২৩ জুলাই ২০২৩, রবিবার, ৩:২৭

অভিভাবকরা উৎকণ্ঠায়

স্বেচ্ছাচারিতা ঠেলে এগিয়ে যাওয়া এ দেশের মানুষের যেন নিয়তি হয়ে গেছে। শ্রাবণ মাসে আবহাওয়ার স্বেচ্ছাচারিতায় অসহনীয় কাঠফাটা রোদ, ভ্যাপসা গরমে ওষ্ঠাগত মানুষের প্রাণ। প্রচ- গরমে গ্যাসের তীব্র সঙ্কটে অনেকের চুলা জ্বলছে না। বিদ্যুতের ভয়াবহ লোডশেডিংয়ে ভ্যাপসা গরমে সীমাহীন দুর্ভোগ। ঢাকা সিটি কর্পোরেশনসহ দায়িত্বশীলদের স্বেচ্ছাচারিতায় এডিস মশার বাড়বাড়ন্তে ডেঙ্গুর ভয়াবহ প্রকোপ ছড়িয়ে পড়েছে সারাদেশে। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে এডিস মশা মারার কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ না করেই প্রচ- গরমে স্কুলের ছেলেমেয়েদের ডেঙ্গু ঝুঁকিতে ফেলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গ্রীষ্মকালীন ছুটি বাতিল করা হয়েছে। সে ছুটি আবার শীতকালে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। রাজধানীর ঘরে ঘরে ডেঙ্গু রোগী। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, জরুরি অবস্থা ঘোষণার পরিস্থিতি এখনো না হলেও সারাদেশ ডেঙ্গু ঝুঁকিতে। ভ্যাপসা গরম, বিদ্যুতের লোডশেডিং, ডেঙ্গুর ঝুঁকি এর মধ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখায় ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে অভিভাবকদের মধ্যে ডেঙ্গুভীতি-আতঙ্ক উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বেড়ে গেছে। অভিভাবকদের কেউ কেউ এমন সিদ্ধান্তকে স্বেচ্ছাচারিতা হিসেবে অবিহিত করে বলেছেন, আমাদের ছেলেমেয়েদের ডেঙ্গু ঝুঁকিতে ঠেলে দেয়া হচ্ছে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এমন সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করে শিক্ষক নেতা শেখ মো. কাওছার বলেন, গ্রীষ্মের ছুটি বাতিল করায় কেবল শিক্ষকরা নন, অভিভাবকরাও ক্ষুব্ধ। এতে করে শিক্ষার্থীদের ডেঙ্গু ঝুঁকির মধ্যে ঠেলে দেয়া হয়েছে। এ ছুটি বাতিল করা হয়েছে আসলে আন্দোলন থেকে শিক্ষকদের সরাতে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, গ্রীষ্মের ছুটি কিভাবে শীতকালে যেতে পারে। এটা সরকারের একটা অপকৌশল।

ডেঙ্গু ঝুঁকিতে শিক্ষার্থীরা : দেশের শিক্ষাপঞ্জি অনুযায়ী গত বৃহস্পতিবার (২০ জুলাই) থেকে দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান- স্কুল, কলেজ, মাদরাসায় গ্রীষ্মকালীন ছুটি শুরু হওয়ার কথা ছিল। প্রচ- গরমের কারণে অনেক আগেই কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এ ছুটির ঘোষণাও দিয়েছিল। কিন্তু ছুটি কার্যকরের এক দিন আগে ১৯ জুলাই গ্রীষ্মকালীন ছুটি বাতিল করে ক্লাস চালু রাখার ঘোষণা দেয়া হয়। শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি ওইদিন জানান, পূর্বঘোষণা অনুযায়ী ২০ জুলাই থেকে আগামী ২ আগস্ট পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গ্রীষ্মকালীন ছুটি ছিল। সেটি এখন আর হচ্ছে না। ছুটি বাতিলের কারণ ব্যাখ্যা করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচন এ বছর ডিসেম্বরের শেষে বা আগামী বছরের জানুয়ারির শুরুতে হবে। তফসিল ঘোষণা বিলম্বিত হলেও নির্বাচনী প্রচার ডিসেম্বরের গোড়া থেকেই শুরু হবে। কাজেই আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে বার্ষিক পরীক্ষা নভেম্বরের শেষের মধ্যে শেষ করে ফেলতে হবে। সে ক্ষেত্রে এবার গ্রীষ্মের ছুটি বাতিল করে শীতের ছুটি বাড়িয়ে দেয়া হবে ডিসেম্বরে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক গতকালও বলেছেন, দেশের ৬০ জেলায় ডেঙ্গু রোগ ছড়িয়ে পড়েছে। রোগীদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। সারাদেশ এখন ডেঙ্গুর ভয়াবহ ঝুঁকিতে পড়ে গেছে। তবে এখনো ডেঙ্গু নিয়ে জরুরি অবস্থা জারির মতো পরিস্থিতি হয়নি। একদিকে ডেঙ্গুর ভয়াবহতা, অন্যদিকে প্রচ- গরমে অতিষ্ট জীবন। কিন্তু ছোট ছোট শিক্ষার্থীদের স্কুল-মাদরাসায় ক্লাস করতে হচ্ছে। রাজধানীর অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এডিস মশা নিধনের কোনো কার্যক্রম নেই। রাজধানীর যানজট ঠেলে ঘর্মাক্ত শরীরে শিক্ষার্থীরা স্কুল-মাদরাসায় যাচ্ছেন। এতে করে তারা ডেঙ্গু ঝুঁকিতে পড়ছেন। তবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে মশার বংশবিস্তার রোধে ৫টি নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সেগুলো হলো ১. খেলার মাঠ ও ভবন নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে, ২. মাঠ বা ভবনে জমে থাকা পানি দ্রুত সরিয়ে ফেলতে হবে, ৩. শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য যেসব ফুলের টব রাখা হয়েছে সেগুলো নিয়মিত পরিষ্কার রাখতে হবে, ৪. এডিস মশার প্রজননস্থলে যাতে পানি জমতে না পারে তা নিশ্চিত করতে হবে, ৫. সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও শিক্ষকদের ডেঙ্গু প্রতিরোধের উপায় নিয়ে প্রত্যহ শিক্ষার্থীদের জানাতে হবে। বাস্তবে বেশির ভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এ নির্দেশনার কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেই। ফলে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ঝুঁকির মুখে ঠেলে দেয়া হচ্ছে।

অনুসন্ধানে দেখা গেছে, প্রচ- গরমে শিক্ষার্থীদের হাসফাঁস অবস্থা। বিদ্যুতের অভাবে ক্লাসে ফ্যান ঘুরছে না। শ্রাবণ মাসের প্রচ- ভ্যাপসা গরমে শিক্ষার্থীদের বেহাল দশা। এর মধ্যে ডেঙ্গু আতঙ্ক। গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময়ে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সারাদেশে আরো ২ হাজার ২৪২ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো ডেঙ্গুবিষয়ক এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে ২ হাজার ২৪২ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকা সিটিতে ১২৩৯ জন এবং সারাদেশে (ঢাকা সিটি ব্যতীত) ১০০৩ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। বিজ্ঞপ্তিতে আরো জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ১১ জনের জনের মধ্যে ৯ জন ঢাকা সিটিতে এবং ২ জন ঢাকার বাইরে মারা গেছে।

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলছেন, এবারের ডেঙ্গু চার ধরনের হচ্ছে। ফলে যারা আক্রান্ত হচ্ছেন তাদের সেরে উঠতে সময় লাগছে। ফলে ডেঙ্গু নিয়ে সকলকে সচেতন হতে হবে। গতকালও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, ডেঙ্গু ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করেছে।

সরেজমিন চিত্র : গত বৃহস্পতিবার ঢাকার শনির আখড়া এলাকার বর্ণমালা স্কুল এ- কলেজ, একে স্কুল এ- কলেজসহ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে দেখা যায় ডেঙ্গু ঝুঁকি এবং প্রচ- ভ্যপসা গরমে শিক্ষার্থীরা ক্লাস করছেন। ক্লাসের পাশের গোবরের স্তূপ ও ময়লার ভাগাড়। পাশের পরিত্যক্ত নির্মাণ সামগ্রীতে পানি জমে মশা ভন ভন করছে। পাশ দিয়ে মানুষ হাঁটাচলা করছে। কোমলমতি শিক্ষার্থীরা গরমে ঘামছে এবং ক্লাসে বসে রয়েছে। সায়েদাবাদের করাতিটোলা স্কুলে একই চিত্র দেখা গেল। সায়েদাবাদ বাসস্ট্যান্ড ও রেল লাইনের ধারে রাস্তার ওপর স্কুল। সেখানে দেখা গেল শিক্ষার্থীরা ক্লাসে বসে পড়ছেন। শিক্ষকরা তাদের ক্লাস নিচ্ছেন।

গরমে এবং প্রচ- ডেঙ্গু ঝুঁকিকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখা নিয়ে শিক্ষক ও অভিভাবকদের মধ্যে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে। শিক্ষক-অভিভাবকরা বলছেন, ছুটি শুরুর আগের দিন এভাবে ঘোষণা দিয়ে ছুটি বাতিল হঠকারিতা এবং স্বেচ্ছাচারিতার শামিল। বর্তমানে ডেঙ্গুর প্রকোপ চলছে। তাছাড়া দাবদাহের বিচারে শিক্ষার্থী তথা জনস্বাস্থ্যের দিক মাথায় রেখেই এই ছুটি দেয়া হয়েছে। তাই এর মাধ্যমে মূল শিক্ষক-অভিভাবক নয়, শিক্ষার্থীদেরকেও ঝুঁকির মধ্যে ঠেলে দেওয়া হয়েছে।

এদিকে ছুটি বাতিল করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আদেশ জারির পর গত বুধ ও বৃহস্পতিবার রাজধানীর বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অভিভাবকরা ফোন করে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। নাম প্রকাশ না করে কয়েকজন অভিভাবক বলেন, শিক্ষার দুই মন্ত্রণালয়ের এ সিদ্ধান্তে তারা স্তম্ভিত। তারা সংশ্লিষ্টদের কা-জ্ঞান নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, ডেঙ্গু পরিস্থিতি অনেকটাই মহামারির আকার ধারণ করেছে। এমন সময়ে যেখানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিশেষ ছুটি ঘোষণা করা প্রয়োজন, সেখানে প্রাপ্য ছুটি থেকেও বঞ্চিত করা হচ্ছে। অবশ্য কেউ কেউ বলেছেন, শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে এ ছুটি বাতিল করা যেতে পারে। কিন্তু সরকারকে এখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান নিশ্চিত করতে হবে। কেননা, শিক্ষকদের একটি অংশ ক্লাস বর্জন করে আন্দোলনে আছেন, বাকিদের মধ্যে অনেকেই ক্লাস ফাঁকি দেন।
ভিকারুননেসা নুন স্কুল অ্যান্ড কলেজ অভিভাবক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মজিদ সুজন বলেন, আমরা আমাদের বাচ্চাদের নিয়ে ডেঙ্গু আতঙ্কে ভুগছি। গত কয়েক দিন ধরে আমার বাচ্চাকে স্কুলে পাঠাই না। এই সময়ে গ্রীষ্মকালীন ছুটি বাতিল হওয়ায় আরও টেনশন বেড়ে গেল।

এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ‘কাজির গরু কেতাবে আছে গোয়ালে নেই’ অবস্থায় বিদ্যুতের অবস্থা। গতকাল শনিবার বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের সদস্য (উৎপাদন) এস এম ওয়াজেদ আলী সরদার দাবি করে বলেন, শনিবার বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে ১৩ হাজার ৯শ’ মেগাওয়ার্ট। তবে চাহিদা ছিল ১৬ হাজার ৫শ’ মেগাওয়াট। ঘাটতি মাত্র ২ হাজার ৬শ’ মেগাওয়াট। অথচ রাজধানী ঢাকায় গতকাল বিভিন্ন এলাকা ভেদে ৫ বার থেকে ৭ বার লোডশেডিং হয়েছে। উত্তরাঞ্চলের কয়েকটি জেলার গ্রাম পর্যায়ের বিদ্যুতের চিত্রের খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গ্রাম পর্যায়ে মাঝে মাঝে বিদ্যুৎ আসে। তবে তিন থেকে চার ঘণ্টা পর বিদ্যুৎ আসে এক থেকে দেড় ঘণ্টা থেকে আবার চলে যায়।
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি : বাজার কার্যত সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। সি-িকেট করে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পণ্যে দাম বাড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। সেখান থেকে শত শত কোটি টাকা ভোক্তার পকেট থেকে লুটে নেয়া হচ্ছে। ব্যবসায়ীদের সংগঠনের রাঘব-বোয়াল নেতারা চলমান রাজনৈতিক সঙ্কটে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের পক্ষে অবস্থান নেয়ায় বাজার সি-িকেটের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না।

বাণিজ্যমন্ত্রী নিজেই জানিয়েছেন, অসৎ ব্যবসায়ীরা এতোই শক্তিশালী যে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করলে সরকারকে বিপদে পড়তে হবে। যার পরিণতি হচ্ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে নিম্ন আয়ের মানুষের জীবন ওষ্ঠাগত। তারা না পারে কইতে, না পারে সইতে। বাজারে চাল, ডাল, ভোজ্য তেল, রান্নার গ্যাস, পেঁয়াজ, শাকসবজি থেকে শুরু করে এমন কোনো নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য নেই, যার দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে না। দ্রব্যমূল্যের নিয়ন্ত্রণহীন ও লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি, জনজীবনকে অতিষ্ঠ করে তুলছে। নিম্নআয়ের মানুষ যা আয় করছে, তার পুরোটাই ন্যূনতম খাদ্যদ্রব্য ক্রয় করতেই শেষ হয়ে যাচ্ছে। স্বাস্থ্য, চিকিৎসা, শিক্ষা ইত্যাদির জন্য ব্যয় করার মতো অর্থ তাদের হাতে আর থাকছে না। কর্মজীবী মানুষের আয় যে হারে বেড়েছে, তার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে সবথেকে বেশি কষ্টকর পরিস্থিতিতে পড়ে নিম্নবিত্ত, অবসরপ্রাপ্ত সৎ সরকারি কর্মচারী, প্রবীণ জনগোষ্ঠী ও নিম্নআয়ের প্রান্তিক মানুষ। কারণ একটাই, তা

https://dailyinqilab.com/national/article/589409