১৩ জুলাই ২০২৩, বৃহস্পতিবার, ১২:২৪

গণপরিবহন সংকটে রাজধানীবাসীর অশেষ ভোগান্তি

একইদিনে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের পাল্টাপাল্টি সমাবেশকে কেন্দ্র করে বুধবার সকাল থেকে রাজধানীতে সীমিত হারে চলছে গণপরিবহন। ফলে ভোন্তিতে পড়তে হয় গণপরিবহনে চলাচলকারী সাধারণ মানুষকে। অন্য দিকে রাজধানীর ফুটপাতগুলো দখল করে বসা হকাররাও সকাল থেকে দোকান খুলেনি। দেশের বৃহত্তম দুই রাজনৈতিক দলের একইদিনে সমাবেশকে ঘিরে গতকাল সকাল থেকেই উত্তপ্ত ছিল রাজধানী ঢাকা। মাত্র দেড় কিলোমিটার দূরত্বের মধ্যে সমাবেশ করে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। দুই দলের সমাবেশ ঘিরে যনজট ও পরিবহন সংকটে নাকাল ছিল নগরবাসী। সরকার পতনের এক দফা আন্দোলন নিয়ে রাজধানীর নয়াপল্টনে সমাবেশ করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি। সমাবেশে যোগ দিতে সকাল থেকেই মিছিল নিয়ে পল্টনমুখী হতে দেখা যায় নেতাকর্মীদের।
বিএনপির এ সমাবেশ থেকে সরকার পতন আন্দোলনের এক দফার যৌথ ঘোষণা দেওয়া হয়। ফলে দলে দলে সমাবেশে যোগ দেয় দলটির সমর্থকরা। এ কারণে সমাবেশস্থলের আশপাশের এলাকায় শ্লোগানে মুখর থাকতে দেখা যায়। মৎস্যভবন, কমলাপুর, পুরানা পল্টন, কাকরাইল, শহজাহানপুর এলাকায় প্রধান সড়কগুলোতে মিছিলে মিছিলে সয়লাব হয়ে যায়। এদিকে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের দক্ষিণ গেটের সামনে শান্তি সমাবেশ করে আওয়ামী লীগ। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও উত্তর আওয়ামী লীগ আয়োজিত ঢাকার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মিছিল নিয়ে এ সমাবেশে যোগ দেয় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর কর্মী-সমর্থকরা।

কারওয়ান বাজার, শাহবাগ, শেরাটন হোটেল সংলগ্ন ভিআইপি রোড, কাকরাইল মোড়ে সিগন্যাল ও জ্যামে দীর্ঘক্ষণ ব্যক্তিগত গাড়ি, সিনএজিচালিত অটোরিকশা, মোটরসাইকেল, বাস আটকে থাকতে দেখা গেছে। এসময় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি উপেক্ষা করে পায়ে হেঁটে নিজ নিজ দলের কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছেন দলটির নেতা-কর্মীরা। বাস, ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেল থেকে নেমে পথচারীদেরও হেঁটে গন্তব্যে যেতে দেখা গেছে। দুই দলের সমাবেশের কারণে রাজধানীর সড়কগুলোতে তুলনামূলক কম যানবাহন চলাচল করতে দেখা যাচ্ছে। যানজট বেশি হওয়ায় গন্তব্যে পৌঁছানোর আগেই অনেক বাস ঘুরে ফিরে যায়।

রাজধানীর প্রতিটা বাস পয়েন্টে যাত্রীদের ভিড় লেগেই ছিল। গাড়ি এলেই অপেক্ষমান যাত্রীরা কে কার আগে উঠবেন হুমড়ি খেয়ে পড়েন। অনেকেই আবার ঝুঁকি নিয়ে ঝুলে পরছেন গাড়ির গেটে। এদিকে দীর্ঘ সময় পর দুয়েকটি গাড়ি এলেও তাতে আগে থেকেই গেটে ঝুলছেন যাত্রীরা। অধিকাংশ গণপরিবহন থামেনি বাস পয়েন্টে। যাত্রীর চাপে বাধ্য হয়ে নির্ধারিত বাস স্টপেজে না থেমে ফাঁকা জায়গায় গিয়ে থেমেছে। বিআরটিসির বাসচালকের সহকারী আওলাদ হোসেন বলেন, কিছু রাস্তা দিয়ে পরিবহন যেতে দিচ্ছে না পুলিশ। যাত্রী আছে, কিন্তু গাড়ি কম। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সমাবেশের কারণেই আজ পরিবহন কম। গুলিস্তান-ধামরাই গাড়ির চালকের এক সহকারী বলেন, বিএনপির সমাবেশের কারণে অনেকেই গাড়ি বের করেনি। কখন কী ঝামেলা হয় বলা তো যায় না। এই কারণে গাড়ি কম।

গাবতলী লিঙ্ক ৮ নম্বর পরিবহনের চালকের এক সহকারী বলেন, আমিন বাজার থেকে গাড়ি ঢাকার ভেতরে আসতে বাধা দিচ্ছে পুলিশ। আর গাড়ি চালকরা নিজেরাও আসতে চাইছে না। কারণ কখন কী হয়ে যায়! যদি ঝামেলা হয় গাড়িতে আগুন দেয় তখন কী হবে! তাই মালিকপক্ষ গাবতলী থেকেও খুব একটা গাড়ি ছাড়ছে না।

https://dailysangram.info/post/529781