২ জুলাই ২০২৩, রবিবার, ১১:১১

জুনে ৩৪ জনের মৃত্যু ডেঙ্গুতে

-আক্রান্ত প্রায় ৬ হাজার

গত জুনে সারা দেশে ৩৪ জন মারা গেছেন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে এবং আক্রান্ত হয়েছেন পাঁচ হাজার ৯৫৬ জন। আর চলতি বছরের শুরু থেকে গত ছয় মাসে সারা দেশে ডেঙ্গুতে মারা গেছেন ৪৭ জন। চলতি বছর জুন মাসেই দেশে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু ও আক্রান্ত হয়েছেন ডেঙ্গুতে।

চিকিৎসকরা বলছেন, এই মূল্যবান প্রাণগুলো রক্ষা করা যেত যদি সচেতনতা বৃদ্ধি করা যেত। মশারি টানিয়ে ঘুমানো, জ্বর হলে অবশ্যই ডেঙ্গু টেস্ট করিয়ে নেয়া এবং শুরুতেই চিকিৎসা করাতে পারলে মৃত্যু রোধ করা সম্ভব হতো। এটা একটা ভাইরাসজনিত রোগ, ভাইরাসের বিরুদ্ধে কোনো ওষুধ না থাকলেও ডেঙ্গু ভাইরাস শরীরে প্রবেশ করে শরীরে যখন যে লক্ষণ দেখা দেবে সে লক্ষণগুলোর চিকিৎসা করালেই রোগী সুস্থ হয়ে যায়। এভাবে মানুষের মৃত্যু রোধ করা সম্ভব। কিন্তু এ ব্যাপারে যথেষ্ট সচেতনতা নেই দেশবাসীর মধ্যে। ডেঙ্গু ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হলে মানুষের দেহের সাদা রক্তকণিকা প্লাটিলেট কমিয়ে দেয়।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ডিপিএম মো: জাহিদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, বর্তমানে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে এক হাজার ২৮৯ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এর মধ্যে কেবল ঢাকা শহরের ৫৩ হাসপাতালে ৯৪১ জন চিকিৎসাধীন আছেন।

জুন শেষে জুলাই মাসেও ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়তে পারে। যদিও জুলাই মাসের শুরুতেই দেশব্যাপী ভারী বর্ষণ হয়ে আসছে। দেশে ভারী থেকে ভারী বর্ষণ আরো দুই থেকে তিন দিন পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। তবে এ ধরনের ভারী বর্ষণ পুরো জুলাই জুড়ে থাকবে না। কারণ জুলাই মাসে দেশে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে আবহাওয়া দফতর থেকে। থেমে থেমে বৃষ্টিপাত হলেই বেড়ে যাবে এডিস মশার উৎপাদন। তবে ভারী বর্ষণে লার্ভা ও ডিম স্রোতের পানিতে ভেসে গেলে মশার উৎপাদন সাময়িক কমে যেতে পারে।

রক্ত জমাট বাঁধতে সহায়তাকারী কোষটির নাম হলো প্লাটিলেট, এটা একধরনের বর্ণহীন রক্তকণিকা। বাংলায় এই রক্তকণিকাকে রক্ত অনুচক্রিকা বলে। লোহিত ও শ্বেত রক্তকণিকার চেয়েও আকারে ছোট হয় অণুচক্রিকা। রক্তের জমাট বাঁধা ছাড়াও, রক্তক্ষরণ রোধেও এর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে। কেবল ডেঙ্গু ভাইরাসই নয়, অ্যানিমিয়া, লিউকোমিয়া ও কিছু ভাইরাল ফ্লুয়ের কারণেও এই প্লাটিলেট বা অণুচক্রিকার পরিমাণ কমতে পারে। ক্যান্সার, রক্তে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ বা অন্য কোনো ওষুধের প্রতিক্রিয়াতেও রক্ত অণুচক্রিকার পরিমাণ কমে যেতে পারে। পেঁপে বা পেঁপে পাতার রসে শরীরে দ্রুত প্লাটিলেট বৃদ্ধি পেয়ে থাকে।

এ ছাড়া, আমলকী, বিট, লেবু ইত্যাদি খাবার খেলেও প্লাটিলেট বাড়ে এবং দ্রুত শরীর থেকে ডেঙ্গুর লক্ষণ দূর হয়ে যায়। ভিটামিন সি প্লাটিলেটকে নিয়ন্ত্রণে রাখে। সে জন্য চিকিৎসকরা বলছেন, এ সময় পর্যাপ্ত ভিটামিন সি-জাতীয় খাবার খাওয়া উচিত। ভিটামিন সি রোগ প্রতিরোধও করে।

https://www.dailynayadiganta.com/last-page/759096