১০ জুন ২০২৩, শনিবার, ৭:১৩

এবার কয়লা সংকটে বন্ধ হলো দেশের সবচেয়ে বড় বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্র এস এস প্লান্ট

দেশজুড়ে চলছে তীব্র লোডশেডিং। এরমধ্যে গত ৫ই জুন পুরোপুরি উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায় পায়রা তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের। নতুন সুখবর দিয়েছিল দেশের সবচেয়ে বড় বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্র এস এস প্ল্যান্ট। বাঁশখালীতে অবস্থিত এস আলম গ্রুপ ও চীনের যৌথ মালিকানাধীন এই প্রজেক্ট থেকে জাতীয় গ্রিডে প্রতিদিন ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করার কথা ছিল।

বুধবার থেকে ৩২০ মেঘাওয়াট করে সরবরাহও করেছিল তারা। তবে কয়েক দিনের ব্যবধানেই কয়লা সংকটসহ নানা কারণে এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। পিডিবি চট্টগ্রাম বিতরণ অঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী মো. রেজাউল করিম গতকাল সকালে মানবজমিনকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, বাঁশখালীর এস এস পাওয়ারের উৎপাদন বৃহস্পতিবার রাত থেকে বন্ধ রয়েছে। আগামী ১৩-১৪ তারিখ এদের কাছে কয়লা পৌঁছাবে। তখন আবার উৎপাদনে যেতে পারবে। তিনি বলেন, আসল কথা হচ্ছে এস এস পাওয়ারের উৎপাদন প্রক্রিয়া পুরোপুরি শুরু হয়নি।

ক্রাইসিসের কারণে জরুরিভিত্তিতে আমাদেরকে বিদ্যুৎ দিতে বলেছিলাম। তারা কিছু দিয়েছেও। এরমধ্যে কয়লা শর্টেজের কারণে এদের উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে।

দেশব্যাপী তীব্র লোডশেডিংয়ের প্রেক্ষিতে পিডিবি’র অনুরোধে গত ২৪শে মে থেকে এস এস পাওয়ার প্ল্যান্টের দুইটি ইউনিটের মধ্যে একটি থেকে পরীক্ষামূলকভাবে দৈনিক ২০০ থেকে ২২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে দেয়া শুরু হয়। এরমধ্যে বুধবার বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির পক্ষ থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিল, আগামী এক-দুই সপ্তাহের মধ্যে জাতীয় গ্রিডে সর্বোচ্চ ক্ষমতার সমপরিমাণ বিদ্যুৎ সরবরাহ করবে কেন্দ্রটি।

এতে বর্তমান নাজুক বিদ্যুৎ পরিস্থিতির অনেকটাই উন্নতি হবে বলে আশা করা হয়েছে। তবে সংবাদ বিজ্ঞপ্তির দুইদিনের মাথায় উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে প্রতিষ্ঠানটির। এদিকে এস এস পাওয়ার বন্ধ হয়ে যাওয়ার বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির তত্ত্বাবধায়ক ফারুক আহমেদ মানবজমিনকে বলেন, ‘আমরা পরীক্ষামূলকভাবে কার্যক্রম চালাচ্ছিলাম। এরপরও পিডিবি’র অনুরোধে গত ৫ তারিখ থেকে জাতীয় গ্রিডে সর্বোচ্চ পরিমাণে বিদ্যুৎ সরবরাহ করছিলাম। তবে যে কয়লা ছিল তা শেষ হয়ে যাওয়ায় বৃহস্পতিবার রাতে উৎপাদন বন্ধ করে দিতে হয়েছে।

কবে নাগাদ আবার উৎপাদন চালু হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আগামী ১৬ই জুন এখানে ৬০ হাজার টন কয়লা নিয়ে জাহাজ আসবে। সব ঠিকঠাক থাকলে আগামী ২০শে জুন থেকে আমরা পূর্ণ উৎপাদনে যাবো। তবে টেকিনিক্যাল কিছু বিষয়ের কারণে হয়তো প্রথম কিছুদিন ৬০০ মেগাওয়াটের বেশি বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে দেয়া যাবে না। এরপরও তো এই বিদ্যুৎ দিয়ে জাতীয় প্রয়োজন কিছুটা পূর্ণ হবে।

প্রসঙ্গত, বাঁশখালীর গণ্ডামারায় এস এস পাওয়ার প্ল্যান্ট লিমিটেডের ৭০ শতাংশ মালিকানা দেশের অন্যতম শিল্পগোষ্ঠী এস আলম গ্রুপ। চীনের নির্মাণ প্রতিষ্ঠান সেপকো থ্রি’র যৌথ উদ্যোগে ২ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার বা ২৮ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। বিদ্যুৎ কেন্দ্রটিতে আছে দুইটি ইউনিট। এই দুইটি ইউনিটের মোট উৎপাদন ক্ষমতা ১৩২০ মেগাওয়াট। অপরদিকে চট্টগ্রামে বিদ্যুতের মোট চাহিদা ১৪০০-১৭০০ মেগাওয়াট।

https://mzamin.com/news.php?news=59682