৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩, বুধবার, ১০:২৭

হাসপাতালের বিছানায় কাতরাচ্ছেন ৯ হাজারের বেশি ডেঙ্গু রোগী

বর্তমানে নয় হাজারের বেশি মানুষ এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালের বিছানায় ছটফট করছেন। এদের অনেকের অবস্থাই আশঙ্কাজনক। পরিবারের সদস্যদের মধ্যে তাই চলছে উদ্বেগ উৎকণ্ঠা। আক্রান্ত ব্যক্তির সুস্থতার জন্য অনেক চেষ্টা চালাছে হাসপাতাল-পরিবার। কিন্তু তারপরও তারা যেন অসহায়। মৃত্যুর মিছিল যেন ঠেকানোই যাচ্ছে না। গতকাল নতুন করে আরো ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে ডেঙ্গুতে। এ নিয়ে চলতি বছরে ডেঙ্গুতে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়ালো ৬৫৭ জনে।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো গতকালের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সারা দেশে আরো ২৭৮২ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আক্রান্তদের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৯৫১ জন আর ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১৮৩১ জন। একইসাথে এ সময়ে ডেঙ্গুতে মারা গেছেন ১১ জন।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বর্তমানে দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে মোট ৯ হাজার ১৩২ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন আছেন। এর মধ্যে ঢাকায় ৪ হাজার ৪৯ জন এবং অন্যান্য বিভাগের বিভিন্ন হাসপাতালে ৫ হাজার ৮৩ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি রয়েছেন। আর চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সারা দেশে এখন পর্যন্ত এক লাখ ৩৫ হাজার ৯১৬ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকায় ৬২ হাজার ৪৪০ জন এবং ঢাকার বাইরে চিকিৎসা নিয়েছেন ৭৩ হাজার ৪৭৬ জন। আক্রান্তদের মধ্যে হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন এক লাখ ২৬ হাজার ১২৭ জন। এর মধ্যে ঢাকায় ৫৭ হাজার ৯১৫ এবং ঢাকার বাইরে ৬৮ হাজার ২১২ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।

ডেঙ্গু রোগী না কমা উদ্বেগজনক-স্বাস্থ্যমন্ত্রী : দেশে এডিস মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা না কমে থউল্টো বাড়ছে জানিয়ে এই অবস্থাকে উদ্বেগজনক বলে মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক। গতকাল ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের শহীদ ডা: শামসুল আলম খান অডিটোরিয়ামে ‘ডেঙ্গু ড্রপস’ অ্যাপসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এমন মন্তব্য করেন তিনি। মন্ত্রী বলেন, ডেঙ্গুর সেবার ব্যাপারে আমাদের ঘাটতি নেই। তবে মশা না কমলে ডেঙ্গু রোগীও কমবে না। আর ডেঙ্গু রোগী বাড়লে মৃত্যুও বাড়বে। দেশে ওষুধের অভাব নেই তবে, এখনো ডেঙ্গু রোগী না কমে বাড়ছে। এটি উদ্বেগজনক। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সম্মিলিত প্রয়াসের কথা উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সিটি করপোরেশন, পৌরসভা, দায়িত্ববান সরকারি কর্মকর্তাসহ আমাদের সবাইকে দায়িত্ব নিতে হবে। আমাদের আশপাশে পানি জমতে পারে- এমন পাত্র পরে আছে কি-না বা তাতে পানি জমে আছে কি-না, তা দেখতে হবে। আমরা সকলে মিলে কাজ করলে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করতে পারব। ডেঙ্গু বিষয়ে উদ্ভাবিত অ্যাপের প্রশংসা করে তিনি বলেন, আমাদের দেশেও উদ্ভাবন হয়, আমাদের ছেলেরাও যে উদ্ভাবন করতে পারে তারই নিদর্শন হচ্ছে ডেঙ্গু অ্যাপস। এর মধ্যদিয়ে ডেঙ্গু চিকিৎসায় বাংলাদেশ অনেকখানি এগিয়ে যাবে। রোগীরা ভালো চিকিৎসা পাবেন। এটি জীবন বাঁচাবে। আমাদের দেশের ইমেজও বৃদ্ধি পাবে।

অ্যাপ সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ‘ডেঙ্গু ড্রপস’ অ্যাপস ডেঙ্গুতে গ্রুপ ‘বি-নন শক’ পেশেন্টের আইভি ফ্লুইড মেইনটেইনে সহযোগিতা করবে। অ্যাপসটি যেকোনো বয়সী পেশেন্টের জন্য ব্যবহার করা যাবে। তবে শিশুদের ক্ষেত্রে এটি বেশি উপকারী হবে। এ ছাড়াও তরুণ চিকিৎসকদের রোগীর আইভি ফ্লুইড গণনায়ও সে অনুযায়ী চিকিৎসা প্রদানে সাহায্য করবে বলেও জানিয়েছেন তারা।

https://www.dailynayadiganta.com/first-page/775209