১৪ এপ্রিল ২০২৩, শুক্রবার, ১২:২২

তীব্র তাপপ্রবাহ

চুয়াডাঙ্গায় ৪১ ডিগ্রি তাপমাত্রার রেকর্ড

তীব্র গরম ও পানি পিপাসায় বিপর্যস্ত সারা দেশের মানুষ। গরম আরো বেড়ে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কোঠা পার হয়ে তীব্র হয়েছে তাপপ্রবাহ। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে তীব্র তাপপ্রবাহে দিনের বেলায় এখন বাইরে চলাচলও কমে গেছে। প্রতিদিনই বিভিন্ন জেলায় উচ্চ তাপমাত্রার নতুন রেকর্ড হচ্ছে। আজ শুক্রবার পয়লা বৈশাখও সারা দেশেই তাপমাত্রা বাড়বে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। বাতাসে আর্দ্রতা নেই বললেই চলে। কয়েক স্থানে উচ্চ তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস অতিক্রম করেছে। আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুসারে, কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া সামনে আরো ৪ থেকে ৫ দিন বৃষ্টির ছোঁয়া মিলবে না। এপ্রিলের ৫ তারিখের পর থেকে একটানা আট দিন ধরে সারা দেশের কোথাও কোনো বৃষ্টি নেই। শুধু বাংলাদেশ কেন, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর আকাশে কোথাও মেঘ নেই। দক্ষিণা বাতাস বন্ধ হয়ে গেছে বলে সাগর থেকে জলীয় বাষ্পপূর্ণ বাতাসও বন্ধ। ফলে কমে গেছে বাতাসের আর্দ্রতা। গতকাল সন্ধ্যা ৬টায় ঢাকায় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ২২ শতাংশ।

চুয়াডাঙ্গা, ফরিদপুর, মানিকগঞ্জ, রাজশাহী, পাবনা, বাগেরহাট, যশোর ও কুষ্টিয়ায় বিরাজ করছে তীব্র তাপপ্রবাহ। এসব অঞ্চলের তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে। এ ছাড়া বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগসহ ঢাকা, টাঙ্গাইল, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, নরসিংদী, নারায়ণগঞ্জ, বগুড়া, নওগাঁ, সিরাজগঞ্জ, ময়মনসিংহ, মৌলভীবাজার, খুলনা ও সাতক্ষীরা জেলার ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে।

গত ৯ দিন থেকে চুয়াডাঙ্গা দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রার এলাকা হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আসছে। চুয়াডাঙ্গার সাথে এর আশপাশের সবগুলো অঞ্চলে তীব্র তাপপ্রবাহ বইছে। চুয়াডাঙ্গায় গতকাল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠে ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। চলতি গরমের মৌসুমে এটিই বাংলাদেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। ২০২২ সালের ১৫ এপ্রিল রাজশাহীতে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪১.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়। এর আগে ১৯৭২ সালে রাজশাহীতে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠেছিল ৪৫.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
ঢাকা শহরে গতকাল সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৯.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকায় এটি চলতি বছরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। অবশ্য ২০১৪ সালের ২৪ এপ্রিল ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠেছিল ৪০.৭ ডিগ্রি। সে দিন যশোরে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪২.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, ১৯৬০ সালের ৩০ এপ্রিল ঢাকায় সর্বোচ্চ ৪২.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা উঠেছিল।

তবে তখনকার উচ্চ তাপমাত্রার সাথে গতকালকের তাপমাত্রার একটি মৌলিক পার্থক্য আছে। তা হলো আগে গরমের দিনগুলোতে বাতাসে ছিল প্রচুর আর্দ্রতা, ফলে গরমের সাথে ঘামে ভিজে যেত ঢাকাবাসী। কিন্তু এবারের মৌসুমে বাতাসে আর্দ্রতা খুবই কম। ফলে প্রচণ্ড গরম থাকলেও মানুষ ঘামছে কম।

সারা দেশে কেন এত প্রচণ্ড গরম পড়েছে, বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যাটা কী? এর উত্তরে কানাডার সাসকাচুয়ান ইউনিভার্সিটির আবহাওয়া গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ নয়া দিগন্তকে জানিয়েছেন, ‘বাংলাদেশ ও ভারতের ঊর্ধ্বাকাশে বর্তমানে বায়ুর নিম্নচাপ অবস্থা বিরাজ করছে। ফলে ঊর্ধ্বাকাশের শুষ্ক ও ভারী বায়ুকণা নিচে নেমে যাচ্ছে এবং ভূপৃষ্ঠের কাছাকাছি জমা হচ্ছে। অন্য দিকে ভূপৃষ্ঠের কাছাকাছি অঞ্চলে সর্বোচ্চ সংখ্যক বায়ুকণা থাকে। এ কারণে ভূপৃষ্ঠের কাছাকাছি স্থানে বায়ুচাপ বেশি হচ্ছে। ঊর্ধ্বাকাশ থেকে যখন প্রতিনিয়ত নতুন করে বায়ুকণা নিচে নেমে আসতে থাকে, তখন ভূপৃষ্ঠে স্বাভাবিক সময় অপেক্ষা অনেক বেশি বায়ুকণা একটার সাথে আরেকটা লাগালাগি হয়ে অবস্থান করতে বাধ্য হয় এবং এসব কণার একটার সাথে আরেকটার বেশি সংঘর্ষ ঘটে থাকে। বায়ু কণাগুলোর ঘর্ষণের ফলে যে তাপের উৎপন্ন হয় (যেমন দুই হাতের তালু ঘর্ষণ করলে হাত গরম হয়) ভূপৃষ্ঠে জমা হয়ে তাপমাত্রা বাড়িয়ে দিচ্ছে।’

দুর্ভাগ্যক্রমে প্রকৃতির এ ঘটনাটি ঘটছে গত এক সপ্তাহ ধরে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর উপরে। বিশেষ করে মধ্য ও পূর্ব ভারত ও বাংলাদেশের উপরে। ফলে প্রতিদিন বাংলাদেশ ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গের ওপর সর্বোচ্চ তাপমাত্রার দৈনন্দিন রেকর্ড হচ্ছে এবং এ অবস্থার আরো অবনতি হবে আগামী ২২ এপ্রিল পর্যন্ত।

গরমের ব্যাপারে আবহাওয়া বিজ্ঞানীরা বলছেন, বাংলাদেশ ছিল নদীবিধৌত দেশ। সারা বছর এখানকার নদীতে পানি প্রবাহিত হতো। কিন্তু স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের ৫৪টি নদীর উজানে বাঁধ দেয়ায় বাংলাদেশের নদীতে এখন আর পানি আসে না। ফলে নদীর পানি শুকিয়ে নদী মরে যাওয়ার অবস্থা হয়েছে। শুষ্ক মৌসুমে এখন আর পানি থাকে না নদীতে। এর পরিবর্তে বিরাজ করছে ধু-ধু বালু আর বালু। বালুতে তাপমাত্রা খুব দ্রুত উপরে উঠে যায় এবং চার দিকে গরম ছড়িয়ে পড়ে।

এ দিকে তাপদাহের এই সময়ে খুব বেশি প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বের না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) মেডিসিন বিভাগের সাবেক ডিন ও প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এ বি এম আবদুল্লাহ। সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, প্রচণ্ড গরমে প্রেসার কমে যাওয়া, দুর্বলতাসহ কিছু জটিলতা দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে ডায়াবেটিস, কিডনি, হৃদরোগে আক্রান্তরা গরমের সময় বেশি ঝুঁকিতে থাকেন। যারা বাইরে কাজ করেন তারা যেন ছায়ার মধ্যে থাকেন। অন্তত মাথায় যেন কাপড় থাকে, ঘণ্টা দুই পরপর ১০ মিনিটের জন্য একটু ছায়ায় গিয়ে বিশ্রাম যেন নেয়। ঘামের সাথে শরীর থেকে প্রচুর লবণ বের হয়ে যায় এ জন্য রোজা রাখলেও রাতে একটু লবণমিশ্রিত পানি কিছুক্ষণ পরপর খাবেন। তিনি বলেন, ‘প্রচুর শরবত খেতে হবে, তবে রাস্তাঘাটের শরবত এড়িয়ে চলতে হবে। যে বানায় সে পরিষ্কার, পরিচ্ছন্নতা মেনে চলছে কি না সেটা নিশ্চিত নয়, এ কারণে এসব খাবার উপকারের চেয়ে অপকার বেশি করবে।’

চুয়াডাঙ্গায় ৪১ ডিগ্রি তাপমাত্রার রেকর্ড
চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি জানায়, টানা ১২ দিনের তাপপ্রবাহের মধ্যে গতকাল বৃহস্পতিবার দেশের ও এই মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস চুয়াডাঙ্গায় রেকর্ড করা হয়েছে। এ ছাড়া মাঝারি তাপপ্রবাহ থেকে গতকাল এটা তীব্র তাপপ্রবাহে রূপ নিয়েছে। এই টানা তাপদাহে জনজীবন দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে। বেলা বাড়ার সাথে সাথে তীব্র গরমে আর আগুনঝরা আবহাওয়ায় সড়কে মানুষের সাথে সাথে যানবাহন চলাচল যেমন কমেছে, ঠিক তেমনি রোজাদারদের অবস্থাও নাজুক। আর এই প্রখর রোদে ঘাম ঝরানো তাপমাত্রার কারণে শ্রমজীবী ও নি¤œআয়ের মানুষ চরম বিপাকে। তীব্র গরমে বয়স্ক, শিশুরা পড়েছে সব থেকে বেশি ভোগান্তিতে। অসুস্থও হচ্ছেন অনেকে। জরুরি কাজ না থাকলে মানুষজন তেমন বাইরে বের হচ্ছেন না। জেলা সদরের হাসপাতালসহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতেও বেড়েছে বিভিন্ন বয়সী রোগীর সংখ্যা।

গতকাল দিনমজুর রবিউল মিয়া বলেন, এতো তাপদাহ সহ্য করা কঠিন। জমিতে বেশিক্ষণ কাজ করতে পারলাম না। এখন এই ছায়ায় বসে আছি। রাস্তার পাশে বসে ফল বিক্রেতা ইয়ার আলী বলেন, কোনো বিক্রি নেই। কাছেই শুয়ে-বসে কাটাচ্ছি। এভাবে চললে সংসার চালানোই দায় হয়ে যাবে। তরমুজ ও ডাব বিক্রেতা শামীম হোসেন জানান, এতো গরম তারপরও দিনের বেলায় রোজার কারণে তেমন বিক্রি নেই। ইফতারির আগ মুহূর্তে বিক্রি বাড়বে। কিন্তু এই তাপদাহে দোকানে বসে থাকা কষ্টকর হয়ে যাচ্ছে। চুয়াডাঙ্গা শহরের ব্যবসায়ী সুমন পারভেজ খান বলেন, আমরা নিজেরাই এই তাপমাত্রায় দোকানে বসতে পারছি না। কাস্টমার কেমনে আসবে। ব্যাটারিচালিত রিকশাচালক মাসুম আলী জানান, গরমের কারণে দিনের বেলায় তেমন ভাড়া পাচ্ছি না। আর সন্ধ্যার পরও রোজার কারণে ভাড়া নেই। সামনে ঈদ, কি যে করবো, ভাবছি।

চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণীর আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার সূত্রে জানা গেছে, গত ২ এপ্রিল ৩৩ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায় রেকর্ড করা হয়। যা ছিল সে দিন দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। এরপর থেকে গতকাল পর্যন্ত একটানা দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা এ জেলায় রেকর্ড করা হয়েছে। গত ৩ এপ্রিল ৩৫ দশমিক ৫ ডিগ্রি, ৪ এপ্রিল ৩৭ ডিগ্রি, ৫ এপ্রিল ৩৭ ডিগ্রি, ৬ এপ্রিল ৩৭ দশমিক ৬ ডিগ্রি, ৭ এপ্রিল ৩৮ ডিগ্রি, ৮ এপ্রিল ৩৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি, ৯ এপ্রিল ৩৯ ডিগ্রি, ১০ এপ্রিল ৩৯ দশমিক ২ ডিগ্রি, ১১ এপ্রিল ৩৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি এবং ১২ এপ্রিল ৩৯ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ইনচার্জ জামিনুর রহমান বলেন, গতকাল ১৩ এপ্রিল দুপুর ৩টায় দেশের ও এই মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস চুয়াডাঙ্গায় রেকর্ড করা হয়েছে। আপাতত বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা নেই। ফলে এই তাপমাত্রা আরো বাড়বে। আর বৃহস্পতিবার থেকে তীব্র তাপপ্রবাহ শুরু হলো। তিনি আরো বলেন, চুয়াডাঙ্গা জেলা কর্কটক্রান্তি রেখার কাছাকাছি হওয়ায় মার্চ ও এপ্রিল মাসের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি থাকে। এ বছর পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ায় মার্চে গড় তাপমাত্রা বেড়ে গেছে। এরই ধারাবাহিকতায় এপ্রিলে তাপমাত্রা আরো বেড়েছে।

এ দিকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের শিশু কনসালটেন্ট ডা: মাহাবুবুর রহমান মিলন বলেন, গরমের কারণে হাসপাতালের আন্তঃবিভাগ ও বহির্বিভাগে প্রতি দিন রোগী বাড়ছে। শিশুরা ডায়রিয়া ও টাইফয়েড রোগে আক্রান্ত হচ্ছে বেশি। ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ৪৬ জন রোগী ভর্তি রয়েছে। আর শিশু ওয়ার্ডে প্রায় ৫৫ জন ভর্তি রয়েছে। শয্যার তুলনায় অতিরিক্ত রোগী ভর্তি হওয়ায় গরমের ভেতর গাদাগাদি করে মেঝে ও বারান্দায় চিকিৎসা সেবা নিতে হচ্ছে। বহির্বিভাগ থেকে প্রতিদিন প্রায় ২৫০ জন রোগী চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন। অতিরিক্ত গরম শিশুরা সহ্য করতে না পারায় সহজে রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এ জন্য টাটকা খাবার ও বিশুদ্ধ পানি খাওয়াতে হবে।

ফরিদপুরে তাপমাত্রার রেকর্ড
ফরিদপুর প্রতিনিধি জানায়, ফরিদপুরে তাপমাত্রা বাড়তে থাকায় অসহনীয় হয়ে উঠেছে পরিবেশ। গতকাল দুপুরে ফরিদপুরে ৪০ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা আবহাওয়া দফতর। এটি এ যাবৎকালের সবচেয়ে বেশি তাপমাত্রার রেকর্ড ফরিদপুরে। গত কয়েক দিনের মাঝারি তাপপ্রবাহের পর তাপদাহ ক্রমেই তীব্র হয়ে উঠেছে। প্রচণ্ড গরমে নাভিশ্বাস উঠে গেছে জনজীবনে।

ফরিদপুর আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, জেলায় বৃহস্পতিবার তাপমাত্রার পারদ ৪০ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ঘরে উঠেছে। ফরিদপুরে এটি এ যাবৎকালের রেকর্ড তাপমাত্রা। এই তাপপ্রবাহ আরো কয়েক দিন অব্যাহত থাকতে পারে। টানা বর্ষণ না হওয়া পর্যন্ত তাপদাহ প্রশমিত হওয়ার সম্ভাবনা নেই।

গত কয়েক দিনের টানা তাপপ্রবাহে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা স্থবির হয়ে পড়েছে। দুপুর গড়াতেই প্রধান সড়ক থেকে শুরু করে মাঠঘাট ফাঁকা হয়ে পড়ছে। মানুষের পাশাপাশি পশুপাখিরাও হাঁসফাঁস করছে। তীব্র গরমে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বয়স্ক ও শিশুরা। এর প্রভাব পড়েছে রোজাদারদের মাঝেও। তীব্র গরমে জমে উঠছে না ঈদের বাজার। এক দিকে রোজা অন্য দিকে তাপদাহ, সব মিলিয়ে যেন ত্রাহি দশা। বৃষ্টি কিংবা বাতাসের কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। সারাদিন সূর্যের তেজ ছড়াচ্ছে ব্যাপক হারে। মেঘের ছিটেফোঁটারও দেখা মিলছে না। ফলে একটু ছায়াও পাওয়া যায়নি একবারের জন্য। ভোরের সূর্য উদয়ের পর থেকেই গনগনে হয়ে উঠছে পরিবেশ। গাছের সবুজ পাতাগুলো সূর্যের রশ্মিতে কুচকে গেছে। সূর্য ডোবার পরও কমছে না তাপমাত্রা। এ দিকে তীব্র তাপদাহের কারণে দিনমজুর ও রিকশাচালকরা চরম বিপাকে পড়েছেন।

 

https://www.dailynayadiganta.com/first-page/741501