২৮ মার্চ ২০২৩, মঙ্গলবার, ৩:১০

হজযাত্রী পাচ্ছে না সরকার

ছয় দফা সময় বাড়িয়েও হজযাত্রী পাচ্ছে না সরকার। এ কারণে এখন নতুন করে প্রাক-নিবন্ধন করেও হজে যাওয়ার সুযোগ করে দিতে বাধ্য হয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।

সৌদি আরবের সাথে হজচুক্তি অনুযায়ী, এবার বাংলাদেশ থেকে এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন পবিত্র হজ পালন করতে পারবেন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ১৫ হাজার জন এবং অবশিষ্ট এক লাখ ১২ হাজার ১৯৮ জন বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ করার সুযোগ পাবেন। হজ পোর্টালের তথ্যানুযায়ী, গতকাল সোমবার রাত ৮টা পর্যন্ত মোট এক লাখ ১৭ হাজার ৩৭৪ জন হজযাত্রী নিবন্ধিত হয়েছেন। এর মধ্যে সরকারিভাবে ৯ হাজার ৮৯২ জন এবং বেসরকারিভাবে এক লাখ ৭ হাজার ৪৫২ জন। এখনো কোটা পূরণে ৯ হাজার ৮২৪ জন হজযাত্রীর প্রয়োজন।

কোটা পূরণ না হওয়ায় হজযাত্রী নিবন্ধনের সময় ষষ্ঠবারের মতো বাড়ানো হয়েছে। এখন আগামী ৩০ মার্চ পর্যন্ত হজের নিবন্ধন চলবে। গতকাল ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নিবন্ধনের জন্য সরকারি ও বেসরকারি উভয় ব্যবস্থাপনায় প্রাক-নিবন্ধনের ক্রমিক উন্মুক্ত রয়েছে এবং উভয় ব্যবস্থাপনায় নতুন করে প্রাক-নিবন্ধন করে হজে যাওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এবার হজের খরচ অতিরিক্ত বেড়ে যাওয়ায় হজের নিবন্ধনে ভাটা পড়ে। এর আগে পাঁচ দফা সময় বাড়িয়েও কোটা পূরণ করা যায়নি। চলতি বছর হজে যেতে হজযাত্রী নিবন্ধন শুরু হয় গত ৮ ফেব্রুয়ারি। প্রথম দফা ২৩ ফেব্রুয়ারি নিবন্ধনের শেষ সময় থাকলেও তা বাড়িয়ে ২৮ ফেব্রুয়ারি করা হয়। তবে কোটার বিপরীতে খুবই কম সংখ্যক হজযাত্রী নিবন্ধিত হন। পরে নিবন্ধনের সময় ৭ মার্চ পর্যন্ত বাড়ানো হয়। সেই সময়েও কোটার অর্ধেকেরও কম হজযাত্রী নিবন্ধিত হন। সর্বশেষ নিবন্ধনের সময় ১৬ মার্চ পর্যন্ত বাড়ানো হয়। এ সময়ের মধ্যেও কোটা পূরণ হয়নি। শেষে নিবন্ধনের সময় ২১ মার্চ পর্যন্ত বাড়ানো হয়। সর্বশেষ হজের খরচ ১১ হাজার ৭২৫ টাকা কমানোর পাশাপাশি নিবন্ধনের সময় ২৭ মার্চ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছিল। কিন্তু এর মধ্যেও হজযাত্রীর কোটা পূরণ হয়নি।

চলতি বছর সরকারি ব্যবস্থাপনায় একটি প্যাকেজের মাধ্যমে হজ পালনের নিয়ম রাখা হয়েছে। সরকারিভাবে হজ পালনে প্রথমে খরচ ধরা হয় ৬ লাখ ৮৩ হাজার ১৫ টাকা। অন্য দিকে বেসরকারিভাবে এজেন্সির মাধ্যমে হজ পালনে সর্বনিম্ন খরচ ধরা হয় ৬ লাখ ৭২ হাজার ৬১৮ টাকা। এর সাথে যুক্ত হবে কোরবানির খরচ ২৮ হাজার ৩৯০ টাকা। তবে সৌদি সরকার খরচ কমানোয় প্যাকেজ থেকে ১১ হাজার ৭২৫ টাকা কমায় সরকার। খরচ কমানোর সময় ধর্ম মন্ত্রণালয় জানিয়েছিল, সরকারি ব্যবস্থাপনায় যেহেতু মিনার তাঁবু ‘সি’ ক্যাটাগরি ধরে প্যাকেজ নির্ধারণ করা হয়েছে, সেহেতু সরকারি প্যাকেজ মূল্য ৪১৩ সৌদি রিয়াল সমপরিমাণ ১১ হাজার ৭২৫ টাকা কমানো হয়েছে। সে ক্ষেত্রে সরকারি ব্যবস্থাপনায় বর্তমান হজ প্যাকেজ মূল্য কমিয়ে (৬,৮৩,০১৫- ১১,৭২৫) ৬ লাখ ৭১ হাজার ২৯০ টাকা নির্ধারণ করা হলো। বেসরকারি হজ এজেন্সিগুলোও মিনার তাঁবু ‘সি’ ক্যাটাগরি ধরে প্যাকেজ নির্ধারণ করেছে, তাই বেসরকারিভাবে হজ পালনে প্যাকেজ মূল্য কমিয়ে (৬,৭২,৬১৮-১১,৭২৫) ৬ লাখ ৬০ হাজার ৮৯০ টাকা নির্ধারিত করেছে হাব।

গত বছর সরকারিভাবে দুটি প্যাকেজের মাধ্যমে হজ হয়। তবে এবার একটি প্যাকেজ হলেও গতবারের ২য় প্যাকেজ সামনে রেখে ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে। সে হিসাবে প্যাকেজ-১ এর ক্ষেত্রে এবার খরচ বেড়েছে ৮৪ হাজার ৯৫০ টাকা। বেসরকারিভাবে হজ পালনে গত বছরের তুলনায় এবার খরচ বেড়েছে এক লাখ ৩৮ হাজার ১৪৬ টাকা। এবারের হজে যাওয়ার খরচ অনেকেরই সাধ্যের বাইরে চলে গেছে। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে চলতি বছরের ২৭ জুন (৯ জিলহ্জ) পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে।

https://www.dailynayadiganta.com/first-page/737428