৮ মে ২০১৭, সোমবার, ৮:২৬

উন্নয়নে হাজার কোটি টাকার প্রকল্প গ্রহণ করা হলেও ব্যবসা বান্ধব পরিবেশ গড়ে ওঠেনি

মংলা বন্দরের সামনে এগিয়ে যাওয়ার পথে সংকট পিছু ছাড়ছে না। বন্দরটির উন্নয়নে হাজার কোটি টাকার প্রকল্প গ্রহণ করা হলেও ব্যবসা বান্ধব পরিবেশ গড়ে ওঠেনি। বন্দর সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বর্তমানে এখানকার প্রধান সমস্যা হচ্ছে ‘চ্যানেলের নাব্যতা রক্ষা’। চ্যানেলের অ্যাংকারেজে ১০ দশমিক ৫ মিটার ড্রাফটের বড় জাহাজ (মাদার ভেসেল) চালাতে আউটার বার এলাকার নাব্যতা বাড়ানো অবশ্যম্ভাবী হয়ে পড়েছে। নাব্যতা সংকটে ব্যবসায়ীরা পদে পদে হোচট খাচ্ছেন।

মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, প্রথম দফায় ব্যর্থতার পরে নতুন আঙ্গিকে ফের পশুর চ্যানেলের গভীর খনন কাজের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। মংলা বন্দরে অধিক সংখ্যক জাহাজ ও মালামাল হ্যান্ডেল করতে নতুন এ উদ্যোগ নিয়েছে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়।
মংলা বন্দরের চীফ প্লানিং কর্মকর্তা মো. জহিরুল হক বলেন, নাব্যতা নিশ্চিত করতে পশুর চ্যানেলে ইতোমধ্যে কেপিটাল ড্রেজিং করা হয়েছে। কিন্তু এতে সাড়ে ৭ থেকে ৮ মিটারের বেশি ড্রাফটের জাহাজ বন্দর আসতে পারে না। ফলে এ্যাংকরেজ এরিয়াগুলো, আকরাম পয়েন্ট ও হারবাড়িয়ায় বেশি ড্রাফটের জাহাজ চলাচল নিশ্চিত করতে আরো ৭৩২ কোটি টাকা ব্যয়ে ড্রেজিং প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে।
জানা যায়, ২০০৬ সালে প্রথমে মংলা বন্দরের অ্যাংকারেজ এলাকায় নয় মিটারের বেশি ড্রাফটের জাহাজ চলাচলে পশুর চ্যানেলের আউটার বার এলাকার নাব্যতা বাড়াতে ‘পশুর চ্যানেল আউটার বারে ড্রেজিং’ প্রকল্পের চূড়ান্ত অনুমোদন দেয় একনেক। ৫৮ কোটি ৪৬ লাখ টাকা ব্যয়ে ২০০৬ সালের জুলাই থেকে ২০০৯ সালের জুন মেয়াদে বাস্তবায়নের কথা ছিল প্রকল্পটি। কিন্তু ড্রেজিং কাজের জন্য ছয় বার দরপত্র আহ্বান করা হলেও কোনো দরদাতা অংশ নেননি। আন্তর্জাতিক দরপত্র করা হলেও আশানুরূপ সাড়া মেলেনি। ফলে মেয়াদ শেষেও এখন পর্যন্ত প্রকল্পের বাস্তব অগ্রগতি শূন্য। আর ২০১৫ সালের জুন পর্যন্ত আর্থিক অগ্রগতি তিন লাখ টাকা, যা মোট বরাদ্দের মাত্র শূণ্য দশমিক শূণ্য পাঁচ শতাংশ।
সূত্র জানায়, ব্যর্থ হওয়া প্রকল্পের তুলনায় নতুনটিতে কাজের পরিধি বেড়েছে। এখন মনিটারিং, মডেলিং ও হাইড্রোলিক বিশেষজ্ঞের মাধ্যমে খনন করা হবে পুরো পশুর চ্যানেল। ১০৩ দশমিক ৯৫ লাখ ঘনমিটার ড্রেজিংয়ের পাশাপাশি পশুর চ্যানেলে নেভিগ্যাবিলিটি স্টাডিও করা হবে। ৭৩৩ কোটি টাকা ব্যয়ে চলতি সময় থেকে ২০১৯ সালের মেয়াদে জুন মেয়াদে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে।
মংলা বন্দরের চেয়ারম্যান কমডোর এ কে এম ফারুক হাসান বলেন, ‘নানা কারণে মংলা বন্দরের অ্যাক্টিভিটিজ বাড়ায় পশুর চ্যানেল খনন করা জরুরি। এ চ্যানেলে অনেক জাহাজও ডুবে গেছে, যেগুলো আমরা উদ্ধার করতে পারিনি, সে সক্ষমতাও আমাদের নেই। নতুন প্রকল্পের মাধ্যমে চ্যানেল খননের পাশাপাশি ডুবে যাওয়া জাহাজগুলোও উদ্ধার করা হবে।

http://www.dailysangram.com/post/282967-