২৫ মে ২০২৩, বৃহস্পতিবার, ১২:৫০

বর্ষা শুরুর আগেই বাড়ছে ডেঙ্গু

সতর্ক হতে বলছে স্বাস্থ্য অধিদফতর

মৌসুমের শুরুতেই আগের বছরের তুলনায় ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা প্রায় ৬ গুণ বেড়েছে। ফলে চলতি বছরের সামনের দিনগুলোতে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে যেতে পারে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। গতকাল বুধবার স্বাস্থ্য অধিদফতরের মুখপাত্র ও রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক ডা: মো: নাজমুল ইসলাম ডেঙ্গু পরিস্থিতি সম্পর্কিত অবহিতকরণ সভায় এই তথ্য জানান। নাজমুল ইসলাম গত বছরের সাথে চলতি বছরের ডেঙ্গু সংক্রমণ বিশ্লেষণ করে বলেন, ইতোমধ্যে আমরা দেখতে পাচ্ছি বর্ষা মওসুম শুরু হওয়ার আগেই ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বেশ কয়েক গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। সভায় স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা: এ বি এম খুরশীদ আলম উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, চলতি মে মাসের গত ২৪ দিনে (২৪ মে সকাল পর্যন্ত) ৫৮২ জন মানুষ ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়েছে। কিন্তু ২০২২ সালে মে মাসের প্রথম থেকে ২৬ তারিখ পর্যন্ত সারা দেশে ১০০ জন মানুষ ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছিল বলে স্বাস্থ্য অধিদফতরের কনট্রোল রুম রিপোর্ট করেছিল। অপর দিকে ২০২২ সালের জানুয়ারির প্রথম দিন থেকে ২৬ মে পর্যন্ত দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে কোনো মৃত্যু ছিল না বলে স্বাস্থ্য অধিদফতরের রিপোর্টে বলা হয়েছিল। কিন্তু চলতি বছর প্রথম জানুয়ারি থেকে গতকাল ২৪ মে পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ১৩ জন মারা গেছে। এ ছাড়া চলতি বছরের মধ্যে গত জানুয়ারির ৩১ দিনে সারা দেশে ৫৬৬ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছিল। চলতি বছর ১ জানুয়ারি থেকে গতকাল ২৪ জানুয়ারি সকাল পর্যন্ত সারা দেশে এক হাজার ৫৬৮ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে। গত বছরের জানুয়ারির প্রথম দিন থেকে ২৬ মে পর্যন্ত ২৮৯ জন মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে।

গত বছরের সাথে এ বছরের ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা বিশ্লেষণ করলে স্পষ্টতই অনুধাবন করা যায়, চলতি বছরের পরবর্তী দিনগুলোতে বিশেষ করে আগামী অক্টোবর পর্যন্ত বাংলাদেশে প্রচুর মানুষ ডেঙ্গু আক্রান্ত হতে পারে। এই পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল স্বাস্থ্য অধিদফতর বলেছে যে, চলতি বছর ডেঙ্গু বাড়তে পারে।

গতকাল বুধবার জুমলিঙ্কে প্রচারিত স্বাস্থ্য অধিদফতরের মুখপাত্র নাজমুল ইসলাম বলেন, যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো বর্ষা মৌসুম শুরু হয়নি। সেজন্য আমরা মনে করি আগাম সতর্কতা এবং প্রস্তুতির প্রয়োজন রয়েছে। আমরা ইতোমধ্যে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছি। তিনি দেশবাসীকে সচেতন করতে গণমাধ্যমের সহায়তা চেয়েছেন। তিনি বলেন, আপনাদের সহায়তা নিয়ে আমরা দেশবাসীকে অবহিত এবং সচেতন করতে চাই, যাতে নিজ নিজ জায়গা থেকে আমরা স্বাস্থ্যবিধি এবং সতর্কতার জায়গাগুলো মেনে চলি।

তিনি বলেন, আমাদের সাথে উত্তর-দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারাও রয়েছেন। আমরা যেহেতু সবাই একসাথে কাজ করি, সেহেতু বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, সমন্বিত মশক ব্যবস্থাপনা কাজগুলোকে আমরা বেগবান এবং জোরদার করতে পারি। তাহলেই ডেঙ্গু নিয়ে আমাদের মধ্যে যে ভয়ভীতি কাজ করে তা কমে যাবে। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে সভা শুরু হওয়ার আগে নাজমুল ইসলাম বলছিলেন, এই মৌসুমে ডেঙ্গুর রোগী ও মৃত্যু বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। কারণ ইতোমধ্যে বর্ষা শুরু হওয়ার আগেই অনেক রোগী বেড়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য থেকে দেখা গেছে, হাসপাতালে এ বছর জানুয়ারি মাসে ৫৬৬ জন, ফেব্রুয়ারিতে ১৬৬ জন, মার্চে ১১১ জন, এপ্রিলে ১৪৩ জন ডেঙ্গুরোগী ভর্তি হয়েছে। জানুয়ারি মাসে ছয়জন, ফেব্রুয়ারিতে তিনজন, এপ্রিলে দুইজন এবং মে মাসে এখন পর্যন্ত দুইজনের মৃত্যু হয়েছে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে।


https://www.dailynayadiganta.com/first-page/750499