১৭ আগস্ট ২০২৩, বৃহস্পতিবার, ৬:৫৫

মাওলানা সাঈদীর মৃত্যুতে ভক্তরা দুষছেন ডা: মোস্তফা জামানকে

জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন মোফাসসির মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুর জন্য ভক্তরা দায়ী করছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্ডিওলজির অধ্যাপক ডা: মোস্তফা জামানকে।

এটা নিয়ে দেশে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা চলছে। সাঈদীভক্তরা বলছেন, হাস্যোজ্জল একজন মানুষ বিএসএমএমইউতে এসে নামার এক দিন না পেরুতেই কিভাবে মৃত্যু হলো? তারা বলছেন, চিকিৎসার দায়িত্ব কেন এমন একজনকে দেয়া হয়েছে যিনি ২০১৩ সালে শাহবাগে সাঈদী সাহেবের ফাঁসি চেয়েছিলেন। এমন একজনকে চিকিৎসার দায়িত্ব দেয়ার আগে সাঈদী সাহেবের পরিবারের লোকজনের সম্মতি নেয়ার প্রয়োজন ছিল।

এ দিকে বিএসএমএমইউর রেজিস্ট্রার কার্যালয় থেকে গতকাল বুধবার বিকেল ৪টায় পাঠানো প্রেস রিলিজে বলা হয়েছে, ‘বিএসএমএমইউ মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে হাসপাতালে ভর্তি শুরুর পর থেকে পরবর্তী সকল চিকিৎসা বিধিসম্মতভাবে আন্তর্জাতিক প্র্যাকটিস অনুসরণ করে সম্পন্ন করা হয়েছে।’ বিএসএমএমইউর রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডা: মোহাম্মদ হাফিজুর রহমান স্বাক্ষরিত প্রেস রিলিজে আরো বলা হয়েছে, ‘তার চিকিৎসায় অত্র হাসপাতালের সংশ্লিষ্ট সকল চিকিৎসাদানকারী বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক সঠিকভাবে তাদের পেশাগত দায়িত্ব পালন করেন।’ চিকিৎসার ব্যাপারে প্রেস রিলিজে আরো বলা হয়েছে, ‘তার সন্তান মাসুদ সাঈদী সম্যক জ্ঞাত আছেন’।
কিন্তু মাসুদ সাঈদী গতকাল রাতে এই প্রতিবেদককে জানিয়েছেন, পরিচয় দেয়ার পরও আমি আমার পিতার সাথে কথা বলতে পারিনি। তিনি আমাকে ভেতর থেকে হাতের ইশারায় ডাকছিলেন; কিন্তু আমাকে যেতে দেয়া হয়নি। তারা তো আমার সাথে নিষ্ঠুর আচরণ করেছেন। কী চিকিৎসা করা হয়েছে, কাকে চিকিৎসার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে এ সম্বন্ধে আমি কিছু জানতাম না।

এ ব্যাপারে ফোনে বিএসএমএমইউর কাউকে পাওয়া যায়নি। সরাসরি দেখাও করা যায়নি। এ দিকে অধ্যাপক ডা: মোস্তফা জামান গত মঙ্গলবার মধ্যরাতে তাকে হত্যার হুমকি দেয়ার অভিযোগে থানায় জিডি করেছেন। তিনি মিডিয়াকে বলেন, ‘আমাকে হত্যার হুমকি দেয়ায় আমি থানায় জিডি করেছি’। তিনি বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কিছু মানুষ তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। অযৌক্তিকভাবে তাকে মাওলানা সাঈদীর মৃত্যুর জন্য দায়ী করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, ডা: মোস্তফা জামান ২০১৩ সালে শাহবাগে জামায়াত নেতাদের ফাঁসি চেয়ে যে আন্দোলন হয়েছিল সেখানে তিনি মাওলানা সাঈদীর ফাঁসি চেয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিয়েছিলেন। এর ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের বিভিন্ন আইডিতে ঘুরছে। এমতাবস্থায় তিনি কিভাবে মাওলানা সাঈদীর চিকিৎসায় জড়িত হয়েছেন তা নিয়ে তার ভক্তদের মধ্যে প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। ভক্তরা বলছেন, এ ধরনের একজন চিকিৎসক কোনোভাবেই মাওলানা সাঈদীর চিকিৎসায় জড়িত হতে পারেন না। ভক্তরা মাওলানা সাঈদীর মৃত্যুর ব্যাপারে তাকে দায়ী করছেন।

নয়া দিগন্তের পক্ষ থেকে বিএসএমএমইউর কার্ডিওলজি বিভাগের দায়িত্বশীল চিকিৎসকদের কাছে অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে তারা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, মাওলানা সাঈদী অধ্যাপক ডা: চৌধুরী মেশকাত আহম্মেদের অধীনে ভর্তি ছিলেন। তিনি কার্ডিওলজি বিভাগের বর্তমান চেয়ারম্যান। মাওলানা সাঈদীর বুকে ব্যথা উঠায় যারা প্রাইমারি পিসিআর করতে পারেন এমন তিনজনকে ডেকে আনা হয়, তাদের একজন অধ্যাপক মোস্তফা জামান। কিন্তু ব্যথা কমে যাওয়ায় প্রাইমারি পিসিআর করা হয়নি। কিন্তু পরে ১৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় হঠাৎ কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়ে মাওলানা সাঈদীর দুঃখজনক মৃত্যু হয়

https://www.dailynayadiganta.com/first-page/770442