২ ডিসেম্বর ২০২৩, শনিবার, ২:৫৭

পেঁয়াজ চাল-ডাল ও আটার দাম বৃদ্ধি ॥ কমছে না সবজির দাম 

শীতের মওসুমে সবজিতে ভরপুর বাজার। কিন্তু দাম কমছে না। শুরুতে দাম কিছুটা কমলেও আবার দাম বাড়ছে। ফুলকপি, বাধা কপি, গাজর, শিম ও টমেটোর দাম বাড়তি। শিমের দাম বেড়েছে কেজিতে ২০ টাকা। বিক্রেতারা বলছেন, নতুন জাতের শিম আসাতে দাম কিছুটা বেশি। তবে কয়েক দিন পরেই কমে যাবে। এদিকে সব ধরনের পেঁয়াজের দাম কেজিতে বেড়েছে ৫ থেকে ১০ টাকা। তবে এই দাম বৃদ্ধির কারণ জানেন না বিক্রেতারা। আর গত সপ্তাহ থেকে বৃদ্ধি পাওয়া চাল চিনি আটা ও ময়দার মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যগুলো এখনো বাড়তি দামে কিনতে হচ্ছে।

গতকাল শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে দেখা গেছে, বাজারে শিম ৮০-১০০ টাকা, মৌ শিম ৬০ টাকা, শালগম ৫০ টাকা, কাঁচা টমেটো ৬০-৭০ টাকা, টমেটো ১২০-১৩০ টাকা, পেঁয়াজ পাতা ৯০-১২০ টাকা, মুলা ৪০ টাকা, গাজর ৮০-১০০ টাকা, লম্বা বেগুন ৪০ টাকা, সাদা গোল বেগুন ৬০ টাকা, কালো গোল বেগুন ৭০ টাকা, শসা ৫০-৮০ টাকা, উচ্ছে ৬০ টাকা, করল্লা ৮০, পেঁপে ৪০ টাকা, পটল ৮০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৫০ টাকা , ঢেঁড়স ৬০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, কচুর লতি ৬০ টাকা,  কাঁচা মরিচ ১২০ টাকা, ধনেপাতা ১২০ কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর প্রতিটি লাউ ৮০ টাকা, ফুলকপি ৩০-৪০ টাকা, বাঁধাকপি ৪০-৫০ টাকা ও চাল কুমড়া ৬০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া নতুন আলু বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা কেজিতে। এক্ষেত্রে দেখা যায়, শিম ও লাউয়ের দাম বেড়েছে ২০ টাকা করে। গত সপ্তাহে এসবের দাম ছিল ৬০ কেজি ও প্রতি পিস।

সবজির দাম বৃদ্ধি সর্ম্পকে বিক্রেতারা জানান, নতুন জাতের শিম আসছে, তাই দাম একটু বেশি। কয়েক দিনের মধ্যেই কমে যাবে। আর লাউ তো সারা বছরই এখন পাওয়া যায়, এখনকারটা হচ্ছে শীতের নতুন লাউ, তাই দাম কিছুটা বেশি।

এদিকে পেঁয়াজের দাম এখনও ১০০ টাকার নিচে নামেনি, উলটো বেড়েছে। দেশি পেঁয়াজ ১২০ টাকা, ক্রস জাতের পেঁয়াজ ১২০ টাকা এবং ভারতীয় পেঁয়াজ ১১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া আলুর দাম রয়েছে অপরিবর্তিত। গত সপ্তাহের মতো লাল ও সাদা আলু ৫০ টাকা দরেই বিক্রি করতে দেখা যায়। এক্ষেত্রে দেখা যায় সব ধরনের পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ৫ থেকে ১০ টাকা। দেশি পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ৫ টাকা এবং ক্রস ও  ভারতীয় জাতের পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ১০ টাকা করে। তবে নতুন পেঁয়াজ না উঠা পর্যন্ত  পেয়াঁজের দাম কমবে না বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।

চলতি বছরের আমন ধান কাটা শুরু হয়েছে। তাতে চালের বাজারে কোনো প্রভাব পড়েনি। মোটা চালের দাম আগের মতো রয়েছে। প্রতি কেজি মোটা চাল কিনতে গুনতে হচ্ছে ৫২ থেকে ৫৪ টাকা। অর্থাৎ নতুন চাল বাজারে এলেও মাসখানেক আগে যে খুচরা পর্যায়ে সবধরনের চালের দর কেজিতে ৫ থেকে ৭ টাকা বেড়েছিল, এখনও সেই দরেই বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে বিশ্ববাজারে গমের দাম বাড়ায় আটা ও ময়দার দামও বেড়েছে। খোলা আটা কিনতে এখন ক্রেতাকে গুনতে হচ্ছে কেজিতে ৪৮ থেকে ৫০ টাকা। আর প্যাকেট আটার কেজি কিনতে খরচ হচ্ছে কমবেশি ৫৫ থেকে ৬০ টাকা। একইভাবে খোলা ময়দা ৬০ থেকে ৬৫ এবং প্যাকেট আটা ৬৫ থেকে ৭৫ টাকা বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে দীর্ঘ সময় ধরে অস্থিতিশীল চিনির বাজারে কোনো সুখবর নেই। খোলা চিনির কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকা দরে। অন্যদিকে বাজারে প্যাকেটজাত চিনির সরবরাহ নাই বললেই চলে। মিললে তার জন্য গুনতে হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা। এছাড়া গত সপ্তাহের মতো অপরিবর্তিত দামেই বিক্রি হচ্ছে মুদি দোকানের পণ্য। ছোট মসুর ডাল ১৪০ টাকা, মোটা মসুরের ডাল ১১৫ টাকা, মুগ ডাল ১৪৫ টাকা, খেসারি ডাল ৯৫ টাকা, বুটের ডাল ৯৫ টাকা, ছোলা ৯০ টাকা, প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৬৯ টাকা।

এদিকে স্বস্তির বাজারে ক্রেতাদের টানছে গরুর গোশত। এখন রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার দোকানে ৬০০ টাকা কেজিতে গোশত বিক্রি হতে দেখা যায়, যা এক মাস আগের চেয়ে কেজিতে দেড়শ টাকা কম। তবে সাধারণ বাজারে এখনো আগের নিয়মে পরিমাণমতো হাড্ডিসহ  গোশতের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০০ টাকা।

গরুর গোশতের পাশাপাশি দাম কমেছে মুরগির। ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৭০ থেকে ১৭৫ এবং সোনালি জাতের মুরগির কেজি ২৭০ থেকে ২৯০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া সাদা ও বাদামি রঙের ডিমের ডজন পাওয়া যাচ্ছে যথাক্রমে ১১০ ও ১২০ টাকার মধ্যে।

বাজারে এখন মাছের সরবরাহ ভালো। তবু দাম খুব একটা কমেনি। মাঝারি মানের চাষের পাঙাশ বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ১৮০ থেকে ২০০ টাকায়। বড় আকারের চাষের তেলাপিয়া ২০০ থেকে ২২০ টাকা। আর মান ও আকারভেদে চাষের রুই মাছের কেজি পাওয়া যাচ্ছে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকার মধ্যে। তবে চিংড়ির দাম তেমন কমেনি। প্রতি কেজি কিনতে এখনও গুনতে হচ্ছে ৭০০ থেকে এক হাজার টাকা।

https://www.dailysangram.info/post/542149