১০ অক্টোবর ২০২৩, মঙ্গলবার, ১১:৩৭

রূপপুর প্রকল্প

সেই পর্দা কেনার প্রস্তাব উঠছে ক্রয় কমিটিতে

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের আবাসিক ভবনের জন্য সেই পর্দা কেনার প্রস্তাব আবারও অনুমোদনের জন্য ক্রয় কমিটিতে উপস্থাপন করা হচ্ছে।

এর আগেও ২০২১ সালের ২৫ আগস্ট একই ধরনের প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য ক্রয় সংক্রান্ত্র মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে উত্থাপন করা হয়েছিল। কিন্তু তা বেশি হওয়ার কারণে সেই প্রস্তাব অনুমোদন করেনি কমিটি। সেই সময় ১২৫০ বর্গফুটের ১টি ২০ তলা ভবন এবং ১টি ১৬ তলা ভবনে ১৯৬টি ইউনিটের পর্দা সরবরাহ করার কথা ছিল। প্রতিটি ইউনিটে পর্দার জন্য ২ লাখ ৩ হাজার ৫৬৯ টাকা হিসাবে মোট ব্যয় ধরা হয়েছিল ৪ কোটি ৬৭ লাখ ৫৯ হাজার ৫৪৫ টাকা। দরপত্রের সব প্রক্রিয়া শেষে একমাত্র রেসপনসিভ দরদাতা প্রতিষ্ঠান ইউরোশিয়া ফেল্ট ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, ঢাকা-এর কাছ থেকে পর্দা ক্রয় ও স্থাপন কাজের সুপারিশ করে দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি। কিন্তু এই প্রস্তাব বাতিল করে দেয়। এবার একই প্রতিষ্ঠানকে পর্দা কেনার জন্য অনুমতি দেয়া হচ্ছে। তবে এবারের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ কোটি ১৬ লাখ টাকা।

কাল বুধবার ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য উত্থাপন করা হতে পারে বলে জানা গেছে। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হবে।

জানা গেছে, বিদ্যুৎ প্রকল্পের গ্রিন সিটি আবাসিক কমপ্লেক্সে ২০ তলা বিশিষ্ট ২টি ভবনের (আয়তন ১ হাজার ৫০০ বর্গফুট) ১৩৬টি ইউনিটে এই পর্দা সরবরাহ ও লাগানো হবে। এতে ব্যয় হবে প্রায় ৩ কোটি ১৬ লাখ টাকা। ইউরো এশিয়া ফেল্ট ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড এই পর্দা সরবরাহ করবে।

সূত্র জানায়, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের আওতায় ‘রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ’ শীর্ষক প্রকল্পটি ২০১৬ সালের ৬ ডিসেম্বর একনেক সভায় অনুমোদিত হয়। প্রকল্পটির অনুমোদিত প্রাক্কলিত ব্যয় ১ লাখ ১৩ হাজার ৯৯ কোটি ৯১ লাখ ২৭ হাজার টাকা এবং বাস্তবায়ন মেয়াদ ২০১৬ সালের ১ জুলাই থেকে ২০২৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর। উক্ত প্রকল্পের গ্রিন সিটি আবাসিক কমপ্লেক্স গণপূর্ত অধিদফতর কর্তৃক ডেলিগেটেড ওয়ার্ক হিসাবে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

সূত্র জানায়, অনুমোদিত ডিপিপি-তে গ্রিন সিটি আবাসিক কমপ্লেক্স নির্মাণের জন্য পূর্ত নির্মাণ কাজে মোট ৩ হাজার ২৮৭ কোটি ৮১ লাখ টাকার সংস্থান রয়েছে। প্রকল্পের টোটাল প্রকিউরমেন্ট প্ল্যানের কনস্ট্রাকশন অব সিভিল ওয়ার্ক-এর আওতায় ডব্লিউডি-২৫ পাকেজে একত্রে ২ হাজার ৭৪২ কোটি ৮১ লাখ টাকার সংস্থান আছে। এই প্যাকেজের কাজের বিবরণীতে আবাসিক ভবন (আবাসিক কমপ্লেক্সসহ স্কুল, কলেজ, মসজিদ, ধর্মীয় কেন্দ্র, শপিং সেন্টার, খোলা মাঠ, খেলার মাঠ ও পার্কিং) নির্মাণের কথা রয়েছে। প্যাকেজভুক্ত নির্মাণ কাজগুলো কোনো লট-এ ভাগ করা হয়নি। প্রত্যাশী সংস্থা হিসাবে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়/এটমিক এনার্জি কমিশনের বিভিন্ন সময়ের চাহিদা ও সরবরাহকৃত নকশার আলোকে প্যাকেজটির নির্মাণ কাজগুলো বাস্তবায়ন হচ্ছে। ইতোমধ্যে উক্ত প্যাকেজের আওতায় ৩২টি ভবন ও অন্যান্য স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে।

সূত্র জানায়, এই প্যাকেজের আওতায় নির্মিত স্থাপনাগুলোতে মোট ২ হাজার ৭০৩ কোটি ৮ লাখ ৯৩ হাজার টাকার ক্রয় প্রস্তাব এর আগে অনুমোদন দেয়া হয়েছে। সে প্রেক্ষিতে প্যাকেজে অর্থ অবশিষ্ট থাকে ৩৯ কোটি ৭২ লাখ টাকা, যা থেকে পর্দা সরবরাহ ও লাগানোর কাজ করা হবে। এই কাজের আওতায় ম্যাট্রেস, তোশক, ফ্রেব্রিক্স হেড পিলো, হেড পিলো কভার, বিদেশী বিছানার চাদর এবং পর্দা।

জানা গেছে, উল্লিখিত পণ্য সরবরাহ এবং লাগানোর জন্য দর প্রস্তাব আহ্বান করা হলে ৩টি প্রতিষ্ঠান এতে অংশ নেয়। প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে- ইউরো এশিয়া ফেল্ট ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, কারমো ফোম অ্যান্ড অ্যাডহিসিভ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড এবং এমডি বদরুল ইকবাল লিমিটেড। দাখিলকৃত দর প্রস্তাবগুলো ই-জিপি ওয়েব পোর্টালে মূল্যায়ন করা হয় এবং মূল্যায়নের জন্য দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সভায় ৩টি দর প্রস্তাবই রেসপন্সিভ হয়। এর মধ্যে ইউরোএশিয়া ফেল্ট ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড ৩ কোটি ১৫ লাখ ৭১ হাজার টাকা দর প্রস্তাব করে সর্বনিম্ন দরদাতা হয়। অন্য দুই দরদাতা এমডি বদরুল ইকবাল ৩ কোটি ৪৭ লাখ ৩১ হাজার ৭৩৪ টাকা এবং কারমো ফোম অ্যান্ড অ্যাডহিসিভ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড ৩ কোটি ৮০ লাখ ২২ হাজার ৩৪৭ টাকা উল্লেখ করে।

সূত্র জানায়, ইউরো এশিয়া ফেল্ট ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড সর্বনিম্ন দরদাতা হওয়ায় দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি প্রতিষ্ঠানকে দরপত্রের উল্লিখিত পণ্য সরবরাহ ও লাগানোর কাজের জন্য সুপারিশ করেছে।

https://www.dailynayadiganta.com/first-page/783075