১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩, শুক্রবার, ১০:২৪

ভারতকে খুশি করতে রফতানি হচ্ছে ইলিশ

দুর্গাপূজা উপলক্ষে ৫ হাজার টন রফতানি হতে পারে : বাণিজ্যমন্ত্রী

ভারতকে খুশি করাই যেন বর্তমান সরকারের কাজ। বাংলাদেশকে বলা হয় ইলিশ মাছের দেশ। কিন্তু দামের কারণে নি¤œ বিত্ত ও মধ্যবিত্তদের বড় অংশ ইলিশ খেতে পারছেন না। বাজারে সরবরাহ বেশি হলে মধ্যবিত্তদের একটা অংশ ইলিশ কিনতে পারেন। কিন্তু সরকার ভারতকে খুশি করতে ৫ হাজার টন ইলিশ পশ্চিমঙ্গে রফতানি করতে যাচ্ছে। ফলে ঢাকাসহ দেশের বাজারে বর্তমান যে দরে ইলিশ বেচাকেনা হচ্ছে সে দরে পাওয়া যাবে না। ইলিশের দাম আরো বেড়ে যাবে। গতকাল বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে মন্ত্রণালয় সভাকক্ষে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি জানিয়েছেন, প্রতিবছরের মতো এবারও দুর্গাপূজা উপলক্ষে ভারতে ইলিশ রপ্তানি করা হবে। আর ইলিশ রফতানির পরিমান হতে পারে ৫ হাজার টন।

‘নিত্যপ্রয়োজনীয় কৃষিপণ্যের উৎপাদন, চাহিদা ও মূল্য পরিস্থিতি পর্যালোচনা’ সভার বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, সারা বছর ভারতে ইলিশ রপ্তানি করা হয় না। পূজা উপলক্ষে ভারতীয় বাঙালিদের শুভেচ্ছা উপহার হিসেবে দেশে যা উৎপাদন হয় তার সামান্য পরিমাণ রপ্তানি করা হয়। কী পরিমাণ ইলিশ রপ্তানি করা হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, চার থেকে পাঁচ হাজার টনের বেশি নয়।

দেশে বছরে ছয় লাখ টন ইলিশ উৎপাদন হয় জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, সেই হিসাবে প্রতিদিন যদি আমরা ধরি, তাহলে গড়ে দুই হাজার টন ইলিশ ধরা হয়। বড়জোর পাঁচ হাজার টন ইলিশ রপ্তানি করব। তাতে সারা বছরের দুই দিনের উৎপাদন আমরা তাদের দেব এই পূজার সময়।

এর আগে আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষে বাংলাদেশ থেকে এবারও ৫ হাজার টন ইলিশ মাছ আমদানি করার জন্য আবেদন করেছে ভারত। কোলকাতা ফিশ ইম্পোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন আসন্ন দুর্গাপূজা-২০২৩ উপলক্ষে বাংলাদেশ থেকে ৫ হাজার টন ইলিশ আমদানি করার লক্ষ্যে সংগঠনটির পক্ষ থেকে কলকাতার বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশনে চিঠি দিয়েছে। ১১ সেপ্টেম্বর পশ্চিমবঙ্গের দৈনিক আজকাল পত্রিকার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশ সরকারের পরিকল্পনা রয়েছে গত বছরের চেয়ে এ বছর বেশি পরিমাণে ইলিশ রপ্তানি করার। ২০২২ সালে ২ হাজার ৯০০ টন পাঠানোর অনুমতি পেলেও রপ্তানিকারকরা ১ হাজার ৩০০ টন পাঠাতে পেরেছিলেন।

চিঠিতে বলা হয়েছে, গত বছর পূজা উপলক্ষে ২ হাজার ৯০০ টন ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন দেওয়া হলেও মাত্র ১ হাজার ৩০০ টন ইলিশ রপ্তানি হয়েছিল। এ বছর তারা ৫ হাজার টন ইলিশ আমদানি করতে চায় বাংলাদেশ থেকে। চিঠিতে আরো বলা হয়, ঢাকার ইলিশ শুধু রপ্তানিযোগ্য সুস্বাদু মাছই নয়, কলকাতার মানুষ এটাকে ঢাকার পাঠানো বহু মূল্যবান উপহার হিসেবে বিবেচনা করে। একই সঙ্গে উন্নত গুণাগুণ সমৃদ্ধ বড় সাইজের ইলিশ চেয়েছে কলকাতা। বাংলাদেশ বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষে অন্য বছরের মতো এবারও ভারতে ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দিতে যাচ্ছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। ইতিমধ্যে প্রায় ১০০ প্রতিষ্ঠান ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন চেয়ে আবেদন করেছে।

ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের রপ্তানি শাখা সূত্রের বরাত দিয়ে তারা জানায়, দুর্গাপূজা উপলক্ষে ভারতে এবারও ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন দেওয়া হবে। তবে কী পরিমাণ অনুমোদন দেবে সেটি চূড়ান্ত হয়নি। উল্লেখ্য, ২০১২ সাল থেকে দুর্গাপূজার মওসুমে প্রতি বছর কলকাতায় ইলিশ পাঠিয়ে আসছে ঢাকা। ভারতের কোলকাতা ফিশ ইম্পোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের আবেদন ফেলতে পারছে না সরকার। তাই ভারতকে খুশি করতে ইলিশ রফতানি করা হবে।

https://dailyinqilab.com/national/article/602679