৮ আগস্ট ২০২৩, মঙ্গলবার, ১২:৫১

ডেঙ্গুতে ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু ১৪, ভর্তি ২৭৫১

আগস্টে প্রতিদিন গড়ে ১০ জনের বেশি মৃত্যু

দেশে জ্যামিতিক হারে বেড়ে চলছে এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত ও মৃত্যু। গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ১০ জন ঢাকার এবং চারজন ঢাকার বাইরে মারা যান। এ সময় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২৭৫১ জন।

প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ১ আগস্ট থেকে ৭ আগস্ট (সোমবার) পর্যন্ত এক সপ্তাহে ৭৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ হিসাবে প্রতিদিন ১০.৮৫ জন মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।

চলতি বছর ১ জানুয়ারি থেকে ৭ আগস্ট (সকাল) পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ৩২৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকায় ২৫৮ জন এবং ঢাকার বাইরে ৬৯ জন মারা যান।

এদিকে, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে দুই হাজার ৭৫১ জন আক্রান্তের মধ্যে এক হাজার ৬৩২ জনই ঢাকার বাইরের। ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে এক হাজার ১১৯ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। অর্থাৎ আক্রান্তদের মধ্যে এক দিনে ঢাকার চেয়ে বাইরে বেশি। গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি রোগীদের নিয়ে এ পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬৯ হাজার ৪৮৩ জনে। এর মধ্যে আগস্টের প্রথম সাত দিনেই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১৭ হাজার ৬৫১ জন। পরিসংখ্যান বলছে, এ বছর ডেঙ্গুর প্রকোপ দ্রুত বাড়ছে। জুন মাসে যেখানে পাঁচ হাজার ৯৫৬ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন, সেখানে জুলাই মাসে ভর্তি হন ৪৩ হাজার ৮৫৪ জন। আক্রান্তদের মধ্যে জুন মাসে ৩৪ জনের মৃত্যু হয়। অপর দিকে জুলাই মাসে প্রাণ হারান ২০৪ জন। এর আগে জানুয়ারিতে ৫৬৬ জন, ফেব্রুয়ারিতে ১৬৬ জন, মার্চে ১১১ জন, এপ্রিলে ১৪৩ জন এবং মে মাসে এক হাজার ৩৬ জন হাসপাতালে ভর্তি হন। তাদের মধ্যে জানুয়ারিতে ছয়জন, ফেব্রুয়ারিতে তিনজন, এপ্রিলে দুজন ও মে মাসে দুজনের মৃত্যু হয়।

এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে মোট দুই হাজার ৫১২ জন ডেঙ্গুরোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে এক হাজার ৬২ জন এবং দেশের বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে এক হাজার ৪৫০ জন ছাড়পত্র পান।

এ বছর এডিস মশা শনাক্তে চালানো জরিপে ঢাকায় মশার ঝুঁকিপূর্ণ উপস্থিতি দেখে পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে ওঠার সতর্কবার্তা দিয়েছিলেন বিশেষজ্ঞরা। পরিস্থিতি সেই দিকেই গড়াচ্ছে। মৃতের সংখ্যা এরই মধ্যে আগের যেকোনো বছরকে ছাড়িয়ে গেছে। ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে এ বছর যাদের মৃত্যু হয়েছে, তাদের প্রায় সবাই ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভারে ভুগছিলেন। পরবর্তীতে তারা শক সিনড্রোমে মারা যান।
এডিস মশাবাহিত এই রোগে আক্রান্ত হয়ে গত বছর ৬২ হাজার ৩৮২ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হন। এর আগে ২০১৯ সালে দেশের ৬৪ জেলায় এক লাখের বেশি মানুষ ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে গিয়েছিলেন। যা এ যাবৎকালের সর্বোচ্চ। সরকারি হিসাবে সে বছর মৃত্যু হয়েছিল ১৭৯ জনের।

https://www.jugantor.com/todays-paper/last-page/704559