৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩, শনিবার, ৩:১৬

ডেঙ্গুতে ৭ দিনে মারা গেল ১১৩ জন

ডেঙ্গুতে মৃত্যুর মিছিল কেবলই বড় হচ্ছে। গত ৭ দিনে দেশে রোগটিতে ১১৩ জনের মৃত্যু হলো। এই ৭ দিনে দৈনিক গড়ে মৃত্যু হয়েছে ১৬ জনের বেশি (১৬.১৪ জন)। অন্যদিকে এই ৭ দিনে (প্রকৃতপক্ষে ৭ দিন ৮ ঘণ্টা) দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে ১৮ হাজার ৭৭৯ জন। দৈনিক গড়ে আক্রান্ত হয়েছে ২ হাজার ৬৮৩ জন। এভাবে চলতে থাকলে সেপ্টেম্বর মাসের ৩০ দিনে দেশে প্রায় ৮০ হাজারের বেশি মানুষ আক্রান্ত হতে পারে।

সাধারণত শুক্রবারে ডেঙ্গু আক্রান্ত অপেক্ষাকৃত কম হয়ে থাকে সব হাসপাতাল রিপোর্ট দেয় না বলে। কিন্তু গতকাল অন্যান্য দিনের চেয়ে কিছুটা বেশিই ছিল মৃত্যু ও আক্রান্তের সংখ্যা। গতকাল সারা দেশে ডেঙ্গু আক্রান্তদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ১৫ জনের এবং নতুন করে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে এক হাজার ৮৭৬ জন। গতকাল ছুটির দিনে নতুন আক্রান্ত ও মৃত্যু দুটোই অন্যান্য শুক্রবারের চেয়ে বেশী।

এদিকে মৃত্যুর দিক থেকে চলতি বছর দেশে এ পর্যন্ত সবচেয়ে বেশী মারা গেছে ৩৬ থেকে ৪০ বছর বয়সীরা। গতকাল পর্যন্ত মোট মৃত্যুর ১০ শতাংশ মারা গেছে এ বয়সীরা। এদের সংখ্যা ছিল ৭০ জন। এরপরই মারা গেছে ৩১ থেকে ৩৫ বছরের ৬৫ জন। ৪১ থেকে ৪৫ বছর বয়সীরা মারা গেছে ৫৭ জন। ৪৬ থেকে ৫০ বছরের বয়সীরা মারা গেছে ৫১ জন।

দেশে চলতি বছর ডেঙ্গুজ্বরের জটিলতায় ভোগে এ পর্যন্ত মারা গেছে ৭০৬ জন। এ বছরই ডেঙ্গুতে সবচেয়ে বেশী মানুষের মৃত্যু হলো। অন্যদিকে গত আগস্টে যত ডেঙ্গু রোগী মারা গেছে বাংলাদেশে ২০০০ সালে ডেঙ্গু শুরু হওয়ার পর থেকে একমাসে আর কখনো এতো অধিকসংখ্যক মানুষের মৃত্যু হয়নি। গত আগস্টে ডেঙ্গু রোগীদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৩৪২ জনের।

সেপ্টেম্বর মাসটি বাংলাদেশে ডেঙ্গুজ্বরের মৌসুম। এ মাসেও থেমে থেমে বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বৃষ্টি, বাতাসের নির্দিষ্ট মাত্রার আর্দ্রতা, নির্দিষ্ট মাত্রার তাপমাত্রার ওপর ডেঙ্গু মশার বৃদ্ধি কম হবে না বেশী হবে নির্ভর করে থাকে। বাংলাদেশে প্রতি বছরের আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে যে পরিমাণ বৃষ্টি, আর্দ্রতা ও তাপমাত্রা থাকে তা ডেঙ্গুবাহিত এডিস মশার বংশ বৃদ্ধির জন্য খুবই অনুকূল। এ ব্যাপারে জনস্বাস্থ্যবিদ ডা: আহমেদ পারভেজ জাবীন বলেন, আগস্টের মতো চলতি সেপ্টেম্বর মাসেও এডিস মশার বংশবৃদ্ধির যথেষ্ট পরিবেশ থাকে। ফলে এ মাসেও আগস্টের মতো বেশী মশা থাকতে পারে। ফলে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যাও বাড়তে পারে। তিনি বলেন, ডেঙ্গু সংক্রমণ কমানোর জন্য মশক নিধনের বিকল্প নেই। মশার সংখ্যা কমিয়ে ফেলতে পারলে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা কমে যেতে পারত।
গতকাল সকাল পর্যন্ত এর আগের ২৪ ঘণ্টায় যে এক হাজার ৮৭৬ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে তাদের মধ্যে ঢাকায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৮৪২ জন এবং ঢাকার বাইরে এক হাজার ৩৪ জন। যে ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে তাদের মধ্যে ঢাকায় ১১জন এবং ঢাকার বাইরে ৪জন। গতকাল পর্যন্ত দেশে ৯ হাজার ৭৩০ জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

https://www.dailynayadiganta.com/first-page/775927