১৬ আগস্ট ২০২৩, বুধবার, ৬:৩৫

দাম কিছুটা কমলেও খুচরায় প্রভাব কম

রাজধানীর পাইকারি ও খুচরা বাজারগুলোতে কিছুটা কমেছে ডিমের দাম। তবে পাইকারিতে যে হারে কমেছে, খুচরা পর্যায়ে সেভাবে কমেনি। খুচরায় এখনো প্রতি ডজন ডিম ১৬৫ টাকা। প্রতি হালি ৫৫ টাকা।

গতকাল রাজধানীর তেজগাঁও, রামপুরা, বাড্ডা ও জোয়ারসাহারা বাজার ঘুরে ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
দেশজুড়ে গত দুই সপ্তাহে ডিমের বাজার অস্থিতিশীল হয়ে ওঠে। আমিষের সহজলভ্য উৎস প্রতি পিস ডিমের দাম হঠাৎ বেড়ে ১২ থেকে ১৫ টাকা হয়ে যায়। এমন প্রেক্ষাপটে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরসহ অন্যান্য সংস্থা ডিমের উচ্চমূল্য নিয়ন্ত্রণে অভিযানে নেমেছে।

ডিম উৎপাদনকারী ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মতবিনিময়সভাও করেছে ভোক্তা অধিদপ্তর।
পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানান, গত তিন-চার দিনে পাইকারিতে প্রতি ১০০ ডিমে ১৬০ থেকে ১৬৫ টাকা কমেছে। এতে ডজনপ্রতি দাম পড়ছে ১৪০ টাকা, চার দিন আগেও পাইকারিতে যা ১৬০ টাকা ছিল।

তেজগাঁও ডিম ব্যবসায়ী বহুমুখী সমবায় সমিতির সভাপতি মো. আমান উল্লাহ গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘পাইকারিতে গত কয়েক দিনে ডিমের দাম কমেছে।

আমরা এখন ডিম বিক্রিতে লাভ-ক্ষতির চিন্তা করছি না। আজ (গতকাল) ১০০ ডিম এক হাজার ১৬৫ থেকে এক হাজার ১৭০ টাকায় বিক্রি করেছি, যা কয়েক দিন আগে এক হাজার ৩৩০ টাকা ছিল।’

খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, পাইকারিতে ডিমের দাম কিছুটা কমলেও এখনো আগের বাড়তি দামে কেনা ডিম বিক্রি করছেন তাঁরা। বাড্ডার রিপন স্টোরের ব্যবসায়ী মো. আবু জাফর রিপন বলেন, ‘ডিমের দাম আগের তুলনায় কিছুটা কমেছে। প্রতি ডজন এখন ১৬৫ টাকায় বিক্রি করছি।

বিক্রি কমে যাওয়ায় আগের বাড়তি দামে কেনা ডিম এখনো দোকানে রয়ে গেছে। এতে পাইকারিতে যেভাবে কমেছে, সেই হারে বিক্রি করতে পারছি না। নতুন ও পুরনো ডিমের দাম সমন্বয় করে বিক্রি করতে হচ্ছে। তবে দু-এক দিনের মধ্যে খুচরা ডিমের দাম আরো কমে যাবে।’

সরকারি বিপণন সংস্থা টিসিবির গতকালের বাজারদর অনুযায়ী, রাজধানীর খুচরা বাজারগুলোতে প্রতি হালি ডিম বিক্রি হচ্ছে ৫৩-৫৫ টাকায়। প্রতি ডজন ডিমের দাম ১৫৯ থেকে ১৬৫ টাকা।

ডিম বেচাকেনায় রসিদ না থাকলে ব্যবস্থা
খামার, আড়ত ও পাইকারি পর্যায়ে ডিম কেনাবেচায় অবশ্যই পাকা রসিদ ব্যবহার করতে হবে। তা না হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান।

তিনি বলেন, ‘বুধবার (আজ) থেকে পাকা রসিদ থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করতে কাজ করবে অধিদপ্তর। খামারে একটি ডিমের উৎপাদন ব্যয় পড়ে সর্বোচ্চ সাড়ে ১০ টাকা। খুচরা পর্যায়ে এই ডিম কোনোভাবেই ১২ টাকার বেশি হওয়ার কথা নয়। অথচ ১০ দিনের বেশি সময় ধরে একটি ডিম ১৫ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। কেউ ডিমের দাম ১২ টাকার বেশি নিলে তাদের বিরুদ্ধে শুধু জরিমানা নয়, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হবে বলেও গত সোমবার মতবিনিময়সভায় ভোক্তা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক জানান।

আগের বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে তেল-চিনি
বোতলজাত ও খোলা উভয় ধরনের সয়াবিন তেলের দাম লিটারে পাঁচ টাকা কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে কেজিপ্রতি খোলা ও প্যাকেটজাত চিনির দামও কমছে পাঁচ টাকা। দুটি পণ্যের নতুন দামই গত সোমবার থেকে কার্যকর হয়। কিন্তু রাজধানীর বাজারগুলোতে এখনো তেল ও চিনি আগের বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে। খোলা চিনির কেজি ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারের দোকানগুলোতে প্যাকেট চিনি নেই।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, দাম কমানোর বোতলজাত সয়াবিন তেল ও চিনি বাজারে আসতে আরো সপ্তাহখানেক সময় লাগতে পারে। তাই আগের দামেই পুরনো বোতলজাত তেল ও চিনি বিক্রি করছেন তাঁরা।

গত রবিবার পৃথক দুটি বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বাংলাদেশ ভেজিটেবল ওয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন এবং বাংলাদেশ সুগার রিফাইনার্স অ্যাসোসিয়েশন পাঁচ টাকা কমানোর সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে। প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিনের দাম ১৭৯ টাকা থেকে পাঁচ টাকা কমে এখন বিক্রি হবে ১৭৪ টাকায়। প্রতি কেজি পরিশোধিত খোলা চিনির দাম ১৩৫ টাকা থেকে পাঁচ টাকা কমিয়ে ১৩০ টাকা করা হয়। প্যাকেটজাত চিনির দাম ১৪০ টাকা থেকে কমিয়ে করা হয়েছে ১৩৫ টাকা।


https://www.kalerkantho.com/print-edition/last-page/2023/08/16/1308770