৯ জুন ২০২৩, শুক্রবার, ৮:২৬

আমদানির পরও পেঁয়াজের দাম কমছে ধীরে

এক সপ্তাহে পাইকারিতে চিনির বস্তায় ৫০ টাকা বেড়েছে

আমদানি শুরু হলেও পেঁয়াজের দাম কমছে ধীরে। আমদানি বাড়লে দাম আরও কমে আসবে বলে মনে করছেন পেঁয়াজ ব্যবসায়ীরা। দীর্ঘদিন ধরে অস্থির থাকা চিনির দাম আরও চূড়ায় যাওয়ার আভাস মিলেছে। সরকার নির্ধারিত দর মানেননি চিনি ব্যবসায়ীরা। এখন দাম আরও বাড়াচ্ছেন তাঁরা। তবে মুরগি ও সবজির বাজারে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে।

এ বছর ভালো ফলনের পরও অস্বাভাবিক বেড়েছিল পেঁয়াজের দাম। বাজারে স্থিতিশীলতা আনতে সরকার পণ্যটির আমদানির অনুমতি দেয়। কৃষি মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, এখন পর্যন্ত ৫ লাখ ৪ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে দেশে ১৫ হাজার টন পেঁয়াজ দেশে ঢুকেছে।

গতকাল রাজধানীর কারওয়ান বাজার, হাতিরপুল বাজার, বাড্ডা ও সেগুনবাগিচা কাঁচাবাজারে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা। আর ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকায়। এক সপ্তাহ আগেও দেশি পেঁয়াজ ১০০ টাকার আশপাশে বিক্রি হয়েছিল।

কারওয়ান বাজারের পেঁয়াজ-রসুন ব্যবসায়ী মো. সুমন বলেন, ভারতের পেঁয়াজ আসার কারণে প্রতিদিন দাম কমছে। চার-পাঁচ দিনের ব্যবধানে কেজিতে ৩০ টাকার বেশি কমে গেছে। আমদানি বেশি হলে দাম হয়তো আগের অবস্থায় চলে আসবে।

বাজারে কোথাও প্যাকেটজাত চিনি মিলছে না। বড় বাজারগুলোতে খুচরা ব্যবসায়ীরা খোলা চিনি বিক্রি করছেন ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকা দরে। তবে পাড়া-মহল্লায় বেশিরভাগ মুদি দোকানে চিনির কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৪৫ টাকায়।

চিনি নিয়ে ক্রেতাদের মতো খুচরা ব্যবসায়ীরাও বিরক্ত। মুনাফা নয়, ক্রেতা ধরে রাখার জন্যই কেউ কেউ দোকানে চিনি রাখছেন বলে জানান। হাতিরপুল কাঁচাবাজারের ভাই ভাই স্টোরের স্বত্বাধিকারী মো. আমির বলেন, সরকার খুচরা পর্যায়ে খোলা চিনির কেজি ১২০ টাকা আর প্যাকেট চিনির দর ১২৫ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছে। তবে ডিলারদের কাছ থেকে এর চেয়ে বেশি দামে চিনি কিনতে হয়। এ কারণে দুই সপ্তাহ ধরে চিনি বিক্রি বন্ধ রেখেছি।

কারওয়ান বাজারের আব্দুর রব স্টোরের স্বত্বাধিকারী মো. নাঈম বলেন, এক সপ্তাহ ধরে পাইকারি বাজারে বস্তায় (৫০ কেজি) ৫০ টাকার মতো দাম বেড়েছে। ভোগ্যপণ্য বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠান মেঘনা গ্রুপের তেজগাঁও এলাকার একজন ডিলার নাম না প্রকাশ করার শর্তে বলেন, এক সপ্তাহ ধরে কোম্পানি চিনি সরবরাহ করছে না। আজ দেবে, কাল দেবে বলে ঘুরাচ্ছে। এ জন্য অন্য কোম্পানির চিনি এনে বিক্রি করছি।

চিনির মতো মসলার বাজারেও ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা রয়েছে। জিরার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০০ টাকার আশপাশে। মাস দেড়েক আগেও পণ্যটির কেজি ছিল ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা।

রোজা শুরু হওয়ার পর থেকেই ধাপে ধাপে বেড়ে ২০০ থেকে ২১০ টাকায় উঠেছিল ব্রয়লার মুরগির দাম। এ দামেই স্থির ছিল অনেক দিন। তবে গত সপ্তাহে কেজিতে ১০ টাকা কমেছিল ব্রয়লারের দাম। এ সপ্তাহে আরও ১০ টাকা কমে এখন কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ১৯০ টাকা। ব্রয়লারের সঙ্গে সোনালি জাতের মুরগির দামও কমেছে। এ ধরনের মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৭০ থেকে ২৯০ টাকা, যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছিল ২৯০ থেকে ৩০০ টাকা দরে।

তবে ডিমের দামে তেমন হেরফের নেই। ডজন ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে বোতলজাত সয়াবিন তেল সরকার নির্ধারিত ১৯৯ টাকা দরে বিক্রি হলেও খোলা সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে আরও কমে। খুচরা ব্যবসায়ীরা প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন বিক্রি করছেন ১৬০ থেকে ১৭০ টাকার মধ্যে। যদিও সরকার এ ধরনের তেলের দাম নির্ধারণ করেছিল ১৭৬ টাকা। পাইকারি বাজারে খোলা সয়াবিনের দাম কমার কারণে খুচরা বাজারেও কমেছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা।

এদিকে চড়া সবজির বাজার কিছুটা নেমেছে। বেশিরভাগ সবজির কেজি ৫০ থেকে ৬০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। যদিও কাঁকরোল, বরবটি, কচুরলতিসহ কয়েক সবজি এখনও ৭০ টাকার ওপরে রয়েছে। তবে ঢ্যাঁড়শ ও মুলাসহ কয়েকটি সবজি পাওয়া যাচ্ছে কমবেশি ৪০ টাকায়। তবে আলু কিনতে হচ্ছে ৩৬ থেকে ৪০ টাকায়।

https://samakal.com/economics/article/2306177201