইউনিটের যুগ্মসম্পাদক আল-আমিন সৈকত বলেন, আমাদের নিকলি উপজেলায় নদীপথে সার পরিবহণ সহজ ও কম খরচ হয়। আশুগঞ্জ কারখানা থেকে দ্রুত সার এলাকায় পৌঁছানো যায়। অন্যদিকে কিশোরগঞ্জ বাফার গুদাম থেকে সার পরিবহণ করলে প্রতি বস্তায় ১০০/১২০ টাকা খরচ বেশি হবে। সরকার আমাদের বস্তায় কমিশন দেয় ১০০ টাকা। বাফার থেকে সার উত্তোলন করলে লোকসান দিতে হবে।

নেত্রকোনার খালিয়াজুরি উপজেলার ডিলার সাধন চন্দ্র ভৌমিক বলেন, নদীপথ ছাড়া নেত্রকোনা সদরের বাফার গুদাম থেকে সার উত্তোলন করলে দুর্ভোগ পোহাতে হবে এবং প্রতিবস্তায় ৫০/৬০ টাকা লোকসান হবে। কাজেই বাফার থেকে আমরা সার উত্তোলন করব না।

বিএফএ, কিশোরগঞ্জ জেলা ইউনিটের নির্বাহী সদস্য ও মিটামইন উপজেলার ডিলার মাইনুদ্দিন খন্দকার বলেন, বাফার গুদাম থেকে হাওড়ের ডিলাররা ডিসেম্বরে সার উত্তোলন না করলে এবার হাওড়ে ইউরিয়া সার সংকট দেখা দিতে পারে।

বিসিআইসির জেনারেল ম্যানেজার (সার বিতরণ) মঞ্জুরুল ইসলাম মোবাইল ফোনে যুগান্তরকে জানান, আশুগঞ্জ সার কারখানাটি দীর্ঘদিন উৎপাদন বন্ধ থাকায় সার মজুত নেই। ফলে দুই জেলাকে ডিসেম্বরের জন্য বাফার গুদামে বরাদ্দ দেওয়া হয়। বিদেশি সার পরিবহণ করে বাফারে নিতে পারলে আশুগঞ্জ কারখানায় কেন না নিয়ে বাফারে বরাদ্দ দেওয়া হলো-এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এর উত্তর ম্যানেজমেন্ট দিতে পারবে। হাওড়ের উপজেলাগুলো বাফারে কেন দেওয়া হলো, এর জবাবে তিনি বললেন, আশুগঞ্জ কারখানায় গ্যাস সরবরাহ করা হয়েছে। ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে কারখানায় উৎপাদন শুরু হলে আগামী মাস থেকে এ সমস্যা থাকবে না।

https://www.jugantor.com/todays-paper/news/747002