৬ জুলাই ২০২৩, বৃহস্পতিবার, ২:০৩

কুড়িগ্রামে বাড়ছে পানি, কমছে সিলেটে

লালমনিরহাট-নীলফামারীতে স্বল্পমেয়াদি বন্যার শঙ্কা

উজানের ঢলে কুড়িগ্রামে দুধকুমার ও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি কিছুটা বেড়েছে। অপরিবর্তিত রয়েছে ধরলার পানি। তিস্তার পানি কিছুটা কমেছে। পানি সমতলে বৃদ্ধি পাওয়ায় এর অববাহিকাগুলোতে ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। গত দুই দিনে ধরলা ও ব্রহ্মপুত্র অববাহিকায় জেলার ফুলবাড়ী ও চিলমারীতে নতুন করে কয়েকটি স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এদিকে সিলেটের সুরমা, কুশিয়ারা, লোভাছড়া ও সারি নদীর পানি গত দুই দিন ধরে কমছে।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৗশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, জেলার ২৫ কিলোমিটার বাঁধজুড়ে ২৬টি স্থান অতিভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় সাড়ে চার কিলোমিটার জায়গায় জরুরিভাবে জিওব্যাগ ফেলা হচ্ছে।

অব্যাহত বর্ষণ ও উজানের ঢলে লালমনিরহাটে তিস্তার পানি আবারও বাড়তে শুরু করেছে। এতে ব্যারাজের ভাটিতে থাকা লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা, কালীগঞ্জ, আদিতমারী ও সদর উপজেলার তিস্তা তীরবর্তী চরাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। তলিয়ে গেছে ফসল। তিস্তার পানি ওঠানামার মধ্যে শুরু হয়েছে ভাঙন। লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীল কুমার জানান, ভাঙনের তথ্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

এদিকে মৌলভীবাজারে নদনদীতে পানি বাড়ছে। কমলগঞ্জ পৌরসভার বেশকিছু এলাকাসহ সদরের খলিলপুর ইউনিয়নের হামরকোনা, দাউদপুর, ব্রাহ্মণগ্রামের নিচু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। মনু নদীর কুলাউড়ার রেলওয়ে ব্রিজ, মৌলভীবাজারের চাঁদনীঘাট পয়েন্টে পানি বেড়েছে। কুশিয়ারা নদীর মৌলভীবাজারের শেরপুর পয়েন্টে বুধবার থেকে পানি বাড়ছে। এতে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জাবেদ ইকবাল জানান, কমলগঞ্জের ধলাই নদীর বন্যা প্রতিরক্ষা বাঁধের ঝুঁকিপূর্ণ স্থান পরিদর্শন করা হয়েছে।

নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলায় নদী, হাওর ও খাল-বিলের পানি কমছে। বুধবার বিকেলে উব্দাখালী নদীর পানি কমে ডাকবাংলো পয়েন্টে বিপৎসীমার ২৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। বেশি কমেছে মহাদেও, বৈঠাখালী, মঙ্গলেশ্বরী ও গণেশ্বরী নদীর পানি। পানি উন্নয়ন বোর্ডের পরিমাপক মোবারক হোসেন জানান, গতবারের মতো বন্যার শঙ্কা আপাতত নেই।

সিলেটের সুরমা, কুশিয়ারা, লোভাছড়া ও সারি নদীর পানি গত দুই দিন ধরে কমছে। হাওরাঞ্চলে ওঠা পানিও ধীরে ধীরে নেমে যাচ্ছে। গোয়াইনঘাট উপজেলার একাধিক সড়ক পানিতে নিমজ্জিত ছিল। বুধবার পানি নেমে এসব সড়ক ভেসে উঠেছে। বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢল না থাকায় সুনামগঞ্জে কমছে নদনদীর পানি।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র (এফএফডব্লিউসি) বুধবার বুলেটিনে জানায়, লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে। ফলে লালমনিরহাট ও নীলফামারীর নিম্নাঞ্চলে স্বল্পমেয়াদি বন্যা হতে পারে। ব্রহ্মপুত্র-যমুনা এবং গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধির প্রবণতা রয়েছে, যা ৪৮ ঘণ্টার বেশি অব্যাহত থাকতে পারে।

বুলেটিনে বলা হয়, বুধবার সকাল ৯টা থেকে ২৪ ঘণ্টার বেশি সময়ের জন্য কমলগঞ্জ পয়েন্টে ধলাই নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে। খোয়াই ছাড়া দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের প্রধান নদনদীর পানি কমে যাচ্ছে এবং সোমেশ্বরী ও ধলাই নদীতে তা ৪৮ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে চলতে পারে। সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোনার চলমান বন্যা পরিস্থিতি পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

https://samakal.com/bangladesh/article/2307181664