৯ আগস্ট ২০২৩, বুধবার, ৯:৩২

বার্লিনে চ্যান্সারি কমপ্লেক্স নির্মাণে ব্যয় বাড়ছে ৫৫ ভাগ

মূল বাস্তবায়ন কাজ শুরুর আগেই প্রকল্প ব্যয় সংশোধন

জার্মানির বার্লিনে বাংলাদেশ চ্যান্সারি কমপ্লেক্স নির্মাণে ব্যয় বাড়ছে ৫৫ শতাংশ। টাকার অঙ্কে যার পরিমাণ প্রায় ৬২ কোটি টাকা। জানা গেছে, সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে বাস্তবায়িতব্য প্রকল্পটির মোট ব্যয় ধরা হয়েছিল ১০৯ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। তবে এর মধ্যে মূল ডিপিপিতে প্রকল্প ব্যয় প্রাক্কলন করা হয় ৮৩ কোটি ৮০ লাখ টাকা। বাংলাদেশ চ্যান্সারি কমপ্লেক্স নির্মাণে বার্লিনে স্থানীয়ভাবে দরপত্র আহ্বান করা হলে পাঁচটি দরপত্র জমা পড়ে। এর মধ্যে মনোনীত দরদাতার আর্থিক প্রস্তাব হচ্ছে- ১ কোটি ২৮ লাখ ৯ হাজার ৭৩৩ ইউরো। বাংলাদেশী টাকায় প্রায় ১৪৫ কোটি ৬৯ লাখ ৭৯ হাজার টাকা। সে হিসাবে চ্যান্সারি কমপ্লেক্স নির্মাণে ব্যয় বাড়ছে ৬১ কোটি ৮৯ লাখ ৭৯ হাজার টাকা। শতকরা হিসাবে ব্যয় বাড়ছে প্রায় ৫৫ শতাংশ। জার্মানির বার্লিনে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। গতকাল বুধবার অনুষ্ঠেয় সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা বৈঠকে বার্লিনে বাংলাদেশ চ্যান্সারি কমপ্লেক্স নির্মাণে বর্ধিত ব্যয়ে ঠিকাদার নিয়োগের একটি প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হতে পারে।

জানা যায়, প্রাক্কলিত খরচের চেয়ে বেশি ব্যয়ে প্রকল্পের ঠিকাদার নিয়োগের লক্ষ্যে সম্প্রতি একনেক সভায় প্রকল্পটির প্রথম সংশোধিত প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। সংশোধিত প্রস্তাবে প্রকল্প ব্যয় বাড়িয়ে ১৬৯ কোটি ৭১ লাখ ৬৪ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়। প্রকল্প ব্যয় বাড়ার কারণ সম্পর্কে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, ইউরো-টাকা বিনিময় হার বাড়ার কারণে প্রকল্প ব্যয় বাড়ছে।

এ দিকে প্রকল্পের প্রথম সংশোধনী প্রস্তাবে প্রকল্প ব্যয় বাড়ার কারণ হিসেবে কয়েকটি বিষয়কে চিহ্নিত করা হয়। এগুলোর মধ্যে রয়েছে- রেট শিডিউল পরিবর্তনের কারণে প্রকল্পের ব্যয় বৃদ্ধি; জার্মানিতে এগারো ধাপ অনুসরণের কারণে নির্মাণ কাজে সময় ব্যয়; ভিসা জটিলতায় প্রকল্পের দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির (টিইসি) সদস্যদের যথাসময়ে জার্মানি যেতে না পারা, প্রাথমিক মূল্যায়নের কাজ যথাসময়ে শেষ না হওয়া এবং বাস্তব অগ্রগতি বিবেচনায় এই প্রকল্পের মেয়াদ ও ব্যয় বেড়েছে।

জানা যায়, মূল প্রকল্পটি বাস্তবায়নের সময়সীমা ধরা হয়েছিল তিন বছর (২০১৮ সালের জুলাই থেকে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত)। পরে ব্যয় বাড়ানো ছাড়াই প্রকল্পের মেয়াদ বাড়িয়ে ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়। সম্প্রতি প্রথম সংশোধনী প্রস্তাবে প্রকল্পের মেয়াদ আরো বাড়িয়ে ২০২৬ সালের জুন পর্যন্ত সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে।

সূত্র জানায়, বাংলাদেশ চ্যান্সারি কমপ্লেক্স নির্মাণে বার্লিনে স্থানীয়ভাবে দরপত্র আহ্বান করা হলে পাঁচটি দরপত্র জমা পড়ে। এর মধ্যে অভিজ্ঞতার সনদপত্র জমা না দেয়ায় দু’টি কোম্পানির প্রস্তাব (এসবিজি জিএমবিএইচ ও অলটেরা সলিউশন্স জিএমবিএইচ) শুরুতেই নন-রেসপন্সিভ হিসেবে বিবেচিত হয়। অবশিষ্ট তিনটি কোম্পানি দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি কর্তৃক রেসপন্সিভ হিসেবে বিবেচিত হয়। পরবর্তী ধাপে কারিগরি মূল্যায়নে প্রকল্পের সমাপ্তি প্রতিবেদন জমা না দেয়ায় জার্মান ভিত্তিক চীনা প্রতিষ্ঠান সিজেডআইসিসি নন-রেসপন্সিভ হিসেবে বিবেচিত হয়। অবশিষ্ট দু’টি প্রতিষ্ঠান (ডিচেন্ট জিএমবিএইচ ও সুইজারল্যান্ডের কোম্পানি ম্যাবকো কনস্ট্রাকশন এসএসএ-ম্যাবটেক্স গ্রুপ) কারিগরিভাবে রেসপন্সিভ হয়। সবশেষে আর্থিক প্রস্তাব বিবেচনায় ম্যাবকো কনস্ট্রাকশনকে মনোনীত করা হয়েছে। অপর কোম্পানি ডিচেন্ট জিএমবিএইচ-এর প্রস্তাবিত চুক্তিমূল্য ছিল ১ কোটি ৬৮ লাখ ৪২ হাজার ৬৭০ ইউরো।

https://www.dailynayadiganta.com/last-page/768467