২৬ এপ্রিল ২০১৭, বুধবার, ৯:২৫

বিপাকে ব্যবসায়ীরা হিমশিম খাচ্ছে ব্যাংক

ডলারের দাম বেড়ে ৮৫ টাকা, পাউন্ড ১১০

বৈদেশিক মুদ্রাবাজার আবারও অস্থিতিশীল হয়ে উঠছে। পণ্য আমদানিতে প্রতি ডলারের জন্য চলতি মাসের প্রথম দিনে ব্যবসায়ীরা পরিশোধ করেছেন ৮০ টাকা। গতকাল আমদানি দায় মেটাতে প্রতি ডলারের দাম ৮৫ টাকা পর্যন্ত পরিশোধ করতে হয়েছে। ডলারের দাম বাড়ায় ব্রিটিশ পাউন্ডের দামও হঠাৎ বেড়ে হয়েছে ১১০ টাকা। ফলে ব্যবসায়ীরা পড়েছেন বিপাকে। আর বড় আমদানি দায় শোধ করতে হিমশিম খাচ্ছে ব্যাংকগুলো।

এ অবস্থায় বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের আমদানি দায় শোধ করতে ডলার বিক্রি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গত সোমবার রূপালী ব্যাংকের কাছে দেড় কোটি ডলার ও বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের কাছে ৬০ লাখ ডলার বিক্রি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। অন্য ব্যাংকগুলোও ডলার কিনতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে। তবে বাংলাদেশ ব্যাংক এখনো ডলার বিক্রির কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ গতকাল দিন শেষে হয়েছে ৩ হাজার ২৪০ কোটি ডলার।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরী গত রাতে প্রথম আলোকে বলেন, ‘চাহিদা বাড়ায় ডলারের দাম বেড়ে গেছে। আমরা বাজার পর্যালোচনা করছি। প্রয়োজন পড়লে বাংলাদেশ ব্যাংক এতে হস্তক্ষেপ করবে। ব্যাংকগুলোকে চাহিদা অনুযায়ী ডলার দেওয়া হবে, কাউকে কাউকে দেওয়া হয়েছে।’
বাংলাদেশ ব্যাংকের সূত্র বলছে, সাম্প্রতিক সময়ে আমদানি বেড়ে গেছে। বিশেষ করে পবিত্র রমজান সামনে রেখে পণ্য আমদানিতে ঋণপত্র খোলা বেড়ে গেছে। হজের টাকা জমা শুরু হয়েছে। অপরদিকে রপ্তানি আয়ও কিছুটা কমেছে। প্রবাসী আয়েও মন্দাবস্থা চলছে। যেসব ব্যবসায়ী ঋণপত্র খুলে বিলম্বে দেনা পরিশোধের সুযোগ নিয়েছিলেন, ডলারের দাম বাড়ায় তাঁদেরও খরচ বেড়ে গেছে।
তথ্যমতে, মার্চে আমদানি ব্যয় ২০ শতাংশ বেড়েছে। রমজানের কারণে ব্যবসায়ীরা ভোগ্যপণ্য আমদানি বাড়াচ্ছেন এ কারণে ব্যয় বেড়েছে। অপরদিকে নানা উদ্যোগের পরও প্রবাসী আয়ে গতি বাড়ছে না। চলতি অর্থবছরের মার্চ পর্যন্ত হিসাবে প্রবাসী আয় কমেছে ১৭ শতাংশ। িবপরীতে আট মাসে রপ্তানি আয় বেড়েছে মাত্র ৩ দশমিক ২২ শতাংশ।
ব্যাংকগুলোর তথ্যমতে, আমদানি দায় মেটাতে ব্যবসায়ীদের থেকে বিদেশি খাতের সিটি এনএ ও স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক গতকাল প্রতি ডলারের জন্য নিয়েছে ৮৪ টাকা ৮০ পয়সা। এইচএসবিসি নিয়েছে ৮৪ টাকা ৭৫ পয়সা। এ ছাড়া এবি ব্যাংক প্রতি ডলারের জন্য ৮৪ টাকা ২০ পয়সা, সাউথইস্ট ব্যাংক ৮৩ টাকা ৮৫ পয়সা নিচ্ছে। যদিও বাংলাদেশ ব্যাংকের আন্তব্যাংক গড় হিসেবে গতকাল প্রতি ডলারের বিক্রয়মূল্য ছিল ৭৯ টাকা ৯৫ পয়সা। একইভাবে ব্রিটিশ পাউন্ডের দামও বেড়েছে ব্যাংকগুলোতে। গতকাল সিটি এনএ প্রতি পাউন্ড বিক্রি করেছে ১১০ টাকা ৪১ পয়সা।
বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলার অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ নুরুল আমিন বলেন, ‘আমদানি বেড়েছে, রপ্তানি ও রেমিট্যান্স কমেছে। এতে হঠাৎ করেই ডলারে একটা চাপ তৈরি হয়েছে। আমরা বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছি। বাংলাদেশ ব্যাংকের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি।’

 

http://www.prothom-alo.com/economy/article/1157941/