১৬ আগস্ট ২০২৩, বুধবার, ৬:৩১

নষ্ট হচ্ছে মূল্যবান কর্মঘণ্টা

চট্টগ্রামে নাজুক সড়কে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ

নাজুক সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার মধ্যে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে বন্দর নগরী চট্টগ্রামের বাসিন্দাদের। তিন দিনের বৃষ্টিতেই অসংখ্য খানাখন্দে ভরা মহানগরীসহ চট্টগ্রামের বিস্তীর্ণ সড়কগুলো। ফলে ন্যাড়া সড়ক দিয়েই গন্তব্যে যেতে অবর্ণনীয় দুর্ভোগের মুখোমুখি হতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত। স্বল্প দৈর্ঘ্যরে সড়ক পার হতেই নষ্ট হচ্ছে মূল্যবান কর্মঘণ্টা। এবারের বৃষ্টিতে নগরীর ৫০ কিলোমিটার সড়ক নষ্ট হয়েছে বলে দাবি সিটি করপোরেশনের।

সড়ক সংশ্লিষ্টদের সাথে আলাপ করে জানা গেছে- সাম্প্রতিক বৃষ্টিপাতে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বন্দর নগরীর সড়ক যোগাযোগ নেটওয়ার্ক। এই সড়কের বিস্তীর্ণ অংশে রয়েছে বড় বড় গর্ত। ফলে পুরো সড়কজুড়ে তীব্র ঝাকুনির পাশাপাশি দীর্ঘ সময় পেন হচ্ছে গন্তব্যে পৌঁছাতে।

সংশ্লিষ্টরা জানায়, রাস্তাঘাট ভেঙেচুরে বেহাল হয়ে যাওয়ার কারণে সড়ক দিয়ে চলাচলকারী গাড়িগুলোকে দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। ভাঙা সড়কের গর্ত ও অধিকাংশ স্থানে নুড়ি পাথরের প্রলেপ না থাকার কারণে গাড়ি চলাচল বিঘ্ন হয়ে বিভিন্ন স্থানে দীর্ঘ যানজট তৈরি হচ্ছে। পাশাপাশি গাড়ির মূল্যবান যন্ত্রাংশ নষ্ট হচ্ছে বলেও সংশ্লিষ্টদের দাবি। বিশেষ করে ব্যক্তিগত যানবাহনগুলোকে সম্বুক গতিতে দীর্ঘ সময় নিয়ে গন্তব্যে পৌঁছতে হচ্ছে।

নগর ঘুরে দেখা গেছে, বিটুমিনের প্রলেপ উঠে গিয়ে ন্যাড়া সড়কে অসংখ্য গর্ত। এমন অবস্থা কোনো নির্দিষ্ট সড়কের নয়, পুরো চট্টগ্রামের অধিকাংশ রাস্তাই যেন কঙ্কালশার হয়ে গেছে। ফলে ভাঙাচোরা রাস্তায় যেমনি ব্যাহত হচ্ছে যান চলাচল, তেমনি যানবাহনের গতি কমে যাওয়াতে সৃষ্টি হচ্ছে যানজট। নগরীর প্রধান সড়ক সিডিএ এভিনিউ, বারিক বিল্ডিং সড়ক, নিমতলা বিশ্বরোড, ঢাকা ট্রাংক রোড (ডিটি রোড), মাঝিরঘাট সড়ক, গরীবুল্লাহ শাহ মাজার সড়ক বিশাল গর্তে রূপ নিয়েছে। গণিবেকারি-চেরাগীপাহাড় সড়ক, কাজিরদেউরী সড়ক, বিমানবন্দর সড়ক, চকবাজার, বহদ্দারহাট, ঈদগাহ ও আরকান সড়ক, পাঁচলাইশ-অক্সিজেন সড়কসহ নগরীর বিস্তীর্ণ সড়কের বিভিন্ন স্থানেও বেহাল অবস্থা। এ ছাড়া নগরীর প্রায় সব অলিগলিই এখন বিধ্বস্ত।

বেশির ভাগ সড়কেরই বিটুমিনের প্রলেপ উঠে পুরো সড়ক ন্যাড়া হওয়ার পেছনে নিম্নমানের বিটুমিন ব্যবহারকেই দায়ী করেছেন অনেকেই। তবে সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময়েই এই অভিযোগ নাকচ করা হয়েছে।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম মানিক নয়া দিগন্তকে জানিয়েছেন, বৃষ্টির কারণে আমরা কাজ করতে পারছি না। তাছাড়া বৃষ্টি থামলেও অন্তত দু’দিন অতিক্রান্ত হলেই সড়কে কাজ করা যায়। প্রাথমিকভাবে নগরীর প্রায় ৫০ কিলোমিটার সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, আপাতত বড় বড় গর্তগুলো ইট দিয়ে ভরাট করা হচ্ছে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে। নইলে গাড়ি চললে গর্ত আরো বড় হবে। বৃষ্টি থামলে পুরোপুরি সমীক্ষা চালিয়ে কি পরিমাণন সড়ক এবং অলিগলি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তা নির্ধারণ করা হবে। পাশাপাশি পুরোদমে প্যাচওয়ার্ক কার্যক্রম চালানো হবে বলেও তিনি জানান। যে সব সড়কে খানাখন্দকসহ দৃশ্যমান ভাঙাচোরা রয়েছে সেগুলো তাৎক্ষণিকভাবে প্যাচওয়ার্কের মাধ্যমে দ্রুত মেরামত ও সংস্কারের কাজ বৃষ্টিজনিত কারণে চালানো যাচ্ছে না বলেও তিনি জানান।

https://www.dailynayadiganta.com/last-page/770192