ফাইল ছবি
৬ মে ২০১৭, শনিবার, ১০:০০

বিশ্ববাজারে দাম কমলেও দেশে কমে না

বাজারে অস্থিরতা কারণ ছাড়াই

রমজান মাস সামনে রেখে বাজারে সক্রিয় হয়ে উঠেছে অসাধু ব্যবসায়ীচক্র। সরবরাহ পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক থাকা সত্ত্বেও সরবরাহে ঘাটতি, আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্যবৃদ্ধি, হাওর অঞ্চলে ফসলহানির মতো নানা অজুহাত তুলে নিত্যপণ্যের বাজার অস্থিতিশীল করে তোলা হচ্ছে। ইতিমধ্যে চালের বাজার পুরোপুরি লাগামহীন হয়ে পড়েছে। চিনির বাজারেও দেখা দিয়েছে অস্থিরতা। ভোগান্তিতে পড়েছেন ক্রেতারা। অতীতের তিক্ত অভিজ্ঞতা বিবেচনায় রমজান মাসে বাজার আরো অস্থির হয়ে ওঠার শঙ্কায় তারা।
অধিক মুনাফার আশায় প্রতিবছরই রমজানের আগে নিত্যপণ্যের বাজার অস্থিতিশীল করে তুলতে পাঁয়তারা চালায় ব্যবসায়ীদের একটি গ্রুপ। সরকারের সঙ্গে বৈঠক করে ভোক্তাদের স্বার্থরক্ষায় গালভরা বুলি কপচে নানা আশ্বাস দিলেও পরবর্তী সময়ে তা রক্ষা করে না বেশির ভাগ ব্যবসায়ী। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি।
দেশে বাজারকে স্বাভাবিক রাখতে ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তর, টিসিবি, প্রতিযোগিতা কমিশন, ট্যারিফ কমিশন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বাজার মনিটরিং বিভাগসহ আরো বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান কাজ করে। সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, বাজার নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে থাকা এসব প্রতিষ্ঠানের কর্মতত্পরতা অনেকটাই স্থবির হয়ে আছে। যথাযথ নজরদারি না থাকায় নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে অসাধু ব্যবসায়ীচক্র।
রমজানে সারা দেশের বাজারে নিত্যপণ্যের যে চাহিদা রয়েছে সে তুলনায় মজুদের পরিমাণ যথেষ্টই সন্তোষজনক। রমজানে চাহিদা পর্যালোচনায় দেখা গেছে, আড়াই লাখ টন করে সয়াবিন তেল ও চিনি, ১৫ হাজার টন খেজুর, ৫০ হাজার টন ডাল ও তিন লাখ টন পেঁয়াজের চাহিদা রয়েছে। গত সপ্তাহে বাণিজ্যমন্ত্রীর সঙ্গে এক বৈঠকে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, সব পণ্যের যথেষ্ট মজুদ রয়েছে এবং তা অন্যান্য বছরের চেয়ে বেশি। সুতরাং সরবরাহে ঘাটতির যুক্তি দেখিয়ে দাম বাড়ানোর কোনো কারণ নেই।
চট্টগ্রাম চেম্বার ও খাতুনগঞ্জ ট্রেড অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট মাহবুবুল আলম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘রমজান মাস সামনে রেখে এবার কেবল ছোলা ছাড়া অন্যান্য নিত্যপণ্য যেমন তেল, চিনি, মসুর ডালের পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে। রমজানে এসব পণ্যের দাম বাড়ার তেমন কোনো কারণ নেই। ’ বাস্তবতা হলো—অসাধু ব্যবসায়ীরা কোনো যুক্তি মানছে না। তারা নানামুখী খোঁড়া অজুহাত তুলে দাম বাড়িয়ে চলেছে।
সয়াবিন তেল : বিশ্ববাজারে গত বছরের অক্টোবরে অপরিশোধিত সয়াবিন তেলের দাম ছিল প্রতি মেট্রিক টন ৮৫৮ ডলার। দুই মাস না যেতেই আবারও দাম বেড়ে তা পৌঁছে যায় ৯১১ ডলারে (বিশ্বব্যাংকের তথ্যানুযায়ী)। যেহেতু বিশ্ববাজার থেকে অপরিশোধিত তেল এনে প্রক্রিয়াজাত করে বাজারজাত করার কারণে দেশে এই নিত্যপণ্যের দাম বাড়বে এটাই স্বাভাবিক।
জানা গেছে, দেশের বাজারে এর প্রভাব পড়ে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসের শেষদিকে। লিটারপ্রতি ন্যূনতম পাঁচ টাকা বাড়িয়ে দেয় বাজারজাতকারী কম্পানিগুলো। আর তেলের বাজার নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সিটি গ্রুপ, মেঘনা ও বাংলাদেশ এডিবল অয়েল লিমিটেড অন্যতম।
এদিকে কিছুদিন পর থেকেই বিশ্ববাজারে সয়াবিন তেলের দাম কমতে থাকে। ট্যারিফ কমিশনের আন্তর্জাতিক বাজার মনিটরিং সেলের তথ্যানুযায়ী, বর্তমানে বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত সয়াবিন তেল প্রতি টন বিক্রি হচ্ছে ৮০০ ডলারে। বেশ কিছুদিন ধরেই এই দাম স্থিতিশীল পর্যায়ে রয়েছে। তবে দেশের বাজারে সয়াবিন তেলের দাম কমানো হয়নি। এটিকেও স্থিতিশীল রাখা হয়েছে, তবে বর্ধিত অবস্থায়।
রাষ্ট্রায়ত্ত বাজার নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) বাজারদরের হালনাগাদ তথ্যে দেখা গেছে, প্রতি লিটার সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে সর্বোচ্চ ১০৬ টাকায়। গত বছরের একই সময়ে তা ছিল সর্বোচ্চ ৯৫ টাকা। অর্থাৎ এক বছরে দুই দফায় ১১.৩৫ শতাংশ দাম বাড়ানো হয়েছে। আর পাঁচ লিটারের ক্যানে এক বছরে দাম বেড়েছে ১৪.১২ শতাংশ।
চাল : চলতি বছরের শুরু থেকেই চালের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ার বিষয়টি বেশ আলোচনায় ছিল। দাম বেড়েছে কয়েক দফায়। এখনো তা বেড়েই চলেছে। প্রথম দফায় কোনো কারণ ছাড়াই ফেব্রুয়ারিতে কেজিপ্রতি দুই-তিন টাকা করে চালের দাম বাড়িয়ে দেয় ব্যবসায়ীরা। তারপর আরো একবার। অথচ ওই সময় চালের সরবরাহে কোনো প্রকার ঘাটতি ছিল না বলে ব্যবসায়ীরাই খাদ্য মন্ত্রণালয়কে জানায়। তথ্য মতে, সরকারকে চাপে রেখে ভারত থেকে চাল আমদানির (ভ্যাট ২৫ শতাংশ) সুবিধা গ্রহণ করাই ছিল বাজার অস্থিতিশীল করার মূল লক্ষ্য। চাল আমদানিতে আরোপিত ভ্যাট প্রত্যাহারের জন্যই বারবার চাপ দিচ্ছিল তারা। খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম চাল ব্যবসায়ীদের ডেকে দাম না বাড়াতে সতর্ক করে দিয়েছিলেন। কিন্তু ইতিমধ্যে দাম যে পর্যায়ে উঠে গেছে তা কমানোর কোনো কথা ব্যবসায়ীদের বলা হয়নি।
এর কিছুদিন যেতে না যেতেই আরেক দফা চালের দাম বেড়ে যায়। মিল মালিকদের বরাত দিয়ে অজুহাত তোলা হয়, হাওরে অকাল বন্যায় ফসলহানিতে ধানের সরবরাহ কমে গেছে। কারণ ওই ধান দিয়েই বাজারে নতুন চালের সরবরাহ শুরু হয়। হাওরে প্রায় ছয় লাখ টন বোরো ধান নষ্ট হয়ে যাওয়ায় নতুন চালের অপেক্ষা দীর্ঘায়িত হয়েছে। তার প্রভাব পড়েছে চাল উৎপাদনে। আর সরবরাহ কমে যাওয়ায় বেড়ে গেছে চালের দাম। আর সেই দাম বাড়ার প্রবণতা এখনো প্রায় নিত্যদিন চলছে।
এদিকে সরকারের পক্ষ থেকে বারবার বলা হচ্ছে যে দেশে খাদ্যের কোনো সংকট নেই। তবে ফসলহানির অজুহাতে চালের বাজার লাগামহীন করে তোলা কেন? খাদ্যমন্ত্রী দুই দিন আগে এক সভায় এ প্রসঙ্গে বলেন, একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী যারা সুযোগ পেলেই বাজারকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা চালায়, এটা তাদের কারসাজি।
টিসিবির তথ্য মতে, সবচেয়ে বেশি মানুষ যে মোটা চালের নিয়মিত ভোক্তা, সেই চালের দাম বেড়েছে সবচেয়ে বেশি। বর্তমানে মানভেদে এই চাল বিক্রি হচ্ছে ৪২ থেকে ৪৫ টাকা কেজি, যা গত বছরের একই সময়ে ছিল ৩২ থেকে ৩৪ টাকা। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে মোটা চালের দাম কেজিতে বেড়েছে ১০ থেকে ১১ টাকা বা ৩১.৮২ শতাংশ। অন্যান্য চালের দামও গত বছরের এই সময়ের তুলনায় অনেকটা বেড়ে গেছে বলে টিসিবির তথ্যে দেখা গেছে। এখন নতুন ধান আসার পরও বাজারে ‘না কমার’ বরাবরের চিত্র বহাল থাকবে নাকি চালের দাম উল্লেখযোগ্য হারে কমে আসবে তা নিয়ে সংশয়ে আছে ক্রেতারা।
চিনি : পাইকারি ও খুচরা বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, খোলাবাজারে চিনির দাম বেড়ে গেছে। পাইকারি বাজারে প্রতি বস্তা (৫০ কেজি) চিনিতে বেড়েছে প্রায় ৪০০ টাকা। অথচ স্থিতিশীল রয়েছে অপরিশোধিত চিনির পাইকারি বাজার। আগের দর ২১০০ টাকায় তা বিক্রি হচ্ছে। পাইকারি বাজার স্থিতিশীল থাকার প্রধান কারণ হলো আন্তর্জাতিক বাজারে দীর্ঘদিন ধরেই স্থিতিশীল রয়েছে চিনির দর। ট্যারিফ কমিশনের বাজার মনিটরিং বিভাগের দেওয়া তথ্যানুযায়ী, আন্তর্জাতিক বাজারের অপরিশোধিত প্রতিটন চিনি বিক্রি হচ্ছে ৪২৫ ডলারে।
এই হিসাব বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, আন্তর্জাতিক বাজার থেকে কেনা প্রতিকেজি অপরিশোধিত চিনির দাম পড়ে প্রায় ৩৬ টাকা ৫০ পয়সা (এক ডলারের দাম ৮২ টাকা হিসেবে)। এর সঙ্গে ট্যাক্স ও আমদানি খরচ যোগ করে পাইকারি বাজারে এই চিনি বিক্রি হচ্ছে ৪২ থেকে ৪৩ টাকা কেজি। পরিশোধনের পর তা পাইকারি বিক্রি হচ্ছে প্রায় ৬৪ টাকায়। অথচ তিন-চার দিন আগেও তা ছিল ৫৬ থেকে ৫৮ টাকা কেজি।
টিসিরি বাজারদরের হালনাগাদ তথ্যানুযায়ী, বাজারে বিভিন্ন কম্পানির চিনি বিক্রি হচ্ছে ৬৫ থেকে ৭০ টাকায়। যদিও খোলাবাজারে প্রকৃত অর্থে খোলা ও প্যাকেট চিনি বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৭৫ টাকায়। তবে টিসিবির বর্তমানের দামের হিসাব করলেও দেখা গেছে, এক বছর আগে চিনির দাম ছিল ৫০-৫৪ টাকা। গত বছর লোকসান কমানোর জন্য চিনি শিল্প করপোরেশন তাদের চিনির দাম বৃদ্ধি করে। দেখাদেখি অন্যরাও চিনির দাম বাড়িয়ে দেয়। তবে চিনি আমদানিতে ট্যাক্স আরোপের নতুন হার ও পদ্ধতি আমদানি খরচ বাড়িয়েছে বলে জানা গেছে। এক বছরের ব্যবধানে চিনি কিনতে হলে এখন ৩০ শতাংশ বেশি খরচ করতে হচ্ছে।
দাম বৃদ্ধির কারণ জানতে চাইলে বাংলাদেশ চিনি ব্যবসায়ী সমিতির আবুল হাশেম কালের কণ্ঠকে জানান, আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত চিনির দামে কোনো অস্থিরতা নেই। সম্প্রতি তা বস্তাপ্রতি ২০ থেকে ৫০ টাকা কমে ২১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু সমস্যা হয়েছে রেডি চিনির বাজারে। মেঘনা গ্রুপের প্রসেসিং মিল বন্ধ এবং সিটি গ্রুপ বাজারে কম চিনি ছাড়ছে বলে অভিযোগ তুললেন এই ব্যবসায়ী। আর এ কারণেই মূলত চিনির দাম বেড়েছে বলে অভিমত তাঁর।
মেঘনা গ্রুপের প্রধান বিপণন কর্মকর্তা নাসির উদ্দিন বলেন, ‘খুব দ্রুত মিলটি চালু করার জন্য আমরা কাজ করছি। মাঝে ডলারের দাম বৃদ্ধির কারণে দাম বেড়েছিল। ’ আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমলেও দেশে কমে না—এ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘দাম বাড়াতে গেলে সময় নিয়ে সেটা করতে হয়। আবার কমাতে গেলেও সেটার জন্য সময় দরকার হয়। বিশ্ববাজার, দেশীয় চাহিদা, দেশি বাজারের সামগ্রিক অবস্থা, উৎপাদন সব বিবেচনায় নিয়ে তার পরই দামটা নির্ধারণ করা হয়। ’
টিসিবি বাজার স্বাভাবিক রাখতে কিভাবে ভূমিকা রাখছে জানতে চাইলে প্রতিষ্ঠানটির তথ্য প্রদানকারী কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির বলেন, ‘আমরা প্রতিবছরই রমজানে সারা দেশে খোলাবাজারে পাঁচটি পণ্য বিক্রি করি। উদ্দেশ্য, বাজার স্থিতিশীল রাখা। ব্যবসায়ীরা যাতে অযৌক্তিকভাবে দাম বাড়াতে না পারে। কারণ আমরা বাজারমূল্যের চেয়ে বেশ কমে পণ্য বিক্রি করি। ’
ছোলা : আন্তর্জাতিক বাজারে ভালো মানের ছোলা প্রতি টন বিক্রি হচ্ছে ৬৫০ ডলারে। এই দর দীর্ঘদিন ধরে খুব একটা ওঠানামা করেনি। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় বর্তমান সময়ে ছোলা বিক্রি হচ্ছে অনেকটা বেশি দামে। টিসিবির তথ্যমতে, কেজিতে এই বৃদ্ধির পরিমাণ ৮ শতাংশ।
ট্যারিফ কমিশনের তথ্যানুযায়ী, রমজান মাসে সারা দেশে প্রায় ৮০ হাজার টন ছোলার চাহিদা রয়েছে। আর সারা বছর এই চাহিদার পরিমাণটা প্রায় দেড় লাখ টন। বিগত ২০১৬ সালে দেশে মোট ছোলা আমদানি হয়েছে দুই লাখ ৫৩ হাজার টন। চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে এসেছে আরো ৫৬ হাজার টন, যা কি না দুই বছরের চাহিদার চেয়েও বেশি। তার পরও রমজান মাস আসার বেশ আগে থেকেই ছোলার বাজার অস্থির হয়ে উঠেছে।
সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্ববাজারে ছোলার দাম কিছুটা বেড়েছে। ছোলা উৎপাদনকারী দেশগুলোর অন্যতম একটি হলো ভারত। অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটাতে গিয়ে এই দেশটিকেও অস্ট্রেলিয়া থেকে ছোলা আমদানি করতে হচ্ছে। অস্ট্রেলিয়ায় ২ মে ছোলার দাম উঠেছে প্রতি টন এক হাজার ডলারে। তুরস্কে বর্তমানে ছোলার দাম গত বছরের দ্বিগুণ। আমদানি শুল্ক কমিয়ে ছোলার দাম নিয়ন্ত্রণে রাখার উদ্যোগ নিয়েছে দেশটি। তবে আন্তর্জাতিক বাজারের বর্তমান এই চিত্র দেখিয়ে ছোলার বাজার অস্থিতিশীল করার সুযোগ নেই বলে মনে করেন বাজার বিশ্লেষক ও ভোক্তা অধিকার কর্মীরা। তাঁদের মতে, রমজান মাসকে সামনে রেখে ব্যবসায়ীরা আগেই ছোলা আমদানি করে মজুদ গড়েছে। তখন আন্তর্জাতিক বাজারে ছোলার দাম এতটা ছিল না। বিশ্ববাজারে বর্তমানের বাড়তি দরের অজুহাতে আগে কম দামে কেনা ছোলা বেশি দামে বিক্রি করা অযৌক্তিক।
মাংস : গরুর মাংস গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ১৮.২৯ শতাংশ এবং খাসির মাংস ২২.৭৩ শতাংশ বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। দেশের বাজারে মাংসের দাম কমার কোনো রেকর্ড নেই, প্রতিবছর এক-দুবার করে বাড়তে বাড়তে এখন গরুর মাংস ৫০০ ও খাসির মাংস ৮০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
নিত্যপণ্যের বাজারে অস্থিরতা সম্পর্কে জানতে চাইলে প্রতিযোগিতা কমিশনের সদস্য ও ক্যাবের সভাপতি গোলাম রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বাজার স্থিতিশীল রাখা এবং সময় সময় বিশ্ববাজারের সঙ্গে দেশের নিত্যপণ্যের দাম সমন্বয় করার জন্য যেসব প্রতিষ্ঠান রয়েছে সেগুলো খুব একটা কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছে না। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানেই অনেকটা ঝিমিয়ে পড়ার মতো অবস্থা। এগুলো সচল হলে এবং মনিটরিং বাড়াতে পারলে বাজারের চিত্রে বড় একটা পরিবর্তন আনা সম্ভব। ’

http://www.kalerkantho.com/print-edition/first-page/2017/05/06/494285