৮ আগস্ট ২০২৩, মঙ্গলবার, ১২:৪০

শততম বার পেছালো সাগর-রুনি হত্যা মামলার প্রতিবেদন

বহুল আলোচিত সাংবাদিক দম্পতি সাগর সারোয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার তারিখ ১০০তম বার পেছানো হয়েছে। গতকাল সোমবার মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দিন ধার্য ছিল। কিন্তু তদন্ত সংস্থা র‌্যাব প্রতিবেদন দাখিল করতে পারেনি। ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রশিদুল আলমের আদালত তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ৯ সেপ্টেম্বর পরবর্তী দিন ধার্য করেন। আদালতে শেরেবাংলা নগর থানার সাধারণ নিবন্ধন শাখা সূত্রে বিষয়টি জানা গেছে। এদিকে মামলার অগ্রগতি বিষয়ে র‌্যাব বলছে, হত্যাকা-ের প্রকৃত অপরাধীকে ধরতে কাজ চলছে।

২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাতে রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারে মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সারোয়ার ও এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন রুনি নিজেদের ভাড়া বাসায় নির্মমভাবে খুন হন। এ ঘটনায় রুনির ভাই নওশের আলম রোমান রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় রুনির বন্ধু তানভীর রহমানসহ আট জনকে আসামী করা হয়। বাকি আসামীরা হলেন- বাড়ির নিরাপত্তারক্ষী এনাম আহমেদ ওরফে হুমায়ুন কবির, রফিকুল ইসলাম, বকুল মিয়া, মিন্টু ওরফে বারগিরা মিন্টু ওরফে মাসুম মিন্টু, কামরুল হাসান অরুণ, পলাশ রুদ্র পাল ও আবু সাঈদ। এ মামলার তদন্তে প্রথমে ওই থানার একজন এসআই নিয়োজিত ছিলেন। চার দিন পর ডিবি পুলিশকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। ডিবি পুলিশ দুই মাসে ব্যর্থ হলে হাইকোর্টের নির্দেশে মামলাটির তদন্তভার যায় র‌্যাবে। কিন্তু দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও এখনো এ মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে পারেনি সংস্থাটি।

এদিকে মামলার অগ্রগতি বিষয়ে র‌্যাব বলছে, সাগর-রুনি হত্যাকা-ের প্রকৃত অপরাধীকে ধরতে কাজ চলছে। আমেরিকা থেকে ডিএনএ টেস্টের যে রিপোর্ট এসেছে, সেখানে দুজন অপরাধীর বিষয়ে তথ্য পাওয়া গেছে। তাদের শনাক্তে কাজ চলছে। গতকাল কারওয়ান বাজার মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানান র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। ২৫ জনের আলামত সংগ্রহ করে ডিএনএ রিপোর্টের জন্য আমেরিকায় পাঠানো হয়েছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, যে প্রতিবেদন পাওয়া গেছে, তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে। দুজনের বিষয়ে আমরা তথ্য পেয়েছি, তবে আমরা এখনও সেই দুজনকে শনাক্ত করতে পারিনি। যে প্রতিবেদন আমরা পেয়েছি, সেখানে কংক্রিট কোনও তথ্য দেওয়ার মতো কিছু পাইনি।

তদন্ত কর্মকর্তা এখনও সুনিশ্চিত নয়, কাদের ইনভলভমেন্ট ছিল সেই হত্যাকা-ে। তিনি আরও বলেন, তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত অপরাধীকে খুঁজে বের করা প্রয়োজন, তবে কেউ যেন ভিকটিমাইজড না হয়। আমরা কোনও বিতর্কে জড়াতে চাচ্ছি না। ডিএনএ টেস্টে পাওয়া দুই অপরাধীকে শনাক্তের কাজ চলছে। এই দুজনকে শনাক্ত করতে পারলে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে পারবো। ভিকটিমের পরিবারকেও আমরা বিভিন্ন সময় এসব তথ্য জানিয়েছি, তারাও এ বিষয়ে ওয়াকিবহাল। কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, সঠিক তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত আসামী শনাক্তের জন্য বিশ্বের অনেক জায়গায় দেখা গেছে, এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ মামলা বা যেসব মামলার তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না; সেসব মামলার বেশি সময় প্রয়োজন হয়েছে। ঘটনার পরে আলামত সংগ্রহ ডিফিকাল্ট ছিল। সাগর ও রুনি সাংবাদিক দম্পতি, তারা জনপ্রিয় ছিলেন। সেখানে অনেক মানুষ গিয়েছিলেন। দুজনকে শনাক্ত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা গেলে পরবর্তী সময়ে এ বিষয়ে আর কারও সংশ্লিষ্টতা রয়েছে কিনা তা জানা যাবে বলেও মন্তব্য করেন র‌্যাবের এই কর্মকর্তা।

https://dailysangram.info/post/532090