২৬ জুলাই ২০২৩, বুধবার, ১২:৫৫

আন্দোলনে অনড় শিক্ষকরা

জাতীয়করণের দাবিতে অনড় অবস্থান নিয়েছেন শিক্ষকরা। টানা ১৫তম দিনের মতো জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন তারা। শিক্ষকরা বলছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আশ্বাস ছাড়া শ্রেণিকক্ষে ফিরবেন না। সরকারি স্কুলের শিক্ষকদের সঙ্গে বেসরকারি স্কুলের শিক্ষকদের বেতন, বোনাস, বাড়ি ভাড়াসহ নানা ক্ষেত্রে সমন্বয়ের দাবি দীর্ঘদিনের। পূর্বে একাধিকবার আন্দোলনও করেন তারা। এবার শিক্ষকরা একাট্টা হয়ে মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের আন্দোলন করে যাচ্ছেন।

জাতীয়করণের দাবিতে আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী সংগঠনগুলোর সমন্বয়ে জাতীয়করণ সংগ্রাম পরিষদের নেতৃত্বে এই আন্দোলন চলছে। গতকাল আন্দোলন চলাকালে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির (বিটিএ) সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ শেখ কাওছার আহমেদ বলেন, মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী মন্তব্য করেছেন শিক্ষকদের আন্দোলনে বাইরের উস্কানি আছে। তবে, মাননীয় মন্ত্রী বাইরের উস্কানিতে নয়, আপনার উস্কানিতেই শিক্ষকরা আরও বেশি বিক্ষুব্ধ, আরও বেশি আহত। মাননীয় মন্ত্রী বলেছেন, আন্দোলন থেকে অনেক শিক্ষক চলে গেছেন যারা আছেন তারাও চলে যাবেন। মাননীয় মন্ত্রীকে বলতে চাই, আপনি আসুন, দেখুন অথবা সরকারি এজেন্সি পাঠান।

কদম ফোয়ারা থেকে পল্টন পর্যন্ত শিক্ষকদের অবস্থানে আজ কানায় কানায় পূর্ণ। দেখবেন আপনার কথা সত্য, না রাজপথে যা দেখা যাচ্ছে তা সত্য।

মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের দাবিতে গত ১১ই জুলাই থেকে এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। অধ্যক্ষ শেখ কাওছার আহমেদ আরও বলেন, মাননীয় শিক্ষামন্ত্রীকে বলতে চাই, উস্কানিমূলক কথাবার্তা না বলে দয়া করে শিক্ষকদের ন্যায্য দাবির পক্ষে অবস্থান গ্রহণ করুন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে বুঝান। আপনি বললেই প্রধানমন্ত্রী বুঝবেন। আমরা বিশ্বাস করি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সব বিষয়ে অবগত আছেন। আমরা জাতীয়করণের দাবি নিয়ে কথা বলতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে ৫ মিনিট সময় চেয়েছি। কিন্তু আমাদের মনে হচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার মূল বাধা মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী। তার কথায় মনে হচ্ছে তিনি হয়তো শিক্ষকদের আন্দোলনের বিষয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ভুল বোঝাচ্ছেন।

উল্লেখ্য, মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের দাবিতে রাজধানীতে টানা অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষকরা। গত বুধবার শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি আন্দোলনরত শিক্ষক নেতাদের সঙ্গে এক বৈঠকের পর গ্রীষ্মকালীন ছুটি বাতিল করেন। তবে আন্দোলনরত শিক্ষকরা এদিনও ক্লাসে ফিরেননি। দাবি আদায় করে স্কুলে ফিরবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন তারা। এদিকে আন্দোলনে শিক্ষকদের বিষয়ে কঠোর অবস্থান নিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)। ইতিমধ্যে ছুটি না নিয়ে অনুপস্থিত ৩৪ শিক্ষককে শোকজ করে। এ ছাড়াও প্রতিদিন অনিয়মিত শিক্ষকদের তালিকা প্রদানের নির্দেশ দেয়। তবে আন্দোলনরত শিক্ষকরা ঘোষণা দিয়েছেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে তথ্য সংগ্রহের প্রয়োজন নেই। আন্দোলনস্থল থেকে তথ্য সংগ্রহের জন্য আসলে তারা নিজেরাই স্বাক্ষর করে তালিকা দিয়ে দেবেন।

https://mzamin.com/news.php?news=66471