১৮ জুলাই ২০২৩, মঙ্গলবার, ১২:০৫

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে উদ্বেগ আছে

সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য গণমাধ্যম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। তবে গণমাধ্যমে কর্মরত সাংবাদিকদের মধ্যে বিভেদ থাকলেও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে সবার উদ্বেগ আছে।

সোমবার দেশের বিভিন্ন পত্রিকার সম্পাদকের সঙ্গে বৈঠক করেছেন ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের (ইইউ) প্রাক-নির্বাচন পর্যবেক্ষক প্রতিনিধিদল। সেখানে তাদের এমনটাই জানানো হয়েছে।

এদিন রাজধানীর গুলশানে ইইউর বাংলাদেশ কার্যালয়ে প্রথম ধাপে কয়েকজন সম্পাদকের সঙ্গে বৈঠক করেন তারা। সেখানে উপস্থিত ছিলেন ডেইলি অবজারভার পত্রিকার সম্পাদক ইকবাল সোবহান চৌধুরী, নিউ এজ সম্পাদক নূরুল কবির, দি বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের সম্পাদক ইনাম আহমেদ এবং প্রথম আলোর ইংরেজি সংস্করণের সম্পাদক আয়েশা সিদ্দিক।

বৈঠক শেষে ইকবাল সোবহান চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, গণমাধ্যমকর্মীদের মধ্যে বিভেদ থাকলেও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে সবারই উদ্বেগ আছে বলে ইইউ প্রতিনিধিদের জানানো হয়েছে। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য গণমাধ্যম ভূমিকা রাখবে বলেও তাদের আশ্বস্ত করা হয়।

নিউ এজের সম্পাদক নূরুল কবির বলেন, সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন আয়োজনে ইইউ প্রতিনিধিদের এখনো বাংলাদেশে আসতে হচ্ছে, যা দুঃখজনক। তাদের প্রতিবেদনে যেন বাংলাদেশের মানুষ সন্তুষ্ট হয় সে বিষয়ে খেয়াল রাখার আহ্বান জানানো হয়েছে।
নির্বাচন কমিশনের আমন্ত্রণে দুই সপ্তাহের জন্য বাংলাদেশ সফরে রয়েছেন ইইউর ছয় সদস্যের স্বাধীন বিশেষজ্ঞ দল। আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে পর্যবেক্ষক পাঠানোর বিষয়টি মূল্যায়নে প্রাক-মিশনে গত ৯ জুলাই থেকে বাংলাদেশে অবস্থানরত বিদেশি কূটনীতিকদের সঙ্গে রুটিন বৈঠক দিয়ে কার্যক্রম শুরু করে ইইউর দলটি।

মিডিয়ার চ্যালেঞ্জ জানতে চাইল ইইউ প্রতিনিধি দল : বাংলাদেশে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সংবাদ কাভার করতে গণমাধ্যমের চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে জানতে চেয়েছে সফররত ইউরোপীয় ইউনিয়নের নির্বাচনি অনুসন্ধানী মিশন। সোমবার ঢাকায় ইইউ কার্যালয়ে গণমাধ্যম প্রতিনিধিদের সঙ্গে এক মতবিনিময় অনুষ্ঠানে তারা এ কথা জানতে চান।

অনুষ্ঠানে যুগান্তরের প্রধান প্রতিবেদক মাসুদ করিম, ইউএনবি’র বিশেষ প্রতিনিধি একেএম মঈনুদ্দিন, চ্যানেল আইয়ের বিশেষ প্রতিনিধি পান্থ রহমান, যমুনা টেলিভিশনের বিশেষ প্রতিনিধি মাহফুজ মিশু এবং চ্যানেল টুয়েন্টিফোরের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মোরশেদ হাসিব হাসান উপস্থিত ছিলেন। গণমাধ্যমে স্বাধীনতাসহ আরও অন্যান্য বিষয় আলোচনায় উঠে আসে। এ সময় বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা প্রশিক্ষণের অভাবসহ বিভিন্ন ধরনের চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরেন।

সাংবাদিকরা বিশেষ করে দুর্গম অঞ্চলে সাংবাদিকদের সংবাদ কাভারে নিরাপত্তার সংকটের কথা তুলে ধরেন। ইইউ প্রতিনিধিদলের সদস্যরা নির্বাচনের সংবাদ কাভারে মাঠের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে জানতে চান। প্রতিনিধিদলের প্রধান রিকার্ডো শ্যালে জানান, তাদের প্রতিনিধিদল এখন পর্যন্ত বিভিন্ন স্তরে ৭০টির বেশি বৈঠক করেছেন।

সরকার, রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজ, গণমাধ্যমসহ বিভিন্ন পর্যায়ে এসব বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। দুই সপ্তাহের সফরকালে সামনে আরও কিছু বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠকের ফলাফলের ভিত্তিতে তারা প্রতিবেদন প্রস্তুত করে ইউরোপীয় ইউনিয়নের অভিন্ন নিরাপত্তা ও পররাষ্ট্রবিষয়ক উচ্চ প্রতিনিধি জোসেফ বোরেলের কাছে পেশ করবেন।

রিকার্ডো আরও বলেন, পর্যবেক্ষণ মিশন পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেবে ইইউ। পর্যবেক্ষণ মিশন পাঠানো খুবই ব্যয়সাপেক্ষ। আর্থিক দিকসহ বিভিন্ন দিক পর্যালোচনা করে সদস্য রাষ্ট্রগুলো এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে। ২৮ সদস্যবিশিষ্ট ইউরোপীয় দেশগুলোর জোট ইইউ বাংলাদেশে নির্বাচনে সাধারণত সবচেয়ে বড় প্রতিনিধিদল পাঠিয়ে থাকে। সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পর্যবেক্ষক পাঠানোর জন্য প্রতিনিধিদলের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।

https://www.jugantor.com/todays-paper/first-page/697113/