৭ মে ২০১৭, রবিবার, ১০:৩৩

ধরাছোঁয়ার বাইরে মানব পাচারকারী ও মাদক কারবারিরা

ধরাছোঁয়ার বাইরে আন্তর্জাতিক মানব পাচারকারী ও মাদক কারবারিরা। আর এই মাফিয়ারা গ্রেফতার না হওয়ার কারণেই বন্ধ হচ্ছে না মানব পাচার ও মাদক কারবার। সীমান্ত গলিয়ে প্রতিদিন কোটি কোটি টাকার মাদক দেশে প্রবেশ করছে। একই সাথে তাদের হাত হয়ে চোরাচালানের পণ্যও প্রবেশ করছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে মাঝে মধ্যে মাদকদ্রব্যসহ চোরাচালানের পণ্য আটক হলেও যারা গ্রেফতার হয় তারা হলো ক্যারিয়ার। তেমনি মানব পাচারকারীদের দালালেরা গ্রেফতার হলেও ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যায় মূল হোতারা।

চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এপ্রিল মাস পর্যন্ত বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ-বিজিবি ৫১৪ কোটি ৬১ লাখ ৯০ হাজার টাকা মূল্যের বিভিন্ন প্রকারের চোরাচালান ও মাদকদ্রব্য আটক করে। সীমান্ত দিয়ে এগুলো এ দেশে প্রবেশ করছিল। শুধু এপ্রিল মাসেই আটক করা হয় ১৮৫ কোটি ৩০ লাখ ১৬ হাজার টাকা মূল্যের বিভিন্ন প্রকারের চোরাচালান ও মাদকদ্রব্য। এর মধ্যে বিপুল মাদকদ্রব্য রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে ৪১ লাখ ৮৩৬ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট, ২৭ হাজার ৫০২ বোতল ফেনসিডিল, ৯৮৫ কেজি গাঁজা, ১৭ হাজার ৫৮৭ বোতল বিদেশী মদ, চার কেজি ১১৩ গ্রাম হেরোইন, দুই হাজার ৫৯৬টি নেশাজাতীয় ইনজেকশন এবং ১৬ লাখ ৭৫ হাজার ৮৭৮ পিস বিভিন্ন প্রকারের অবৈধ ট্যাবলেট রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এখনো সাগরপথেই বেশির ভাগ মানব পাচারের ঘটনা ঘটছে। আর এই সাগরপথেই কারবারিরা মারণ নেশা ইয়াবার চালান এ দেশে নিয়ে আসছে। সম্প্রতি বেশ কয়েকটি ইয়াবার বড় চালান আটক করেছে র্যাব। যেগুলোর সবই এসেছে সাগর পথে। সম্প্রতি র্যাব মানব পাচারকারীদের কয়েকটি চক্র গ্রেফতার করেছে। যারা দেশ থেকে লোক পাচার করে বিদেশের মাটিতে আটকে মুক্তিপণ আদায় করত। তবে ওই সব ঘটনার মূল হোতারা এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে বলে জানা গেছে।
সাগরপথে মানব পাচারে ৭৯ গডফাদারের নাম গত কয়েক বছর ধরেই শোনা যাচ্ছে। সেখানে কয়েকজন জনপ্রতিনিধির নামও রয়েছে। পুলিশ ও গোয়েন্দাদের দেয়া একাধিক প্রতিবেদনে ওই ৭৯ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। সর্বোচ্চ দফতরগুলোতেও তাদের তালিকা রয়েছে।
পুলিশ ও গোয়েন্দাদের অনুসন্ধানে যাদের নাম উঠে এসেছে তাদের মধ্যে মো: ধলু হোসেন, মো: ইউনুছ, ইসমাইল, ফিরোজ আহমদ, দেলোয়ার, মো: সাহাব মিয়া, মো: শরীফ হোসেন, শরীফ হোসেন ভুলু, সাহেদুর রহমান নিপু, হামিদ হোসেন, জহির উদ্দিন ওরফে কানা জহির, মৌলভী আজিজ, নূর হাকিম মাঝি, নূর মোহাম্মদ মেম্বার, মৌলভী বশির ওরফে ভাইলা, নজির আহমদ ওরফে নজির ডাকাত, আবদুল হামিদ, গুরা মিয়া, মো: কাসেম ওরফে জিমা কাসেম, মো: ইসলাম ওরফে বাগু, জাফর আলম, আক্তার কামাল, শাহেদ কামাল, আবদুর গফুর, হেবজ রহমান ওরফে হেবজ মাঝি, মো: নুরুল হুদা, মো: নুরুল কবির, আমান উল্লাহ ওরফে আনু এবং নুরুল হক ভুট্টু, বেলাল উদ্দিন, নূর হোসেন, নুরুল আলম, এনায়েত উল্লাহ, মো: সেলিম, মো: হোসেন, জাফর আহমদ, মো: শফিক, আবু তাহের, মো: জাফর, আলী মাঝি, সামসুল আলম, মো: সাব্বির আহমদ, মো: কামাল হোসেন, মো: হাসান, মো: কবির হোসেন, মো: কবির হোসেন, সাদ্দাম, আবুল কালাম, মো: শরীফ, মো: লিটন, মো: আবুল হাসেম, মো: দলিল আহমদ, সিদ্দিক আহমদ, ফয়েজ, নুরুল ইসলাম ওরফে কালা পুতু, জাহাঙ্গীর, মীর আহমদ, মো: শাকের মাঝি, নুরু মাঝি, হাফেজ মোক্তার, মো: সৈয়দ আলম, আব্দুর রহিম, আলী আহমদ ওরফে আলী বলি, নুরুল ইসলাম মাঝি, আইয়ুব আলী মাঝি, আল মাসুদ, জাহাঙ্গীর, সোহাগ আবদুল্লাহ, কবির ওরফে ডা: কবির, মো: আলম ওরফে মাত আলম, এনায়েত উল্লাহ, মো: শামসুল আলম, আবদুস সালাম ওরফে আবদু কোম্পানি ও আজিজুল ইসলাম ওরফে পুতুইয়া অন্যতম।

 

http://www.dailynayadiganta.com/detail/news/217980