১০ জুলাই ২০২৩, সোমবার, ১১:০০

১২০ ফুট প্রশস্ত সড়কের সচল মাত্র ১০ ফুট

রাজধানীর কালশী মোড়

ট্রাক-পিকআপ স্ট্যান্ড ঢেকে ফেলেছে ফুটপাতসহ পুরো সড়ক

রাজধানীর কালশীর বাউনিয়া বাঁধ সড়কের ওপর সারি সারি ট্রাক, মিনিট্রাক। রয়েছে সিটি করপোরেশনের ময়লার ডাম্পিং। এই পথে যানবাহন ও পথচারী চলাচলে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। গত শনিবার তোলা।

তখন দুপুর দেড়টা। রাজধানীর কালশী মোড় থেকে দক্ষিণে মিরপুরের লালমাটিয়া পর্যন্ত সড়কে রাখা হয়েছে সারি সারি ট্রাক, পিকআপ, কাভার্ড ভ্যান ও লেগুনা। ১২০ ফুট প্রশস্ত সড়কে যে গতিতে যানবাহন চলার কথা, বিভিন্ন যানবাহন পার্ক করে রাখায় সে সড়ক হয়ে পড়েছে অতি সংকীর্ণ। দুটি রিকশা পাশাপাশি পার হওয়াও কঠিন হয়ে পড়েছে।

প্রশস্ত সড়কটির ১০ ফুটের কম জায়গায় বর্তমানে কোনোমতে চলছে যানবাহন। সরেজমিনে গতকাল রবিবার ওই এলাকায় গিয়ে এমন চিত্র দেখা গেছে।

কালশী মোড় থেকে বাউনিয়া বাঁধ নতুন সড়কের এক পাশে গড়ে ওঠা ট্রাক-পিকআপের স্ট্যান্ড ঢেকে ফেলেছে ফুটপাতসহ সড়কের বেশির ভাগ অংশ। কয়েক বছর ধরে এই পরিস্থিতি চলতে থাকলেও সড়কের ওপর গড়ে ওঠা ওই অবৈধ স্ট্যান্ড সরানোর কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।

স্থানীয়রা জানায়, অবৈধভাবে গড়ে ওঠা এই স্ট্যান্ডে দিনে দিনে বাড়ছে যানবাহনের সংখ্যা। ফলে লালমাটিয়ার দিক থেকে সংকীর্ণ হয়ে পড়া এই সড়ক ধরে কালশীর মূল সড়কে ওঠা রীতিমতো কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। লালমাটিয়া থেকে কালশী মোড় পর্যন্ত ১২০ ফুট সড়কটির বাঁ পাশ ট্রাক-পিকআপ স্ট্যান্ডের দখলে। আর ডান পাশে সড়কের পিচ ঢালাই উঠে বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে।
ফলে বৃষ্টির কাদা-পানিতে সড়কটি ব্যবহার অযোগ্য হয়ে পড়ে।

অটোরিকশার চালক আলাউদ্দিন লালমাটিয়া অংশ থেকে সড়কটি ধরে যাচ্ছিলেন কালশী মোড়ের দিকে। জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এই রাস্তায় ট্রাক-পিকআপ ভ্যান ছাড়া অন্য যানবাহন তেমন চলে না। এখান দিয়ে কলার আড়তের গাড়িগুলোও ঢোকে। আমরা কোনোমতে অটোরিকশা নিয়ে পার হই।
রাস্তা ভাঙা হলেও আর তো কোনো পথ নাই।’

আব্দুল মতিন নামের স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘দয়া করে তারা আমাদের চলাচলের জন্য সামান্য রাস্তা রেখে দিয়েছে, সেটাই বড় পাওয়া। আর কিছু বলার নাই। অথচ এ এলাকার ১০ হাজারের বেশি বাসিন্দার চলাচলের জন্য সড়কটি নির্মাণ করা হয়েছে। বর্তমান অবস্থা তো আপনারা দেখছেন।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ট্রাক সমিতির এক নেতা বলেন, পার্কিংয়ের জন্য জায়গা পাওয়া যাচ্ছে না বলে পিকআপ, কাভার্ড ভ্যান, লেগুনা ও ট্রাক আপাতত এখানে রাখা হচ্ছে।

বাংলাদেশ আন্ত জেলা ট্রাক চালক সমিতি ইউনিয়নের সভাপতি আবুল হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমরা গ্যারেজের জন্য জায়গা খুঁজছি, জায়গা পেলে রাস্তা বন্ধ করে গাড়ি রাখব না। সম্প্রতি উত্তর সিটি করপোরেশন এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্তের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বেশ কয়েকবার বৈঠক হয়েছে। উনারা আমাদের জায়গা দেখাচ্ছেন। যাওয়ার মতো হলে আমরা সেখানে চলে যাব।’

ট্রাকস্ট্যান্ড সম্পর্কে ডিএনসিসির আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা (অঞ্চল-২) মো. জিয়াউর রহমান বলেন, ‘উচ্ছেদ অভিযান চালানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছি। এ ছাড়া সড়কটির উন্নয়নকাজও করা হবে। ভাসানটেক এলাকার মতো এ সড়কও আমরা পরিষ্কার করে ফেলব।’

বিষয়টি নিয়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘অবৈধ কোনো ট্রাকস্ট্যান্ড থাকবে না। আমরা সব সরিয়ে ফেলব। তেজগাঁওয়ে একটি ট্রাকস্ট্যান্ড করার জন্য আমরা জায়গা দেখছি। ১৫ বিঘার মতো জায়গা চিহ্নিতও করা হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন পেলে কাজ শুরু করা হবে।’

https://www.kalerkantho.com/print-edition/last-page/2023/07/10/1297206