১৬ আগস্ট ২০২৩, বুধবার, ৬:১১

চির বিদায় কুরআনের খাদেম আল্লামা সাঈদী

পিরোজপুরে কুরআনের পাখি আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর জানাযায় জনতার সমুদ্র

সামছুল আরেফীন, এইচএম আকতার (ঢাকা), আবদুর রাজ্জাক রানা (খুলনা), সোহরাব হোসাইন জুয়েল (পিরোজপুর): দুই দফা নামাযে জানাযা শেষে ছেলের কবরের পাশে চির নিদ্রায় শায়িত হলেন আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী। নিজের গড়া প্রতিষ্ঠান আল্লামা সাঈদী ফাউন্ডেশনের বায়তুল হামদ জামে মসজিদের পাশে দাফন করা হয় তাকে। লাখো মানুষের অশ্রু, কান্নার রোলের মধ্য দিয়ে বিদায় জানানো হয় এই কুরআনের খাদেমকে। ১৪ বছর পরে নিজ হাতে গড়া প্রতিষ্ঠানেই তিনি ফিরলেন, জীবিত নয়, লাশ হয়ে। গণপরিবহন বন্ধ থাকলেও প্রিয় মানুষকে দেখার জন্য পিরোজপুরের আল্লামা সাঈদী ফাউন্ডেশনে বাঁধভাঙ্গা জোয়ারের মতো ছুটে আসেন ইসলাম প্রিয় জনতা। পথে পথে শিকার হয়েছেন হয়রানির, তারপরও তাদের ছুটে আসা আটকাতে পারেনি কেউ।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন মুফাসসিরে কুরআন ও সাবেক এমপি আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর লাশ গতকাল ফজরের পর পুলিশি প্রহরায় পিজি হাসপাতাল থেকে পিরোজপুরের উদ্দেশে লাশবাহী এ্যাম্বুলেন্স রওয়ানা হয়। তার লাশ সকাল ১০টার দিকে পিরোজপুর পৌঁছে। তাঁর নামাযে জানাযা বেলা ১টা ১০ মিনিটে তার প্রতিষ্ঠিত আল্লামা সাঈদী ফাউন্ডেশন মাঠে অনুষ্ঠিত হয়। জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমীর ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান এতে ইমামতি করেন। জানাযায় সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মা’ছুম, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিম ও এডভোকেট মুয়ায্যম হোসাইন হেলাল, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মোঃ আবদুর রব ও অধ্যক্ষ মোঃ ইজ্জত উল্লাহ, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর নূরুল ইসলাম বুলবুল, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মোবারক হোসাইন ও অধ্যক্ষ মোঃ সাহাবুদ্দিন, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সেক্রেটারি মুহাদ্দিস আবদুল খালেক, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের ভারপ্রাপ্ত আমীর আবদুর রহমান মূসা, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও কুমিল্লা মহানগরী আমীর কাজী দ্বীন মুহাম্মাদ, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অধ্যাপক হারুনুর রশিদ খান, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা আবুল কালাম আযাদ ও ড. মাওলানা খলিলুর রহমান মাদানি, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও বরিশাল মহানগরী জামায়াতের আমীর জহির উদ্দিন মোঃ বাবর, পিরোজপুর জেলা আমীর অধ্যক্ষ তোফাজ্জল হোসাইন, পটুয়াখালী জেলা আমীর অধ্যাপক শাহ আলম, ভোলা জেলা আমীর মাস্টার জাকির হোসাইন, বরগুনা জেলা আমীর মাওলানা মুহিব্বুল্লাহ, বরিশাল জেলা আমীর মাওলানা আবদুল জব্বার, ঝালকাঠি জেলা আমীর এডভোকেট হাফিজুর রহমান, খুলনা মহানগরী আমীর অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান, খুলনা জেলা আমীর মাওলানা ইমরান হোসাইন, সাতক্ষীরা জেলা আমীর মুহাদ্দিস রবিউল বাশার, যশোর শহর আমীর গোলাম রসূল, যশোর পূর্বের আমীর মাস্টার নূরুন্নবী, যশোর পশ্চিমের আমীর মাওলানা হাবিবুর রহমান, ফরিদপুর জেলা আমীর বদর উদ্দিন, মাদারীপুর জেলা আমীর আবদুস সুবহান, রাজবাড়ি জেলা আমীর এড. নূরুল ইসলাম, মাগুরা জেলা আমীর অধ্যাপক এমবি বাকের, নড়াইল জেলা আমীর আতাউর রহমান বাচ্চু, কুমিল্লা উত্তর জেলা আমীর আবদুল মতিন, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, জেলা সভাপতি আমিনুল ইসলাম, ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাজিবুর রহমান ও সেক্রেটারি জেনারেল মুঞ্জুরুল ইসলাম, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অধ্যাপক হারুনুর রশিদ খান, সহ-সভাপতি লস্কর মো. তসলিম, কবির আহমাদ, মুজিবুর রহমান ভূঁইয়াসহ জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের বহু নেতাকর্মী শরীক হন। আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর নামাযে জানাযায় আলেম-ওলামা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী, বিভিন্ন শ্রেণি-পেশাসহ লক্ষ লক্ষ সাধারণ মানুষ শরীক হন। বৈরি আবহাওয়া সত্ত্বেও তাকে একনজর দেখার জন্য হাজার হাজার মানুষের ঢল নামে। তারা অশ্রুসিক্ত নয়নে তাদের প্রিয় রাহবারকে বিদায় জানান। এ সময় এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়।

মরহুমের দ্বিতীয় পুত্র শামীম বিন সাঈদীর ইমামতিতে দ্বিতীয় জানাযা অনুষ্ঠিত হয় এবং গায়েবানা জানাযা অব্যাহত আছে। জানাযা শেষে তাকে নিজের প্রতিষ্ঠিত আল্লামা সাঈদী ফাউন্ডেশনের বায়তুল হামদ জামে মসজিদের পাশে দাফন করা হয়। এখানেই তার ছোট ভাই হুমায়ুন কবীর সাঈদী এবং তার জ্যেষ্ঠ পুত্র মাওলানা রাফিক বিন সাঈদীর কবর রয়েছে।

পথে পথে হয়রানি: আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী রাহিমাহুল্লাহ-এর পিরোজপুর সাঈদী ফাউন্ডেশনে জানাযা-দাফন করতে যাওয়া ও আসার পথে পথে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা হামলা, ভাংচুর, মোবাইল ও টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় তাদের হামলায় অর্ধশত নেতাকর্মী ও সাঈদী ভক্ত আহত হয়েছে। অর্ধ শতাধিক মোটর সাইকেল, প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস ভাংচুর করা হয়েছে। আটক করা হয়েছে ৩৬ জন নেতাকর্মী ও সাঈদী ভক্তকে। সবমিলিয়ে গোটা বাগেরহাট এলাকায় তান্ডব চালানো হয়েছে।

খুলনা মহানগরী জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি এডভোকেট শাহ আলম জানান, আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর প্রথম জানাযা শেষ করে তারা একটি গাড়ি বহর নিয়ে খুলনার উদ্দেশে রওনা হয়। পথিমধ্যে বাগেরহাট জেলার বাধালবাজার এলাকায় পৌঁছালে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা লাঠিসোটা নিয়ে হামলা চালায়। এ সময় তারা ১০/১৫টি মোটরসাইকেল, ৮/১০টি মাইক্রোবাস ও ৫/৬টি প্রাইভেটকার ভাংচুর করে। তাদের হামলায় আহত ২০/২৫ জন নেতাকর্মী ও সাঈদী ভক্ত। পরে গাড়ি বহরে থাকা নেতাকর্মীদের সাথে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এরপর তারা দড়াটানা ব্রীজের টোল আদায়ের স্থলে একইভাবে হামলার শিকার হন। এখানে পুলিশও তাদের সাথে যুক্ত হয় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।

বাগেরহাট জেলা জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর এডভোকেট শেখ আব্দুল ওয়াদুদ জানান, আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর প্রথম জানাযায় অংশগ্রহণের জন্য খুলনা ও বাগেরহাট থেকে নেতাকর্মী ও সাঈদী ভক্তরা নিজস্ব পরিবহনে পিরোজপুরের উদ্দেশে রওনা দেন। পথিমধ্যে বাগেরহাট সদর থানা পুলিশ খুলনা থেকে আসা ৬ জনকে এবং কচুয়া থানা পুলিশ ৩০ জনকে আটক করেছে। যশোর থেকে আসা ১১ নেতাকর্মী ও সাঈদী ভক্তকে আওয়ামী লীগের ক্যাডাররা পিটিয়ে গুরুতর জখম করেছে। তাদেরকে স্থানীয় কচুয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। কুমিল্লা থেকে আসা ৮/১০ জনকে পিটিয়ে জখম করা হয়েছে। তারা স্থানীয় কয়েকটি ক্লিনিকে চিকিৎসা নেয়।

আল্লামা সাঈদী কুরআনের শিক্ষাকে ছড়িয়ে দিতে ছুটে বেড়িয়েছেন: আল্লামা সাঈদী কুরআনের শিক্ষাকে ছড়িয়ে দেয়ার জন্য টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া পর্যন্ত চষে বেড়িয়েছেন। তিনি কুরআনের শিক্ষাকে বাস্তবায়নের দেয়ার জন্য বিরতিহীন ছুটে বেড়িয়েছেন, কোন বিশ্রাম নেন নি। তিনি জাতীয় সংসদে আল্লাহর আইন চালু করতে চেয়েছিলেন তাই তিনি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিলেন।

পিরোজপুর আল্লামা সাঈদীর জানাযাপূর্ব সমাবেশে জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমীর অধ্যাপক মজিবুর রহমান এ কথা বলেন। আমীরে জামায়াত উপস্থিত জনতাকে প্রশ্ন করেন, আল্লামা সাঈদীর ছেলেরা সে রকমের যদি জাতীয় সংসদে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন আপনারা কি তাদেরকে জাতীয় সংসদে পাঠাতে রাজি আছেন? জনতা সমস্বরে জবাব দেন, হ্যাঁ। তিনি বর্তমান সরকারের সমালোচনা করে বলেন, বর্তমান জালেম সরকার সীমালংঘন করেছে। তিনি উপস্থিত জনতাকে মানবতার সেবায় উদ্বুদ্ধ করার জন্য বলেন, কেয়ামতের দিন আল্লাহ বলবেন আমি ক্ষুধার্ত ছিলাম আমাকে খেতে দাও নি, আমি তৃষ্ণার্ত ছিলাম আমার তৃষ্ণা মিটাও নি, আমি অভাবী ছিলাম আমার অভাব পূরণ করনি। এভাবে তিনি জনশক্তিকে ক্ষুধার্ত অভাবী মানুষের পাশে দাঁড়াবার জন্য সকলকে আহ্বান জানান।

প্রিয় নেতার জন্য মানুষের অপেক্ষা: সোমবার আল্লামা সাঈদীর মৃত্যুর সংবাদ ফেসবুকসহ নানান সামাজিক ও গণমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সারা দেশের মানুষের ভিতরে শোকের ছায়া নেমে আসে। সারা পিরোজপুরের মানুষ শোকে মুহ্যমান হয়ে পড়ে। সেই সাথে সাথে বাড়তে থাকে নানা উৎকণ্ঠা। বিভিন্ন সামাজিক ও গণমাধ্যমে তার জানাযা কখন হবে কোথায় হবে, তার দাফন কাফন কোথায় হবে এসব প্রশ্ন ঘুরপাক খেতে থাকে। সেই সাথে তার জানাযা নিয়ে সরকারের ভূমিকা কি রকমের হয় তা নিয়েও চলে মানুষের মাঝে চাপা উত্তেজনা। মানুষের মাঝে উৎকণ্ঠ দেখা দেয় সরকার হয়তো তাকে রাতের অন্ধকারেই দাফনে কাফনে বাধ্য করতে পারে। নির্ঘুম রাত কাটিয়েছে পিরোজপুরের মানুষ। ইতিমধ্যেই তার পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, তাকে পিরোজপুরে আল্লামা সাঈদী ফাউন্ডেশনের বড় ছেলে রফিক বিন সাঈদীর পাশেই সমাহিত করা হবে। ফলে মানুষের ভিতরে তীব্র উত্তেজনা এবং আগ্রহ কাজ করতে থাকে যে তাদের প্রিয় নেতার লাশ কখন এসে পৌঁছাবে। সকালে ঢাকা থেকে লাশ পিরোজপুরের উদ্দেশ্যে রওনা করলে আল্লামা সাঈদী ফাউন্ডেশনে মানুষের ভিড় আরো বাড়তে থাকে।

১৪ বছর পরে নিজ হাতে গড়া প্রতিষ্ঠানে আল্লামা সাঈদী: অবশেষে তিনি শত প্রতীক্ষা শেষে ১৪ বছর পরে নিজ হাতে গড়া স্বপ্নের প্রতিষ্ঠান আল্লামা সাঈদী ফাউন্ডেশনে এসে পৌঁছালেন। তবে তিনি আগের মত নয়ন কাড়া ব্যক্তিত্বসম্পন্ন হাসিমুখে নয় , তিনি আসলেন লাখো জনতাকে চোখের জলে ভাসিয়ে লাশ হয়ে।

অপেক্ষার উত্তেজনায় মানুষ যখন ঘামছে ঠিক তখন বেলা দশটায় প্রাণপ্রিয় নেতার লাশবাহী গাড়ি এসে আল্লামা সাঈদী ফাউন্ডেশনের গেটে থামে। সকাল থেকে প্রশাসন ছিল তৎপর। হাজারো মানুষের ভিড় ঠেলে লাশবাহী গাড়ি সাঈদী ফাউন্ডেশনে ঢুকতে পারছিল না। প্রায় আধাঘন্টা প্রাণান্তকর প্রচেষ্টার পরে তাফহীমুল কুরআন আলিয়া মাদ্রাসার সিটির সামনে এসে প্রিয় নেতার লাশবাহী গাড়ি থামে। পিরোজপুরের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে আগেই বলা হয়েছিল লাশবাহী গাড়ি আসা মাত্র ১০ মিনিটের মধ্যে দাফন কাফনের কাজ শেষ করতে হবে।

লাশবাহী গাড়ি এসে পৌঁছালেও পথে নানান বিড়ম্বনার কারণে মাসুদ সাঈদী এসে পৌঁছাইতে অনেক সময় নেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসন দ্রুত জানাযা শেষ করার জন্য চাপ দিতে থাকেন। অন্যদিকে জনতা আল্লামা সাঈদীর সন্তানদের উপস্থিতি ছাড়া জানাযায় রাজি হচ্ছিল না। নেতৃবৃন্দ কয়েকবার চেষ্টা করেও জানাযা শুরু করতে পারেননি। অবশেষে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নমনীয় হলে বেলা প্রায় সোয়া একটার সময় মাসুদ সাঈদী এসে পৌঁছালে মানুষের স্বস্তি ফিরে আসে। এ সময় মাসুদ সাঈদী অত্যন্ত আবেগময়ী বক্তব্যে উপস্থিত জনতাকে আবেগে আপ্লুত করে তোলেন। তিনি অভিযোগ করেন, তার বাবা কারাগারে অসুস্থ হয়ে পড়লে হাসপাতালে নেয়া হয় কিন্তু তাদেরকে কিছুই জানানো হয়নি। বিভিন্ন মাধ্যমে তারা জানতে পেরে হাসপাতালে ছুটে গিয়ে শত চেষ্টা করেও অসুস্থ পিতার মুখখানা একবারের জন্যও দেখতে দেয়া হয়নি। এ সময় তিনি পাগলের মতন হাসপাতালে বারান্দায় এদিক সেদিক এদিক ছুটে বেরিয়েছেন কিন্তু এতে প্রশাসনের কোন মতে কোন মন গলেনি। অবশেষে তিনি এশার নামাযে গেলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে তাকে ডেকে এনে জানানো হয়, তার পিতা আর বেঁচে নেই। তার বক্তব্যে উপস্থিত জনতা আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়ে। প্রথম জানাযার নামাযের আগে নিকট মহিলা আত্মীয়দেরকে শেষবারের মতো প্রিয় স্বজনকে দেখার সুযোগ করে দেয়া হয়। এরপরেই প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম জামাত শেষে সকল সাধারণ মানুষের প্রিয় স্বজনের মুখটি একটিবারের জন্য দেখার সুযোগ দেয়া হয়। কিন্তু প্রচ- জনতার ভিড়ে অনেকেই দেখতে পারেননি। অনেকেই আবার জনতার চাপে অসুস্থ হয়ে পড়েন।

আল্লামা সাঈদীর মেজো ছেলে শামীম সাঈদী এসে উপস্থিত হলে দ্বিতীয় নামাযে জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় জামাতেও হাজার হাজার মানুষ অংশগ্রহণ করে। অবশেষে বুকের গভীরে থাকা পরম ভালবাসা এবং অশ্রুস্নাত চোখে প্রিয় নেতাকে পরম শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় "বায়তুল হামদ জামে মসজিদ" সংলগ্ন আল্লামা সাঈদীর পারিবারিক কবরস্থানে প্রিয় বড় ছেলে মরহুম রফিক বিন সাঈদীর কবরের পাশে সমাহিত করা হয়।

https://dailysangram.info/post/532862