১১ নভেম্বর ২০২৩, শনিবার, ১০:৫৮

হজের বিমান ভাড়া কমাতে হাবের আবেদনে সাড়া মেলেনি

 

হজ প্যাকেজ থেকে বিমান ভাড়া কমাতে বেসরকারি এজেন্সি মালিকরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানালেও এখনো সাড়া মেলেনি। সে জন্য এখনো বেসরকারি হজ প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়নি। এর মধ্যেই আগামী ১৫ নভেম্বর থেকে হজযাত্রীদের নিবন্ধন শুরুর ঘোষণা দিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। এ দিকে এবার টাকা বেশি দিলেই মিলবে হজযাত্রীদের সুযোগ সুবিধা। এ জন্য সাধারণ হজ প্যাকেজকে ছয়টি ক্যাটাগরিতে এবং প্রথমবারের মতো ঘোষিত বিশেষ প্যাকেজও তিনটি ক্যাটাগরিতে ভাগ করা হয়েছে।

চাঁদ দেখাসাপেক্ষে আগামী বছরের ১৬ জুন পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে। বাংলাদেশ থেকে এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজ করতে পারবেন। এর মধ্যে সরকারি মাধ্যমের কোটায় ১০ হাজার ১৯৮ জন ও বেসরকারি এজেন্সির কোটায় এক লাখ ১৭ হাজার জন হজ পালন করতে পারবেন।

 

ধর্ম মন্ত্রণালয় গত বৃহস্পতিবার এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, আগামী ১৫ নভেম্বর থেকে ২০২৪ সালের হজে যেতে ইচ্ছুক বাংলাদেশীদের নিবন্ধন শুরু হবে। প্রথম দফা নিবন্ধন চলবে ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত। সরকারি ও বেসরকারি দুই মাধ্যমেই একই দিনের নিবন্ধন শুরু হবে বলে ধর্ম মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। তবে সরকারিভাবে হজ প্যাকেজ ঘোষণা করলেও বেসরকারি এজেন্সি মালিকদের পক্ষ থেকে এখনো প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়নি। হাবের পক্ষ থেকে গত ৫ নভেম্বর বিমান ভাড়া কমানোর জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে লিখিত আবেদন করা হয়েছিল। কিন্তু গতকাল পর্যন্তও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি বলে হাবের সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম নয়া দিগন্তকে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন করা হয়েছিল, তবে এখনো কোনো উত্তর পায়নি। এখনো আমরা অপেক্ষায় আছি। আগামীকাল রোববার বেসরকারি হজ প্যাকেজ ঘোষণা করা হতে পারে বলে তিনি জানান।

গত ২ নভেম্বর ধর্ম প্রতিমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী, সরকারিভাবে আগামী বছর হজে যেতে সাধারণ প্যাকেজে পাঁচ লাখ ৭৮ হাজার ৮৪০ টাকা খরচ ধরা হয়েছে। বিশেষ হজ প্যাকেজের মধ্যমে হজ পালনে খরচ হবে ৯ লাখ ৩৬ হাজার ৩২০ টাকা। সরকারি হজ প্যাকেজের সাথে সমন্বয় করে হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) হজ প্যাকেজ ঘোষণা করবে।

ধর্ম মন্ত্রণালয়ের বৃহস্পতিবারের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, প্রাক-নিবন্ধনের সময় নেয়া ২৯ হাজার টাকা বাদে প্যাকেজের বাকি টাকা দিয়ে নিবন্ধন সম্পন্ন করতে হবে। বিজ্ঞপ্তিতে আরো জানানো হয়, নিবন্ধনের জন্য হজযাত্রীদের পাসপোর্টের মেয়াদ আগামী বছরের ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত থাকতে হবে। হজযাত্রীরা নিবন্ধনের আগে হজ প্যাকেজ সম্পর্কে অবহিত হয়ে নিবন্ধন করবেন, নিবন্ধনের পর প্যাকেজ পরিবর্তনের সুযোগ থাকবে না। নিবন্ধনের পর হজে যেতে অসমর্থ হলে এরই মধ্যে ব্যয় করা অর্থ কেটে রাখার পর অবশিষ্ট অর্থ ফেরত দেয়া হবে। হজের খরচ বেড়ে গেলে তাও হজযাত্রীকে পরিশোধ করতে হবে। হজযাত্রীর সুযোগ সুবিধা উল্লেখ করে হজ এজেন্সি হজযাত্রীর সাথে লিখিত চুক্তি সম্পাদন করবে। এজেন্সি তার নিবন্ধিত হজযাত্রীর সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ প্রতিস্থাপন করতে পারবে বলে নিবন্ধনের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

এ দিকে নিবন্ধনের বিজ্ঞপ্তিতে সরকারিভাবে যাওয়া হজযাত্রীদের সাধারণ প্যাকেজ সুযোগ সুবিধা বিবেচনায় ছয়টি ক্যাটাগরিতে এবং বিশেষ প্যাকেজ তিনটি ক্যাটাগরিতে ভাগ করা হয়েছে। সুযোগ সুবিধা বিবেচনায় খরচও বাড়িয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। সাধারণ প্যাকেজে মক্কা ও মদিনায় প্রতি রুমে ছয়জন থাকতে হবে। সাধারণ প্যাকেজের সাথে ট্রেন সুবিধা নিলে খরচ পড়বে পাঁচ লাখ ৮৭ হাজার ৩৯০ টাকা, দুই সিটের রুমে থাকলে আট লাখ ৬১ হাজার ১৯২ টাকা, ট্রেনসহ দুই সিটের রুমে থাকলে আট লাখ ৬৯ হাজার ৭৪২ টাকা, তিন সিটের রুমে থাকলে সাত লাখ ২০ হাজার ১৬ টাকা এবং ট্রেনসহ তিন সিটের রুমে থাকলে সাত লাখ ২৮ হাজার ৫৬৬ টাকা খরচ পড়বে। এর সাথে পশু কোরবানির খরচ আলাদা দিতে হবে। সাধারণ প্যাকেজের হজযাত্রীরা মিনায় ডি ক্যাটাগরির তাঁবুতে থাকবেন এবং মিনা-আরাফাহ-মুজদারিফাহ-মিনায় ট্রেন বা বাসে যাতায়াত করবেন। মক্কায় বাড়ি হবে সর্বোচ্চ দুই হাজার মিটার দূরে ও মদিনায় দেড় হাজার মিটারের মধ্যে।

বিশেষ প্যাকেজে প্রতি রুমে চারজন থাকবেন। তবে দুই সিটের রুমে থাকলে ১১ লাখ ৯০ হাজার ৪৩৬ টাকা খরচ পড়বে। তিন সিটের কক্ষে থাকলে খরচ পড়বে ১০ লাখ ২১ হাজার ২৫ টাকা। এর সাথে পশু কোরবানির খরচ আলাদা দিতে হবে। বিশেষ প্যাকেজের হজযাত্রীরা মিনায় এ ক্যাটাগরির তাঁবুতে থাকবেন এবং মিনা-আরাফাহ-মুজদারিফাহ-মিনায় শুধু বাসে যাতায়াত করবেন। মক্কায় বাড়ি হবে সর্বোচ্চ ৭০০ মিটার দূরে ও মদিনায় মারকাজিয়া এলাকায়।

 

https://www.dailynayadiganta.com/first-page/790621