২ এপ্রিল ২০২৩, রবিবার, ১১:০৫

ডিজিটাল আইনের যাঁতাকলে সাংবাদিক সমাজ

-আসিফ আরসালান


আমরা জানি না, দেশ কোন পথে চলেছে। তবে ওপরের অবস্থা বা দৃশ্যমান অবস্থা, যেটিকে ইংরেজিতে বলা হয় On the surface সেটা দেখে মনে হচ্ছে, দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ক্রমান্বয়েই জটিল হচ্ছে। সেই সাথে মতামত প্রকাশের স্বাধীনতাও ক্রমশই সংকুচিত হচ্ছে। বুধবার সন্ধ্যার পর কয়েকটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল এবং প্রিন্ট পত্রিকার অনলাইন সংস্করণে সর্বশেষ যে খবরটি পড়লাম সেই খবর থেকে দেখা যাচ্ছে যে ‘দৈনিক প্রথম আলোর’ সাভারে কর্মরত নিজস্ব সংবাদদাতা শামসুজ্জামানকে মঙ্গলবার দিবাগত রাত ৪ টার সময় তার সাভারের ভাড়া বাসা থেকে তুলে নেয়া হয়েছে। তুলে নিয়েছেন ডিবি পরিচয়ধারী কয়েক ব্যক্তি। খবরে বলা হয়েছে যে একাধিক মাইক্রোবাস করে সাদা পোশাকে প্রায় ১৫ জন ব্যক্তি সামসুজ্জামানের বাসায় যান। সেখানে মাইক্রোবাস থেকে প্রায় ৮ ব্যক্তি নেমে পড়েন এবং সামসুজ্জামানের বাসায় যান। তারপর তারা শামসুজ্জামানকে উঠিয়ে নেন। পরদিন অর্থাৎ বৃহস্পতিবার দৈনিক প্রথম আলোর প্রিন্ট সংস্করণের প্রথম পৃষ্ঠার প্রধান সংবাদের শিরোনাম দেওয়া হয়, “২০ ঘন্টা পরেও খোঁজ নেই প্রথম আলোর সাংবাদিকের / তুলে নেয়ার আগে মামলা”।

২৯ মার্চ অর্থাৎ বুধবার রাতের প্রথম আলোর অনলাইন সংস্করণ সহ অন্যান্য নিউজ পোর্টাল এবং অনলাইন সংস্করণে এর বেশি কিছু লেখা হয়নি। কিন্তু পরদিন অর্থাৎ ৩০ মার্চ বৃহস্পতিবার প্রথম আলোর অনলাইন সংস্করণের প্রথম পৃষ্ঠার দ্বিতীয় কলামে আরো একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে যেটি আরো বেশি উদ্বেগজনক। সংবাদটির শিরোনাম, “প্রথম আলো সম্পাদকের বিরুদ্ধে মধ্যরাতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা”। খবরে বলা হয়েছে, “প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমানের নামে গতকাল বুধবার মধ্যরাতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়েছে। রাজধানীর রমনা থানায় করা এই মামলায় প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক (সাভারে কর্মরত) শামসুজ্জামানকেও আসামী করা হয়েছে। এছাড়া আসামীদের মধ্যে সহযোগী ক্যামেরাম্যান সহ অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরাও রয়েছেন।” প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে মামলাটি হয়েছে বুধবার রাত ১:১৫ মিনিটে। বৃহস্পতিবার প্রথম আলোর অনলাইন সংস্করণে বলা হয়েছে যে ৩০ ঘন্টা পর প্রথম আলোর সাংবাদিক শামসুজ্জামানকে আদালতে আনা হয়েছে। খবরে বলা হয়েছে, বাসা থেকে তুলে নেয়ার ৩০ ঘণ্টার বেশি সময় পর সাভারে কর্মরত প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক শামসুজ্জামানকে রমনা থানার মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে আনা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে আনা হয় শামসুজ্জামানকে। প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন তার আইনজীবী প্রশান্ত কর্মকার। শামসুজ্জামানকে বাসা থেকে তুলে নেয়ার ২০ ঘণ্টার বেশি পর গতকাল বুধবার রাতে রমনা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে তার বিরুদ্ধে মামলা হয়। প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান এ মামলার প্রধান আসামী। সেই মামলাতেই শামসুজ্জামানকে আজ আদালতে আনা হয়েছে।

একই দিন অর্থাৎ ৩০ মার্চ একই পত্রিকার অনলাইন সংস্করণে আরেকটি উদ্বেজনক খবর প্রকাশ করা হয়েছে। খবরটির শিরোনাম, “ বাংলাদেশে সাংবাদিকদের ওপর সহিংসতা ও ভীতি প্রদর্শনে উদ্বিগ্ন যুক্তরাষ্ট্রসহ ১২ দেশ”। খবরে বলা হয়েছে, প্রথম আলো-ঢাকা ট্রিবিউনসহ বাংলাদেশের কয়েকটি গণমাধ্যমের সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে সহিংসতা ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের সাম্প্রতিক ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে মিডিয়া ফ্রিডম কোয়ালিশনের (এমএফসি) ১২ সদস্য। আজ বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে এমএফসি এ উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। এমএফসি বলছে, সম্প্রতি অনুষ্ঠিত সুপ্রিম কোর্ট বার কাউন্সিলের নির্বাচনের সংবাদ সংগ্রহের সময়ে সাংবাদিকদের ওপর হামলা, কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল-জাজিরার সাংবাদিকের ভাইয়ের ওপর হামলা, ঢাকা ট্রিবিউনের আলোকচিত্রী সাংবাদিকের ওপর হামলা এবং সম্প্রতি প্রথম আলোর সাংবাদিক আটকের খবরে তারা উদ্বিগ্ন। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে প্রতিটি ঘটনার দ্রুত ও নিরপেক্ষ তদন্তের অনুরোধ জানিয়েছে মিডিয়া ফ্রিডম কোয়ালিশন। এমএফসির সদস্য হিসেবে এ বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারী দেশ হচ্ছে-অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ডেনমার্ক, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, নেদারল্যান্ডস, নরওয়ে, সুইডেন, সুইজারল্যান্ড, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র।

॥ দুই ॥
একই দিন আরেকটি খবর প্রকাশিত হয়েছে। খবরের শিরোনাম, “ প্রথম আলোর সম্পাদক ও শামসুজ্জামানের বিরুদ্ধে মামলায় পেশাজীবী পরিষদের উদ্বেগ”। প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে মধ্যরাতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের, পত্রিকাটির নিজস্ব প্রতিবেদক শামসুজ্জামানকে গভীর রাতে বাসা থেকে তুলে নেয়া ও পরে একই আইনে মামলা করার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে পেশাজীবীদের সংগঠন বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ (বিএসপিপি)। আজ বৃহস্পতিবার ভোরে পরিষদের আহ্বায়ক চিকিৎসক ও অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন ও সদস্যসচিব সাংবাদিক কাদের গনি চৌধুরী এক বিবৃতিতে এ উদ্বেগ জানান। জাহিদ হোসেন ও কাদের গনি চৌধুরী অবিলম্বে প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান ও প্রতিবেদক শামসুজ্জামানের বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহার ও নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানিয়ে বলেন, আজ যেখানে জাতির বিবেক সাংবাদিকদের স্বাধীনতা নেই, সেখানে সাধারণ নাগরিকের অবস্থা যে কতটা ভয়াবহ, তা সহজে অনুমেয়। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের কড়া সমালোচনা করে বিবৃতিতে বলা হয়, সাংবাদিক নির্যাতনের সবচেয়ে বড় হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন। ভিন্নমত ও সরকারের সমালোচনা দমনে এ আইনের নজিরবিহীন অপপ্রয়োগ চলছে। বিবৃতিতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ সব কালাকানুন বাতিল এবং সরকারকে নিপীড়নের পথ পরিত্যাগ ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানানো হয়।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সহ পেশাজীবী ও সাংবাদিকদের গ্রেফতার ও তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ ও তীব্র সমালোচনা করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, গণতন্ত্র মঞ্চ এবং সিপিবি বা বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি ও বাসদ সহ বাম দলীয় জোট। প্রথম আলোর যে নিউজটি নিয়ে পুলিশী এ্যাকশন হয়েছে সেই নিউজটি দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের পরিপন্থী নয় বলে মির্জা ফখরুল দৃঢ় অভিমত প্রকাশ করেছেন। বাম ঐক্য জোট এবং গণতন্ত্র মঞ্চের বক্তব্যও অত্যন্ত কড়া।

মির্জা ফখরুল তার বক্তব্যে বলেছেন যে ২ দিন আগে ঢাকা থেকে ২০/২১ জন রাজনৈতিক কর্মীকে ইফতার মাহফিল ও তারাবির জন্য সমাবেত হওয়া থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বলাবাহুল্য, তিনি জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীদের গ্রেফতারের প্রতি অঙ্গুলি নির্দেশ করেছেন। এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে যে তারও কয়েক দিন আগে রাজশাহী থেকে জামায়াতের কয়েকজন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঢাকা থেকে যাদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের মধ্যে রয়েছেন ২ জন নারী সদস্য। এরা ইফতার করার পর তারাবির জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।

এসব উদ্বেগজনক ঘটনা ছাড়াও আরো কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে। আমরা জানি না এটা সরকারের সুচিন্তিত প্ল্যান কিনা। তবে দেখা যাচ্ছে, একটি বড় ঘটনা ঘটে। ২, ৪, ৫ দিন সেই ঘটনা নিয়ে খুব হৈ চৈ হয়। তারপর আরেকটি ঘটনা ঘটে। তখন প্রথম ঘটনাটি চাপা পড়ে যায়। দ্বিতীয় ঘটনা নিয়ে কয়েকদিন খুব হৈ চৈ হয়। তারপর ঘটে তৃতীয় ঘটনা। তখন দ্বিতীয় ঘটনাও চাপা পড়ে যায়। এই ভাবেই চলছে বেশ কয়েক মাস বা বছর।

দুবাইয়ের তথাকথিত স্বর্ণ ব্যবসায়ী আরাভ কা- নিয়ে কয়েক দিন হৈ চৈ হলো। এরপর ঘটলো রাজশাহীর ইউনিয়ন পরিষদের নি¤œমান সহকারী ৪০ বছর বয়স্কা মহিলা কর্মচারী সুলতানা জেসমিনকে রাস্তার মাঝপথ থেকে ১০/১৫ জন র‌্যাব সদস্যের উঠিয়ে নেয়া। উঠিয়ে নেয়ার ১২ ঘন্টা পর তাকে গুরুত্বর অসুস্থ অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজে নেয়া হয়। সেখানে তার মৃত্যু ঘটে। তার মাথায় গুরুত্বর আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায় এবং সেখান থেকে রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। সুলতানা জেসমিনের আকস্মিক মৃত্যু তার পরিবার এবং বাংলাদেশের সুস্থ বিবেকবান মানুষদের কাছে বিনা মেঘে বজ্রপাতের শামিল। কারণ র‌্যাব কর্তৃক উঠিয়ে নেয়ার পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত সুলতানা জেসমিন সম্পূর্ণ নিরোগ, সুস্থ ও সবল ছিলেন। যখন সুলতানা জেসমিনকে উঠিয়ে নেয়া হয় তখন পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে কেউ কোনো মামলা করেনি এবং তার অফিস থেকে শুরু করে সকলেই বলেন যে তিনি তার কর্তব্য কর্মে ছিলেন অত্যন্ত পাংচুয়াল। মামলাটি হয়েছে তাকে উঠিয়ে নেয়ার পর। তাকে উঠিয়ে নেয়া হয় একজন যুগ্ম সচিব কর্তৃক জেসমিনের বিরুদ্ধে মৌখিক অভিযোগের পর। এমন রিপোর্টই করা হয়েছে দৈনিক সমকালে। তার বিরুদ্ধে কোনো শত্রু আছে, এমন কথা কেউ বলেননি। স্বাভাবিক কারণেই জেসমিনের অকস্মাৎ অপহরণ এবং মৃত্যু নিয়ে চারদিকে প্রচণ্ড তোলপাড় হয়।

॥ তিন ॥
জেসমিনের মৃত্যুর দুই এক দিনের মধ্যেই আল-জাজিরায় কর্মরত সাংবাদিক জুলকারনাইনের ভাই মাহিনুর আহমেদ খানের ওপর ৪ ব্যক্তি লাঠিসোটা নিয়ে আক্রমণ করে। এই হামলার বিরুদ্ধে ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাস বিবৃতি দেয় এবং ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্তের আহ্বান জানায়। এসব ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই প্রথম আলোর সাভার প্রতিনিধিকে গ্রেফতার এবং পরদিন পত্রিকাটির সম্পাদক মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের। এসব ঘটনায় আগের সবগুলো ঘটনা চাপা পড়ে গেছে। তাই আমি বলছিলাম যে এটি কি সরকারের সুচিন্তিত প্ল্যান নাকি অন্য কিছু? একটির পর আরেকটি ঘটনা ঘটবে এবং আগের ঘটনা চাপা পড়বে।

আমি বৃহস্পতিবার এই কলামটি লিখছি। প্রথম আলোর বিষয়টি নিঃসন্দেহে সর্ব মহলে তোলপাড় সৃষ্টি করবে। তাই শুক্রবার রাতে যদি কোনো আপডেট থাকে তাহলে সেটি আমি দৈনিক সংগ্রামের সম্মানিত পাঠক ভাইদের জানাবো।
সবশেষে আরেকটি বিষয়। সেটি হলো, প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল আলোচনার জন্য বিএনপিকে একটি চিঠি দিয়েছিলেন। মহাসচিব মির্জা ফখরুল তৎক্ষণাৎ প্রস্তাবটি নাকচ করেন। যেটিকে বলা যেতে পারে, সামারি রিজেকশন। তখন সিইসি সুর ঘুরিয়ে বলেন, এটি কোনো সংলাপের প্রস্তাব নয়। নয় কোনো আনুষ্ঠানিক আলোচনার প্রস্তাব। তারা আসলে অনানুষ্ঠানিকভাবে বিএনপির সাথে আলোচনা করতে চেয়েছিলেন। এসম্পর্কিত সিইসির চিঠি বিএনপির স্ট্যান্ডিং কমিটিতে আলোচিত হয়। স্ট্যান্ডিং কমিটি এই চিঠিতে বিধৃত প্রস্তাব নাকচ করে দেয়। শুধু তাই নয়, এই চিঠির কোনো জবাব দেওয়া হবে না বলেও সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

বিএনপির এই সিদ্ধান্ত তাদের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক আন্দোলনের লক্ষ্যের সাথে সংগতিপূর্ণ। তারা বলেছে, অন্য কোনো আলোচনা নয়। কিভাবে এই সরকার ক্ষমতা থেকে বিদায় নেবে এবং কিভাবে একটি নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করা হবে সেটি নিয়ে কোনো আলোচনা করতে চাইলে করা হবে। এর বাইরে কোনো আলোচনা নাই।

কয়েক দিন আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপির সাথে কোনো আলোচনা হবে না। ঐ দিকে একই সময় মির্জা ফখরুলও বলেছেন, সরকারের সাথে কোনো আলোচনা নাই। দুই দলই তাদের নিজ নিজ অবস্থানে অনঢ়। সেখানে কাজী হাবিবুল আউয়াল বিএনপির সাথে কোন্ বিষয়ে আলোচনা করতে চান? আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির বর্তমান যে অবস্থান সেটি সুনিশ্চিতভাবে দেশকে একটি সংঘাতের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। বেশ কিছুদিন চুপ থাকার পর আওয়ামী লীগ সরকার হঠাৎ করে তাদের হার্ড লাইন পুনরুজ্জীবিত করেছে। এটা দেখে কি বলা যাবে যে Morning shows the day? এই প্রশ্নের জবাবের জন্য আসন্ন ঈদের পর কি ঘটে সেটা দেখার জন্য অপেক্ষা করতে হবে। তারপরেও যদি কিছু না ঘটে তাহলে কোরবানি ঈদের পর কি ঘটে তার জন্য অপেক্ষা করতে হবে।

সর্বশেষ খবরে প্রকাশ, বাংলাদেশে সরকার যেভাবে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের প্রয়োগ করছে, তা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর উদ্বেগ জানিয়ে বলেছে, গণতন্ত্রের জন্য গণমাধ্যমকর্মীসহ সবার বাক্স্বাধীনতার বিষয়টি একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান, বিশেষ করে (বাংলাদেশে) নির্বাচনের বছরে। সাভারে কর্মরত প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক শামসুজ্জামান শামসকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে আসা এবং তিনিসহ প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমানের নামে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলার বিষয়ে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র দপ্তরের উপমুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল এসব কথা বলেন।

এছাড়া বাংলাদেশ সরকারের প্রতি অবিলম্বে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের প্রয়োগ বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার টুর্ক। আজ শুক্রবার এক বিবৃতিতে তিনি এই আহ্বান জানিয়েছেন। মি. ভলকার টুর্ক প্রথম আলো সম্পাদকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের এবং তাদের রিপোর্টার শামসুজ্জামানের গ্রেফতারেরও সমালোচনা করেছেন।

https://dailysangram.com/post/520944