২৩ অক্টোবর ২০২৩, সোমবার, ৬:১৭

চালের বাজারে অস্থিরতা

দায়ীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিন

 

অব্যাহত মূল্যস্ফীতির কারণে দেশে ভোক্তাদের দমবন্ধ হওয়ার মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এক বছরের বেশি এ অবস্থা চলছে। মানুষ এ অবস্থার অবসান চাইলেও অসাধু ব্যবসায়ীরা নানা কৌশলে নিত্যপণ্যের বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টির চেষ্টা করে। বস্তুত বাজারে সব ধরনের পণ্যের বাড়তি দামের কারণে এক প্রকার কোণঠাসা হয়ে পড়েছে ভোক্তা। এরই মধ্যে বাড়তি মুনাফা করতে চালের বাজারে চোখ পড়েছে মিলারদের; কারসাজি করে বাড়িয়েছে দাম। মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে মোটা, মাঝারি ও সরু চালের দাম বস্তাপ্রতি (৫০ কেজি) ১০০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। ফলে পাইকারি বাজারে হুহু করে বাড়ছে দাম। এর প্রভাব পড়ছে খুচরা পর্যায়ে। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে হতদরিদ্র মানুষের এক কেজি মোটা চাল কিনতে ৫৬-৫৭ টাকা খরচ করতে হচ্ছে। এদিকে মাঝারি ও সরু চালের দামও লাগামছাড়া। জানা যায়, পাইকারি বাজারে এবার আটার দাম বেড়েছে। দাম বেড়েছে মোটা দানার মসুর ডালেরও। এ দুটি পণ্যের বড় অংশই আমদানি করা হয়। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ডলার সংকটের কারণে আমদানি বিল পরিশোধে ব্যয় বেড়েছে, যার প্রভাব পড়েছে আটা ও ডালের দামে। অবশ্য এ দুটি পণ্যের ক্ষেত্রে বাড়তি দামের প্রভাব এখনো খুচরা বাজারে পড়েনি। এদিকে আলু-পেঁয়াজের সরকারি দরও কার্যকর করা সম্ভব হয়নি। আলু কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকায়। দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ১০০ টাকা। এমন পরিস্থিতিতে স্বল্প ও সীমিত আয়ের মানুষ এখন পুষ্টিকর খাবার কম ক্রয় করতে বাধ্য হচ্ছে।

অতীতেও আমরা লক্ষ করেছি কোনো যৌক্তিক কারণ ছাড়াই নিত্যপণ্যের বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়। এটাও লক্ষ করা গেছে, বহু মিলার সব সময় সুযোগের অপেক্ষায় থাকে। এমনকি ধানের মৌসুমেও চালের কৃত্রিম সংকট তৈরি করে দাম বাড়ানো হয়। কাজেই চালসহ নিত্যপণ্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। দুঃখজনক হলো, অসাধু ব্যবসায়ীরা তাদের ইচ্ছামতো নিত্যপণ্যের বাজার অস্থির করে তুললেও বাজার তদারকি সংস্থাগুলোর তৎপরতা একেবারেই দৃশ্যমান নয়। নিত্যপণ্যের বাজারে যারা অস্থিরতা সৃষ্টির চেষ্টা করছে, দ্রুত তাদের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। সম্প্রতি জীবনযাপনের প্রতিটি সেক্টরে অস্বাভাবিকভাবে ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় দেশে বহু মানুষ মানবেতর জীবনযাপনে বাধ্য হচ্ছে। এ অবস্থায় সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে গরিব মানুষ। কাজেই যেভাবেই হোক, নিত্যপণ্যের বাজারের অস্থিরতা দূর করতে হবে।

 

https://www.jugantor.com/todays-paper/editorial/731841