১৭ জুলাই ২০২৩, সোমবার, ৮:৫৮

পেশাজীবীরা রাজপথে


বিদেশিরা সব দলের অংশগ্রহণে অবাধ নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য প্রবল চাপ দিচ্ছে; বিরোধী দল সরকারের পদত্যাগ করে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে এক দফার আন্দোলন করছেন; সরকার সেই চাপ সামলাতে হিমসিম খাচ্ছে; তখন রাজপথে সক্রিয় হয়ে উঠেছে বিভিন্ন পেশাজীবী ও শ্রমিক সংগঠন। সরকারের মেয়াদের শেষ সময়ে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকারের কাছে বিভিন্ন ইস্যুতে রাজপথে নেমেছে পেশাজীবীরা। তারা ঢাকার প্রাণকেন্দ্রে রেলপথ ও সড়ক অবরোধ করে মিছিল করছেন এবং অবস্থান করে বিক্ষোভ করছেন। তারা দাবি আদায়ে সরকারের ওপর জোড়ালো চাপ দিচ্ছেন। হুঁশিয়ারি দিচ্ছেনÑ দাবি না মেটা পর্যন্ত চলবে আন্দোলন, উঠবে প্রতিবাদের ঝড়।

প্রত্যেক সরকারের মেয়াদের শেষ সময়ে বিভিন্ন পেশাজীবী তাদের দাবি-দাওয়া নিয়ে সোচ্চার হয়ে ওঠে। তবে আগে বিভিন্ন সময়ে অযৌক্তিক দাবি নিয়ে হাজির হলেও বর্তমানে যারা আন্দোলনে আছেন তাদের দাবি তারা যৌক্তিক দাবি আদায়ে মাঠে আছেন। আবার অনেকেই প্রস্তুতি নিচ্ছেন দাবি নিয়ে মাঠে নামার। দাবি আদায়ে অতীতে কোনো কোনো সংগঠন সফলও হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় এবারও সোচ্চার হয়েছে বিভিন্ন পেশার সংগঠনগুলো। ইতোমধ্যে এসব দাবি-দাওয়া আদায়ে কোনো কোনো সংগঠন রাস্তায় নেমে এসেছে। কেউ কেউ পালন করছে ধর্মঘট ও কর্মবিরতি। এমনকি আমরণ অনশন অব্যাহত রেখেছে কোনো কোনো সংগঠন। আবার কেউ নিজ কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি-দাওয়া নিয়ে স্মারকলিপি দিয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীরা সাধ্য অনুযায়ী প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। তবে এখনও পর্যন্ত আসেনি তেমন কোনো ইতিবাচক ফল। এদিকে শ্রম আইন-২০০৬-এর বাস্তবায়ন নিয়ে দীর্ঘদিন থেকে অসন্তোষ বিরাজ করা গার্মেন্টস শ্রমিকরা ন্যূনতম মজুরি ২৩ হাজার টাকা নির্ধারণের দাবি জানিয়েছে।

পাশাপাশি গাজীপুরের টঙ্গীতে শ্রমিকনেতা শহিদুল ইসলাম হত্যাকা-ের ঘটনায় ফুসছেন শ্রমিকরা। যেকোনো সময়ে বড় ধরনের আন্দোলন এবং অস্থিরতা বাড়তে পারে। ইতোমধ্যে নিন্দা প্রকাশের পাশাপাশি হত্যাকা-ে জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনার আহ্বান জানিয়েছন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। মামলাটির তদন্তে সার্বক্ষণিক নজর থাকবে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। এছাড়া ইউরোপীয় ইউনিয়ন দেশের পেশাজীবীদের সঙ্গে লাগাতার বৈঠক করছে। বৈঠক শেষে একটা প্রতিবেদন দেবে।

সেখানে শ্রম অধিকার বিষয়টি উল্লেখ করে পোশাক শিল্পের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে। সম্মিলিত গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি নাজমা আক্তার বলেন, পোশাক শিল্প দেশের সর্ববৃহৎ রফতানি শিল্প। কিন্তু তাতে শ্রমিকরা অত্যন্ত স্বল্পমূল্যে শ্রম দিয়ে যাচ্ছেন। বাংলাদেশ শ্রম আইন-২০০৬ এর সঠিক বাস্তবায়ন না থাকায় শ্রমিকদের অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। বর্তমানে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়েই চলেছে, ফলে শ্রমিকদের জীবনযাত্রা চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। তাই আমাদের দাবি, শ্রমিকদের মৌলিক চাহিদা পূরণ ও জীবনমানের উন্নয়নের জন্য অবিলম্বে ২৩ হাজার টাকা মজুরি নির্ধারণ করা হোক। অন্যথায় সামনে কঠোর কর্মসূচিরও হুঁশিয়ারি দেন তিনি।

সূত্র মতে, চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে গতকাল রেলওয়ের অস্থায়ী আউটসোর্সিং শ্রমিকরা গতকাল রোববার সকালে রাজধানীর কাওরান বাজারে রেললাইন অবরোধ করে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন। এতে সকাল ১০ টার পর থেকে ঢাকা থেকে দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে ছেড়ে যাওয়া ট্রেনগুলো শিডিউল বিপর্যয়ে পড়েছে। অবরোধে ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে কোনও ট্রেনই ছেড়ে যেতে পারেনি। এতে ভোগান্তিতে পড়েছে হাজার হাজার ট্রেন যাত্রী। এরপর প্রায় ৫ ঘণ্টা পর রাজধানীর কারওয়ান বাজারের এফডিসি রেল ক্রসিং থেকে অবরোধ তুলে নিয়েছেন রেলওয়ের অস্থায়ী শ্রমিকরা। অবশ্য শুধু কারওয়ান বাজারই নয়, সারাদেশেই শ্রমিকরা বিক্ষোভ করে। শ্রমিকদের বিক্ষোভের কারণে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর ঢাকার সঙ্গে সারাদেশের রেল যোগাযোগ শুরু হয়েছে। বিকেল তিনটার দিকে রেল চলাচল স্বাভাবিক হয়। এর আগে চাকরি স্থায়ীকরণ ও আউটসোর্সিংয়ের প্রতিবাদে সকাল ১০ টার দিকে রাজধানীতে কয়েকশ’ শ্রমিক রেললাইনে অবস্থান নেয়ায় ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। দুপুরে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক জাহাঙ্গীর হোসেন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে শ্রমিকদের চাকরি দেয়ার আশ্বাস দিলে তারা রেলপথ থেকে সরে দাঁড়ান।

শুধু রেলের অস্থায়ী শ্রমিকই নয়; গতকাল ভাতা বৃদ্ধির দাবিতে রাজধানীর শাহবাগে আন্দোলন করেছে পোস্ট গ্রাজুয়েট প্রাইভেট ট্রেইনি ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন। অনেকদিন থেকেই তাদের এই আন্দোলন চলছে। গতকাল ট্রেইনি (শিক্ষানবিশ) চিকিৎসকদের দাবি আদায়ে আন্দোলন চলাকালে তাদের ওপর পুলিশ লাঠিচার্জ করেছে। অন্দোলনকারীদের মধ্যে ডা. মো. হাবিবুর রহমান সোহাগ বলেছেন, বিএসএমএমইউ থেকে শাহবাগ মোড়ে অবস্থান করতে গেলে তাদের ওপর পুলিশ লাঠিচার্জ করে। এতে কয়েকজন চিকিৎসক আহতও হয়েছেন বলে দাবি তার। আন্দোলনরতরা পরে শাহবাগ থেকে এলিফ্যান্ট রোডে অবস্থান নিয়েছেন জানিয়ে তিনি বলেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা ঘরে ফিরব না। জানা গেছে, মাসিক ভাতা ৫০ হাজার টাকা করা, বকেয়া পরিশোধ ও নিয়মিত ভাতা প্রদানের দাবিতে সকাল ১০টা থেকে শাহবাগে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন ট্রেইনি চিকিৎসকরা। এতে প্রায় ৭ ঘণ্টা বন্ধ ছিল শাহবাগ-সায়েন্সল্যাবমুখী রাস্তা। পরে বিকাল ৫ টার দিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ভিসি ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদের আশ্বাসে অবস্থান কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছেন পোস্ট গ্রাজুয়েট ট্রেইনি চিকিৎসকরা। ভিসি আশ্বাস দিয়েছেন আগামী সাত দিনের মধ্যে সরকারের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করবেন এবং সুখবর জানাবেন।

পোস্ট গ্রাজুয়েট প্রাইভেট ট্রেইনি ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. জাবির হোসেন বলেন, ভিসি স্যার আমাদের লিখিত আশ্বাস দিয়েছেন তাঁর আশ্বাসে আমরা এখন রাস্তা ছাড়ছি। তবে প্রজ্ঞাপন না আসা পর্যন্ত আমাদের কর্মবিরতি চলবে। এদিকে সন্ধ্যার দিকে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক প্রফেসর ডা. টিটু মিয়া জানিয়েছেন, পোস্ট গ্রাজুয়েট মেডিকেল শিক্ষার্থীদের ভাতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২৫ হাজার টাকায় উন্নীত করেছেন। এ প্রসঙ্গে ডা. জাবির হোসেন বলেন, ২০২০ সালেই নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছিল ৩০ হাজার টাকায় মাসিক ভাতা উন্নীতকরণের। আর ৩ বছর পর এসে ৫ হাজার টাকা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক। আমরা এ ধরনের সিদ্ধান্ত মানি না। আমরা সবাই শাহবাগে আছি, মিটিংয়ে বসবো। দ্রুতই পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিব।

এছাড়া দেশের মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের (সরকারিকরণ) দাবিতে এবার বিদ্যালয়ে ক্লাস বন্ধ রেখে ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষকেরা। বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির ডাকে গতকাল নিয়ে ছয় দিন ধরে এ কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। গতকাল থেকে তারা ক্লাস বন্ধ রেখে এ কর্মসূচি শুরু করেছেন। আন্দোলনকারী শিক্ষকেরা বলছেন, প্রথমে কিছু সংখ্যক শিক্ষক এই কর্মসূচি শুরু করলেও রোববার থেকে বিদ্যালয়ের ক্লাস বন্ধ রেখে এ কর্মসূচি শুরু করেছেন তারা। এবার দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা এ কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন। সামনে আমরণ অনশনের মতো কর্মসূচিও আসতে পারে বলে জানিয়েছেন তারা। গতকাল আন্দোলনকারী শিক্ষক সূর্য রায় জানালেন, তিনি নড়াইল সদর উপজেলার বাশগ্রাম বিষ্ণুপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। তিনি বলেন, তিনি এমপিওভুক্ত শিক্ষক (সরকার থেকে বেতনের মূল অংশসহ কিছু ভাতা পান)। বাড়িভাড়া পান মাত্র এক হাজার টাকা। সব মিলিয়ে যে বেতন-ভাতা পান, তা দিয়ে চলতে খুবই কষ্ট হয়। মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণ হলে সব দিক দিয়েই ভালো হবে। এ জন্য তিনি এ দাবিতে আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন। বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির ডাকে ১১ জুলাই থেকে এ কর্মসূচি চলছে। সমিতির সাধারণ সম্পাদক শেখ কাওসার আহমেদ বলেন, যত দিন পর্যন্ত মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের ঘোষণা না আসবে, তত দিন পর্যন্ত কর্মসূচি চলবে। হয়তো কর্মসূচিতে ভিন্নতা আসবে। যেমনÑ ১১ জুলাই থেকে এ কর্মসূচি চলছে। রোববার থেকে ক্লাস বন্ধ রেখে এ কর্মসূচি শুরু হয়েছে। দাবি পূরণের ঘোষণা না এলে সামনে আমরণ অনশনসহ আরও বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি দেয়া হবে।

এদিকে স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসা জাতীয়করণসহ ১১ দফা দাবি জানিয়েছেন মাদরাসা শিক্ষকরা। তারা জানান, শিক্ষায় বৈষম্য দূরীকরণ, সর্বস্তরে ধর্মশিক্ষা বাধ্যতামূলক করণ, পাঠ্যক্রম সংশোধন ও মাদরাসার জন্য স্বতন্ত্র পাঠ্যক্রম প্রণয়ণের দাবি করেছেন। গত শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে ইসলামী শিক্ষা উন্নয়ন আয়োজিত জাতীয় সেমিনারে শিক্ষক নেতারা এসব দাবি উপস্থাপন করেন। সংগঠনের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন দি ইউনিভার্সিটি অব কুমিল্লার গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. হানিফ খান। সংগঠনের সভাপতি এ কে এম মাহবুবুর রহমান বলেন, জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০ এ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের কথা বলা হয়েছে। জাতীয়করণ শিক্ষকদের ন্যায্য অধিকার, এটা বাস্তবায়ন করতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর সম্মতি থাকার পর ও জাতীয়করণ বাস্তবায়ন না হওয়ায় প্রায় ১ হাজার প্রতিষ্ঠানের ৪৫ হাজার শিক্ষক বিনা বেতনে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

সম্প্রতি সরকারি চাকরিজীবীদের ৫ শতাংশ বিশেষ ইনক্রিমেন্ট দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে সরকার। জুলাই মাস থেকে বর্ধিত বেতন পাবেন প্রায় ২০ লাখ কর্মকর্তা-কর্মচারী। তবে, এ ঘোষণায় ক্ষুব্ধ চাকরিতে থাকা বিপুল সংখ্যক কর্মচারী। ১১ থেকে ২০ গ্রেড পর্যন্ত প্রায় ১২ লাখ কর্মচারীর বেতন বাড়বে মাত্র ৪শ’ থেকে ৬০০ টাকা। তৃতীয় শ্রেণীর মোট কর্মচারীর সংখ্যা ৯ লাখ ৬০ হাজারের সর্বসাকুল্যে মূল বেতন বাড়বে মাত্র ৪১২ টাকা! আর চতুর্থ শ্রেণির ২ লাখ ৩২ হাজার চাকরিজীবীর বাড়তি অর্থ যোগ হবে ৬২৫ টাকা। অথচ সচিব পর্যায়ে এ বৃদ্ধির হার ৪ হাজার টাকার বেশি! বলা হচ্ছে, বেতন বৈষম্য কমিয়ে না আনলে তীব্র হবে সংকট। সরকারি পেনশনভোগীরাও পাবেন বাড়তি সুবিধা। কিন্তু, এমন ঘোষণায় অসন্তুষ্ট বাংলাদেশ তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণি কর্মচারীরা। যে কোনো সময়ে দাবি আদায়ে আবার আন্দোলনে নামছেন তারা।

সচিবালয় বহুমুখী সমবায় সমিতির সম্পাদক মজিবুর রহমান বলেছেন, ১১ থেকে ২০ গ্রেডে যারা তারা বৈষম্যের শিকার হয়েছেন। তারা যে বেতন পান বর্তমান পরিস্থিতিতে টা দিয়ে সংসার চালানো কঠিন। ৫ শতাংশে একজন কর্মচারীর বেতন বাড়লও মাত্র ৪১২ টাকা। অথচও, ২০১৫ সালে পে-স্কেল দেয়ার পর থেকে দেশে জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে দ্বিগুণ হারে। চতুর্থ শ্রেণী কর্মচারি সমিতির সাধারণ সম্পাদক নিজামুল ইসলাম ভূঁইয়া এ প্রসঙ্গে বলেন, বাজারের পরিস্থিতি এমন যে এখন বাজারে গেলে চোখে পানি চলে আসে। আমরা খালি বাজারের ব্যাগ নিয়ে বাসায় ফেরত আসি। যেমন ধরেনÑ একজনের বেতন ৮০ হাজার কিন্তু সে আরও বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার হিসেব দেখিয়ে দেড় লাখ টাকার বেতন নিয়ে যায়। আর, আমরা যারা ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারী, আমরা পাই মাত্র ৮ হাজার ২০০ টাকা।

এছাড়া দীর্ঘদিন থেকে ১১ দফা দাবি নিয়ে মাঠে আছে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা। তাদের দাবির মধ্যে রয়েছে মাসিক ভাতা পাঁচ হাজার টাকা করা, প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী ভাতা দুই হাজার টাকা করা, সরকারি চাকরিতে প্রতিবন্ধীদের জন্য বিশেষ নীতিমালা, হাজার কোটি টাকার প্রতিবন্ধী উদ্যোক্তা তহবিল গঠন, প্রতিবন্ধী ব্যক্তি উন্নয়ন অধিদফতরকে কার্যকর করা, ইশারাভাষা ইনস্টিটিউট গঠন ও সব সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানে দোভাষী নিশ্চিত করা, শিক্ষা ও চাকরির নিয়োগে শ্রুতিলেখক নীতিমালা প্রণয়ন, প্রতিবন্ধীদের প্রবেশগম্য অবকাঠামো ও গণপরিবহন নিশ্চিতে অর্থ বরাদ্দ এবং রাজনৈতিক দলে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা, মন্ত্রণালয়ভিত্তিক সংবেদনশীল বাজেট করা। এসব দাবি দাওয়া বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত তাদের আন্দোলন চলবে বলে জানিয়েছে প্রতিবন্ধী ঐক্য সমাজের সভাপতি মো. আল মাহমুদ হোসেন।

https://dailyinqilab.com/national/article/588072