১৫ জুলাই ২০২৩, শনিবার, ৯:০১

নিত্যপণ্যের বাজারে অস্থিরতা বাড়ছেই

নিত্যপণ্যের বাজারে অস্থিরতা বাড়ছেই। প্রতিদিনই হুটহাট করে কোনো না কোনো পণ্যের দাম বেড়েই যাচ্ছে। অসহনীয় দ্রব্যমূল্যে নাকাল মানুষ। ঊর্ধ্বমূল্যের বাজারে সংসার চালাতেই হিমশিম খাচ্ছেন অধিকাংশ মানুষ। এ নিয়ে ক্রেতাসাধারণের ক্ষোভ ও অভিযোগ থাকলেও বাজারে স্থিতিশীলতা ফিরছে না। ঈদের পর নিত্যপণ্যের বাজারে এখনো স্থিতিশীলতা আসেনি। সবজি বাজারে অস্থিরতা বিরাজ করছে। ৬০-৮০ টাকার কমে কোন সবজি মিলছে না। অপরদিকে মাছের বাজারও চড়া। এদিকে কাঁচা মরিচ, আদা, পেঁয়াজ, আলু, টমেটো, ভোজ্যতেল ও চিনির দাম এখনো উর্দ্ধমুখী। অবশ্য সয়াবিন তেলের দাম কিছুটা কমানোর ঘোষনা দেয়া হয়েছে।

গতকাল শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে দেখা গেছে, ৬০-৮০ টাকার নিচে কোনও সবজি নেই। কাঁচা মরিচের কেজি এখনো ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা। লম্বা বেগুনের কেজি ৮০ টাকা, গোল বেগুন ১০০ টাকা, শসা ৭০ থেকে ৮০ টাকা, করল্লা ১২০ টাকা, উচ্ছে ১০০, পেঁপে ৬০ টাকা, কাঁকরোল ৮০ টাকা, গাজর ১২০ টাকা, টমেটো ৩২০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৪০ টাকা, ঢেঁড়স ৮০ টাকা, পটল ৬০-৮০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০-৮০ টাকা, ধুন্দল ৮০-৯০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, কচুরমুখী ১০০ টাকা, কাঁচা মরিচ ৪০০ টাকা, ধনেপাতা ২০০ কেজি, লাউ ৭০-৮০ টাকা, চাল কুমড়া ৮০ টাকা পিস।

এছাড়া দেশি পেঁয়াজ ৭০-৭৫ টাকা, ভারতীয় পেঁয়াজ ৪৫-৫০ টাকা, ক্রস জাতের পেঁয়াজ ৬৫ টাকা, আদা ২০০-২৪০ টাকা, দেশি রসুন ১৮০ টাকা, চায়না রসুন ২২০ টাকা, আলু ৪০-৪৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

মাছের বাজারে দেখা গেছে, অধিকাংশ মাছের দামই চড়া। ইলিশ মাছ ১৮০০ থেকে ২৫০০ টাকা, রুই মাছ ৩৫০-৪৫০, কাতল মাছ ৪০০-৫০০, চিংড়ি মাছ ৯০০, কাঁচকি মাছ ৫০০, টেংরা মাছ ৮০০, কৈ মাছ ২৫০, পাবদা মাছ ৫০০-৬০০ টাকা, শিং মাছ ৪০০-৬৫০, বেলে মাছ ৯০০-১০০০ টাকা, কাজলী মাছ ১৪০০ টাকা কেজি। আর ব্রয়লার মুরগি ১৬৫-১৮০, পাকিস্তানি বা কক মুরগি ২৫২-২৬০, দেশি মুরগি ৫৫০, গরুর গোশত ৭৮০-৮০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে গত মঙ্গলবার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ১০ টাকা ও খোলা পাম তেলের দাম লিটারপ্রতি ৫ টাকা কমানোর ঘোষণা আসে। যা পরের দিন বুধবার থেকে কার্যকর হওয়ার কথা। কিন্তু বাজারে এখনো ভোজ্যতেলের দাম কমেনি। আগের বাড়তি দামেই তেল কিনতে হচ্ছে ক্রেতাদের। এ বিষয়ে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, এখনো নতুন দামের তেল বাজারে আসেনি। কোম্পানি আরও কদিন পর সেগুলো বাজারে ছাড়বে। এখনো পুরোনো তেল বিক্রি করছি, যে কারণে আগের দাম রাখতে হচ্ছে। কোম্পানি দাম বাড়ালে ব্যবসায়ীরা সঙ্গে সঙ্গে তা বাড়িয়ে দেয়। কিন্তু যখন কোনো পণ্যের দাম কমানোর ঘোষণা আসে তখন তা কার্যকর হতে অনেক সময় লেগে যায়। ভোজ্যতেলের নতুন দাম কার্যকর হতেও এক থেকে দেড় সপ্তাহ লেগে যেতে পারে।

বিক্রেতারা বলছে, দাম কমানোর পর প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ১৭৯ টাকা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তা আগের দাম ১৮৯ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে খোলা সয়াবিনের দাম লিটারে কমেছে ৫ টাকা। খোলা সয়াবিন ১৫৯ টাকায় বিক্রি হওয়ার কথা থাকলেও বিক্রি হচ্ছে ১৬৫ থেকে ১৭০ টাকা দরে। আর ৫ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ৪৩ টাকা কমিয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে ৮৭৩ টাকা, দাম না কমায় তা বিক্রি হচ্ছে ৯০০ থেকে ৯১০ টাকায়।

অন্যদিকে দীর্ঘদিন খুচরা বাজারে কোথাও মিলছে না প্যাকেটজাত চিনি। গত কদিনের ব্যবধানে এ পণ্যটির দাম আরও বেড়ে এখন ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। কোথাওবা ১৫০ টাকা পর্যন্ত দাম রাখা হচ্ছে। এদিকে আটার দাম (দুই কেজির প্যাকেট) ১২০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৩০ টাকা। এছাড়া মসুরের ডাল ১৩০ টাকা, মুগ ডাল ১২০ টাকা, খেসারি ডাল ৮০ টাকা, বুটের ডাল ৯৫ টাকা, ছোলা ৮৫ টাকা, খোলা ময়দা ৬৩ টাকা, খোলা সরিষার তেল প্রতি লিটার ২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

https://dailysangram.info/post/529944