২০ এপ্রিল ২০২৩, বৃহস্পতিবার, ২:৪১

রাজশাহীতে দাবদাহ অব্যাহত পুড়ছে ফসল ঝরে পড়ছে ফল

রাজশাহীতে দাবদাহ অব্যাহত রয়েছে। এতে জনজীবন বিপন্ন হয়ে পড়ার উপক্রম হয়েছে। তীব্র তাপপ্রবাহের ফলে পুড়ছে ক্ষেতের ফসল আর ঝরে পড়ছে গাছের ফল। গতকাল এখানে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ২৩ শতাংশ। বৃষ্টির জন্য আল্লাহর করুণা চেয়ে ইসতিসকার নামায আদায় করা হয় এখানে।

টানা দুই সপ্তাহের চলমান তাপপ্রবাহে যেনো জ্বলেপুড়ে যাচ্ছে রাজশাহী। তার ওপর নেই বৃষ্টির দেখা। ফলে পানির স্তর নেমে যাওয়ায় সংকট পৌঁছেছে আরো চরমে। গত সোম ও মঙ্গলবার নয় বছরের মধ্যে জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস অতিক্রম করে। গত সোমবার ছিল ৪২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর মঙ্গলবার সেটি সামান্য কমে আসে। এ দিন ছিল ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তা কামাল উদ্দিন জানান, বুধবার রাজশাহীতে বিকেল ৩টায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪২ দশমিক ৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস। এর আগে দুপুর ২টায় ৪২ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং দুপুর ১টায় ছিল ৪২ ডিগ্রি। আর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ২৭ দশমিক ৪ ডিগ্রি। কামাল উদ্দিন বলেন, আরো দুই থেকে তিন দিন এ অঞ্চলে চলবে এমন তাপপ্রবাহ। চলতি মাসের আগামী ২২ তারিখের আগে বৃষ্টির কোনো সম্ভাবনা নেই।

ফসল নষ্টের আশঙ্কা : এদিকে ১৫ দিনের প্রচণ্ড তাপপ্রবাহে চরম বিপদে পড়েছেন বরেন্দ্র অঞ্চলের কৃষকরা। তাপপ্রবাহ ছাড়াও বৃষ্টিপাত না হওয়ায় নিচে নেমে গেছে ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর। ফলে জমিতে সেচ দিতে পারছেন না তারা। এতে বিঘার পর বিঘা ধান গাছ নষ্টের শঙ্কায় মাথায় হাত চাষিদের। তাপমাত্রার হঠাৎ ওঠানামায় নানা রোগ-বালাইয়ের সংক্রমণের শঙ্কা ছড়িয়েছে। কৃষকরা বলছেন, এখন স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় দেড় থেকে দুগুণ পর্যন্ত বেশি সেচ প্রয়োজন। কিন্তু বরেন্দ্র উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের গভীর নলকূপ দিনের বেলায় থাকছে বন্ধ। কারণ পানির স্তর নেমে যাওয়ায় পর্যাপ্ত পানি উত্তোলন সম্ভব হচ্ছে না। আবার রাতে দিনে ৬ ঘণ্টার লোডশেডিংও সেচে বিঘœ ঘটাচ্ছে। অপরদিকেগত ১০ দিন ধরে চেষ্টা করেও বোরো ধানে সেচের পানি দিতে পারেননি অনেকেই। রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অতিরিক্ত পরিচালক আব্দুল লতিফ বলেন, ‘আমরা শক্তভাবে মনিটরিং করছি। আমরা সবাই মাঠে আছি। কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছি। যাতে এই সময় ধানের গোড়ায় দুই ইঞ্চি পানি ধরে রাখতে পারে। এছাড়াও আম ও লিচু চাষিদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে গোড়ায় পানি দেয়াসহ গাছে পানি স্প্রে করার।’

ইস্তিসকার নামায আদায়: বৃষ্টি কামনা করে সালাতুল ইস্তিসকার নামায আদায় করেন রাজশাহীর মুসুল্লিরা। বুধবার নগরীর তেরোখাদিয়া এলাকায় বিভাগীয় স্টেডিয়াম মাঠে এই নামায আদায় করা হয়। এতে কয়েকশো মুসল্লি অংশগ্রহণ করে দুর্যোগ মোকাবেলার জন্য আল্লাহর কাছে মুনাজাত করেন। বাংলাদেশ জাতীয় ইমাম সমিতির রাজশাহী জেলা শাখা এর আয়োজন করে। সংগঠনের জেলা শাখার সাধারাণ সম্পাদক আফজাল হোসেন হামিদী এতে ইমামতি করেন। সেখানে দুই রাকায়াত নামায শেষে রাজশাহীসহ সারাদেশেই বৃষ্টির জন্য বিশেষ দোয়া করা হয়। এছাড়া মোনাজাত থেকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষা করে দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনা করা হয়।

https://dailysangram.com/post/522628