২৩ জুলাই ২০২৩, রবিবার, ৩:২৫

২১ দিনে ঢামেকে ১০৪৮ ডেঙ্গু রোগী, ২৩ জনের মৃত্যু

ভয়াবহ রূপ নিয়েছে ডেঙ্গু পরিস্থিতি। প্রতিদিন শত শত রোগী শনাক্ত হচ্ছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (ঢামেক)’র পরিস্থিতি নাজুক। সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকরা। গত ২১ দিনে ঢামেকে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ১ হাজার ৪৮ জন। মৃতের সংখ্যা ২৩ জন। ঢামেকের তথ্যমতে, গত সাত মাসে ঢামেকে ডেঙ্গু আক্রান্ত ভর্তি রোগীর সংখ্যা ১ হাজার ৯৫৫ জন। শুক্রবার পর্যন্ত রোগী ভর্তির সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৪৮ জন। মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৩ জনে।

একদিকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার রোগী আর অন্যদিকে বিভিন্ন জেলার রোগীদের চাপে ঢামেকের মেডিসিন ওয়ার্ডগুলোতে পা ফেলার জায়গা নেই। মেডিসিনের পুরুষ-নারীদের বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডের সবক’টি শয্যা রোগীতে পূর্ণ।

রোগী ও স্বজনের চাপে মেডিসিনের প্রতিটি ওয়ার্ড ও তার বাইরে হিমশিম অবস্থা। অতিরিক্ত রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসক, নার্সসহ সংশ্লিষ্টরা। নতুন ভবনের ৬ষ্ঠ তলার ৬০১, ৬০২ নম্বর মেডিসিন ওয়ার্ডে পুরুষ এবং অষ্টম তলার ৮০১, ৮০২ মেডিসিন ওয়ার্ডে নারী রোগীরা চিকিৎসা নিচ্ছেন। পুরাতন ভবনের দ্বিতীয় তলায় ডেঙ্গু আক্রান্ত শিশু রোগীদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
ঢামেক হাসপাতালের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ২১শে জুলাই পর্যন্ত মোট রোগী ভর্তি ১ হাজার ৮২৫ জন। মোট মৃতের সংখ্যা ৩২ জন (পুরুষ ১৭ এবং নারী ১৫ জন)। ২১শে জুলাই পর্যন্ত রোগী ভর্তি ছিল ৩০৭ জন (পুরুষ ২২৫, নারী ৮২ জন)। হাসপাতালের আইসিইউতে ডেঙ্গু চিকিৎসাধীন রয়েছে ৫ জন। শুক্রবার ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৭৩ জন।

ঢামেক সূত্র জানিয়েছে, দেশের সবচেয়ে বড় এই হাসপাতালটি সাধারণ রোগীদের শেষ ভরসাস্থল। সারা দেশ থেকেই চিকিৎসা নিতে এখানে রোগীরা আসেন। বছরের সবসময় মেডিসিন ওয়ার্ডগুলোতে রোগীর চাপ বেশি থাকে। মেডিসিনের রোগী বেশি হওয়াতে এই বিভাগের জন্য অনেকগুলো ডেঙ্গু ওয়ার্ড করা হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে ডেঙ্গু প্রাদুর্ভাব বেশি হওয়াতে ডেঙ্গু রোগী ও মেডিসিনের অন্য রোগীদের চাপ পড়েছে এসব ওয়ার্ডে। ঢাকার আশেপাশের জেলা থেকে অহরহ রোগী আসছেন।

ঢামেকের নতুন ভবনের ৬০১ নম্বর ওয়ার্ডের সিনিয়র স্টাফ নার্স রেখা রানী ঘোষ বলেন, প্রায়ই ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীরা যখন আসে তখন খুব খারাপ অবস্থায় আসে। হেয়ালি না করে রোগীদের দ্রুত ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া উচিত। অনেকে প্রথমে বোঝেনই না যে, সে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে। যখন একদম শরীর দুর্বল হয়ে যায়, কিছু খেতে পারে না- তখন ছোটাছুটি করে। নিজেদের সচেতনতা বাড়াতে হবে। বর্তমানে হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ঊর্ধ্বমুখী।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ক্লিনিক্যাল প্যাথলজির বিভাগীয় প্রধান ডা. আজিজ আহমেদ খান মানবজমিনকে বলেন, এর আগে কোনো বছরই ডেঙ্গু পরীক্ষার এত চাপ পড়েনি ঢামেকে। কিন্তু এ বছর আমরা রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছি। তিনি বলেন, ডেঙ্গুর ভয়াবহ পরিস্থিতি। যারাই আক্রান্ত হচ্ছেন তারা সহজেই ভালো হচ্ছেন না। সাময়িকভাবে ভালো হয়ে হাসপাতাল ছাড়লেও ভুগতে হচ্ছে অনেকদিন।

https://mzamin.com/news.php?news=65952