২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩, মঙ্গলবার, ৫:৩৯

মার্কিন নিষেধাজ্ঞা

বাংলাদেশ কি ব্যর্থ রাষ্ট্র হবে?

ড. মো. নূরুল আমিন

বিষয়টিকে নিয়ে লিখব কি লিখব না তা নিয়ে খুবই বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছি। বিষয়টি শুধু লজ্জা আর অপমানের নয়, একটি স্বাধীন-সার্বভৌম দেশের মান-মর্যাদা নিয়ে মাথা উঁচু করে টিকে থাকা এবং এগিয়ে যাবার।

১৯৭১ সালে একটি স্বাধীন দেশের বিরুদ্ধে সংগ্রাম ও যুদ্ধ করে আমরা লাখ লাখ প্রাণ, মা-বোনের ইজ্জত ও সম্পদের বিনিময়ে স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেছি। ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে তৎকালীন পূর্বপাকিস্তানে তারা প্রায় একইভাবে জয় লাভ করেন, পশ্চিম পাকিস্তানে ভুট্টোর দল পাকিস্তান পিপলস পার্টি জয়লাভ করে। দুটিই ছিল আঞ্চলিক দল এবং জাতীয় ভিত্তিতে দেশের মানুষের আস্থা অর্জন ও দেশ পরিচালনায় অক্ষম এই অজুহাতে দেশের সামরিক জান্তারা রাজনৈতিকভাবে সমস্যার সুরাহা না করে সামরিক কায়দায় তা করার চেষ্টা করেন এবং শেষ পর্যন্ত স্বাধীকার আন্দোলন রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে রূপ নেয় এবং ভারতীয় সহযোগিতায় ৯ মাস পর পাকিস্তান বাহিনীর আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে। আওয়ামী লীগ এই আন্দোলনে এ দেশের মানুষের একচ্ছত্র আনুগত্য দাবি করলেও সত্তরের নির্বাচনী ফলাফলকে যদি ভিত্তি হিসেবে ধরা হয় তাহলে দেখা যায় যে, আওয়ামী লীগ মাত্র ৩৯ শতাংশ ভোটে তখন জয় লাভ করেছিল। অর্থাৎ ৬% ভোটার তাদের ভোট দেয়নি। এই ৩৯% ভোটের মধেও তাদের কারচুপি বা চুরির ভোটও অন্তর্ভুক্ত ছিল। এছাড়াও ছিল ভয়ভীতি, প্ররোচণা ও প্রবঞ্চনা করে আদায় করা অমুসলিম ভোট। এদের পারসেন্টেজ হবে কমপক্ষে ১১%। অর্থাৎ তাদের প্রাপ্ত নিট ভোট ২৮% এর বেশি ছিল না। তাদের বর্তমান গতভিত্তির সাথে এর যথেষ্ট মিল আছে। ঐ সময় চীন ও মস্কোপন্থী বাম দলগুলো শুধু নির্বাচনেই অংশগ্রহণ করেনি তা নয়, তারা স্বাধীনতারও বিরোধিতা করেছিল। যাই হোক এগুলো এখন অতীত স্মৃতি।

এখন মূল প্রসঙ্গে আসি। গত ২২ সেপ্টেম্বর মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার ‘Taking steps to Impose visa Restrictions on individuals Involved in Undermining the Democratic Election Process in Bangladesh. শিরোনামে একটি বিবৃতি দিয়েছেন। আমার এক মার্কিন সাংবাদিক বন্ধু বিবৃতিটি ঐ দিনই আমার মেইলে পাঠিয়েছেন। বিবৃতিতে তিনি বিশ^ব্যাপী মানবাধিকার ও গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখার মার্কিন প্রত্যয় ঘোষণা করে বাংলাদেশে শান্তিপূর্ণ পদ্ধতিতে অবাধ ও সুষ্ঠু অন্তর্ভুক্তিমূলক গণতান্ত্রিক নির্বাচন যাতে ব্যাহত না হয় তার ওপর জোর দেন এবং তাদের দৃষ্টিতে যারা অতীতে এই প্রক্রিয়া নস্যাৎ করার সাথে জড়িত ছিলেন বর্তমানেও আছেন এবং ভবিষ্যতেও থাকবেন বলে বিশ^াস করার কারণ রয়েছে এ ধরনের সরকারি কর্মকর্তা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, সাবেক ও বর্তমান বিচারপতি, বিরোধীদলীয় নেতা প্রমুখকে এই তালিকার অন্তর্ভুক্ত করছেন বলে জানিয়েছেন। তাদের ওপর শুধু মার্কিন ভিসা নিষেধাজ্ঞাই আরোপিত হচ্ছে না বরং যুক্তরাষ্ট্রে তাদের এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের যে অর্থ-সম্পদ আছে তাও বাজেয়াপ্তের ইঙ্গিত এতে রয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের এই নিষেধাজ্ঞার সাথে যুক্তরাষ্ট্রের অনুসারী কানাডা ও ইউরোপীয় দেশগুলোও অনুরূপ ব্যবস্থা নেয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করছেন। বিবৃতিটির সাথে আমি ৬০ জনের একটি তালিকাও পেয়েছি। এই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত ব্যক্তির সংখ্যা ৬০০ অতিক্রম করতে পারে বলেও বলা হয়েছে। নিচে আমি তালিকাটিতে উল্লিখিত ব্যক্তিদের নাম উল্লেখ করছি :

১. বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক, সাবেক প্রধান বিচারপতি। ২. বিচারপতি মোজাম্মেল হক, সাবেক প্রধান বিচারপতি। ৩. বিচারপতি সাইয়েদ মাহমুদ হোসেন, সাবেক প্রধান বিচারপতি। ৪. বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী। ৫. বিচারপতি সামছুদ্দিন মানিক। ৬. বিচারপতি ইনায়েতুর রহিম। ৭. বিচারপতি খসরুজ্জামান। ৮. জনাব কাজী রকিবুদ্দিন, সাবেক সিইসি। ৯. জনাব নূরুল হুদা, সাবেক সিইসি। ১০. জনাব হেলাল উদ্দিন, ইসি সচিব (সাবেক)। ১১. জনাব কবিতা খানম, ইসি। ১২. জনাব শাহাদাত হোসেন, ইসি। ১৩. জনাব আবু হাফিজ, ইসি। ১৪. জনাব আবদুল মোবারক, ইসি। ১৫. জনাব জাভেদ আলী, ইসি। ১৬. জনাব শাহ নেওয়াজ, ইসি। ১৭. জনাব কাজী হাবিবুল আউয়াল, সিইসি। ১৮. জনাব আলমগীর, ইসি। ১৯. জনাব আনিসুর রহমান, ইসি। ২০. জনাব বেগম রাশিদা সুলতানা। ২১. জনাব আহসান হাবিব খান। ২২. জনাব সজিব ওয়াজেদ জয় (প্রধানমন্ত্রীর পুত্র)। ২৩. জনাব সালমান এফ রহমান। ২৪. জনাব আনিসুল হক, আইনমন্ত্রী। ২৫. জনাব বেগম রওশন এরশাদ। ২৬. জনাব কাজী ফিরোজ রশিদ। ২৭. জনাব মশিয়ুর রহমান রাঙ্গা। ২৮. জনাব ফখরুল ইমাম। ২৯. জনাব হাসানুল হক ইনু। ৩০. জনাব রাশেদ খান মেনন। ৩১. জনাব মজিবুল হক চুন্নু। ৩২. জনাব জেনারেল (অব.) তারেক সিদ্দিকী। ৩৩. জনাব মেজর জেনারেল হামিদুল হক। ৩৪. জনাব মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান প্রমুখসহ সেনাবাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীতে কর্মরত আরো ২৫ জন কর্মকর্তা। আমি বুঝি না এখানে রাষ্ট্রযন্ত্র পরিচালনা ও বিচারব্যবস্থার সাথে জড়িত আর বাকি রইল কারা?

কিসের ভিত্তিতে যুক্তরাষ্ট্র সরকার এদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছেন বা দিয়েছেন আমি জানি না। তবে জ্ঞান-বিজ্ঞান তথ্য সম্ভার ও অর্থনৈতিক দিক থেকে সমৃদ্ধ বিশ্বের একক পরাশক্তি দেশ হিসেবে তাদের সামর্থ্য সম্পর্কে সন্দেহ করার অবকাশ আছে বলে আমার মনে হয় না। এই নিষেধাজ্ঞা কেউ হয়ত উড়িয়ে দিতে পারেন, কেউ বলতে পারেন আমরাও নিষেধাজ্ঞা দিতে পারি। কিন্তু সেটা হবে পিপিলিকার পাখা গজানোর মতো, যা মরার জন্যই হয়। আমেরিকার অনেক দোষ আছে, তাদের অনেক নৈতিক অধঃপতন আছে কিন্তু তথাপিও এটি একটি স্বপ্নের দেশ অনেকের কাছেই। ভেবে দেখুন, যুক্তরাষ্ট্র যখন DVI এর ঘোষণা দিয়েছিল তখন আমাদের দেশের এক কোটি লোক সেই দেশের নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করেছিল। তখন ইমেইল বা অনলাইন সিস্টেম ছিল না। যুক্তরাষ্ট্রে চিঠি পাঠাতে হলে ১৩ টাকার Postal Stamp লাগত। ঐ বছর শুধু ঐ দেশের জন্য পোস্টাল স্ট্যাম্প বিক্রি বাবত পোস্ট অফিস কর্তৃপক্ষের ১৩ কোটি টাকা আয় হয়েছিল। অর্থাৎ এই এক কোটি লোক বাংলাদেশের নাগরিকত্ব ছেড়ে মার্কিন নাগরিকত্ব গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। এখন তো অবস্থা আরো খারাপ। এখন সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং সাধারণ মানুষকে যদি অপশন দেয়া হয় তাহলে আমার বিশ্বাস ৮০ ভাগেরও বেশি যুক্তরাষ্ট্রে হিজরতের অপশন দেবে। সে দেশে মানবাধিকার, মৌলিক চাহিদা পূরণ, যেমন অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসা ও জীবন সম্পত্তি এবং বাক ও মতামত স্বাধীনতার নিরাপত্তার ব্যবস্থা আছে। বিচার ব্যবস্থা প্রেসিডেন্টকেও ছাড়ে না। ওয়াটারগেট কেলেঙ্কারি সংক্রান্ত একজন সাংবাদিকের রিপোর্টে একজন প্রেসিডেন্টকেও পদত্যাগে বাধ্য করেছিল, যুক্তরাষ্ট্রের গুণগান গাওয়া আমার উদ্দেশ্য নয়।

আমি বিব্রত অন্য কারণে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী এখন যুক্তরাষ্ট্রে। তিনি এই মাত্র কয়েক মাস আগে গর্ব করে বলেছিলেন যে, ২২ ঘণ্টা জার্নি করে সাত সমুদ্র তের নদী পার হয়ে যুক্তরাষ্ট্র যাবার দরকার কি? আমাদের অনেক মহাদেশ, মহাসাগর আছে আমরা সেখানে যাব। কিন্তু পরে দেখা গেল তিনি আমেরিকা গেলেন। ভারতে অনুষ্ঠিত একটি সম্মেলনে যোগ দিতে আসা প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সাথে মেয়েকে নিয়ে সেলফি তুলে বিশ্ব জয়ের হাসি হাসলেন। আবার জাতিসংঘের সাধারণ অফিসেও গেলেন। নিষেধাজ্ঞার বার্তাও তার কাছে গেল। ছেলে সজিব ওয়াজেদ জয়ের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত প্রসঙ্গে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানালেন যে, তাতে তার কিছু বলার নেই, তা বাজেয়াপ্ত হতে পারে। তিনি যুক্তরাষ্ট্রে বার বার দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের সাথে সাক্ষাৎ করতে চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়ে হতাশ হয়ে পড়েছেন বলে মনে হচ্ছে। তাহলে সে দেশ সম্পর্কে এত অপ্রাসঙ্গিক ও অভব্য কথাবার্তা বললেন কেন? এখন লজ্জা লাগে না?

আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে আমরা কি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হচ্ছি। যখন কোন দেশ বিশ্ব ব্যবস্থার একটি সার্বভৌম জাতি-রাষ্ট্র হিসেবে দুটি মৌলিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে ব্যর্থ হয় তখন সেটি ব্যর্থ রাষ্ট্র হিসেবে গণ্য হয়। এই দুটি কাজ হচ্ছে, তার ভূখণ্ড ও জনগণের ওপর কর্তৃত্ব হারিয়ে ফেলা এবং দ্বিতীয়টি হচ্ছে জাতীয় সীমানা সংরক্ষণে তার ব্যর্থতা। ইকনমিস্ট, টাইম ম্যাগাজিনসহ বিশ্বের নামকরা গণমাধ্যমসমূহের জরিপ অনুযায়ী দেশের ৮০% মানুষ এই সরকারকে বিশ্বাস করে না। পুলিশ, প্রশাসন ও বিজিবি, আর্মিকে তারা জননির্যাতনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। প্রতিবাদী কণ্ঠকে স্তব্ধ করে দিচ্ছে। মানুষ ভোটাধিকারসহ মৌলিক মানবাধিকার থেকে বঞ্চিত। ১৭ কোটি লোকের মধ্যে নারী-শিশুর সংখ্যা যদি ৭ কোটি ধরা হয় তাহলে বাকি থাকে ১০ কোটি। এই দশকোটি লোকের মধ্যে সকলে কিন্তু রাজনৈতিক সচেতন নয়। এই সরকার জুলুম-নির্যাতনে এত সিদ্ধহস্ত যে তারা বিরোধী দলসমূহের ৫০ লক্ষাধিক নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা ও বানোয়াট মামলা দিয়ে পর্যুদস্ত করে দিয়েছে। গড়ে এদের পরিবার সদস্যের সংখ্যা ৬ জন করে ধরলে এরা কমপক্ষে ৩ কোটি। ভেবে দেখুন বাংলাদেশের মানুষ এখন কত মজলুম।

ব্যর্থ রাষ্ট্রের আরেকটি বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এই যে, জুলুম-নির্যাতনে অধিকতর শক্তি-সামর্থ্য ব্যয় করার ফলে এই রাষ্ট্রের শাসন ক্ষমতা এতই দুর্বল হয়ে পড়ে যে সে তার প্রশাসনিক ও সাংগঠনিক কার্যাবলী সামলে দিতে ব্যর্থ হয়ে পড়ে যা তার জনগণকে সঠিকভাবে পরিচালনা, সম্পদের সুরক্ষা এবং ন্যূনতম জনসেবার জন্য অপরিহার্য। এই সরকার আমাদের ভৌগোলিক ও সাংস্কৃতিক সীমানা রক্ষায়ও ব্যর্থ বলে অনেকে মনে করেন। অভিযোগ রয়েছে যে, সেনাবাহিনকে ঠিকাদারি কাজে লাগিয়ে তাদের পেশাগত দক্ষতাকে ক্ষুণ্ন করা হচ্ছে। অহরহ সীমান্তে প্রতিবেশী দেশের প্রহরিরা আমাদের জনগণকে হত্যা করে, আমরা প্রতিবাদ করতে পারি না। ভারতের সাথে সামরিক-বেসামরিক অনেকগুলো চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়েছে। দেশবাসী তার কনটেন্টস জানে না। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ডিজিডিফাই হেড কোয়ার্টারে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ তার ঘাঁটি গাড়ার অভিযোগ দীর্ঘদিনের। আমাদের সার্বভৌমত্ব কোথায়? বাংলাদেশ সরকার, পানি উন্নয়ন বোর্ড কারোর অনুমতি ছাড়াই অসংখ্য পাম্প বসিয়ে ফেনী নদী থেকে দৈনিক লাখ লাখ কিউসেক পানি উত্তোলন করে ভারতের ত্রিপুরাতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড ও স্থানীয় প্রশাসন প্রতিবাদ করছে কিন্তু কোনো ফল হচ্ছে না। এই অবস্থায় আমরা কি ব্যর্থ রাষ্ট্রের তলানিতে চলে যাচ্ছি না?

আগেই বলেছি, মার্কিন নিষেধাজ্ঞাধীন ব্যক্তির সংখ্যা কিছু এসেছে আরো আসছে। কিছু সিরিয়াসলি নেয়া দরকার। ঘাড়তেড়ামি ভালো হয় না। আর কাউকে অপমান করলেও সুফল বয়ে আনে না। দুটি ঘটনা বলি।

আমার এলাকায় বৃটিশ আমলে কবি নবীন চন্দ্র সেন SDO বা মহকুমা কর্মকর্তা ছিলেন। তিনি একজন স্বনামধন্য কবিও ছিলেন। ভাওয়াল রাজ এবং বিক্রমপুরের সম্পদশালী ব্যক্তিরা তার সাথে দুর্ব্যবহার করেছিলেন। তিনি তা ভুলতে পারেননি। তিনি তার লিখিত কবিতার মাধ্যমে

তার প্রতিশোধ নিয়েছিলেন। কবিতাটি ছিল :
“ভাওয়ালে ভদ্রতা নাস্তি, জলনাস্তি টেঙ্কুরে
বিক্রমুরে সতিত্বনাস্তি ছেলে জন্মায় চাকরে।”

পাঠকরা নিজ গুণে বুঝে নেবেন। তখনকার বিক্রমপুর ছিল হিন্দু প্রধান। এখন মুসলিম প্রধান। অবস্থা আগের মতো নেই। আরেকটি ঘটনা। ২০০০ সালে বিবিসি তার এক রিপোর্টে ব্যাংকক শহরকে City of Prostitution বলে অভিহিত করেছিল।

থাইল্যান্ড সরকার তাৎক্ষণিকভাবে তার প্রতিবাদ করে ‘চ্যালেঞ্জ’ ছুড়ে দিয়েছিলেন বিবিসি (British Broad Casting Corporation) এতে ক্ষেপে গিয়ে পরের সপ্তাহেই শুধু ব্যাংকক নয় সারা থাইল্যান্ডের শহরগুলোর অলিগলিতে ছড়িয়ে থাকা Brothal বেশ্যাখানাগুলোর বিস্তারিত ছবি (ভিডিও) এবং যৌন কর্মীদের সাক্ষাৎকারসহ সপ্তাহব্যাপী একটি ফিচার ফিল্ম প্রচার করে। সারা দুনিয়ায় ছি ছি পড়ে যায়। থাইল্যান্ড সরকার চুপ হয়ে যেতে বাধ্য।

আমি আশা করব, বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এ ধরনের কোনো ঘটনার যেন উন্মেষ না ঘটে এবং আমরা অবিলম্বে সতর্ক হয়ে যাই।

https://www.dailysangram.info/post/536428