১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, রবিবার, ১১:২৫

নিরপেক্ষ নির্বাচনের কোনো বার্তাই দিচ্ছে না সরকার

জনগণের মধ্যে ভোটের প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি থেকেও নিজেদের কর্মকা-ের ঢোল বাজাতে অথবা বিরোধী পক্ষের বিরুদ্ধে বিষোদগারেই ব্যস্ত ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। এমন অভিযোগ রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের। তারা বলছেন, সাম্প্রতিক সময়ে সরকারি দলের শীর্ষ নেতাদের রাজনৈতিক বক্তব্যে সুস্থ-সুন্দর ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য জনগণকে স্বস্তিদায়ক কোনো বার্তাই দেয়া হচ্ছে না। বিরোধীদল যেখানে বলছে, আমরা ক্ষমতার জন্য আন্দোলন করছি না। জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিতেই আমাদের আন্দোলন। নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে যারাই ক্ষমতায় আসুক, তাতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। অন্যদিকে সরকার পক্ষ ব্যস্ত কিভাবে ক্ষমতায় থাকা যায় সেটি নিয়েই। আওয়ামী লীগ ব্যস্ত বিএনপির অতীত ব্যর্থতা, জন্মের অপকর্ম এবং তাদের জ্বালাও-পোড়াওয়ের কথিত কাসুন্দি নিয়ে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সব সময় ধারালো আক্রমণ করে যাচ্ছে আর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের মধ্যে বেশ লাগামছড়া ভাব লক্ষণীয়। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রাজনীতিতে মেঠো বক্তৃতায় এমন হতেই পারে, কিন্তু তারও একটা সীমা-পরিসীমা থাকা আবশ্যক। নির্বাচনকে সামনে রেখে সরকার পক্ষ থেকে সুস্থতা, ধীরস্থিরতা, সহিষ্ণুতা এবং জনতুষ্টির বক্তব্য দরকার। কিন্তু তারা প্রতিদ্বন্দ্বী পক্ষকে হেনস্তা করতে মহাব্যস্ত।

সম্প্রতি বাংলাদেশে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশের অভ্যন্তরে যেভাবে আলাপ-আলোচনা, মিটিং-মিছিল, প্রচার-অপপ্রচার চলছে, এতে অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। শুধু যে এটা দেশের অভ্যন্তরেই সীমাবদ্ধ আছে তা কিন্তু নয়। আন্তর্জাতিক পরিম-লেও যুক্ত হয়েছে বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক অবস্থা এবং আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন। পৃথিবীর মোড়ল দেশ এবং শান্তি ও মানবতার জন্য কাজ করা আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংগঠনও নির্বাচন সংক্রান্ত নানা বিষয় নিয়ে কথা বলছে। তারা সবার অংশগ্রহণে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন দেখতে চায়। কিন্তু সরকারি দল সেদিকে যেতে চায়না। তাদের বক্তব্য একটিই, সংবিধান মেনে তাদের অধীনেই সবাইকে নির্বাচনে যেতে হবে।

সূত্র মতে, জাতীয় সংসদ নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারব্যবস্থা পুনঃপ্রবর্তন নিয়ে দেশে এক সংঘাতময় পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। মাঠের বিরোধী দল বিএনপি ও তাদের সমর্থনকারী তিন ডজন রাজনৈতিক দল ও জোট আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগ এবং নির্দলীয় সরকারের অধীনে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন করছে। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ সরকার বর্তমান সরকারের অধীনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। এতে ১৯৯৬ সালের মার্চে জাতীয় সংসদ নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারব্যবস্থা প্রবর্তনের আগে দেশে যে সংঘাতময় রাজনৈতিক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল, বর্তমানেও অনুরূপ পরিস্থিতি বিরাজ করছে। তৎকালীন প্রধান বিরোধী দল আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন বিরোধী জোটের দাবির প্রতি সম্মান জানিয়ে বিএনপি সরকার সংবিধান সংশোধন করে নির্বাচনকালীন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা প্রবর্তন করে একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করে। বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার তাদের প্রায় ১৫ বছরের একটানা শাসনামলে অংশগ্রহণহীন ও নজিরবিহীন অনিয়মের অভিযোগ ওঠা দুটি জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে বিরোধী দল ও জোটগুলোর নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারব্যবস্থা পুনঃপ্রবর্তনের দাবিকে জোরদার করতে সহায়তা করেছে।

স্বাধীনতার পাঁচ দশকে ১১টি জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এগুলোর মধ্যে ৭টি দলীয় সরকারের এবং ৪টি অন্তর্র্বর্তীকালীন ও নির্দলীয় সরকারের শাসনামলে। ১৯৯১ সালের পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অন্তর্র্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে এবং ১৯৯৬ (জুন), ২০০১ ও ২০০৮ সালের যথাক্রমে সপ্তম, অষ্টম ও নবম সংসদ নির্বাচন নির্দলীয় সরকারের আমলে অনুষ্ঠিত হয়। এসব নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হওয়ায় সেগুলো জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসিত হয়। আর দলীয় সরকারের শাসনামলে ১৯৭৩, ১৯৭৯, ১৯৮৬, ১৯৮৮, ১৯৯৬ (ফেব্রুয়ারি), ২০১৪ ও ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত যথাক্রমে প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ, ষষ্ঠ, দশম ও একাদশ সংসদ নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু ছিল না। ১৯৭৩ সালের ৭ মার্চ বাংলাদেশের প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় রাষ্ট্রক্ষমতায় ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতাসংগ্রামে নেতৃত্বদানকারী দল আওয়ামী লীগ। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের বিজয় নিয়ে কোনো সংশয় না থাকলেও এ নির্বাচনে শাসক দলের বিরুদ্ধে পত্রপত্রিকা, রাষ্ট্রীয় রেডিও-টেলিভিশন ও যানবাহনসহ প্রশাসনযন্ত্রকে ব্যবহারের অভিযোগ ওঠে। অভিযোগ ওঠে শাসক দলের ভয়ভীতির কারণে ১১টি আসনে বিরোধীদলীয় কোনো প্রার্থীর মনোনয়ন ফর্ম জমা দিতে না পারার। দলীয় সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত সংসদ নির্বাচনগুলোই বলে দেয় কেন নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারব্যবস্থা প্রয়োজন। বিশেষ করে আওয়ামী লীগ সরকার প্রদত্ত প্রতিশ্রুতি মোতাবেক একাদশ সংসদ নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হলে আজ নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারব্যবস্থা পুনঃপ্রবর্তনের দাবি উঠত না। তাই নির্দলীয় সরকারব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবি ওঠার জন্য মূলত আওয়ামী লীগ সরকারই দায়ি।

সূত্র মতে, দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে ততই ক্ষমতাপ্রত্যাশী রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বাদানুবাদ ও হুঁশিয়ারি-পাল্টা হুঁশিয়ারির যেন মহোৎসব চলছে। গত ২৬ আগস্ট মিরপুর-১-এর দারুসসালাম বালুর মাঠে আওয়ামী লীগের এক আলোচনাসভা ও দুস্থ ব্যক্তিদের মধ্যে খাদ্য বিতরণ অনুষ্ঠানে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপি ক্ষমতায় এলে এক রাতেই আওয়ামী লীগকে শেষ করে দেবে।’ ‘ক্ষমতায় এলে আওয়ামী লীগের ওপর কোনো প্রতিশোধ নেয়া হবে না’, বিএনপি নেতাদের এমন বক্তব্যের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপির মুখে মধু, অন্তরে বিষ। তারা আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছে, আবার ক্ষমতায় এলে এক রাতের মধ্যে বাকিটা শেষ করে দেবে।’

রাজনৈতিক বোদ্ধারা বলছেন, আওয়ামী লীগ উপমহাদেশের অন্যতম প্রাচীন রাজনৈতিক দল। মওলানা ভাসানীর নেতৃত্বে দলটি গঠিত হয়ে আওয়ামী মুসলিম লীগ থেকে পরে শুধু আওয়ামী লীগ হয়ে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে পূর্ণতা লাভ করে, দেশ স্বাধীন করে। কিন্তু স্বাধীন বাংলাদেশে আওয়ামী শাসন খোদ বঙ্গবন্ধুর আমলেই হোঁচট খায়। তারা বলেন, অতীত ইতিহাস বলে, আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করতে হলে আওয়ামী লীগ নেতাদের মাধ্যমেই করতে হবে, অন্যভাবে নয়। অন্যেরা চেষ্টা করতে পারে, কিন্তু তা কখনো সম্ভব হবে না, যদি আওয়ামী-গাদ্দাররা তাদের সঙ্গে একাত্ম না হয়, যেমনটি ঘটেছে মোশতাকের সময়। বিএনপি ক্ষমতায় এলে এক রাতেই আওয়ামী লীগকে শেষ করে দেবে এমন মন্তব্যের জবাবে বিশিষ্টজনরা বলছেন, বিএনপিতো এর আগেও ক্ষমতায় ছিল। এক রাতেই যদি আওয়ামী লীগকে বিএনপি শেষ করে দিতে পারত, তাহলে জিয়াউর রহমান এবং খালেদা জিয়া, এমনকি সাত্তারও তো বিএনপিকে ক্ষমতায় থাকাকালীন নেতৃত্ব দিয়েছেন, কিন্তু অওয়ামী লীগকে এক রাতে কেন, দীর্ঘমেয়াদেও তো শেষ করতে পারেনি। এমন ইতিহাস থাকা সত্ত্বেও ওবায়দুল কাদের এমন একটা বাজে আশঙ্কা কেন প্রকাশ করলেন? তারা বলছেন, নির্বাচন খুব কাছে বিধায় দলের সাধারণ সম্পাদক হিসাবে কাদের দলীয় নেতাকর্মীদের আরও বেশি তৎপর করার জন্য এমন ভীতিসঞ্চারক বক্তব্য দিয়ে থাকতে পারেন। তার হয়তো বিশ্বাস জন্মেছে যে, খেলা হবে, খেলা হবে বলে বলে নেতাকর্মীদের যত না চাঙা করা গেছে, বিএনপি ক্ষমতায় এলে এক রাতেই আওয়ামী লীগকে শেষ করে দেবে বললে নেতাকর্মীরা নিজেদের অস্তিত্বের প্রশ্নে, টিকে থাকার প্রশ্নে, নিজেদের ক্ষমতায় থাকাকালীন অর্জিত বৈধ-অবৈধ সম্পত্তি রক্ষার তাগিদে আরও চাঙা হবেন, মারমুখী হবেন, আবার দলের ক্ষমতায় আসার জন্য নিবেদিতপ্রাণ হবেন। এছাড়া সাম্প্রতিক বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোর সভা-সমাবেশ, মিছিলে বড় রকমের জনসমাগম দেখে ক্ষমতাসীনদের মধ্যে নির্বাচনে বিরোধীদের জয়লাভের একটা অঘোষিত ভীতিও হয়তো কাজ করছে। এমন ভীতি ওবায়দুল কাদের তার অজান্তেই হয়তো প্রকাশ করে ফেললেন।
সাবেক সচিব, এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান বদিউর রহমান বলেন, টানা তিন মেয়াদ ক্ষমতায় থাকার পরও, দেশের এত এত উন্নয়ন করার পরও, তৃণমূলের একটা অদ্বিতীয় জনপ্রিয় দল হওয়া সত্ত্বেও বিএনপি ক্ষমতায় এলে এক রাতেই আওয়ামী লীগকে শেষ করে দেবে বলে আসলে ওবায়দুল কাদের কী বোঝাতে চেয়েছেন? তিনিও তো তিন মেয়াদের সাধারণ সম্পাদক, শেখ হাসিনা তো চার দশক পার করা সভাপতি, আওয়ামী লীগ তো ইনশাআল্লাহ আবারও ক্ষমতায় আসছে-এরপরও খোদা নাখাস্তা, বিএনপি ক্ষমতায় এসে গেলে এক রাতেই কি আওয়ামী লীগের কোটি কোটি কর্মী-সমর্থক কর্পূরের মতো মিলিয়ে যাবে? তা-ই যদি হয়, তবে তো আমাদের আরেক প্রশ্ন, তারা কি এতকাল ঘোড়ার ঘাস কেটেছেন? আমরা আশা করব, উসকানিমূলক ও ভীতিসঞ্চারক এমন ফালতু কথা তারা আর বলবেন না।
লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির (এলডিপি) প্রেসিডেন্ট কর্নেল অলি আহমদ (বীর বিক্রম) বলেন, প্রতিদিন গভীর থেকে গভীরতম সংকটের দিকে যাচ্ছে দেশ। আফসোস... আমরা এমন একটি দেশে বসবাস করছি যেখানে গণতন্ত্র নাই। দেশে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নেই, ন্যায়বিচার নেই, মানবিক অধিকার নেই, সামাজিক শান্তি নেই, ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়ার ভালো ব্যবস্থা নেই। এছাড়া যুবসমাজের চাকরির ব্যবস্থা নেই, স্বাস্থ্যখাতে সু-ব্যবস্থা নেই, সুশাসন নেই। সবাই অন্ধকারের দিকে ধাবিত হচ্ছি। গণতন্ত্রের পরিবর্তে আমরা পেয়েছি সর্বত্র টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, অস্ত্রবাজি, দখলবাজি, অবিচার ও সর্বোপরি দুর্নীতি। অন্ধকার থেকে বের হয়ে আমাদের সোচ্চার হতে হবে।
নির্বাচন বিশ্লেষক ড. মো. আবদুল আলীম বলেন, দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন এমন পর্যায়ে গিয়েছে যে, এখন নির্বাচন পর্যবেক্ষণেও কেউ আসতে চাচ্ছে না। তিনি বলন, অংশগ্রহণমূলক ও সুষ্ঠু নির্বাচন যদি না হয় তখন স্থানীয় পর্যবেক্ষক সংস্থাগুলোকে আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থাগুলো অর্থ সহযোগিতা করে না। অর্থ সহযোগিতা না পেলে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব হয় না।

গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ক্ষমতা হস্তান্তর কিংবা প্রতিনিধি নির্বাচনে ভোটই প্রধান উপায়। আর ভোট বলতে বোঝায় গোপন ব্যালটে স্বাধীন ও নির্ভয়ে নাগরিকের অধিকার প্রয়োগ। অর্থাৎ একাধিক প্রার্থীর মধ্য থেকে স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনী ব্যবস্থায় সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটারদের প্রতিনিধি বেছে নেয়ার সুযোগ হচ্ছে নির্বাচন। এটি নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার। সুতরাং যখন কেউ বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন, তখন সেখানে নাগরিকের এই সাংবিধানিক অধিকারও ক্ষুণœ হয়। সেটি স্থানীয় সরকার হোক কিংবা জাতীয় সংসদ। বাস্তবতা হলো, সাম্প্রতিক বছরগুলোয় পুরো নির্বাচন পদ্ধতিটিই এমন হয়ে গেছে যে, এখন ভোটের আগেই জানা যাচ্ছে যে, কে জয়ী হবেন? যদি এটি আগেভাগেই নিশ্চিত হয় যে কে জয়ী হচ্ছেন, তাহলে তার সঙ্গে কেউ লড়াই করতে আসবেন না, এটিই স্বাভাবিক। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশ ও গণতন্ত্রের স্বার্থেই জাতীয় সংসদ থেকে শুরু করে ইউনিয়ন পরিষদ পর্যন্ত প্রতিটি নির্বাচনই অংশগ্রহণমূলক হওয়া প্রয়োজন।
সংবিধানের বাইরে কিছু করার এখতিয়ার ইসির নেই বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মো. আলমগীর। তিনি বলেন, সংবিধানে যেভাবে বলা আছে, আমরা সেভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছি। বিএনপিসহ বিরোধীরা নির্বাচনে না এলে কী করবেন, এমন প্রশ্নের জবাবে নির্বাচন কমিশনার বলেন, এগুলো আমাদের বিষয় না। বিষয়টা রাজনৈতিক। রাজনৈতিক দলগুলো বিষয়টা দেখবে, কিছু করার আছে কিনা। সংবিধান তো ইসিকে এসব বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়ার কোনো সুযোগ দেয়নি। তিনি বলেন, চলতি বছরের ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে অথবা আগামী বছরের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে জাতীয় নির্বাচন করা হবে। সংসদ নির্বাচনের লক্ষ্যে রোডম্যাপ অনুযায়ী যখন যে প্রস্তুতি নেয়া দরকার আমরা সেভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছি।

নির্বাচন প্রশ্নে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়েছি...সব...সবাই। আজকে শুধুমাত্র আমরা আর আমাদের যারা যুগপৎ আন্দোলন করছি শুধু তারাই নয়, আমাদের বাইরে যারা আছে বাম দল, ইসলামী আন্দোলন এবং অন্যান্য দলগুলো তারা সবাই বলছে যে, এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে যাবো না। কারণ তাদের অধীনে নির্বাচনে সুষ্ঠু হতে পারে না। তিনি বলেন, আমরা একটা জিনিস চাই, যেহেতু হাসিনা সরকারের অধীনে আমরা দুই দুইটা নির্বাচন আমরা দেখেছি, যেহেতু হাসিনা সরকারকে দেখছি তারা আরেকটা পাতানো নির্বাচন করার জন্য সমস্ত রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার করছে, নির্ব্চান থেকে দূরে রাখার জন্য তাদের বিরুদ্ধে মামলা দিচ্ছে, তাদেরকে সাজা দিচ্ছে। অর্থাৎ তারা একাই থাকবে মাঠে, তারা ছাড়া আর কেউ থাকবে না। এমনটি এবার হতে দেব না।

https://www.dailysangram.info/post/535666