৭ জুলাই ২০২৩, শুক্রবার, ১১:২৫

রিজার্ভ আবার নামল ৩০ বিলিয়নের ঘরে

এক বছরে রিজার্ভ কমেছে ১০৭২ ডলার

এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) দেনা বাবদ ১১০ কোটি ডলার পরিশোধের পর দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আবার ৩০ বিলিয়ন (১০০ কোটিতে এক বিলিয়ন) ডলারের ঘরে নেমে এসেছে। বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ ছিল ৩ হাজার ৬ কোটি ডলার। এর আগে বুধবার পর্যন্ত রিজার্ভ বেড়ে ৩ হাজার ১১৬ কোটি ডলারে উঠেছিল।

সূত্র জানায়, মে ও জুনের আকুর দেনা বাবদ ১১০ কোটি ডলার বুধবার পরিশোধ করার জন্য নির্দেশনা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বৃহস্পতিবার ওই দেনা পরিশোধ করা হয়েছে। এতে রিজার্ভ কমে ৩ হাজার ৬ কোটি ডলারে নেমেছে। এর আগে বুধবার রিজার্ভ বেড়ে ৩ হাজার ১১৬ কোটি ডলারে উঠেছিল।

আজ শুক্রবার বাংলাদেশের সরকারি ছুটি, শনি ও রোববার আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ছুটি। এ কারণে সোমবার রিজার্ভ থেকে আকুর দেনা বাবদ ১১০ কোটি ডলার পরিশোধের পর রিজার্ভ কত থাকল, তা আনুষ্ঠানিকভাবে হিসাব করা হবে।

সাম্প্রতিক সময়ে রিজার্ভ বাড়াতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো থেকে ডলার কিনেছে। এছাড়া ঈদে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ায় এর একটি অংশও রিজার্ভে যোগ হয়েছে। ফলে রিজার্ভ কিছুটা বেড়েছে। মূলত আকুর দেনা পরিশোধের পর রিজার্ভ ধরে রাখার জন্যই কেন্দ্রীয় ব্যাংক তা বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়। এছাড়া বিশ্বব্যাংক ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের ঋণ বাবদ ৫২ কোটি ডলারও রিজার্ভে যোগ হয়েছে।

সূত্র জানায়, আকুর সঙ্গে এর সদস্য দেশগুলো দুই মাসের বাকিতে লেনদেন করে। দুই মাস পর পর এর দেনা-পাওনা সমন্বয় করা হয়। বর্তমানে আকুর সদস্য রয়েছে আটটি দেশ। এগুলো হচ্ছে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, ভুটান, ইরান, মালদ্বীপ ও মিয়ানমার। শ্রীলংকা আগে আকুর সদস্য হলেও অর্থনৈতিক মন্দার কারণে তারা নিজেদের নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছে।

এর আগে মার্চ-এপ্রিলের আকুর দেনা বাবদ ১১৮ কোটি ডলার পরিশোধ করা হয়েছিল। তখন রিজার্ভ ২৯ বিলিয়ন ডলারের ঘরে নেমেছিল। আমদানি কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করায় এবার আকুর দেনা কিছুটা কমেছে। এছাড়া স্বল্পমেয়াদি বৈদেশিক ঋণ নিয়ে খোলা এলসির ক্ষেত্রে তা পরিশোধের মেয়াদ ছয় মাস বাড়ানোর ফলে আকুর দেনা পরিশোধের পরিমাণও কিছুটা কমেছে।

এক বছর আগে ৫ জুলাই রিজার্ভ ছিল ৪ হাজার ১৮৮ কোটি ডলার। এক বছরে রিজার্ভ কমেছে ১ হাজার ৭২ কোটি ডলার। ৩০ জুন ছিল ৩ হাজার ১২০ কোটি ডলার। এ হিসাবে কমেছে ১১৪ কোটি ডলার।

তবে আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিলের (আইএমএফ) হিসাবে নিট রিজার্ভ আরও কম। তাদের শর্ত অনুযায়ী রিজার্ভ থেকে বিভিন্ন তহবিলে স্থানান্তর করা অর্থ বাদ দিয়ে হিসাব করতে হবে। রিজার্ভ থেকে বিভিন্ন তহবিলে বিনিয়োগের পরিমাণ ছিল ৮০০ কোটি ডলার। সেগুলো কমিয়ে এখন ৫৫০ কোটি ডলারে নামানো হয়েছে। রিজার্ভ থেকে ৫৫০ কোটি ডলার বাদ দিলে নিট রিজার্ভ দাঁড়াচ্ছে ২ হাজার ৪৫৬ কোটি ডলার, যা দিয়ে সাড়ে তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব।

আইএমএফ-এর শর্ত অনুযায়ী, জুলাই থেকে রিজার্ভের নিট হিসাব করতে হবে এবং তা প্রকাশ করতে হবে। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছে, তারা রিজার্ভের গ্রস হিসাবের পাশাপাশি নিট হিসাবও করছে।
কিন্তু নিট হিসাব আপাতত প্রকাশ করবে না।

https://www.jugantor.com/todays-paper/first-page/693081