২৯ এপ্রিল ২০২৩, শনিবার, ৯:২৩

হঠাৎ বেড়েছে রোমহর্ষক হত্যাকাণ্ড

হঠাৎ দেশে হত্যাকাণ্ড বেড়েছে। সেইসঙ্গে বেড়েছে জোড়া খুনের ঘটনা। এছাড়াও শহর এলাকায় বৃদ্ধি পেয়েছে চুরি-ছিনতাইসহ এ জাতীয় কর্মকাণ্ড। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তৎপর থাকলেও, ঘটছে একের পর এক ঘটনা। বিশেষ করে ঈদুল ফিতরের ছুটিতে দেশের ১৬ জেলায় ৩০টি হত্যাকান্ড ঘটেছে। এর মধ্যে পাঁচ জেলায় ঘটেছে রোমহর্ষক জোড়া খুনের ঘটনা। এ সময়ে কক্সবাজারে একটি ট্রলার থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ১০ জেলের হাত-পা বাঁধা পচা লাশ। এসব হত্যাকান্ডের ঘটনায় পুলিশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে।

জানা গেছে, ঈদ উপলক্ষে আগে থেকেই আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ এবং অপরাধ দমনে জোরালো কার্যক্রম গ্রহণের জন্য পুলিশের উচ্চ পর্যায় থেকে মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেয়া হয়েছিল। ছিনতাই, অজ্ঞান পার্টি, মলম পার্টিসহ অন্যান্য অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলা হয়। এ ধরনের অপরাধ দমনে জোরদার নজর দারিতে অনেকটা সফল হয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সূত্র জানায়, এবার ঈদে বিভিন্ন ধরণের অপরাধ দমনে সফল হয়েছে পুলিশ ও র‌্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। তবে এর মাঝেও কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে। হত্যাকান্ডগুলোর অধিকাংশই ব্যক্তিগত বিরোধ থেকে ঘটেছে। এসব ঘটনায় জড়িত সন্দেহে বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

পুলিশ সদর দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২০১০ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত এই ১২ বছরে সারাদেশে খুনের ঘটনা ঘটেছে ৪৫ হাজার ১৪৬টি। পরিসংখ্যান বলছে, ২০২১ সালে দেশে হত্যাকা-ের ঘটনা ঘটেছে ৩ হাজার ৪৫৮টি। এর আগের বছর ২০২০ সালে মানুষ খুন হয়েছে ৩ হাজার ৫৩৯ জন। ২০১৯ সালে এই সংখ্যা ছিল ৩ হাজার ৬৫৩। তথ্য মতে, ২০১৮ সালে সারাদেশে খুন হয়েছে ২ হাজার ৬১৭ জন আর ২০১৭ সালে বিভিন্ন ঘটনায় খুন হয়েছে ৩ হাজার ৫৪৯ জন। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) তথ্য বলছে, ২০২১ সালে হত্যাকা-ের ঘটনা ঘটে ১৫২টি, পরের বছর (২০২২ সাল) তা বেড়ে হয় ১৭৩টি। এছাড়া বিভিন্ন মামলায় ২০২১ সালে গ্রেফতার করা হয় প্রায় ৫০ হাজার ব্যক্তিকে, ২০২২ সালে সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৬১ হাজার ৪৯৪। ২০২২ সালে মামলা দায়ের হয়েছে ২৮ হাজার ৭৪৯টি। ২০২১-এর চেয়ে ২০২২ সালে মামলার সংখ্যা বেড়েছে ১৫ শতাংশ। চুরির মামলা বেড়েছে ২৮ শতাংশ। এছাড়া ২০২২ সালে মাদক মামলার সংখ্যা ছিল ১৬ হাজার ৩৫টি, যা মোট মামলার ৫৬ শতাংশ।

অপরাধ বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, দেশে ঘটে যাওয়া হত্যাকা-ের পেছনে অন্যতম কারণ আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধ, পরকীয়া, জমিসংক্রান্ত বিরোধ ও মাদকের অর্থ জোগাড়। তারা আরও বলেছেন, ইন্টারনেটের অপব্যবহার. অসহিষ্ণুতা, অতিমাত্রার ক্ষোভ, রাজনৈতিক অস্থিরতা, অর্থনৈতিক বৈষম্য, নৈতিকতা ও মূল্যবোধের অবক্ষয়ের কারণেও মানুষের মাঝে দিন দিন নিষ্ঠুরতার মাত্রা ছাড়িয়ে যাচ্ছে।

লক্ষ্মীপুরে যুবলীগ-ছাত্রলীগের দুই নেতা খুন: লক্ষ্মীপুরে সন্ত্রাসীদের গুলীতে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের দুই নেতা খুন হয়েছেন। তারা হলেন- জেলা যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল নোমান (৩৫) ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রাকিব ইমাম। ২৬ এপ্রিল রাত পৌনে ১০টার দিকে সদর উপজেলার বশিকপুর ইউনিয়নের নাগেরহাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। গুলীবিদ্ধ অবস্থায় যুবলীগ নেতা নোমান ও ছাত্রলীগ নেতা রাকিবকে জেলা সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। হাসপাতালে নেওয়ার পর নোমানকে মৃত ঘোষণা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। আর গুরুতর আহত অবস্থায় ছাত্রলীগ নেতা রাকিবকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়। রাত সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকায় নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। নিহত নোমান সদর উপজেলার বশিকপুর ইউনিয়নের বশিকপুর গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে। তিনি প্রস্তাবিত জেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক। রাকিব বশিকপুর নন্দীগ্রামের রফিক উল্যার ছেলে।

চুয়াডাঙ্গায় দুই তরুণ খুন: জেলার সদর উপজেলার ভালাইপুর বাজারে ২৬ এপ্রিল রাতে সজল আহমেদ ও মামুন অর রশিদ নামের দুই তরুণ খুন হয়েছেন। স্থানীয় মার্কেটে বন্ধুর মায়ের অপমানের প্রতিশোধ নিতে গিয়ে এ ঘটনাকে কেন্দ্র করেই হত্যাকান্ড ঘটে। জোড়া খুনের পর কারণ হিসেবে সর্বত্রই আলোচিত হচ্ছে ভালাইপুর বাজারের আশরাফুল বস্ত্রালয় অ্যান্ড গার্মেন্টসে গৃহবধূ ছামেনা খাতুনের ছিটকাপড় কিনতে যাওয়া ও দরদাম করায় অপমান করে বের করে দেওয়ার বিষয়টি। ছামেনা জানান, মঙ্গলবার বিকেলে দোকানটিতে তিনি ছিটকাপড় কিনতে যান। একটি ছিটকাপড় পছন্দ হলে দোকানের কর্মচারী রিয়ন প্রতি গজ ৮৫ টাকা করে দাম চান। ছামেনা ৮০ টাকা করে দিতে চাইলে ওই কর্মচারী মারমুখী আচরণ করেন এবং তাকে (ছামেনা) অপমান করে দোকান থেকে বের করে দেন। সে সময় দোকানমালিক আশরাফুল দোকানে ছিলেন না। এরপর ছামেনা খাতুন বাড়িতে যান এবং ছেলে টিপু সুলতানকে বিষয়টি জানান। এ ঘটনা শুনে টিপু সুলতান সন্ধ্যায় ওই দোকানে যান এবং দোকানের মালিকের উপস্থিতিতে কর্মচারী রিয়ন ওই ঘটনায় মাফ চাইলে তা মীমাংসা হয়ে যায়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই জনকে হত্যার ঘটনা ঘটে।
ঝালকাঠিতে চাচা-ভাতিজা খুন: ঝালকাঠির রাজাপুরে সাবেক ইউপি সদস্য আ. রব হাওলাদারসহ দুজনকে কুপিয়ে হত্যা করেছে তাদের প্রতিপক্ষ। ২৪ এপ্রিল রাতে উপজেলার শুক্তাগড় ইউনিয়নের জগইরহাটা এলাকায় ঘটে এ ঘটনা। স্থানীয় সূত্র জানায়, জগইরহাট এলাকার খাদেম হোসেনের সঙ্গে দীর্ঘ দিনের বিরোধ চলছিল সাবেক ইউপি সদস্য আ. রব হাওলাদারের। তাদের মধ্যে হামলা, জখম ও পাল্টা হামলার ঘটনায় আদালতে একাধিক মামলা চলমান। রাত সাড়ে ৮টার দিকে খাদেম হোসেন ও রব হাওলাদারের মধ্যে ঝগড়া বাধে। এ ঘটনার পর আ. রব হাওলাদার এবং সঙ্গে থাকা তার ভাইয়ের ছেলে বেলায়েত হোসেনকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে নিস্তেজ করে ফেলে রাখা হয়। ঘটনাস্থলেই তারা দুজন মারা যান।

ময়মনসিংহে জোড়া খুন: ময়মনসিংহ নগরীতে ঈদের দিন জোড়া খুনের ঘটনা ঘটেছে। জানা যায়, ঈদের দিন ভোরের দিকে ছিনতাইকারী দলের তিন সদস্য জুবিলিঘাট বিপিন পার্কের সামনে ডিএনচক্রবর্তী রোডে হাবিবুর রহমানকে ও গোহাইলকান্দি পশ্চিমপাড়া এলাকায় সাদেক মিয়াকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে। হাবিবুরকে গলায় ও সাদেককে বুকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করে তাদের সঙ্গে থাকা টাকা ছিনিয়ে নেয় তিন সদস্যের তরুণ দল। এ হত্যাকান্ডে তিন তরুণ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে রোববার তাদের আদালতে তোলা হয়েছিল। ইজিবাইক ও রিকশাচালকের টাকা ছিনতাই করতেই তরুণদের দলটি দুটি হত্যার ঘটনা ঘটায় বলে জানিয়েছে পুলিশ। নিহতরা হলেন-সদর উপজেলার দাপুনিয়ার শশ্যমালা গ্রামের চাঁন মিয়ার ছেল সাদেক মিয়া (৩৫) ও একই উপজেলার চর ঘাগড়া এলাকার আক্কাস আলীর ছেলে হাবিবুর রহমান (৫২)। সাদেক ও আক্কাস ইজিবাইক ও অটোরিকশা চালাতেন।

চট্টগ্রামে মা ও ছেলে খুন: চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলায় জমির সীমানাপ্রাচীর নির্মাণ নিয়ে বিরোধের জেরে মা ও ছেলেকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করেছেন প্রতিপক্ষের লোকজন। মঙ্গলবার (২৫ এপিল) সন্ধ্যা ছয়টার দিকে উপজেলার শিকলবাহা ইউনিয়নের মাস্টারহাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত মা-ছেলে হলেন, শিকলবাহা ইউনিয়নের মাস্টারহাট এলাকার তৈয়ব আহমদের স্ত্রী হোসনে আরা বেগম (৪৫) ও তার ছেলে মো. পারভেজ (৩১)। এ ঘটনায় হোসনে আরা বেগমের দুই ছেলে মো. আরজু (২২) এবং মো. সিফাত (১৫) আহত হয়েছেন।

পুলিশ সদস্য খুন: কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার বাসরা গ্রামে ২৩ এপ্রিল বেলা পৌনে একটার দিকে রাহেজুল আমিন (৩৩) নামের এক পুলিশ সদস্য প্রতিপক্ষের দায়ের কোপে খুন হয়েছেন। এ ছাড়া তার পরিবারের তিন সদস্যসহ আট ব্যক্তি আহত হয়েছেন। রাহেজুল আমিন নোয়াখালী জেলা পুলিশ লাইনে কর্মরত ছিলেন। আহত ব্যক্তিরা হলেন- রাহেজুলের মা রীনা আক্তার, রাহেজুলের বড় ভাই আশরাফ আহমেদ, ছোট বোন রোকেয়া আক্তার, গ্রামের বাসিন্দা মো. হাসান, সাইদুল ইসলাম, আবদুল বাতেন, সাইফুল ইসলাম এ আবুল হাশেম।

এদিকে গত মঙ্গলবার (২৫ এপ্রিল) লক্ষ্মীপুর সড়ক ও জনপদ বিভাগের কোয়াটার থেকে মমতাজ বেগম নামে এক নারীর খ-িত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত মমতাজ বেগম সড়ক ও জনপদ বিভাগে দৈনিক মজুরি ভিত্তিতে অফিস সহায়কের কাজ করতেন। তিনি সদর উপজেলা কুশাখালী ইউনিয়নের গোরারবাগ এলাকার মৃত আব্দুল মতিনের স্ত্রী। নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় প্রতিপক্ষের রডের আঘাতে মো. হোসেন (৬৬) নামের এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। ২২ এপ্রিল রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের আবদুল খালেক মিয়ার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ১৯ এপ্রিল চাঁপাইনবাবগঞ্জে সাবেক যুবলীগ নেতা খাইরুল আলম ওরফে জেমকে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে শহরের উদয়ন মোড়ে তাকে কয়েকজন দুর্বৃত্ত শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছুরিকাঘাত করে। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ ২৫০ শয্যার জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে তিনি মারা যান।

এছাড়াও ঈদের ছুটিতে বগুড়া প্রধান ডাকঘরে খুন করে ডাকাতি, অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপককে সদর থানার সামনে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা ও নন্দীগ্রামে পিটিয়ে একজনকে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ জানায়, ঈদের পরদিন রোববার রাতে বগুড়া প্রধান ডাকঘরের নৈশপ্রহরীকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যার পর ডাকাতির ঘটনা ঘটে। নিহত প্রশান্ত আচার্য্যের (৫০) লাশ (অফিস সহায়ক) সোমবার সকাল ৯টার দিকে উদ্ধার করে পুলিশ। বগুড়ায় জোড়া খুন ছাড়াও আরও দুই জন খুন হয়েছে। জেলার নন্দীগ্রাম উপজেলার ভাটরা ইউনিয়নের মনিনাগ গ্রামে প্রতিপক্ষের মারপিটে রবিউল ইসলাম (২১) ও জেলা সদরে অবসরপ্রাপ্ত কলেজ শিক্ষক রেজাউল করিম পান্না সন্ত্রাসীদের ছুরিকাঘাতে নিহত হন। অন্যদিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে সরকারি খাস জমির দখল নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ৫০ জন। এদিকে নরসিংদীর রায়পুরায় প্রতিপক্ষের ছোড়া গুলিতে একজন নিহত হয়েছে। কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরে দুই পক্ষের সংঘর্ষে এক মুসল্লি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক। কিশোরগঞ্জের ইটনার গোয়ারা এলাকায় পূর্ব বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষের বল্লমের আঘাতে এক যুবক নিহত হয়েছেন। হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলায় সাবেক ও বর্তমান দুই ইউপি সদস্যের (মেম্বার) বিরোধের জেরে গত বুধবার একজন নিহত এবং অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। এরআগে গত ২০ এপ্রিল রাজধানীর রূপনগরে নিজের বাসায় এক ব্যক্তি খুন হয়েছেন। জালাল উদ্দিন ওরফে জালালী (৫০) নামের ওই ব্যক্তিকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।

https://dailysangram.com/post/523217