১ এপ্রিল ২০২৩, শনিবার, ১০:৪৭

জামায়াতকে সভা সমাবেশ করার অধিকার দেয়া হচ্ছে না

মার্কিন মানবাধিবার রিপোর্টে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। প্রতিবেদনে বাংলাদেশ অংশে বিচারবহির্ভূত হত্যাসহ বেআইনি বা নির্বিচারে হত্যা, গুম, নির্যাতন, কারাগারের অবস্থা, নির্বিচারে গ্রেফতার বা আটক, রাজনৈতিক বন্দী, কোনো ব্যক্তির অপরাধের জন্য পরিবারের সদস্যদের শাস্তি, সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে সহিংসতা বা সহিংসতার হুমকি, সাংবাদিকদের অযৌক্তিকভাবে গ্রেফতার বা বিচার, মতপ্রকাশ সীমিত করার জন্য ফৌজদারি মানহানি আইন কার্যকর, স্বাধীন মতপ্রকাশ এবং মিডিয়ার ওপর বিধিনিষেধ, ইন্টারনেট স্বাধীনতার ওপর নিষেধাজ্ঞা; শান্তিপূর্ণ সমাবেশের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপের মতো বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়েছে।

সম্প্রতি ‘২০২২ কান্ট্রি রিপোর্টস অন হিউম্যান রাইটস প্র্যাকটিসেস’ শীর্ষক এক প্রতিবেদন মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে। এ প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে। বাংলাদেশসহ বিশ্বের ১৯৮টি দেশ ও অঞ্চলের মানবাধিকার পরিস্থিতির ওপর ভিত্তি করে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে। রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়, রাজনৈতিক কারণে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের বিচারের মুখোমুখি করা হচ্ছে। রিপোর্টে রাজনৈতিক বন্দী ও আটককৃতদের নিয়ে বলা হয়, জাতীয় নিরাপত্তার হুমকির জবাব দেওয়ার অজুহাতে মিথ্যা অভিযোগসহ বিরোধী দলগুলোর সদস্যদের গ্রেপ্তার ও বিচারে রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা প্রায়শই দেয়া যায়।

রিপোর্টে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মামলা ও সাজার বিষয়ে বলা হয়, ২০১৮ সালে খালেদা জিয়াকে দুর্নীতি ও আত্মসাতের অভিযোগে ১০ বছরের কারাদ- দেওয়া হয়েছিল, যা ২০০৮ সালে প্রথম দায়ের করা হয়েছিল। আন্তর্জাতিক এবং দেশীয় আইন বিশেষজ্ঞরা দোষী সাব্যস্ত করার জন্য প্রমাণের অভাবের বিষয়ে মন্তব্য করেছেন। বিরোধী দলের নেতাকে নির্বাচনী প্রক্রিয়া থেকে দূরে রাখার জন্য এটি একটি প্রক্রিয়া বলে মনে করা হয়। এই বিশেষজ্ঞরা বলেছেন যে, আদালত তার পক্ষে জামিনের আবেদন বিবেচনা করার ক্ষেত্রে সাধারণত ধীর ছিল। রিপোর্টের ‘রাজনৈতিক দল এবং রাজনৈতিক অংশগ্রহণ’ অংশে বলা হয়, বিরোধী কর্মীরা ফৌজদারি অভিযোগের সম্মুখীন হন। দেশের বৃহত্তম মুসলিম রাজনৈতিক দল জামায়াতে ইসলামীর নেতা ও সদস্যরা আইন প্রয়োগকারী কর্তৃপক্ষের হয়রানির কারণে তাদের বাক ও সমাবেশের সাংবিধানিক স্বাধীনতা প্রয়োগ করতে পারেনি। রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন বাতিলের কারণে জামায়াত প্রার্থীরা দলের নামে নির্বাচন করতে পারছেন না। সরকার এবং আওয়ামী লীগের সমালোচনামূলক বলে মনে করা মিডিয়া আউটলেটগুলোকে সরকারি ভয় দেখানো হয় এবং বিজ্ঞাপনের রাজস্ব হ্রাস করা হয় এবং এইভাবে কিছু স্ব-সেন্সরশিপ অনুশীলন করা হয়। এ রিপোর্ট নিয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো: শাহরিয়ার আলম বলেছেন, ২০২২ সালের ২০ মার্চ মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের প্রকাশ করা মানবাধিকার প্রতিবেদনে কিছু ‘মৌলিক ত্রুটি ও ভুল’ রয়েছে। ঢাকা সেগুলো যুক্তরাষ্ট্রের কাছে তুলে ধরবে। তিনি বলেন, আমরা মার্কিন পক্ষের কাছে এই ত্রুটিগুলো উত্থাপন করব, যাতে আগামী বছরের প্রতিবেদনে এই ধরনের বিষয়ের অস্তিত্ব না থাকে।

 

https://dailysangram.com/post/520924