১২ মে ২০২৩, শুক্রবার, ১১:৩৯

আইন-শৃঙ্খলায় বিঘ্ন ঘটাচ্ছে সরকার দলীয়রা

মামলার চক্করে বিরোধীরা

দেশে আইন-শৃঙ্খলায় বিঘ্ন সৃষ্টির নানা ঘটনা ঘটাচ্ছে সরকারি দলের লোকেরা। অথচ মামলা, থানা, আদালত আর জেলের ঘানি টেনে চলেছেন বিরোধী দলের নেতা-কর্মীরা। সরকারি দল আওয়ামী লীগের তৃণমূলে আধিপত্য বিস্তারের জেরে সৃষ্ট সংঘাতে খুনোখুনি পর্যন্ত ঘটছে। গত কয়েক মাসে এধরনের বহুসংখ্যক লোকের হতাহতের খবর পাওয়া যায়। বিপরীতে দৃশ্যমান কোনো ঘটনা ছাড়াই জেল-জুলুম ও হয়রানির শিকার হচ্ছে বিএনপি ও জামায়াতের নেতা-কর্মীরা।

বিভিন্ন সংস্থার দেয়া তথ্য ও গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে দেখা যায়, সরকারি দলের ভিতরে নেতৃত্ব, এলাকায় আধিপত্য বিস্তার এবং বিভিন্ন নির্বাচনে জয়-পরাজয়ের প্রতিশোধ গ্রহণ ও সামনের নির্বাচনে প্রার্থীতা নির্বিঘ্ন করতে গিয়ে ভয়াবহ বিরোধে জড়িয়েছে ক্ষমতাসীন দলের
বিবদমান পক্ষগুলো।

সরকারি দলের সংঘাত : সরকারি দলের মধ্যে কোন্দলে গত ছ’মাসে বহুসংখ্যক নেতা-কর্মী হতাহতের ঘটনা ঘটে। এর কিছু নমুনা দেয়া হলো। যেমন, চলতি বছর ২২ ফেব্রুয়ারি লক্ষ্মীপুরে আ’লীগের দুই পক্ষের সঙ্গে আধিপত্য বিস্তার, মাছঘাট বালু তোলা নিয়ে সংঘর্ষে রাসেল হোসেন (১৪) নিহত ও ১০ জন আহত হয়। ১৭ মার্চ পটুয়াখালির বাউফলে বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকী পালন উপলক্ষে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে দলীয় কার্যালয় জনতা ভবনের সামনে আ’লীগের ২ গ্রুপের সংঘর্ষে উপজেলা চেয়ারম্যান থানার ওসিসহ ৫০ জন আহত হন। ১০ এপ্রিল ফরিদপুরে দু’গ্রুপে সংঘর্ষে আহত হন ৭ জন। ২০টি বসত বাড়িতে ভাঙচুর করা হয়। ২৪ এপ্রিল রংপুরের কাউনিয়ার খানসামারহাটে আ’লীগের দুপক্ষের সংঘর্ষে সোনা মিয়া (৪৫) নামে একজন নিহত হন। আহত হন ৮ জন। ২৫ এপ্রিল ঝালকাঠি রাজাপুরে আ’লীগ নেতাসহ দু’জনকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এরা হলেন, শুক্তাগড় ইউনিয়ন আ’লীগের সহ-সভাপতি সাবেক প্যানেল চেয়ারম্যান আব্দুর রব হাওলাদার (৫৮) ও তার ভাতিজা বেলায়েত হোসেন (৫২)। ইউপি ভোটের দু’বছর পর সেই ভোট নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে গুলীতে হত্যার ঘটনা ঘটে লক্ষ্মীপুরে। সেখানে দুর্বৃত্তদের গুলীতে জেলা যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল নোমান ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রাকিব ইমাম নিহত হন ২৫ এপ্রিল।

হত্যাকাণ্ডের পেছনে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার বশিকপুর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচন নিয়ে দ্বন্দ্বের বিষয়টি সামনে আসে। ১৯ এপ্রিল সন্ধ্যায় চাঁপাইনবাবগঞ্জে যুবলীগের সাবেক নেতা খাইরুল আলম জেমকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়। ক্ষমতা ও আধিপত্য বিস্তারের দ্বন্দ্ব থেকে পরিকল্পিতভাবে এ হত্যাকাণ্ড হয় বলে অভিযোগ করা হয়। ৩০ এপ্রিল রাতে নিহত হন কুমিল্লার তিতাস উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক জামাল হোসেন। দুর্বৃত্তরা জামাল হোসেনকে খুব কাছ থেকে গুলী করে।

উপজেলা আ’লীগ ও অঙ্গসংগঠনের বিবদমান পক্ষগুলোর দ্বন্দ্বের জেরে ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে জামাল (৩৯) নিহত হন। ২ মে রাতে নিজেদের মধ্যে বিরোধে বরগুনা সদর উপজেলার আয়লা পাতাকাটা ইউনিয়ন আ’লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম নিহত হন। গত ইউপি নির্বাচনে শত্রুতার জেরে প্রতিপক্ষের লোকজন তাকে হত্যা করে বলে অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া গত ২৫ এপ্রিল থেকে ৪ মে পর্যন্ত ১০ দিনে দেশের বিভিন্ন জায়গায় আ’লীগের বিবদমান পক্ষগুলোর সংঘাতে আরো ৬ জন নিহত হওয়ার ঘটনার খবর বিভিন্ন গণমাধ্যমে আসে।

গত বছরেও (২০২২) এধরনের ভয়াবহ সংঘাত ঘটে সরকারি দলের মধ্যে। এর মধ্যে একটি ঘটনায় ২৪ মার্চ রাতে রাজধানীর শাহজাহানপুরে ইসলামিয়া হাসপাতালের সামনে আ’লীগ নেতাসহ দুজনকে গুলী করে হত্যা করা হয়। নিহতরা হলেন মতিঝিল থানা আ’লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম টিপু (৫৪) ও রিকশা আরোহী সামিয়া আফরিন প্রীতি (২৪)। ২ মে ইফতারের আগে কুষ্টিয়ার ঝাউদিয়া ইউনিয়নের আস্থা নগর গ্রামে ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান কেরামত আলী বিশ্বাস এবং ফজলু ম-ল গ্রুপের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দলের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ৪ জন নিহত হন। আহত হন অন্তত ১৫ জন। নিহতরা হলেন, কাশেম (৫০), লাল্টু (৩০), রহিম (৫০) ও মতিয়ার (৪০)।

আইন ও সালিশ কেন্দ্রের হিসাব অনুযায়ী ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ক্ষমতাসীন আ’লীগ ও তাদের সহযোগী সংগঠনগুলোর মধ্যে সংঘর্ষে ৮ জন মারা যায়। আহত হয় ৮৯৫ জন। এ সময় তারা ৭৩টি সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। অক্টোবর মাসেও প্রাণহানির ঘটনা বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়ায় কমপক্ষে ১৫ জন। আর আহতের সংখ্যা এক হাজার ছাড়িয়ে যায় বলে জানা গেছে। আসকের একটি প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, গত ৯ মাসে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে ৪৪ জনের প্রাণহানি ঘটে। এদের অধিকাংশই ক্ষমতাসীন আ’লীগের নেতাকর্মী। সারা দেশে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সংঘটিত এসব সংঘর্ষের নেপথ্যে কাজ করছে আ’লীগের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব। সরকারি দলের মধ্যে এসব সংঘাতের জেরে বিভিন্ন স্থানে আইন-শৃঙ্খলার অবনতি ঘটে। অনেক পরিবার হয় অভিভাবকহারা, সংঘাতের জের হয় দীর্ঘস্থায়ী। সরকারি দলের ঘটনা বলে আইনের প্রয়োগের গতিও থাকে শ্লথ। দুর্বল পক্ষ হয় ক্ষতিগ্রস্ত।

হয়রানির শিকার বিরোধীরা
সরকারি দলের এসব সংঘাতের বিপরীতে দৃশ্যমান কোনো ঘটনা ছাড়াই হয়রানির শিকার হয়ে চলেছেন বিরোধী দলের নেতা-কর্মীরা। ‘গোপন বৈঠক’, ‘নাশকতার পরিকল্পনা’, ‘সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরানোর ষড়যন্ত্র’ প্রভৃতি অভিযোগ এনে তাদের গ্রেফতার ও মামলায় আটকানো হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। কোনো মামলা থেকে জামিন পেলেও পুনরায় জেলগেট থেকে আটক করা নিয়মিত ঘটনায় পরিণত হয়েছে। আটক করে অনেককে রিমান্ডে নেয়া হচ্ছে। ‘পুরনো মামলায় গ্রেফতার’ ছাড়াও নতুন মামলা দেয়া হচ্ছে। এখানে এর কিছু নমুনা দেয়া হলো।

জামায়াতের নেতা-কর্মী
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা: শফিকুর রহমানকে গত বছর ১২ ডিসেম্বর গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে তাকে সাত দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়। কিন্তু রিমান্ডে কোনো তথ্য না পেলেও তাকে এ পর্যন্ত মুক্তি দেয়া হয়নি। এর আগে ২০২১ সালের ৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর একটি আবাসিক এলাকায় কথিত ‘গোপন বৈঠক’ থেকে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক এমপি মিয়া গোলাম পরওয়ারসহ ৯ নেতাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে আরো ছিলেন, দলের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, সাবেক এমপি হামিদুর রহমান আজাদ, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ আবদুর রব, অধ্যক্ষ ইজ্জত উল্লাহ, ছাত্রশিবিরের সাবেক দুই কেন্দ্রীয় সভাপতি মোবারক হোসাইন ও ইয়াসিন আরাফাত। পুলিশ জানায়, রাষ্ট্রদ্রোহের ষড়যন্ত্র এবং দেশকে অস্থিতিশীল করতে তারা গোপন বৈঠকে মিলিত হয়েছিলেন। এই খবর পেয়ে সেখানে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। মিয়া গোলাম পরওয়ার উচ্চ আদালত থেকে কয়েক দফায় জামিন পেলেও নিত্যনতুন মামলায় জেলগেট থেকে পুনরায় গ্রেফতার করে তাকে কারাবন্দী করে রাখা হয়।

চলতি বছর ৪ এপ্রিল দুপুরে সাহেব বাজার এলাকা থেকে রাজশাহী মহানগরী জামায়াতের আমীর কেন্দ্রীয় শূরা সদস্য ড. কেরামত আলীসহ চার নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোনো মামলার কথা জানা যায়নি। ৭ এপ্রিল বিকেলে রাজধানীর বসুন্ধরা এলাকায় একটি ইফতার মাহফিল চলার সময় জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর উত্তরের আমীর মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিনসহ ১৪ জনকে আটক করে পুলিশ। পরে একে ‘গোপন বৈঠক’ আখ্যা দিয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক সমীর চন্দ্র সূত্রধরের আবেদনের প্রেক্ষিতে সেলিমউ দ্দিনসহ ৮ জনকে রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। সেই থেকে তারা এখনো মুক্তি পাননি। ১৮ এপ্রিল ইফতারের আগে ফের নতুন মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয় চট্টগ্রামের জামায়াত নেতা সাবেক এমপি শাহজাহান চৌধুরীকে। দুই বছরের দীর্ঘ আইনি লড়াই শেষে সমস্ত মামলায় জামিন পাওয়ার পর কারামুক্তির পূর্ব মুহূর্তে তাকে আটক করা হয়। এবারসহ তিনবার কারা ফটকে গ্রেফতার দেখানো হয় তাঁকে। এর আগে গত ২৫ জানুয়ারি পুলিশের বিশেষ ক্ষমতা আইনে দায়ের করা নাশকতার মামলায় মেহেরপুর সদর উপজেলা জামায়াতের আমীর সোহেল রানা ও ইউনিয়ন জামায়াতের আমীর হামিদুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়। ৩১ জানুয়ারি নড়াইলে জামায়াতের ১১ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়। তাঁরা ‘নাশকতার মামলা’র আসামী বলে পুলিশ জানায়। ৩ ফেব্রুয়ারি বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে পুলিশ জামায়াতের ৯ জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করে। ১২ মার্চ রাজধানীর মিরপুরের কনভেনশন সেন্টার থেকে জামায়াতের ৫৮ জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়। ২০ মার্চ একটি বিবাহ অনুষ্ঠান থেকে রাজশাহী মহানগরীর সহকারী সেক্রেটারি অধ্যাপক আব্দুস সামাদসহ ৬ জন এবং এশার নামায শেষে বের হওয়ার পর দু‘জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়। ২৭ মার্চ রাত সোয়া ১০টার দিকে রাজধানীর শাহজাদপুরের একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে জামায়াতের গুলশান পূর্ব শাখার সভাপতি হোসাইন বিন মানসুরসহ জামায়াত ও শিবিরের আরো ১৫ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়। গত বছর ২৯ ডিসেম্বর নীলফামারীতে মসজিদে ‘গোপন বৈঠক’ করার অভিযোগে জামায়াতের ১৯ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে সদর উপজেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর আব্দুল আজিজ (৫৪), গোড়গ্রাম ইউনিয়ন সভাপতি হুমায়ুন কবির (৩২) ও সেক্রেটারি রশিদুল দেওয়ান রয়েছেন।
বিএনপি-জামায়াতের গ্রেফতার

চলতি বছর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করা হয় প্রধান দুই বিরোধী দল বিএনপি ও জামায়াতের নেতা-কর্মীকে। এর মধ্যে ৩ মার্চ সাতক্ষীরায় কথিত নাশকতার চেষ্টার অভিযোগে জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক শেখ তারিকুল হাসান ও জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির নুরুল হুদাসহ বিএনপি ও জামায়াতের আট নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সাতক্ষীরা শহরতলীর খানপুর পশ্চিমপাড়া জামে মসজিদের সামনে থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত অন্যরা হলেন, জেলা জামায়াতের পশ্চিম জোনের আমির মোশাররফ হোসেন সরদার (৬২), সদর থানা যুবদলের আহ্বায়ক নজরুল ইসলাম (৪২), শিবপুর ইউনিয়ন জামায়াতের আমীর আব্দুল হাকিম সরদার (৪০) ও ছাত্রশিবিরের সভাপতি আব্দুল হাকিম মোল্লা মিন্টু (৩০), জামায়াত নেতা জামশেদ আলম (৬০) ও ফজর আলী মোল্লা (৬৪)। ২৬ মার্চ ‘নাশকতা’ মামলায় বাগেরহাটের মোংলা পৌর বিএনপি ও জামায়াতের ৬ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়। এরা হলেন, পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান মানিক, বিএনপির কর্মী শফিকুল শেখ, জিয়ার শেখ ও উপজেলার জামায়াত নেতা ওমর ফারুক, লুৎফর আমিন এবং মুজাহিদ শেখ। ১ এপ্রিল জামালপুর শহরের কাচারিপাড়া থেকে জামায়াত ও বিএনপির ২১ নেতা-কর্মীকে আটক করে পুলিশ। তাদের বিরুদ্ধে ‘নাশকতার পরিকল্পনা’র অভিযোগ আনা হয়। পরে তাদের নামে উপ-পরিদর্শক (এসআই) দেবাশীষ সাহা মামলা দায়ের করেন। ১৮ এপ্রিল গভীর রাতে সাতক্ষীরার কলারোয়ায় বিএনপি ও জামায়াতের ১৩ নেতাকর্মীকে ‘নাশকতা’র মামলায় গ্রেফতার করা হয়। ১৯ এপ্রিল সাতক্ষীরার শ্যামনগর, কালীগঞ্জ ও কলারোয়ায় ‘নাশকতা’ মামলায় সাবেক ও বর্তমান পাঁচ ইউপি চেয়ারম্যানসহ বিএনপি এবং জামায়াতের ২২ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়। উপজেলার নিজ নিজ বাড়ি থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। তারা হলেন, উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি ও গাবুরা ইউপি চেয়ারম্যান মাসুদুল আলম, জামায়াত নেতা ও বুড়িগোয়ালিনী ইউপি চেয়ারম্যান হাজী নজরুল ইসলাম ও শ্যামনগর সদর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা লিয়াকত আলী বাবু। এদিকে কালীগঞ্জে বিএনপির আহ্বায়ক, সদস্য সচিবসহ তিনজন এবং জামায়াতের তিন কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, এসব গ্রেফতারের সঙ্গে ‘সংঘটিত’ কোনো ঘটনার সম্পর্ক ছিল না। বরং ‘পরিকল্পনা’ বা ‘উদ্দেশ্যসাধন’ করতে একত্রিত হওয়ার ‘সন্দেহ’ যুক্ত রয়েছে। এর মধ্য দিয়ে মূলত বিরোধীদলীয় নেতা-কর্মী-সমর্থকদেরকে অবিরাম দৌড়ের মধ্যে রাখা এবং থানা, আদালত ও কারাগারের চক্করে আটকে রাখাই এর লক্ষ্য বলে সংশ্লিষ্টরা অভিযোগ করেন।

https://dailysangram.info/post/524270