২০ জুলাই ২০২৩, বৃহস্পতিবার, ১২:০১

বিনিয়োগকারীর পকেটে ফেরেনি হারানো পুঁজি

ব্রোকারেজ হাউস ক্রেস্ট সিকিউরিটিজের মালিক মো. শহিদুল্লাহ। ২০২০ সালের মে মাসে প্রায় সাড়ে ১০ হাজার বিনিয়োগকারীর ৬৫ কোটি টাকা নিয়ে সস্ত্রীক পালান তিনি। অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) দায়িত্ব নেওয়ার মাত্র দুই মাসের মধ্যে ঘটে এ ঘটনা। এর পর কিছু বিনিয়োগকারী এক কোটি ৩৬ লাখ টাকা ফেরতও পান। বাকিরা টাকা খোয়ানোর ব্যথা এখনও ভুলতে পারেননি।

শুধু ‘ক্রেস্ট’ নয়, অধ্যাপক শিবলী বিএসইসির চেয়ারম্যান হওয়ার পরের সোয়া বছরে ‘বানকো’ ও ‘তামহা’ নামে আরও দুটি ব্রোকারেজ হাউসের মালিক প্রায় পাঁচ হাজার বিনিয়োগকারীর ২৬৮ কোটি টাকা মেরে দেন। এই তিন ব্রোকারেজ হাউসের প্রায় সাড়ে ১৫ হাজার বিনিয়োগকারীর লোপাট হওয়া প্রায় ৩৩৩ কোটি টাকার মধ্যে এখন পর্যন্ত মাত্র ১৬ কোটি টাকা ফেরত এসেছে– এমন তথ্য ডিএসইর।
টাকা ফেরত পেতে বিএসইসি ও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) বিনিয়োগকারীরা বারবার ধরনা দিলেও হারানো টাকা আর তাদের পকেটে আসছে না। তারা আদৌ হারানো টাকা ফেরত পাবেন কিনা, সে বিষয়ে কেউ নিশ্চয়তা দিচ্ছে না। এ নিয়ে বিনিয়োগকারীদের মনে জমেছে অনিশ্চয়তার মেঘ। বিএসইসির কর্মকর্তারা বলছেন, এটি ডিএসইর কাজ। ডিএসইর কর্মকর্তারা বলছেন, তাদের আইনি ক্ষমতা সীমিত। জোর বা অন্য উপায়ে কারও কাছ থেকে টাকা আদায়ের এখতিয়ার নেই। দুই সংস্থার এ রকম ঠেলাঠেলিতে পেরিয়ে যাচ্ছে মাসের পর মাস, বছরের পর বছর। মুনাফার আশায় লগ্নি করে সঞ্চয়ের টাকা হারিয়ে গাড্ডায় পড়া বিনিয়োগকারীরা ঘুরছেন পথে পথে।

গেল তিন বছরে যে তিন ব্রোকারেজ হাউস বিনিয়োগকারীদের টাকা মেরেছে, এর সবক’টিই ডিএসইর আওতাধীন। ডিএসইর একাধিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, ব্রোকারেজ হাউস গ্রাহকদের টাকা লুটে নিলে তা ফেরত দিতে বাধ্য করার আইনি এখতিয়ার স্টক এক্সচেঞ্জের নেই। যেসব ব্রোকারেজ হাউস টাকা মেরেছে, সেগুলোর ব্যাংক হিসাবে টাকা নেই। প্রতিষ্ঠানগুলোর মালিক স্বেচ্ছায় টাকা ফেরত না দিলে তাদের সম্পদ জব্দের পর তা বিক্রি করে বিনিয়োগকারীদের টাকা ফেরত দেওয়া যায়। কাজটি স্টক এক্সচেঞ্জ করতে পারে না। এ কাজ বিএসইসিকে করতে হবে।

ডিএসইর প্রধান নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা (সিআরও) খায়রুল বাশার বলেন, স্টক এক্সচেঞ্জ কাউকে বেঁধে আনতে বা টাকা ফেরত দিতে বাধ্য করতে পারে না। আইনেই আমাদের হাত-পা বাঁধা। ডিএসইর দায়িত্ব ছিল, টাকা আত্মসাতের তথ্য পাওয়ার পর সংশ্লিষ্ট ব্রোকারেজ হাউসের শেয়ার লেনদেন স্থগিত করে তদন্তে নামা। এ দায়িত্ব আমরা পালন করেছি। এদিকে, বিএসইসির পক্ষে ডিএসইর ইনভেস্টর প্রটেকশন ফান্ড থেকে ২০ কোটি টাকা দিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়। ক্ষতিগ্রস্তদের এভাবে এই ফান্ড থেকে টাকা দেওয়া যায় কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কত টাকা আত্মসাৎ ডিএসই জানিয়েছে, আত্মসাতের ঘটনা ফাঁসের পর প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যক্রম বন্ধ করার আগে ক্রেস্ট, তামহা ও বানকো সিকিউরিটিজে বিনিয়োগকারীদের মোট ৩৪ হাজার ৬৮৬টি বিও হিসাব ছিল। এর মধ্যে ১১ হাজার ৩৬৪ বিও হিসাব থেকে মোট ৩৩৩ কোটি টাকা লোপাটের প্রমাণ মিলেছে। এর মধ্যে গ্রাহকের নগদ জমা ছিল প্রায় ২০৪ কোটি টাকা আর শেয়ার ছিল ১২৯ কোটি টাকার। প্রথম আত্মসাতের ঘটনা ঘটে বর্তমান কমিশনের দায়িত্ব নেওয়ার দুই মাসের মাথায়। ওই সময় ক্রেস্ট সিকিউরিটিজের মালিক মো. শহিদুল্লাহ ও তাঁর স্ত্রী নিপা সুলতানা নূপুর গ্রাহকদের প্রায় ৬৫ কোটি টাকা আত্মসাৎ করে গা-ঢাকা দেন। এর মধ্যে গ্রাহকের নগদ জমা ছিল প্রায় ৪৪ কোটি টাকা এবং শেয়ার বিক্রি করে আত্মসাৎ করেন আরও ২১ কোটি টাকা।
সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, ক্রেস্টের ঘটনার ঠিক এক বছর পর ২০২১ সালের জুনে চার হাজার ১৩৪ বিনিয়োগকারীর নগদ ৬৬ কোটি টাকা এবং তাদের কেনা শেয়ার বিক্রি করে প্রায় ৬২ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন বানকোর প্রধান শফিউল আজম মুন্না। বানকোর ঘটনার তিন মাস পর তামহা সিকিউরিটিজের ৭২৮ বিনিয়োগকারীর হিসাবের নগদ জমাসহ শেয়ার আত্মসাৎ হয়েছে প্রায় ১৪০ কোটি টাকা। তবে স্টক এক্সচেঞ্জের একটি সূত্র জানিয়েছে, এর মধ্যে প্রতিষ্ঠানটির মূল মালিক ডা. হারুনুর রশীদের কিছু বেনামি অ্যাকাউন্টও রয়েছে। ওই অ্যাকাউন্টগুলো বাদ দিলেও সাধারণ বিনিয়োগকারীর অন্তত ৭০ কোটি টাকা মেরে দেন ডা. হারুন। ব্যক্তিগতভাবে টাকা উদ্ধারের চেষ্টা বিনিয়োগকারীদের ধারণা, আত্মসাৎ করা টাকা আইনি প্রক্রিয়ায় উদ্ধার করা প্রায় অসম্ভব। রাষ্ট্রব্যবস্থাও এ ক্ষেত্রে ভালো উদাহরণ তৈরি করতে পারেনি বলে অভিযোগ করে ভুক্তভোগী কয়েকজন জানান, যুগ পার হলেও যুবক, ডেসটিনির লাখো গ্রাহক তাদের হাজার হাজার কোটি টাকা এখনও ফেরত পাননি। পিপলস লিজিংয়ের টাকা ফেরত চেয়ে অপেক্ষায় হাজারো আমানতকারী। নতুন কিছু ব্যাংকের ক্ষেত্রেও এমন নজির রয়েছে।

এ অবস্থায় ক্রেস্ট, বানকো ও তামহা সিকিউরিটিজের কিছু গ্রাহকও প্রভাবশালী বা ব্যক্তিগত সম্পর্কের জোরে টাকা উদ্ধারে চেষ্টা করছেন। তারা ডিএসইর আহ্বানের পরও টাকা দাবি করে আবেদন করেননি। আবার আবেদন করেও ব্যক্তিগত চেষ্টায় কিছু টাকা উদ্ধার করেন। ডিএসইর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এ তিন ব্রোকারেজ হাউসের ১৫ হাজার ৬২৩ গ্রাহকের ৩৩৩ কোটি টাকা আত্মসাতের তথ্য পেয়েছেন তারা। তবে এখন পর্যন্ত আট হাজার ৬৮০ গ্রাহক ২০২ কোটি টাকা ফেরত চেয়ে আবেদন করেছেন। অর্থাৎ ১৩১ কোটি টাকা চেয়ে কেউ আবেদন করেননি। হতে পারে, এরা নিজেরাই টাকা ফেরত পাওয়ার চেষ্টা করছেন। কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে অর্থ আত্মসাতের তথ্য পাওয়ার পর ২০২০ সালের ৬ জুলাই রাতে ক্রেস্ট সিকিউরিটিজের মালিক শহিদুল্লাহ, তাঁর স্ত্রী নিপা সুলতানা নূপুর ও শ্যালক জাহিদুল ইসলামকে লক্ষ্মীপুর থেকে আটক করা হয়। এর পরই বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) শহিদুল্লাহর অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করতে সব ব্যাংককে চিঠি দেয়। এ ঘটনায় ব্রোকারেজ হাউসটির অপর পরিচালক মো. ওহিদুজ্জামানকে ওই বছরের ২৭ জুলাই রাজধানীর খিলক্ষেতের লেকসিটি থেকে আটক করে পুলিশ। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপপরিচালক মো. রফিকুজ্জামান তদন্ত শেষে পৌনে তিন বছর পর গত ১৩ মার্চ ডা. হারুনসহ প্রতিষ্ঠানটির ১৫ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করেন। আসামিরা এখন জামিনে রয়েছেন।

বানকো সিকিউরিটিজের ঘটনায় প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান প্রবাসী আবদুল মুহিতকে লন্ডনে যাওয়ার সময় বিমানবন্দর থেকে ২০২১ সালের জুলাইয়ে আটক করে দুদক। এ ঘটনায় এ সংস্থার উপপরিচালক নুর আলম সিদ্দিকী বাদী হয়ে আবদুল মুহিতসহ বানকোর আরও চার পরিচালক শফিউল আজম, ওয়ালিউল হাসান চৌধুরী, নুরুল ঈশাত সাদাত ও মুনিম চৌধুরীর বিরুদ্ধে মতিঝিল থানায় মামলা করেন। তারাও এখন জামিনে। সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, টাকা আত্মসাতের ঘটনার নেপথ্যের মূল হোতা মুহিতের ভাগ্নে ব্রোকারেজ হাউসটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক শফিউল আজম। এ ঘটনার পর জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) শফিউল আজম ও তাঁর স্ত্রী বুশরা চৌধুরীর ব্যাংক হিসাবের তথ্য চেয়ে সব ব্যাংককে চিঠি দিয়েছিল। পরে তাঁর স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ করা হয়। সম্প্রতি তাঁকে মোবাইলে ফোন করা হলে হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা পাঠানোর অনুরোধ করেন। এ বিষয়ে প্রশ্ন করে বার্তা পাঠানো হলেও তিনি ফোন বা ফিরতি জবাব দেননি। টাকা আত্মসাতের ঘটনায় ক্রেস্ট ও বানকোর মালিকদের কয়েকজন গ্রেপ্তার হলেও সর্বশেষ তামহার ঘটনায় প্রতিষ্ঠানটির মালিক এখনও বহাল তবিয়তে আছেন। মূল মালিক ডা. হারুনুর রশীদ প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তাঁর পারিবারিক সম্পদ বিক্রি করে টাকা ফেরত দেবেন। ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত মাত্র পাঁচ কোটি টাকা ফেরত দিয়েছেন তিনি। ডিএসইর মাধ্যমে প্রকৃত দাবির ১৫ শতাংশ করে টাকা পেয়েছেন ভুক্তভোগীরা। এর বাইরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষকসহ প্রভাবশালী ব্যক্তিরা বিএসইসির চেয়ারম্যানের মধ্যস্থতায় প্রকৃত দাবির তুলনায় সামান্য ছাড় দিয়ে ব্যক্তিগত পর্যায়ে ১৯ কোটি টাকা নিয়েছেন। সংশ্লিষ্ট একাধিক ভুক্তভোগী সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। কোন পথে টাকা উদ্ধার বিনিয়োগকারীদের অর্থ আত্মসাৎকারীদের প্রত্যেকের যে সম্পদ রয়েছে, তা বিক্রি করে টাকা ফেরত সম্ভব। তামহা সিকিউরিটিজ বিক্রি করে দিতে এরই মধ্যে ২৫ কোটি টাকার একটি চুক্তি আছে। গুলশানের জমিটি বিক্রির পর এখন লালমাটিয়া ও সাভারের জমি রয়েছে। গত মে মাসের শুরুতে বিএসইসির চেয়ারম্যানের মধ্যস্থতায় লালমাটিয়ার জমিটি ডিএসইর মাধ্যমে প্রস্তাব দেওয়া হয়। তবে বিএসইসি এ কাজ ডিএসইকে করতে বলেছে। ডিএসই এখনও এ বিষয়ে উদ্যোগ নেয়নি। বানকোর গ্রাহকদের টাকা আত্মসাৎকারী শফিউল আজমের সুব্রা ফ্যাশনস, অ্যামুলেট ফার্মাসিউটিক্যালস, বানকো পাওয়ার, বানকো এনার্জি সল্যুশনস, ক্ল্যাসিক ফুড ল্যাব, সামিট প্রপার্টিজ নামে বেশ কিছু কোম্পানি রয়েছে। এরই মধ্যে সুব্রা আইটি বিক্রি করেছেন বলে জানা গেছে। কোম্পানিটিকে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত করার চেষ্টা করেছিলেন। এ ছাড়া ক্রেস্ট সিকিউরিটিজের মালিক শহিদুল্লাহর আত্মসাৎ করা টাকায় শ্যালক জাহিদুল ইসলাম জুয়েলের মাধ্যমে অন্যের জমি দখল করে লক্ষ্মীপুরে বিশাল খামার গড়ার অভিযোগ আছে। এ ছাড়া ঢাকায় বেশ কিছু ফ্ল্যাট কিনেছেন বলেও জানা যায়। চাইলে এসব সম্পদ বিক্রি করে গ্রাহকদের টাকা উদ্ধার সম্ভব বলে মনে করেন ভুক্তভোগীরা। ভুক্তভোগীরা যা বলছেন বানকো সিকিউরিটিজের গ্রাহকদের একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অনারারি অধ্যাপক আবু আহমেদ। তিনি বলেন, নিয়ন্ত্রক সংস্থার নির্লিপ্ত আচরণের কারণেই কিছু প্রতিষ্ঠান বিনিয়োগকারীদের অর্থ আত্মসাতের মতো দুঃসাহস দেখিয়েছে। ২০২০ সালের জুনে ক্রেস্টের ঘটনার পরই বিএসইসির উচিত ছিল এ ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না হয়, এর ব্যবস্থা করা। তারা কিছু করেনি। এ কারণে তামহা ও বানকোতে ঘটনার পুনরাবৃত্তি হয়েছে। অভিন্ন মত তামহা সিকিউরিটিজের গ্রাহক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফেরমশন বিভাগের শিক্ষক ড. আল আমীনেরও। তিনি জানান, বিএসইসি ও ডিএসই একে অপরের দিকে দায় ঠেলছে। এখন পর্যন্ত হারানো টাকার মাত্র ১৫ শতাংশ ফেরত পেয়েছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তাঁর কিছু সহকর্মী পারস্পরিক সমঝোতায় টাকা পেলেও অনেক সাধারণ বিনিয়োগকারী ফেরত পাচ্ছেন না। ডিএসইর বক্তব্য ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইফুর রহমান মজুমদার জানান, আইনি প্রক্রিয়া ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করে বিনিয়োগকারীদের টাকা ফেরত দেওয়ার চেষ্টা চলছে। এ ক্ষেত্রে ধীরগতির অভিযোগ স্বীকার করে তিনি বলেন, সংশ্লিষ্ট ব্রোকারেজ হাউসের মালিকরা ব্যক্তিগত সম্পত্তি বিক্রি করে টাকা পরিশোধে রাজি হয়েছেন। এ নিয়ে কাজ করছে ডিএসই। এ ছাড়া বিদ্যমান আইনে ব্রোকারেজ লাইসেন্স হস্তান্তরযোগ্য না হলেও বিকল্প ব্যবস্থায় পুরো প্রতিষ্ঠান বিক্রির ‘ফর্মুলা’ও প্রস্তাব করা হয়েছে। আশা করছি, সবার টাকা ফেরত দেওয়া যাবে। তিনি বলেন, ভবিষ্যতে যাতে এ রকম ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয়, সে জন্য প্রতিটি ব্রোকারেজ হাউসের গ্রাহকদের নগদ জমার হিসাব নেওয়া হচ্ছে। ঘাটতি পেলেই নেওয়া হচ্ছে ব্যবস্থা।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিনিয়োগকারী সুরক্ষা তহবিল থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের টাকা দেওয়ায় বিষয়ে আইনি জটিলতা আছে। এ জন্য বিধি-বিধান বদলে প্রায় ২০ কোটি টাকা দিতে তহবিলটির ট্রাস্টি বোর্ডের কাছে প্রস্তাব করা হয়েছে। আগামী সপ্তাহে এ ট্রাস্টি বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেবে। তবে ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের যত টাকার দাবি এখনও বকেয়া আছে, এর তুলনায় এ অর্থ খুবই কম। বিএসইসির বক্তব্য বিএসইসির কমিশনার শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, বিনিয়োগকারীকে সুরক্ষা দেওয়া স্টক এক্সচেঞ্জ এবং বিএসইসি উভয়ের দায়িত্ব। বিনিয়োগকারীর অর্থ আত্মসাৎ একটি অনাকাঙ্ক্ষিত বিষয়। ভবিষ্যতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে আর না হয়, সে বিষয়ে নজরদারি আগের চেয়ে বহু গুণ বাড়ানো হয়েছে। জানতে চাইলে বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, বিনিয়োগকারী সুরক্ষা তহবিল থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের টাকা দিতে ডিএসইকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। স্টক এক্সচেঞ্জ এ বিষয়ে কাজ করছে।

https://samakal.com/economics/article/2307184370