১ সেপ্টেম্বর ২০২৩, শুক্রবার, ৭:৩৭

জামায়াতের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও দুর্গম পথে তার অগ্রযাত্রা

ড. মো. নূরুল আমিন

॥ চার ॥
ভারত এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত তাদের লবিগুলো বিশ্বাস করে যে জামায়াত একটি সুসংগঠিত দল এবং জামায়াতকে ছাড়া তার জোটের অন্যান্য দলগুলো এক পাও এগিয়ে যেতে পারে না কতিপয় বিশেষ উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য ভারত সরকার আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামকে সাহায্য করেছিল। চীরশত্রু পাকিস্তানকে দুর্বল করা, বাংলাদেশ ভূখন্ডে একটি পুতুল রাষ্ট্র ও সরকার প্রতিষ্ঠা, ভারতের পণ্যসামগ্রীর জন্য একটি বৃহদাকারের বাজার দখল, বাংলাদেশের নদী ও সমুদ্র বন্দর ব্যবহার এবং ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলের পাহাড় ঘেরা অবরুদ্ধ সাত রাজ্যে বাংলাদেশের ট্রানজিট করিডোর ব্যবহার, পণ্য ও অস্ত্রশস্ত্র পরিবহন প্রভৃতি হচ্ছে তাদের এই লক্ষ্যগুলোর অন্যতম। বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ এটা পছন্দ করে না। এর ঘোরতর বিরোধী। ভারত আওয়ামী লীগের প্রথম সরকারের আমলে (১৯৭১-১৯৭৫) তাদের দাবিগুলো আদায় করতে পারেনি, এবং ১৯৭৫ সালের পট পরিবর্তনের পর অবস্থা বেগতিক দেখে তারা চুপ ছিল, যাইহোক তারা আওয়ামী লীগের দ্বিতীয় সরকারের আমলে (১৯৯৬-২০০০) স্বার্থ আদায়ে কিছুটা অগ্রসর হতে সক্ষম হয় এবং এই সাফল্যে এতটুকু নিশ্চিত হয়ে পড়ে যে তাদের ধারণা ছিল ২০০১ সালে নিশ্চিতভাবে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসবে। ইতোমধ্যে জাতীয়তাবাদী বিএনপি এবং জামায়াত আরো দু’টি দলকে সাথে নিয়ে একটি জোট গঠন করে এবং নির্বাচনে জয়লাভ করে। আওয়ামী লীগ ও তার মিত্র দলগুলো অবস্থার মূল্যায়ন করে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয় যে, চারদলীয় জোটের জয়লাভের পেছনে প্রধান চালিকা শক্তি ছিল ইসলামী দলগুলো বিশেষ করে জামায়াতের তৎপরতা, জামায়াতের নেতা কর্মীদের সুশৃঙ্খল আচরণ এবং একনিষ্ঠ তৎপরতার ফলেই আওয়ামী লীগ পরাজিত হয়েছে। এই অবস্থায় এই অপশক্তি আভ্যন্তরীণ কোন্দল সৃষ্টির মাধ্যমে জামায়াতকে খ-িত বিখ-িত করার চেষ্টা করে এবং পরে চার দলীয় জোটে ভাঙন ধরাতেও চেষ্টা করে কিন্তু ব্যর্থ হয়। সবদিক দিয়ে ব্যর্থ হয়ে তারা জামায়াতের উপর ঝাপিয়ে পড়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। এই উদ্দেশ্যে তারা নানা ছুতা অজুহাতের আশ্রয় নেয়। তারা ৪৫ বছরের পুরাতন যুদ্ধাপরাধ ইস্যুটিকে অজুহাত হিসাবে খাড়া করে জামায়াত নেতাদের তার সাথে সম্পৃক্ত করার জন্য উঠে পড়ে লেগে যায়। তারা দেশব্যাপী তাদের কট্টর। নেতাকর্মীদের এই মর্মে নির্দেশ দেয় যে তারা যেন ১৯৭১ সালে পাকিস্তান আর্মীর সহায়তায় তাদের নিজ নিজ এলাকায় হত্যা, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ, ধর্মান্তকরণ, লুটপাট প্রভৃতি মানবতা বিরোধী অপরাধ সংঘটনের জন্য জামায়াত নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করে। তাদের এই নির্দেশনা অনুযায়ী দেশের বিভিন্ন এলাকায় এ ধরনের মিথ্যা মামলা রুজু হয়ে যায়।

বিচ্ছিন্ন এই মামলাগুলো পরে সরকারি উদ্যোগে জাতীয় ভিত্তিতে একীভূত করে সেগুলোর সাথে জামায়াত নেতাকর্মীদের সম্পৃক্ত করা হয়। জামায়াতের আমীর মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লা প্রমুখ তাদের কুনজরে পরে। তারা প্রথমে ১৯৭৩ সালের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল আইনের অধীনে তাদের বিচারের প্রয়াস নেয়। বলাবাহুল্য ঐ আইনটি যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত ও চিহ্নিত পাকিস্থানী সেনাবাহিনীর ১৯৫ সদস্যের বিচারের জন্য প্রনয়ণ করা হয়েছিল। কিন্তু এখানেই বিপত্তি দেখা দিল। আইনটি তৈরি করা হয়েছিল চিহ্নিত পাকিস্তানী যুদ্ধাপরাধী ও তাদের সহযোগীদের বিচারের জন্য। জামায়াত নেতারা পাকিস্তানের সেনাবাহিনী অথবা তাদের সহযোগী বাহিনীর সদস্য ছিলেন না। কাজেই এই অজুহাতে তাদের গ্রেফতার অথবা বিচারের আওতায় আনা খুবই কঠিন কাজ ছিল। কিন্তু বিচার তাদের করতেই হবে, অপরাধ করুক বা না করুক। কাজেই বিচারের ক্ষেত্র প্রস্তুত করার জন্য ৩০ বছর পর তারা ১৯৭৩ সালের যুদ্ধাপরাধের জন্য প্রণীত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল আইন সংশোধন করলেন। ঐ আইনে যুদ্ধরত সামরিক বাহিনীর সদস্য অথবা তাদের সহযোগী বাহিনীর (Auxiliary Forces) অপরাধী সদস্যদের বিচারের বিধান ছিল। সংশোধিত আইনে তাদের সাথে ব্যক্তি এবং/অথবা ব্যক্তি সমষ্টির বিচারের বিধান সংযোজন করা হয় এবং এতে তাদের মনোবাঞ্ছনা পূর্ণ হয়। জামায়াতকে ধ্বংস করার অসৎ উদ্দেশ্যে এ আইন সংশোধন করা হয়। কিন্তু এখানে সমস্যা দেখা দেয়। তাদের গ্রেফতার করার জন্য সুনির্দিষ্ট অপরাধ ও তার রেকর্ড প্রয়োজন। সরকারের কাছে রক্ষিত জামায়াত নেতাদের আমল নামায় তা নেই। থাকবে কেমন করে? স্বাধীনতা যুদ্ধ কালে জামায়াত নেতারা হত্যা, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট অথবা যুদ্ধাপরাধের সংঙ্গায় পড়ে এমন কোনো অপরাধের সাথে জড়িত ছিলেন না। বাংলাদেশের কোনো থানা বা আদালতে তাদের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রাক্কালে অথবা তারপরে এমন কোনো অভিযোগ ছিল না। ক্ষতিগ্রস্ত কোনো ব্যক্তি তাদের আত্মীয়, অথবা প্রতিবেশী কিংবা সরকার চল্লিশ বছরের মধ্যে থানায় সুনির্দিষ্ট অভিযোগ উল্লেখ করে কোনো ভিডিও করেনি। এই সময়ের মধ্যে তারা স্থানীয় ও জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছেন। আওয়ামী লীগের সাথে এবং তাদের পাশাপাশি গণতান্ত্রিক আন্দোলনেও অংশগ্রহণ করেছেন। কিন্তু জামায়াত নেতাদের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ উঠেনি। স্বাধীনতার অব্যবহিত পর তৎকালীন আওয়ামী সরকারের আমলে মুজিব বাহিনী মুক্তিবাহিনীর সদস্যরা লক্ষাধিক লোককে রাজাকার-আল বদরের নামে গ্রেফতার করে হত্যা করে এবং ৩৭ হাজার লোককে পুলিশের হাতে সোপর্দ করে রাজাকার আইনে বিচার করে। এদের মধ্যে জামায়াত নেতারা অন্তর্ভুক্ত ছিলেন না। কাজেই টার্গেটকৃত জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের গ্রেফতার করা কঠিন হয়ে পড়ে। কিন্তু ইসলামের প্রতি সূচনা থেকে শত্রু ভাবাপন্ন আওয়ামী লীগের মতো একটি দলের কাছে এটি কোনো কঠিন কাজ ছিল না। এই দলটি মানুষের সাথে প্রতারনায়ও পটু। তারা একাত্তর সালে তৎকালীন সামরিক শাসকদের সাথে আলোচনার প্রাক্কালে পাকিস্তানের খসড়া শাসনতন্ত্রের যে কপি দিয়েছেন তাতে পাকিস্তানের যে কাঠামো পেশ করেছিল তাতে ইসলামী প্রজাতন্ত্রের কাঠামো বিধৃত ছিল। তখন তা ছিল তাদের দাবি এবং তা সামরিক শাসকরা গ্রহণ করেছিল। কিন্তু পরবর্তী কালে এই আওয়ামী লীগ ইসলামী কাঠামোকে অস্বীকার করে ঘোষণা করে যে ধর্ম নিরপেক্ষতাই আগাগোড়া তাদের আন্দোলনের বিষয়বস্তু ছিল। বাংলাদেশ হবার পরবর্তীকালীন আওয়ামী লীগ সরকার বাংলাদেশ থেকে ইসলাম, ইসলামী পরিভাষা, সংস্কৃতি এবং ইসলামী মনিষিদের কীর্তি কলাপ মুছে ফেলার পরিকল্পিত কর্মসূচী বাস্তবায়ন করে। তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোগ্রাম থেকে ‘রাব্বি যোনি এলমান’ কুরআনের এই বাক্যটি মুছে ফেলে। রাজধানীসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ শহর নগরে মুসলিম মনিষিদের নামে যে সব সড়কের নামকরন। করা হয়েছিল সেই নামও তারা মুছে ফেলেছিল স্কুল কলেজের সিলেবাস থেকে ইসলাম ও মুসলিম জাতির ইতিহাস ও বিজয় গাথাগুলো তুলে দিয়েছিল এবং মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের নামে আওয়ামী লীগের বিকৃত ইতিহাস এবং ইসলাম পন্থী দলগুলোর বিরুদ্ধে বিদ্বেষ সৃষ্টিকে পাঠ্যসূচীতে অন্তর্ভুক্ত করেছিল। নতুন প্রজন্মকে ইসলাম বিরোধী এবং মূর্তিপুজকে পরিণত করার উদ্দেশ্যে আওয়ামী লীগ সরকার পাঠ্যসূচীতে হিন্দু দেব দেবী এবং হিন্দুদের পূজনীয় ব্যক্তিদের কাহিনী অন্তর্ভুক্ত করেছে এবং মুসলমান কবি সাহিত্যিকদের লেখা বাদ দিয়েছে এবং রচনাবলীকে এমনভাবে বিন্যাস করেছে যাতে নতুন প্রজন্ম ইসলাম ও ইসলামী ঐতিহ্যের ব্যাপারে অন্ধকারে থেকে যায়। আওয়ামী লীগ সরকার তাদের দল, অঙ্গ সংগঠন এবং জোট শরীকদের মধ্যে নাস্তিক কমিউনিষ্ট সহযোগীরা জামায়াতকে ইসলামের প্রতীক হিসেবে প্রধান টার্গেট বানিয়ে নেয়। জামায়াতই ইসলাম রক্ষার জন্য প্রান দিতে পারে এ বিশ্বাস এবং বাস্তব ধারণা তাদের পাগল বানিয়ে দেয়। তাদের দৃঢ় প্রত্যয় জন্মে যে জামায়াত ও তার নেতৃত্বকে যদি ধ্বংস করে দেয়া যায় তা হলে বাংলাদেশের মাটি থেকে ইসলামকে উৎখাত করা অত্যন্ত সহজ হবে। তারা জামায়াতের আমীর জনাব মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী এবং নায়েবে আমীর ও আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন মুসসিরে কোরআন মাওলানা দেলওয়ার হোসেন সাইদীকে গ্রেফতার করার একটা সহজ উপায় বের করলেন এবং সেটা হচ্ছে তারা দেশের কয়েকটি জায়গায় তাদের অন্ধভক্তদের দিয়ে মামলা রুজু করালেন যে তারা নাকি মুসলমানদের ধর্ম বিশ্বাসে আঘাত দিয়েছে। মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অভিযোগ আর কাকে বলে? যারা ইসলামের শিক্ষা এবং মুসলমানদের আকিদা বিশ্বাসকে প্রতিষ্ঠিত এবং বাস্তবজীবনে প্রয়োগ করার জন্য দুনিয়াবী ভোগবিলাস লোভ-লালসার ঊর্ধ্বে থেকে ও বিলাসবহুল জীবনকে বিসর্জন দিয়ে ত্যাগের জীবন বেছে নিয়েছেন তারা নাকি আলেম হয়ে মুসলমানদের ধর্মবিশ্বাসে আঘাত করছেন? নাস্তিক মুরতাদরাই শুধু এ ধরনের অভিযোগ করতে পারে। যাইহোক অভিযোগ শুধু নয়, মিথ্যা মামলা তারা করেছে এবং তার ভিত্তিতে আমীরে জামায়াত মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী এবং মুসসিরে কুরআন মাওলানা দেলওয়ার হোসাইন সাইদীকে আওয়ামী লীগ সরকার এই মিথ্যা অভিযোগে গ্রেফতার করে। ২০১০ সালের এই ঘটনা ছিল নজিরবিহীন। গ্রেফতারের পর ডিবি অফিসে নিয়ে তাদের উপর শারীরিক ও মানষিক নির্যাতন চালানো হয় এবং সেখানে বসে নতুন মামলা তৈরি করা হয়।

বলাবাহুল্য ২০০৯ সালের জানুয়ারি মাসে এই সরকার আসার পরপর তারা বিভিন্ন জাতীয় শিক্ষা ও উন্নয়ন প্রতিষ্ঠান থেকে ইসলামী এবং জাতীয়তাবাদী শক্তিকে পরিকল্পিতভাবে উৎখাত করতে শুরু করে। এই ক্লিনসিং অপারেশনের সব চেয়ে বড় খাত ছিল শিক্ষা খাত। প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্র সংগঠনের ছাত্র-ছাত্রীদের হল এবং ছাত্রাবাসসমূহ থেকে উৎখাত করার জন্য শাসক দলের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগ দেশের প্রায় সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিশেষ করে কলেজ বিশ্ব বিদ্যালয় এবং বৃহদায়তন মাদরাসাগুলোকে ডাবর দখল করে নেয় এবং প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্র সংগঠনের বৈধ আবাসিক ছাত্র ছাত্রীদের উৎখাত করে ফেলতে যেখানে পারেনি সেখানে ছাত্রাবাস জালিয়ে দেয়, যেমন শতবর্ষ পুরাতন সিলেটের এমসি কলেজ হোটেল। এই জবর দখলের ফলে দেশের বিভিন্নস্থানে এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয় এবং এর ফলে বহু ছাত্র-ছাত্রী হতাহত হয়। এ ধরনের একটি ক্ষেত্রে শাসক দলের ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রশিবিরের জেনারেল সেক্রেটারিকে হত্যা করে। স্থানীয় পুলিশ এবং বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এই অন্যায় হত্যাকা-ের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি; অপরাধীদের তারা গ্রেফতার বা শাস্তি প্রদান করেনি। এ ধরনের আরেকটি ক্ষেত্রে ছাত্রলীগের সাথে বিরোধী ছাত্রসংগঠনের সংঘর্ষ হয় এবং এতে ছাত্র লীগের এক কর্মী নিহত হয়। ছাত্রলীগ কর্মীর ঐ হত্যাকাণ্ডের সাথে যদিও ছাত্রশিবিরের দূরতম সম্পর্কও ছিল না তবুও তারা এর জন্য ছাত্রশিবিরকে দায়ী করে এবং দেশব্যাপী জামায়াত শিবিরের উপর ঝাপিয়ে পড়ে। মজার ব্যাপার হচ্ছে এই যে যদিও ঘটনাস্থল থেকে ঢাকার দূরত্ব ৪৫০ কিলোমিটার তথাপিও সরকার রাজশাহীর জামাত শিবিরের স্থানীয় নেতা কর্মীদের সাথে ঢাকার কেন্দ্রীয় জামায়াত শিবির নেতাকর্মীনের আসামী করে রাজশাহীতে একটি মামলা রুজু করে। তাদের ছাত্রলীগ কর্মীর মৃত্যুর জন্য অভিযুক্ত করা হয়। দেশব্যাপী তারা চিরুনী অভিযানও পরিচালনা করে। এর মাধ্যমে সরকার এমন কি অকুস্থল থেকে ৮০০ কি.মি. দূরের ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড় জেলার জামায়াত শিবির কর্মীসহ হাজার হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করে। এই অভিযোগ ছিল হাস্যপদ এবং অবাস্তব। এই অন্যায় গ্রেফতার ও জুলুমের বিরুদ্ধে জামায়াতকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বা প্রতিবাদ সমাবেশও করতে দেয়া হয়নি। এর মধ্যে জামায়াতের সাবেক আমীর আন্তর্জাতিক ইসলামী আন্দোলনের নেতা বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ এবং দেড় শতাধিক গ্রন্থ প্রনেতা অধ্যাপক গোলাম আজমকে সরকার গ্রেফতার করে। ভূয়া অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট সাক্ষীর ভিত্তিতে ট্রাইবুনাল তাকে ৯১ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করে। ৯০ বছর বয়সী ইসলামী আন্দোলনের এই বয়োবৃদ্ধ নেতা সরকারি অবহেলা ও বিনা চিকিৎসায় জেলখানায় মৃত্যুবরণ করেন।

https://www.dailysangram.info/post/534227