২৬ নভেম্বর ২০২৩, রবিবার, ৯:১৩

গোলটেবিলে আশঙ্কা

ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়বে ডেঙ্গু

আগামী দিনগুলোতে দেশে ডেঙ্গু ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করছে রোগতত্ত্ববিদরা। সেটা ঢাকার চেয়ে ঢাকার বাইরে বেশি ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। একই সাথে রোগতত্ত্ববিদরা বলছেন, ডেঙ্গু রোগটি তখন সারা বছরের রোগ হিসেবে দেখা দেয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ২০২৩ সালটি এল নিনুর বছর থাকলেও ২০২৪ সালটি হবে লা নিনার বছর। লা নিনার কারণে ২০২৪ সালটি হতে যাচ্ছে পৃথিবীর উষ্ণতম বছর। আর উষ্ণতার সাথে ডেঙ্গু জীবাণুবাহী এডিস মশার বংশ বিস্তারের সম্পর্ক রয়েছে। তারা বলছেন, ডেঙ্গুর জীবাণুবাহী এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে না পারলে পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে। তারা জানিয়েছেন, সামনে শুধু ডেঙ্গু নয় জিকা ভাইরাসও চলে আসতে পারে। এমনকি চিকুনগুনিয়ার আরেকটি মহামারীও দেখা দিতে পারে।

গতকাল শনিবার মহাখালীর নিপসম অডিটোরিয়ামে, ‘ডেঙ্গুর বর্তমান পরিস্থিতি ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় রোগতত্ত্ববিদরা এই হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন। নিপসমের পরিচালক অধ্যাপক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরার সভাপতিত্বে আলোচনায় অন্যদের মধ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ডা: মো: আখতারুজ্জামান, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শক ডা: এ এস এম আলমগীর, আইইডিসিআরের বর্তমান পরিচালক অধ্যাপক তাহমিনা শিরিন, বুয়েটের অধ্যাপক ইসরাত ইসলাম, এপিডেমিওলজিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের মহাসচিব অধ্যাপক সোহেল রেজা চৌধুরী, আইসিডিডিআরবির ডেঙ্গু টিকার গবেষক ড. রাশিদুল হক বক্তব্য রাখেন। উপস্থাপনা করেন ড. ইকবাল কবির। বিষয়ের ওপর মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন আইইডিসিআরের উপদেষ্টা ডা: মোস্তাক হোসেন।

মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, ডেঙ্গুর এডিস ইজিপ্টাই জাতের মশা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হয়েছে। কিন্তু এডিস অ্যালবুপিক্টাস নিয়ে কোনো আলোচনা নেই। অ্যালবুপিক্টাস জাতটি ধানগাছের গোড়ার পানিতে, কলা পাতার পানিতে, এমনকি কচুপাতায় জমে থাকা পানিতে বংশ বিস্তার করতে পারে। শহুরে মশা এডিস ইতোমধ্যে গ্রামে চলে গেছে। ‘আগামী দিনগুলোতে গ্রামে ভয়াবহ আকারে ছড়িয়ে পড়তে পারে’ এ নিয়ে আমাদের কোনো আলোচনা নেই। তিনি বলেন, সামনে বড় আকারে ডেঙ্গুর ভয়াবহতা ছড়িয়ে পড়বে যদি না এখন থেকে ব্যবস্থা নেয়া না হয়। এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকেই ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণের নেতৃত্ব দিতে হবে বলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, করোনাভাইরাসের সময় একটি জাতীয় কারগিরি পরামর্শক কমিটি হয়েছিল কিন্তু ডেঙ্গু মহামারীতে এ ধরনের কোনো কমিটি করা হয়নি, করলে ভালো কাজ হতো।

অধ্যাপক ইসরাত ইসলাম বলেন, স্কুলের শিক্ষার্থী, ধর্মীয় নেতাদের ডেঙ্গু সচেতনতায় উৎসাহ দিতে হবে। বর্তমানে যেভাবে সচেতনতা প্রচার করা হয় তা কাজে আসছে না। তাহমিনা শিরিন বলেন, সাধারণ জনগণকে জড়িত করে মশা নিয়ন্ত্রণে কাজ করলে ভালো কাজে দেবে।

https://www.dailynayadiganta.com/last-page/794302