১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, রবিবার, ৩:২৮

বাজারে আগুন থামছে না

বাজারে আগুন কোনভাবেই থামছে বরং যতই দিন যাচ্ছে ততই পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। ফলে বড় ধরনের বেকায়দায় পড়েছে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী ও নি¤œবিত্তের মানুষ। জানা গেছে, এক সপ্তাহের ব্যবধানে রাজধানীর বাজারে সবজির দাম কেজিতে বেড়েছে ১০-২০ টাকা। ৬০ টাকায় মধ্যে এখন শুধু পেঁপে, পটল আর ঢেঁড়শ মিলছে। কোন কোন পণ্যের দাম সামান্য কমলেও বছরের অন্যান্য সময়ের থেকে তা বেশ বেশি। চাল, ডাল, চিনি, ভোজ্যতেল, আলু, পেঁয়াজ, আদা, রসুনসহ বেশিরভাগ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বৃদ্ধির বৃত্তেই রয়ে গেছে।

মসুর ডাল প্রতিকেজি ১৩০ টাকা, মোটা মসুর ডাল ১০৫ টাকা, মুগ ডাল ১৩০ টাকা, খেশারি ডাল ৮০ টাকা, বুটের ডাল ৯০ টাকা, ছোলা ৭৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহে মসুরের ডাল ১২৫ টাকা কেজি, মোটা মসুরের ডাল ৯০ টাকা, মুগ ডাল ১২০ টাকা, খেশারি ডাল ৭০ টাকা, বুটের ডাল ৮৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। মুদি দোকানের অন্যান্য পণ্য মোটামুটি আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে। প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৭৫ টাকা, চিনি ১৩৫ টাকা, দুই কেজি প্যাকেট ময়দা ১৪০ টাকা, আটা দুই কেজির প্যাকেট ১২০ টাকা, খোলা সরিষার তেল প্রতি লিটার ২২৫ টাকায় বিক্রি হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

সপ্তাহের ব্যবধানে সবচেয়ে বেশি দাম বেড়েছে সবজির। বিক্রেতারা বলছেন, মৌসুম না হওয়ার কারণে সবজির সরবরাহ কমছে। এতে পাইকারি বাজারে দাম বেড়ে যাওয়ায় খুচরা বাজারেও প্রভাব পড়েছে। সাধারণ ক্রেতারা মনে করছেন, ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে সবকিছুর দাম বাড়িয়ে দেন। ভোক্তাদের জিম্মি করে তারা ব্যবসা করছেন। নানা অজুহাতে দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন বিক্রেতারা।
বাজার সংশ্লিষ্টরা জানাচ্ছেন, লম্বা বেগুন ৮০ টাকা আর গোল বেগুন ১২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া করলা ৮০ টাকা, ঢেঁড়স ৬০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকায়, ধুন্দল ৮০ টাকা, চিচিঙ্গা ৭০ টাকা, কচুরমুখি ৮০ টাকা, বরবটি ১০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে আলু বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা কেজি দরে। অথচ এর আগে ২৫-৩০ টাকার মধ্যে আলু খেতে পারতো মানুষ। দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৯০-৯৫ টাকা কেজি দরে। যা প্রায় মাসের ব্যবধানে দ্বিগুণ। ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা দরে, কাঁচা মরিচ ১২০-১৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

বাজারে কমেনি আদা-রসুনের দামও। মানভেদে প্রতি কেজি আদা কিংবা রসুন সর্বনি¤œ ২৬০ থেকে ৪০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। ব্রয়লার মুরগি ১৮০-১৯০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। কক মুরগি ৩২০ টাকা, কক হাইব্রিড ৩০০ টাকা, দেশি মুরগি ৫২০ টাকা এবং লেয়ার ৩৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এদিকে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় রয়েছে ডিম। এক ডজন লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৫৫-১৬০ টাকায়। এছাড়া হাঁসের ডিম ২২০ টাকায়, দেশি মুরগির ডিমের হালি ৮০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। গরুর গোশত ৭৫০-৮০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

এছাড়া ইলিশ প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ১৪০০-১৬০০ টাকায়। ছোট ৪০০ গ্রামের কম ওজনের ইলিশের কেজি ৬০০ টাকা। রুই মাছ ৫৬০-৬২০ টাকা, কাতল মাছ ৪৫০ টাকা, কালবাউশ ৭৫০ টাকা, চিংড়ি ৯০০-১৪০০ টাকা, কাঁচকি মাছ ৫০০ টাকা, টেংরা মাছ ৭০০ টাকা, কৈ মাছ ৪০০ টাকা, পাবদা মাছ ৪০০-৬০০ টাকা, শিং মাছ ৫০০-৬৫০ টাকা, বেলে মাছ ১০০০-১২০০টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। যা জনজীবনকে রীতিমত বিপর্যস্ত করে তুলেছে।

নানাবিধ কারণে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমলেও লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে নিত্যপণ্যের দাম। ফলে ভোক্তাদের জীবনযাত্রায় পড়েছে বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব। তাই জনজীবনে স্বস্তি ও স্বাচ্ছন্দ ফিরিয়ে আনার জন্য অবিলম্বে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা দরকার। অন্যথায় দেশে দুর্ভিক্ষাবস্থা সৃষ্টি হতে পারে।

https://www.dailysangram.info/post/535000