২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, শনিবার, ৭:৪৬

নিত্যপণ্যের বাজারে অস্থিরতা থামছে না

নিত্যপণ্যের বাজারে অস্থিরতা থামছেই না। একটি পণ্যের দাম বাড়লে তা আর কমার কোন সম্ভাবনাই থাকে না। কিছুদিন পর বাড়তে থাকে অন্যটির দাম। এ ঘটনা দীর্ঘ দিন ধরে চলছেই। সম্প্রতি পেয়াঁজের দাম অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। ভালো মানের দেশী পেঁয়াজ একশ টাকা কেজিতে গিয়ে ঠেকেছে। পেঁয়াজের দাম কমার আগেই বাড়তে শুরু করেছে মোটা চাল, আলু ও আদা-রসুনের দাম। আর সবজির দামও আকাশচুম্বী।

গতকাল শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে দেখা গেছে, মোটা চাল, ডাল, আলু কিনতে বাড়তি টাকা গুনতে হচ্ছে নগরবাসীকে। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে রাজধানীর খুচরা বাজারে প্রতি কেজি চাল ২ থেকে ৩ টাকা, মসুর ডাল কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা এবং আলু প্রতি কেজি ৫ টাকা বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে। পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজি। চাল ব্যবসায়ীরা বলছেন, সরবরাহ কমায় পাইকারিতেই চালের দাম বেড়েছে। উত্তরাঞ্চলের মোকামগুলো থেকে বেশি দামে চাল কিনে আনছেন পাইকারি ব্যবসায়ীরা। অন্যদিকে, বৃষ্টির কারণে চাহিদা বাড়ার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় মসুর ডাল ধরনভেদে দাম বেড়েছে কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা। একই ধরনের সরবরাহ সংকটের কথা বলা হচ্ছে আলুর দাম বৃদ্ধির কারণ হিসেবেও। বাজারে দেখা গেছে, গুটি স্বর্ণা জাতের মোটা চাল বেশিভাগ দোকানে পাওয়া যাচ্ছে না। পাইজাম ও বি আর-২৮ চাল এখন মানভেদে ৫৫ থেকে ৬০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। যা গত সপ্তাহে ৫২ থেকে ৫৮ টাকার মধ্যে ছিল।

গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে দেখা গেছে, বাজারে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয় ডায়মন্ড আলু। এর দাম বেড়ে এখন কেজি ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এক সপ্তাহ আগে আলুর কেজি ছিল ৪০ থেকে ৪৫ টাকা। দেশী ও আমদানিসহ বাজারে তিন ধরনের শুকনা মরিচ বিক্রি হচ্ছে। সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ৩০ থেকে ৫০ টাকা বেড়ে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে শুকনা মরিচ। দেশী জাতের পেঁয়াজ ৮০ থেকে ১০০ টাকা, ভারতের পেঁয়াজ ৭০ থেকে ৭৫ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। দেশী ও আমদানিকৃত রসুন ২৪০ থেকে ২৬০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। কেরালা জাতের আদা ২২০ থেকে ২৮০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। দেশী আদা ৪২০ থেকে ৪৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।

ফার্মের ডিম ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা ডজন বিক্রি হচ্ছে। বাজারে ব্রয়লার মুরগি ১৭০-১৮০ টাকা, কক ২৯০-৩০০, দেশী মুরগি ৫৫০ টাকা, গরুর গোশত ৭৫০-৮০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। মুদি দোকানের পণ্যের দাম রয়েছে আগের মতোই। প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৭৫ টাকা, চিনি ১৩৫ টাকা, মুসর ডাল ১২৫ টাকা, মুগ ডাল ১২০ টাকা, খেসারি ডাল ৭০ টাকা, বুটের ডাল ৮৫ টাকা, ছোলা ৭৫ টাকা, দুই কেজি প্যাকেট ময়দা ১৪০ টাকা, আটা দুই কেজির প্যাকেট ১২০ টাকা, খোলা সরিষার তেল প্রতি লিটার ২২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

সবজির বাজারে দেখা গেছে, ভালো মানের গোল বেগুন ১০০ ও লম্বা বেগুন ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। করলা ৮০ থেকে ৯০ টাকা, কাঁচা মরিচ ২০০ থেকে ২২০ টাকা, ঢেঁড়স ৫০ থেকে ৬০ টাকা, পটল ৬০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, শিম ২০০ টাকা, টমেটো ১৪০ থেকে ১৬০ টাকা, কাঁকরোল ৭০ থেকে ৮০ টাকা, শসা ৬০ থেকে ৮০ টাকা, কচুরমুখী ৮০ টাকা, বরবটি ৯০ থেকে ১০০ টাকা, ঝিঙ্গা ৮০ ও পেঁপে ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। চালকুমড়া প্রতিটি ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মাছের বাজারে দেখা গেছে, ইলিশ মাছ ১৪০০-১৮০০ টাকা, রুই ৩৮০-৪৫০ টাকা, কাতল ৪০০-৫০০ টাকা, চিংড়ি ১০০০-২০০০ টাকা, কাঁচকি ৫০০ টাকা, টেংরা ৭০০ টাকা, কৈ মাছ ২৮০-৩০০ টাকা, পাবদা ৫০০ টাকা, শিং ৫০০-৬০০ টাকা, বোয়াল ৬৫০-৭৫০ টাকা, বেলে মাছ ৬০০-১০০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

চট্টগ্রামে বাজারে মাছ মুরগী ডিমের দাম কমেনি
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামে বাজারে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কমছে না। নানা অজুহাতে বিক্রেতারা দাম বাড়িয়ে দেয়। গতকাল শুক্রবার চট্টগ্রামের রিয়াজউদ্দিন বাজার, বক্সিরহাট, কাজীর দেউড়ী বাজার ঘুরে দেখা যায়, সব্জির দাম কিছুটা স্থিতিশীল থাকলেও মাছ, মুরগী, ডিমের দাম কমেনি। বাজারে খুচরায় ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৫৫ টাকায়। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৭০ টাকায়। প্রতিকেজি সোনালী মুরগি ৩২০টাকা, লেয়ার ৩৫০টাকা ও দেশি মুরগি ৫৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সবজির বাজারে প্রতিকেজি টমেটো ১৬০ টাকা, কাচাঁমরিচ ২শ’ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি শসা ৪০টাকা, গাজর ১৭০টাকা, বেগুন ৬০টাকা, পটল ৬০টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৫০টাকা, করলা ৭০টাকা, চিচিঙ্গা ৫০টাকা, ঢেড়শ ৬০টাকা, আলু কেজি ৪৫ টাকা, বরবটি ৭০ টাকা, তিত করলা ৭০ টাকা, কচুর লতি ৫০ টাকা,লাউ ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারে প্রতিকেজি ইলিশ ১২শ’ টাকা, পাবদা ৪৫০, রুপচাদা আকারভেদে ৮০০ থেকে ১০০০টাকা, তেলাপিয়া ২৪০টাকা, পোয়া ৩৫০টাকা ও পাঙ্গাস ২০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। কাপ্তাই লেকের বড় কাতলা কেজি ৭৫০টাকা, টেংরা ৬৫০ টাকা, বাচা ৬৫০ টাকা, কেচকি ৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

https://www.dailysangram.info/post/534358